বিষয়ঃ রাসুল (সা.) কি আল্লাহকে দেখেছেন? হাদিসঃ ৮ টি
৩৩৬ | সহীহ মুসলিম (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)

পরিচ্ছেদঃ ৭৬. আল্লাহর বাণীঃ 'তিনি তাকে দেখেছেন আরেকবার' এর ব্যাখ্যা এবং নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ইসরার রাতে তার প্রতিপালককে দেখেছিলেন কিনা সে প্রসঙ্গে

৩৩৬। যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) ... মাসরুক (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, আমি আয়িশা (রাঃ) এর কাছে হেলান দিয়ে বসেছিলাম। তখন তিনি বললেন, হে আবূ আয়িশা! তিনটি কথা এমন, যে এর কোন একটি বলল, সে আল্লাহ সম্পর্কে ভীষণ অপবাদ দিল। আমি জিজ্ঞেস করলাম, সেগুলো কি? তিনি বললেন, যে এ কথা বলে যে, মুহাম্মাদ তার প্রতিপালককে দেখেছেন, সে আল্লাহর উপর ভীষণ অপবাদ দেয়। আমি তো হেলান অবস্থায় ছিলাম, এবার সোজা হয়ে বসলাম। বললাম, হে উমুল মু”মিনীন! থামুন। আমাকে সময় দিন, ব্যস্ত হবেন না। আল্লাহ তা’আলা কুরআনে কি ইরশাদ করেননিঃ “তিনি (রাসুল) তো তাঁকে (আল্লাহকে) স্পষ্ট দিগন্তে দেখেছেন, (২৩ঃ ৮১), অন্যত্র “নিশ্চয়ই তিনি তাকে আরেকবার দেখেছিলেন” (৫৩ঃ ১৩)

আয়িশা (রাঃ) বললেন, আমিই এ উষ্মতের প্রথম ব্যাক্তি, যে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে এ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেছিলাম। তিনি বলেছিলেনঃ তিনি তো ছিলেন জিবরীল (আলাইহিস সালাম) কেবলমাত্র এ দু-বারই আমি তাঁকে তাঁর আসল আকৃতিতে দেখেছি। আমি তাঁকে আসমান থেকে অবতরণ করতে দেখেছি। তাঁর বিরাট দেহ ঢেকে ফেলেছিল আসমান ও যমীনের মধ্যবতী সবটুকু স্থান।

আয়িশা (রাঃ) আরও বলেন, তুমি কি শোননি? আল্লাহ তা’আলা বলেছেনঃ তিনি (আল্লাহ) দৃষ্টির অধিগম্য নন, তবে দৃষ্টিশক্তি তাঁর অধিগত এবং তিনই সূক্ষ্মদর্শী ও সম্যক পরিজ্ঞাত” (৬ঃ ১০৩) এরুপ তুমি কি শোননি? আল্লাহ তা’আলা বলেছেনঃ “মানুষের এমন মর্যাদা নাই যে, আল্লাহ তার সাথে কথা বলবেন ওহীর মাধ্যম ব্যতিরেকে অথবা পর্দার অন্তরাল ব্যতিরেকে অথবা এমন দুত প্রেরণ ব্যতিরেকে যে তাঁর অনুমতিক্রমে তিনি যা চান তা ব্যক্ত করেন, তিনি সমুন্নত ও প্রজ্ঞাময়” (৪২ঃ ৫১)।

আয়িশা (রাঃ) বলেন, আর ঐ ব্যাক্তিও আল্লাহর উপর ভীষণ অপবাদ দেয়, যে এমন কথা বলে যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর কিতাবের কোন কথা গোপন রেখেছেন। কেননা আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেছেনঃ হে রাসুল! আপনার প্রতিপালকের কাছ থেকে যা অবতীর্ণ হয়েছে তা প্রচার রুকন, যদি তা না করেন তবে আপনি তার বার্তা প্রচারই করলেন না। (৫ঃ ৬৭)

তিনি (আয়িশা (রাঃ) আরো বলেন, যে ব্যাক্তি এ কথা বলে যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর ওহী ব্যতীত কাল কি হবে তা অবহিত করতে পারেন, সেও আল্লাহর উপর ভীষন অপবাদ দেয়। কেননা আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ “বল, আসমান ও যমীনে আল্লাহ ব্যতীত গায়েব সম্পর্কে কেউ জানে না।” (২৭ঃ ৬৫)

باب مَعْنَى قَوْلِ اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ: {وَلَقَدْ رَآهُ نَزْلَةً أُخْرَى} وَهَلْ رَأَى النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَبَّهُ لَيْلَةَ الإِسْرَاءِ

حَدَّثَنِي زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ دَاوُدَ، عَنِ الشَّعْبِيِّ، عَنْ مَسْرُوقٍ، قَالَ كُنْتُ مُتَّكِئًا عِنْدَ عَائِشَةَ فَقَالَتْ يَا أَبَا عَائِشَةَ ثَلاَثٌ مَنْ تَكَلَّمَ بِوَاحِدَةٍ مِنْهُنَّ فَقَدْ أَعْظَمَ عَلَى اللَّهِ الْفِرْيَةَ ‏.‏ قُلْتُ مَا هُنَّ قَالَتْ مَنْ زَعَمَ أَنَّ مُحَمَّدًا صلى الله عليه وسلم رَأَى رَبَّهُ فَقَدْ أَعْظَمَ عَلَى اللَّهِ الْفِرْيَةَ ‏.‏ قَالَ وَكُنْتُ مُتَّكِئًا فَجَلَسْتُ فَقُلْتُ يَا أُمَّ الْمُؤْمِنِينَ أَنْظِرِينِي وَلاَ تَعْجَلِينِي أَلَمْ يَقُلِ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ ‏(‏ وَلَقَدْ رَآهُ بِالأُفُقِ الْمُبِينِ‏)‏ ‏(‏ وَلَقَدْ رَآهُ نَزْلَةً أُخْرَى‏)‏ ‏.‏ فَقَالَتْ أَنَا أَوَّلُ هَذِهِ الأُمَّةِ سَأَلَ عَنْ ذَلِكَ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ ‏"‏ إِنَّمَا هُوَ جِبْرِيلُ لَمْ أَرَهُ عَلَى صُورَتِهِ الَّتِي خُلِقَ عَلَيْهَا غَيْرَ هَاتَيْنِ الْمَرَّتَيْنِ رَأَيْتُهُ مُنْهَبِطًا مِنَ السَّمَاءِ سَادًّا عِظَمُ خَلْقِهِ مَا بَيْنَ السَّمَاءِ إِلَى الأَرْضِ ‏"‏ ‏.‏ فَقَالَتْ أَوَلَمْ تَسْمَعْ أَنَّ اللَّهَ يَقُولُ ‏(‏ لاَ تُدْرِكُهُ الأَبْصَارُ وَهُوَ يُدْرِكُ الأَبْصَارَ وَهُوَ اللَّطِيفُ الْخَبِيرُ‏)‏ أَوَلَمْ تَسْمَعْ أَنَّ اللَّهَ يَقُولُ ‏(‏ وَمَا كَانَ لِبَشَرٍ أَنْ يُكَلِّمَهُ اللَّهُ إِلاَّ وَحْيًا أَوْ مِنْ وَرَاءِ حِجَابٍ أَوْ يُرْسِلَ رَسُولاً فَيُوحِيَ بِإِذْنِهِ مَا يَشَاءُ إِنَّهُ عَلِيٌّ حَكِيمٌ‏)‏ قَالَتْ وَمَنْ زَعَمَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَتَمَ شَيْئًا مِنْ كِتَابِ اللَّهِ فَقَدْ أَعْظَمَ عَلَى اللَّهِ الْفِرْيَةَ وَاللَّهُ يَقُولُ ‏(‏ يَا أَيُّهَا الرَّسُولُ بَلِّغْ مَا أُنْزِلَ إِلَيْكَ مِنْ رَبِّكَ وَإِنْ لَمْ تَفْعَلْ فَمَا بَلَّغْتَ رِسَالَتَهُ‏)‏ ‏.‏ قَالَتْ وَمَنْ زَعَمَ أَنَّهُ يُخْبِرُ بِمَا يَكُونُ فِي غَدٍ فَقَدْ أَعْظَمَ عَلَى اللَّهِ الْفِرْيَةَ وَاللَّهُ يَقُولُ ‏(‏ قُلْ لاَ يَعْلَمُ مَنْ فِي السَّمَوَاتِ وَالأَرْضِ الْغَيْبَ إِلاَّ اللَّهُ‏)‏ ‏.‏


It is narrated on the authority of Masruq that he said: I was resting at (the house of) 'A'isha that she said: O Abu 'A'isha (kunya of Masruq), there are three things, and he who affirmed even one of them fabricated the greatest lie against Allah. I asked that they were. She said: He who presumed that Muhammad (ﷺ) saw his Lord (with his ocular vision) fabricated the greatest lie against Allah. I was reclining but then sat up and said: Mother of the Faithful, wait a bit and do not be in a haste. Has not Allah (Mighty and Majestic) said:" And truly he saw him on the clear horizon" (Al-Qur'an, Surat at-Takwir, 81:23) and" he saw Him in another descent" (Al-Qur'an, Surat Najm 53:13)? She said: I am the first of this Ummah who asked the Messenger of Allah (ﷺ) about it, and he said: Verily he is Gabriel. I have never seen him in his original form in which he was created except on those two occasions (to which these verses refer); I saw him descending from the heaven and filling (the space) from the sky to the earth with the greatness of his bodily structure. She said: Have you not heard Allah saying: "Eyes comprehend Him not, but He comprehends (all) vision. and He is Subtle, and All-Aware" (Al-Qur'an, Surat al-An`am 6:103)? (She, i.e. 'A'isha, further said): Have you not heard that, verily, Allah says: "And it is not for any human being that Allah should speak to him except by revelation or from behind a partition or that He sends a messenger to reveal, by His permission, what He wills. Indeed, He is Most High and Wise." (Al-Qur'an, Surat ash-Shura, 42:51) She said: He who presumes that the Messenger of Allah (ﷺ) concealed anything from the Book of Allah fabricates the greatest lie against Allah. Allah says: "O Messenger, announce that which has been revealed to you from your Lord, and if you do not, then you have not conveyed His message. And Allah will protect you from the people. Indeed, Allah does not guide the disbelieving people." (Al-Qur'an, Surat al-Ma'idah, 5:67). She said: He who presumes that he would inform about what was going to happen tomorrow fabricates the greatest lie against Allah. And Allah says "Say, 'None in the heavens and earth knows the unseen except Allah , and they do not perceive when they will be resurrected.'" (Al-Qur'an, Surat an-Naml, 27:65).


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ মাসরূক (রহঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
৩২৩৪ | সুনান আত তিরমিজী (তাহকীককৃত)

পরিচ্ছেদঃ ৩৯. সূরা সা'দ

৩২৩৪। ইবনু আব্বাস (রাযিঃ) হতে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমার প্রতিপালক প্রভু সর্বোত্তম চেহারায় আমার নিকট আসলেন। তিনি বললেনঃ হে মুহাম্মাদ। আমি বললাম, হে আমার রব! আমি উপস্থিত, আমি হাযির। তিনি প্রশ্ন করেনঃ উর্ধ্ব জগতের অধিবাসীরা কি নিয়ে বিবাদ করছে? আমি উত্তর দিলাম, প্ৰভু! আমি জানি না। তিনি তার হাত আমার দুই কাধের মধ্যখানে রাখলেন। এমনকি আমি এর শীতলতা আমার ভয় স্তনের মধ্যখানে (বুকে) অনুভব করলাম। পূর্ব-পশ্চিমের মাঝে যা কিছু আছে তা আমি জেনে নিলাম। অতঃপর তিনি বললেন, হে মুহাম্মাদ! আমি বললাম, হে আমার রব! আমি আপনার সামনে উপস্থিত আছি।

তিনি আবার প্রশ্ন করলেন, ঊর্ধ্বলোকের অধিবাসীরা কি নিয়ে বিতর্ক করছে? আমি জবাব দিলাম, মর্যাদা বৃদ্ধি, কাফফারাত লাভ, পদব্রজে জামাআতে যোগদান, কষ্টকর অবস্থায়ও উত্তমরূপে উযূ করা এবং এক ওয়াক্তের নামায আদায় করার পর পরের ওয়াক্তের নামাযের অপেক্ষায় থাকা ইত্যাদি বিষয়ে তারা বিতর্ক করছে (একে অপরকে অতিক্রম করার চেষ্টা করছে)। যে লোক এগুলোর হিফাযাত করবে সে কল্যাণের মধ্যে বেঁচে থাকবে, কল্যাণময় মৃত্যুবরণ করবে এবং তার জননী তাকে প্রসব করার সময়ের মত গুনাহ মুক্ত হয়ে যাবে।

সহীহঃ দেখুন পূর্বের হাদীস।

আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান এবং উল্লেখিত সনদসূত্রে গারীব। মুআয ইবনু জাবাল ও ’আবদুর রহমান ইবনু আয়িশ –এর বরাতেও নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীস মুআয ইবনু জাবাল (রাযিঃ)-এর বরাতে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে অনেক দীর্ঘাকারে বর্ণিত হয়েছে। তাতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি তন্দ্রায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়লাম। ফলে আমার গভীর ঘুম এসে গেল। ঘুমের ভিতর আমি আমার প্রতিপালককে সুন্দরতম চেহারায় দেখতে পেলাম। তিনি প্রশ্ন করলেন, উর্ধ্বজগতের অধিবাসীরা কি বিষয়ে বিবাদ করছে... শেষ পর্যন্ত।

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا مُعَاذُ بْنُ هِشَامٍ، حَدَّثَنِي أَبِي، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَبِي قِلاَبَةَ، عَنْ خَالِدِ بْنِ اللَّجْلاَجِ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ "‏ أَتَانِي رَبِّي فِي أَحْسَنِ صُورَةٍ فَقَالَ يَا مُحَمَّدُ قُلْتُ لَبَّيْكَ رَبِّي وَسَعْدَيْكَ قَالَ فِيمَ يَخْتَصِمُ الْمَلأُ الأَعْلَى قُلْتُ رَبِّي لاَ أَدْرِي فَوَضَعَ يَدَهُ بَيْنَ كَتِفَىَّ فَوَجَدْتُ بَرْدَهَا بَيْنَ ثَدْيَىَّ فَعَلِمْتُ مَا بَيْنَ الْمَشْرِقِ وَالْمَغْرِبِ قَالَ يَا مُحَمَّدُ ‏.‏ فَقُلْتُ لَبَّيْكَ رَبِّ وَسَعْدَيْكَ قَالَ فِيمَ يَخْتَصِمُ الْمَلأُ الأَعْلَى قُلْتُ فِي الدَّرَجَاتِ وَالْكَفَّارَاتِ وَفِي نَقْلِ الأَقْدَامِ إِلَى الْجَمَاعَاتِ وَإِسْبَاغِ الْوُضُوءِ فِي الْمَكْرُوهَاتِ وَانْتِظَارِ الصَّلاَةِ بَعْدَ الصَّلاَةِ وَمَنْ يُحَافِظْ عَلَيْهِنَّ عَاشَ بِخَيْرٍ وَمَاتَ بِخَيْرٍ وَكَانَ مِنْ ذُنُوبِهِ كَيَوْمَ وَلَدَتْهُ أُمُّهُ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ ‏.‏ قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ مُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ وَعَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَائِشٍ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ‏.‏
وَقَدْ رُوِيَ هَذَا الْحَدِيثُ، عَنْ مُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بِطُولِهِ وَقَالَ ‏"‏ إِنِّي نَعَسْتُ فَاسْتَثْقَلْتُ نَوْمًا فَرَأَيْتُ رَبِّي فِي أَحْسَنِ صُورَةٍ فَقَالَ فِيمَ يَخْتَصِمُ الْمَلأُ الأَعْلَى ‏"‏ ‏.


Narrated Ibn 'Abbas: that the Prophet (ﷺ) said: "My Lord, Blessed is He and Most High, came to me in the best of appearances. So he said: 'O Muhammad!' I said: 'Here I am O my Lord! And I am at Your service.' He said: 'What is it that the most exalted group busy themselves with?' I said: '[Lord] I do not know.' So He placed His Hand between my shoulders, until I sensed its coolness between my breast, so I knew what was in between the east and the west. He said: 'O Muhammad!' I said: 'Here I am O my Lord! And I am at Your service.' He said: 'What is it that the most exalted group busy themselves with?' I said: 'In the acts that raise ranks and the acts that atone, and in recording the footsteps to the congregation, Isbagh Al-Wudu in difficulties, and awaiting the Salat after the Salat. And whoever preserves them, he shall live in goodness and die upon goodness, and his sins shall be like that on the day upon which his mother bore him.'"


৩২৩৫ | সুনান আত তিরমিজী (তাহকীককৃত)

পরিচ্ছেদঃ ৩৯. সূরা সা'দ

৩২৩৫। মু’আয ইবনু জাবাল (রাযিঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, একদিন প্রত্যুষে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের সাথে ফজরের নামায আদায় করতে আসতে বাধাপ্রাপ্ত হন। এমনকি আমরা সূর্য উদিত হয়ে যাওয়ার আশংকা করলাম। তিনি তাড়াতাড়ি বের হয়ে এলে সালাতের জন্য ইকামাত দেয়া হল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সংক্ষেপে সালাত আদায় করলেন। তিনি সালাম ফিরানোর পর উচ্চস্বরে আমাদেরকে ডেকে বললেনঃ তোমরা যেভাবে সারিবদ্ধ অবস্থায় আছ সেভাবেই থাক। তারপর তিনি আমাদের দিকে ফিরে বসলেন অতঃপর বললেনঃ সকালে তোমাদের নিকট আসতে আমাকে কিসে বাধাগ্রস্ত করেছে তা এখনই তোমাদেরকে বলছি।

আমি রাত্রে উঠে উযূ করলাম এবং সামর্থ্যমত নামায পড়লাম। নামাযের মধ্যে আমি তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়লাম। অতঃপর আমি ঘুমিয়ে পড়লাম, এমন সময় আমি আমার বারাকাতময় প্রভুকে খুব সুন্দর অবস্থায় (স্বপ্নে) দেখতে পেলাম। তিনি বললেন, হে মুহাম্মাদ। আমি বললামঃ প্ৰভু! আমি উপস্থিত। তিনি বললেন, উর্ধ্বজগতের অধিবাসীগণ (শীর্ষস্থানীয় ফেরেশতাগণ) কি ব্যাপারে বিতর্ক করছে? আমি বললামঃ প্ৰভু! আমি জানি না। আল্লাহ তা’আলা এ কথা তিনবার বললেন।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ আমি তাকে দেখলাম যে, তিনি তার হাতের তালু আমার দুই কাঁধের মাঝখানে রাখলেন। আমি আমার বক্ষস্থলে তার হাতের আঙ্গুলের শীতলতা অনুভব করলাম। ফলে প্রতিটি জিনিস আমার নিকট আলোকোদ্ভাসিত হয়ে উঠল এবং আমি তা জানতে পারলাম। আল্লাহ তা’আলা বললেন, হে মুহাম্মাদ! আমি বললামঃ প্ৰভু! আমি আপনার নিকট হাযির। তিনি বললেন, উর্ধ্বজগতের বাসিন্দাগণ কি ব্যাপারে বিতর্ক করছে? আমি বললামঃ কাফফারাত প্রসঙ্গে (তারা বিতর্ক করছে)।

তিনি বলেন, সেগুলো কি? আমি বললামঃ হেঁটে সালাতের জামা’আতসমূহে হাযির হওয়া, নামাযের পর মসজিদে বসে থাকা এবং কষ্টকর অবস্থায়ও উত্তমরূপে উযূ করা। তিনি বললেন, তারপর কি ব্যাপারে (তারা বিতর্ক করেছে)? আমি বললামঃ খাদ্যপ্রার্থীকে আহার্যদান, নম্রতার সাথে কথা বলা এবং রাতে মানুষ যখন ঘুমিয়ে পড়ে সেই সময় সালাত আদায় করা প্রসঙ্গে।

আল্লাহ তা’আলা বললেন, তুমি কিছু চাও, বলঃ “হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে ভাল ও কল্যাণকর কাজ সম্পাদনের, মন্দ কাজসমূহ বর্জনের, দরিদ্রজনদের ভালবাসার তাওফীক চাই, তুমি আমায় ক্ষমা কর ও দয়া কর। তুমি যখন কোন গোত্রকে বিপদে ফেলার ইচ্ছা কর তখন তুমি আমাকে বিপদমুক্ত রেখে তোমার কাছে তুলে নিও। আমি প্রার্থনা করি তোমার ভালবাসা, যে তোমায় ভালবাসে তার ভালবাসা এবং এমন কাজের ভালবাসা যা তোমার ভালবাসার নিকটবর্তী করে দেয়।” রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ স্বপ্লটি অবশ্যই সত্য। অতএব তা পড়, তারপর তা শিখে নাও।

সহীহঃ মুখতাসার আল উলুব্বি (১১৯/৮০), আয যিলা-ল (৩৮৮)।

আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ। আমি মুহাম্মাদ ইবনু ইসমাঈলকে এ হাদীস প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলে তিনি বললেন, এ হাদীস হাসান সহীহ। তিনি আরো বললেন, ’আবদুর রহমান ইবনু ইয়াযীদ ইবনু জাবির হতে ওয়ালীদ ইবনু মুসলিম বর্ণিত হাদীসের তুলনায় উক্ত হাদীস অনেক বেশী সহীহ। খালিদ ইবনুল লাজলাজ-আবদুর রহমান ইবনু আয়িশ আল-হাযরামী (রাযিঃ) হতে বর্ণনা করেছেন যে, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি...। এ হাদীসটি সংরক্ষিত নয়।

ওয়ালীদ তার হাদীসে একই রকম উল্লেখ করেছেন-আবদুর রহমান ইবনু আয়িশ (রাযিঃ) বলেনঃ আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে শুনেছি। বিশর ইবনু বাকর এ হাদীস বর্ণনা করেছেন আবদুর রহমান ইবনু ইয়াযীদ ইবনু জাবির এই সনদে আবদুর রহমান ইবনু আয়িশ (রাযিঃ)-এর বরাতে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে। এটি অনেক বেশী সহীহ। আবদুর রহমান ইবনু আয়িশ (রাযিঃ) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে কিছু শুনেননি।

وَقَدْ رُوِيَ هَذَا الْحَدِيثُ، عَنْ مُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بِطُولِهِ وَقَالَ ‏"‏ إِنِّي نَعَسْتُ فَاسْتَثْقَلْتُ نَوْمًا فَرَأَيْتُ رَبِّي فِي أَحْسَنِ صُورَةٍ فَقَالَ فِيمَ يَخْتَصِمُ الْمَلأُ الأَعْلَى ‏"‏ ‏.‏ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا مُعَاذُ بْنُ هَانِئٍ أَبُو هَانِئٍ الْيَشْكُرِيُّ حَدَّثَنَا جَهْضَمُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِي كَثِيرٍ عَنْ زَيْدِ بْنِ سَلاَّمِ عَنْ أَبِي سَلاَّمٍ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَائِشٍ الْحَضْرَمِيِّ أَنَّهُ حَدَّثَهُ عَنْ مَالِكِ بْنِ يُخَامِرَ السَّكْسَكِيِّ عَنْ مُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ رضى الله عنه قَالَ احْتُبِسَ عَنَّا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ذَاتَ غَدَاةٍ عَنْ صَلاَةِ الصُّبْحِ حَتَّى كِدْنَا نَتَرَاءَى عَيْنَ الشَّمْسِ فَخَرَجَ سَرِيعًا فَثُوِّبَ بِالصَّلاَةِ فَصَلَّى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَتَجَوَّزَ فِي صَلاَتِهِ فَلَمَّا سَلَّمَ دَعَا بِصَوْتِهِ قَالَ لَنَا ‏"‏ عَلَى مَصَافِّكُمْ كَمَا أَنْتُمْ ‏"‏ ‏.‏ ثُمَّ انْفَتَلَ إِلَيْنَا ثُمَّ قَالَ ‏"‏ أَمَا إِنِّي سَأُحَدِّثُكُمْ مَا حَبَسَنِي عَنْكُمُ الْغَدَاةَ إِنِّي قُمْتُ مِنَ اللَّيْلِ فَتَوَضَّأْتُ وَصَلَّيْتُ مَا قُدِّرَ لِي فَنَعَسْتُ فِي صَلاَتِي حَتَّى اسْتَثْقَلْتُ فَإِذَا أَنَا بِرَبِّي تَبَارَكَ وَتَعَالَى فِي أَحْسَنِ صُورَةٍ فَقَالَ يَا مُحَمَّدُ ‏.‏ قُلْتُ لَبَّيْكَ رَبِّ ‏.‏ قَالَ فِيمَ يَخْتَصِمُ الْمَلأُ الأَعْلَى قُلْتُ لاَ أَدْرِي ‏.‏ قَالَهَا ثَلاَثًا قَالَ فَرَأَيْتُهُ وَضَعَ كَفَّهُ بَيْنَ كَتِفَىَّ حَتَّى وَجَدْتُ بَرْدَ أَنَامِلِهِ بَيْنَ ثَدْيَىَّ فَتَجَلَّى لِي كُلُّ شَيْءٍ وَعَرَفْتُ فَقَالَ يَا مُحَمَّدُ ‏.‏ قُلْتُ لَبَّيْكَ رَبِّ قَالَ فِيمَ يَخْتَصِمُ الْمَلأُ الأَعْلَى قُلْتُ فِي الْكَفَّارَاتِ قَالَ مَا هُنَّ قُلْتُ مَشْىُ الأَقْدَامِ إِلَى الْجَمَاعَاتِ وَالْجُلُوسُ فِي الْمَسَاجِدِ بَعْدَ الصَّلَوَاتِ وَإِسْبَاغُ الْوُضُوءِ فِي الْمَكْرُوهَاتِ ‏.‏ قَالَ فِيمَ قُلْتُ إِطْعَامُ الطَّعَامِ وَلِينُ الْكَلاَمِ وَالصَّلاَةُ بِاللَّيْلِ وَالنَّاسُ نِيَامٌ ‏.‏ قَالَ سَلْ ‏.‏ قُلْتُ اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ فِعْلَ الْخَيْرَاتِ وَتَرْكَ الْمُنْكَرَاتِ وَحُبَّ الْمَسَاكِينِ وَأَنْ تَغْفِرَ لِي وَتَرْحَمَنِي وَإِذَا أَرَدْتَ فِتْنَةَ قَوْمٍ فَتَوَفَّنِي غَيْرَ مَفْتُونٍ أَسْأَلُكَ حُبَّكَ وَحُبَّ مَنْ يُحِبُّكَ وَحُبَّ عَمَلٍ يُقَرِّبُ إِلَى حُبِّكَ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏"‏ إِنَّهَا حَقٌّ فَادْرُسُوهَا ثُمَّ تَعَلَّمُوهَا ‏"‏ ‏.‏ قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ ‏.‏ سَأَلْتُ مُحَمَّدَ بْنَ إِسْمَاعِيلَ عَنْ هَذَا الْحَدِيثِ فَقَالَ هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ ‏.‏ وَقَالَ هَذَا أَصَحُّ مِنْ حَدِيثِ الْوَلِيدِ بْنِ مُسْلِمٍ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ يَزِيدَ بْنِ جَابِرٍ ‏.‏ قَالَ حَدَّثَنَا خَالِدُ بْنُ اللَّجْلاَجِ حَدَّثَنِي عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عَائِشٍ الْحَضْرَمِيُّ قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَذَكَرَ الْحَدِيثَ وَهَذَا غَيْرُ مَحْفُوظٍ ‏.‏ هَكَذَا ذَكَرَ الْوَلِيدُ فِي حَدِيثِهِ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَائِشٍ قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏.‏ وَرَوَى بِشْرُ بْنُ بَكْرٍ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ يَزِيدَ بْنِ جَابِرٍ هَذَا الْحَدِيثَ بِهَذَا الإِسْنَادِ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَائِشٍ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ‏.‏ وَهَذَا أَصَحُّ ‏.‏ وَعَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عَائِشٍ لَمْ يَسْمَعْ مِنَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ‏.‏


Narrated Mu'adh bin Jabal [may Allah be pleased with him]: "One morning, the Messenger of Allah (ﷺ) was prevented from coming to us for Salat As-Subh, until we were just about to look for the eye of the sun (meaning sunrise). Then he came out quickly, had the Salat prepared for. The Messenger of Allah (ﷺ) performed the Salat, and he performed his Salat in a relatively quick manner. When he said the Salam, he called aloud with his voice saying to us: 'Stay in your rows as you are.' Then he turned coming near to us, then he said: 'I am going to narrate to you what kept me from you this morning: I got up during the night, I performed Wudu and prayed as much as I was able to, and I dozed off during my Salat, and fell deep asleep. Then I saw my Lord, Blessed and Most High, in the best of appearances. He said: 'O Muhammad!' I said: 'My Lord here I am my Lord!' He said: 'What is it that the most exalted group busy themselves with?' I said: 'I do not know Lord.' And He said it three times." He said: "So I saw Him place His Palm between my shoulders, and I sensed the coolness of His Fingertips between my breast. Then everything was disclosed for me, and I became aware. So He said: 'O Muhammad!' I said: 'Here I am my Lord!' He said: 'What is it that the most exalted group busy themselves with?' I said: 'In the acts that atone.' He said: 'And what are they?' I said: 'The footsteps to the congregation, the gatherings in the Masajid after the Salat, Isbagh Al-Wudu during difficulties.' He said: 'Then what else?' I said: 'Feeding others, being lenient in speech, and Salat during the night while the people are sleeping.' He said: 'Ask.' I said: 'O Allah! I ask of you the doing of the good deeds, avoiding the evil deeds, loving the poor, and that You forgive me, and have mercy upon me. And when You have willed Fitnah in the people, then take me without the Fitnah. And I ask You for Your love, the love of whomever You love, and the of the deeds that bring one nearer to Your love.'" The Messenger of Allah (ﷺ) said: "Indeed it is true, so study it and learn it."


৭২৫ | মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)

পরিচ্ছেদঃ ৭. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - মাসজিদ ও সালাতের স্থান

৭২৫-[৩৭] ’আবদুর রহমান ইবনু ’আয়িশ (রাঃ)হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি আমার ’রবকে’ অতি উত্তম অবস্থায় স্বপ্নে দেখলাম। তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, ’’মালা-উল আ’লা’’ তথা শীর্ষস্থানীয় মালায়িকাহ্ কী ব্যাপারে ঝগড়া করছে? আমি বললাম, তা তো আপনিই ভালো জানেন। তখন আল্লাহ তা’আলা তাঁর হাত আমার দুই কাঁধের মাঝখানে রাখলেন। হাতের শীতলতা আমি আমার বুকের মধ্যে অনুভব করলাম। আমি তখন আসমানসমূহ ও জমিনে যা কিছু আছে সবকিছুই জানতে পারলাম। বর্ণনাকারী বলেন, এরপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এ আয়াত তিলাওয়াত করলেনঃ ’’এভাবে আমি ইব্রহীমকে দেখালাম আকাশমণ্ডলী ও জমিনের রাজ্যসমূহ যাতে সে বিশ্বাসীদের অন্তর্ভুক্ত হয়’’- (সূরাহ্ আল আন্’আমঃ ৭৫)। (দারিমী ও তিরমিযী হাদীসটি মুরসাল হিসেবে বর্ণনা করেছেন)[1]

وَعَن عبد الرَّحْمَن بن عائش قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: رَأَيْتُ رَبِّيَ عَزَّ وَجَلَّ فِي أَحْسَنِ صُورَةٍ قَالَ: فَبِمَ يَخْتَصِمُ الْمَلَأُ الْأَعْلَى؟ قُلْتُ: أَنْتَ أَعْلَمُ قَالَ: فَوَضَعَ كَفَّهُ بَيْنَ كَتِفِيَّ فَوَجَدْتُ بَرْدَهَا بَيْنَ ثَدْيَيَّ فَعَلِمْتُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَتَلَا: (وَكَذَلِكَ نُرِي إِبْرَاهِيمَ مَلَكُوتَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَلِيَكُونَ من الموقنين)
رَوَاهُ الدَّارمِيّ مُرْسلا وللترمذي نَحوه عَنهُ

ব্যাখ্যা: এ হাদীস রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দেখা স্বপ্নের বর্ণনা। এ হাদীসের মতো যেসব হাদীসে আল্লাহর গুণাবলী বর্ণিত হয়েছে তা সহীহ হলে সে সব গুণাবলী কোনরূপ ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ ব্যতীতই বিশ্বাস করতে হবে। গুণ এবং তার উদাহরণ বর্ণনা করা থেকে চুপ থাকতে হবে। সাথে সাথে এই দৃঢ় বিশ্বাস রাখতে হবে যে, আল্লাহ তা‘আলার সাদৃশ্যমূলক কোন কিছু নেই। তিনি সর্বশ্রোতা ও সর্বদ্রষ্টা।

রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ আমার রব বলেন, নৈকট্য-প্রাপ্ত মালায়িকাহ্ কোন বিষয়ে বিতর্ক বা বাদানুবাদ করছে? ইমাম ত্বীবী বলেন, এখানে বিতর্ক দ্বারা ঐসব মালায়িকাহ্’র মধ্যে ‘‘কাফফারাহ্’’ এর ‘‘দারাজাত’’ বিষয়ে আলাপ-আলোচনাকে বুঝানো হয়েছে। দুই বিতর্ককারীর মধ্যে যেমন প্রশ্নোত্তর হয় তাদের মধ্যেও তা চলছিল। প্রশ্নের উত্তরে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমার রব তাঁর হাত আমার দুই কাঁধের মাঝে রাখলেন।

কেউ কেউ বলেন, এর দ্বারা রূপকভাবে বিশেষ করে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর প্রতি অতিরিক্ত অনুগ্রহ এবং রহমাতের প্রাচুর্য পৌঁছানোর কথা বুঝানো হয়েছে। তবে এ ব্যাপারে সালাফগণের মত হলো, কোন তুলনা উপমা, সাদৃশ্য বর্ণনা ব্যতীত এর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করতে হবে। সৃষ্টির গুণাবলীকে যেভাবে ব্যাখ্যা করা হয় সেভাবে তাঁর গুণাবলীকে ব্যাখ্যা করা যাবে না। গুণাবলীর প্রকৃতির জ্ঞান আল্লাহর দিকেই সোপর্দ হবে।

আকাশসমূহে এবং সাত জমিনের মধ্যে যা কিছু আছে তা জানতে পারলাম। ক্বারী বলেন অর্থাৎ- আকাশসমূহ এবং জমিনের মাঝে অবস্থিত মালাক, গাছ-পালা ইত্যাদির মধ্যে যা আল্লাহ তা‘আলা রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জানিয়েছেন। এ কথা দ্বারা আল্লাহ কর্তৃক রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে দেয়া জ্ঞানের প্রশস্ততার কথা বুঝানো হয়েছে। তিনি আরো বলেন, আকাশসমূহ দ্বারা উপরের দিকে সবকিছু এবং জমিন দ্বারা নিচের দিকের সবকিছু বুঝানো হয়েছে তবে হাদীসের বাহ্যিক অর্থ দ্বারা সাধারণভাবে সব কিছুর জ্ঞান বুঝা গেলেও তা বুঝানো বিশুদ্ধ নয়। আমরা যেমনটা উল্লেখ করেছি তেমনভাবে এ জ্ঞানকে সীমাবদ্ধ করা আবশ্যক।

এরপর আল্লাহ তা‘আলা ইবরাহীম (আঃ)-কে আকাশসমূহ ও পৃথিবীর সমস্ত সাম্রাজ্য (এতদুভয়ের মধ্যে যা কিছু সৃষ্টি আছে) দেখিয়েছেন এবং তার জন্য তা উন্মোচন করেছেন। তার রিসালাতের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ যতটুকু ততটুকু অদৃশ্যের জ্ঞান তার সামনে খুলে দিয়েছেন। যাতে করে তিনি আমার (আল্লাহর) একত্ব প্রমাণ করতে পারেন এবং নিশ্চিত বিশ্বাসীদের অন্তর্ভুক্ত হতে পারেন। তাই আমি এরূপ করেছি।

বহু আয়াত ও স্পষ্ট সহীহ হাদীস রয়েছে যেগুলো প্রমাণ করে যে, কিছু জিনিসের বা ব্যাপারে বা কর্মের জ্ঞান রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ছিল না। আর এগুলো এদিকে স্পষ্ট ইঙ্গিত করে যে, হাদীসে ব্যবহৃত ما ‘‘মা’’ শব্দটি সীমাহীনতা বা অপরিসীমতা বুঝাচ্ছে না। আর এটা কবরপূজারীদের দাবীকে বাতিল করে দেয়। কবরপূজারীদের নিকট এসব আয়াত হাদীস পেশ করলে তারা বলে, আয়াত এবং হাদীসসমূহে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট অদৃশ্যের জ্ঞান নেই মর্মে যে বর্ণনা এসেছে তা দ্বারা সত্ত্বাগত জ্ঞান ما না থাকাকে বুঝাচ্ছে। দান থেকে অর্জিত জ্ঞানকে বুঝাচ্ছে না। এগুলো শুধুমাত্র তাদের দাবী। এর পক্ষে কুরআন, সুন্নাহ, ইজমা, ক্বিয়াস বা কোন জ্ঞানসম্মত প্রমাণ নেই। বরং তাদের এ দাবীকে বাতিল করে দেয় আল্লাহ তা‘আলার বাণী। তিনি বলেন, ‘‘তাঁর অনন্ত জ্ঞানের কোন বিষয়ই কেউ আয়ত্ব করতে পারে না’’- (সূরাহ্ আল বাক্বারাহ্ ২ : ২৫৫)। তিনি আরো বলেন, ‘‘তোমার প্রতিপালকের বাহিনী সম্পর্কে একমাত্র তিনিই জানেন’’- (সূরাহ্ আল মুদ্দাস্সির ৭৪ : ৩১)। অতএব হে পাঠক! ব্যাপারটি নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা-গবেষণা করুন, তাড়াহুড়া করবেন না।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
৭৪৮ | মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)

পরিচ্ছেদঃ ৭. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - মাসজিদ ও সালাতের স্থান

৭৪৮-[৬০] মু’আয ইবনু জাবাল (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (নিত্য দিনের অভ্যাসের বিপরীত) ফজরের (ফজরের) সালাতে আসতে এতটা দেরী করলেন যে, সূর্য প্রায় উঠে উঠে। এর মধ্যে তাড়াহুড়া করে তিনি আসলেন। সাথে সাথে সালাতের ইক্বামাত(ইকামত/একামত) দেয়া হলো। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সংক্ষিপ্ত করে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করলেন। সালাম দেবার পর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) উচ্চকণ্ঠে আমাদের উদ্দেশ্য করে বললেন, তোমরা সালাতের কাতারে যে যেভাবে আছো সেভাবে থাকো। এরপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাদের দিকে ফিরলেন ও বললেন, শুন! আজ ভোরে তোমাদের কাছে আসতে যে কারণ আমার কাছে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল তা হলো, আমি রাতে ঘুম থেকে উঠলাম। উযূ (ওযু/ওজু/অজু) করলাম। পরে আমার পক্ষে যা সম্ভব হলো সালাত আদায় করলাম। সালাতে আমার তন্দ্রা ধরল, ঘুমে অসাড় হয়ে পড়লাম। এ সময় দেখি, আমি আমার ’প্রতিপালক’ তাবারাকা ওয়া তা’আলার কাছে উপস্থিত। তিনি খুবই উত্তম অবস্থায় আছেন। তিনি আমাকে ডাকলেন, হে মুহাম্মাদ! আমি উত্তর দিলাম, হে আমার ’রব’, আমি উপস্থিত। তিনি বললেন, ’’মালা-উল আ’লা-’’ অর্থাৎ- শীর্ষস্থানীয় মালায়িকাহ্ কী নিয়ে বিতর্ক করছে? আমি উত্তরে বললাম, আমি তো কিছু জানি না, হে আমার ’রব’! এভাবে তিনি আমাকে তিনবার জিজ্ঞেস করলেন।

তারপর দেখি, তিনি আমার দু’ কাঁধের মাঝখানে তাঁর হাত রেখে দিয়েছেন। এতে আমি আমার সিনায় তাঁর আঙ্গুলের শীতলতা অনুভব করতে লাগলাম। আমার নিকট তখন সব জিনিস প্রকাশ হয়ে পড়ল। আমি সকল ব্যাপার বুঝে গেলাম। তারপর তিনি আবার আমাকে ডাকলেন, হে মুহাম্মাদ! আমি বললাম, আমি উপস্থিত হে পরওয়ারদিগার। এখন বলো দেখি ’’মালা-উল আ’লা-’’ কী নিয়ে তর্ক-বিতর্ক করছে। আমি বললাম, গুনাহ মিটিয়ে দেবার ব্যাপারসমূহ নিয়ে। আল্লাহ তা’আলা বললেন, সে সব জিনিস কী? আমি বললাম, সালাতের জন্য মসজিদে যাওয়া, সালাতের পরে দু’আ ইত্যাদির জন্য মসজিদে বসা এবং শীতের বা অন্য কারণে উযূ করা কষ্টকর হলেও তা উপেক্ষা করে উযূ করা। আবার আল্লাহ তা’আলা জিজ্ঞেস করলেন, আর কী ব্যাপারে তারা বিতর্ক করছে? আমি বললাম, দারাজাত অর্থাৎ- মর্যাদার ব্যাপারে। তিনি বললেন, সে সব কী? আমি বললাম, গরীব-মিসকীনদের খাবার দেয়া, ভদ্রভাবে কথা বলা, রাতে মানুষ যখন ঘুমায় সে সময় উঠে (তাহাজ্জুদের) সালাত আদায় করা।

তারপর আবার আল্লাহ তা’আলা বললেন, আচ্ছা ঠিক আছে। এখন তোমার যা চাওয়ার তা নিবেদন কর। তাই আমি দু’আ করলামঃ ’’হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে নেক কাজ করার, খারাপ কাজ থেকে বিরত থাকার, মিসকীনের বন্ধুত্ব, তোমার ক্ষমা ও রহমত চাই। আর যখন তুমি কোন জাতির মধ্যে গুমরাহী ছড়াতে চাও, তার আগে আমাকে গুমরাহী ছাড়া উঠিয়ে নিও। আমি তোমার কাছে তোমার ভালোবাসা আর ঐ ব্যক্তির ভালোবাসা চাই, যে তোমাকে ভালোবাসে, আর আমি এমন ’আমলকে ভালোবাসতে চাই যে ’আমল আমাকে তোমার ভালোবাসার নিকটবর্তী করবে’’। তারপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এ স্বপ্ন ষোলআনা সত্য। তাই তোমরা এ কথা স্মরণ রাখবে, আর লোকেদেরকে শিখাবে। (আহমাদ ও তিরমিযী;[1]

ইমাম তিরমিযী আরো বলেন, হাদীসটি হাসান সহীহ। আমি এ হাদীসটি সম্পর্কে মুহাম্মাদ ইবনু ইসমা’ঈল বুখারী জিজ্ঞেস করেছি; তিনিও বলেছেন এ হাদীসটি সহীহ।)

وَعَنْ مُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ قَالَ: احْتَبَسَ عَنَّا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ذَاتَ غَدَاة عَن صَلَاة الصُّبْح حَتَّى كدنا نتراءى عين الشَّمْس فَخرج سَرِيعا فثوب بِالصَّلَاةِ فَصَلَّى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَتَجَوَّزَ فِي صَلَاتِهِ فَلَمَّا سَلَّمَ دَعَا بِصَوْتِهِ فَقَالَ لَنَا عَلَى مَصَافِّكُمْ كَمَا أَنْتُمْ ثُمَّ انْفَتَلَ إِلَيْنَا ثُمَّ قَالَ أَمَا إِنِّي سَأُحَدِّثُكُمْ مَا حَبَسَنِي عَنْكُمُ الْغَدَاةَ إِنِّي قُمْتُ مِنَ اللَّيْلِ فَتَوَضَّأْتُ وَصَلَّيْتُ مَا قُدِّرَ لِي فَنَعَسْتُ فِي صَلَاتِي حَتَّى اسْتَثْقَلْتُ فَإِذَا أَنَا بِرَبِّي تَبَارَكَ وَتَعَالَى فِي أَحْسَنِ صُورَةٍ فَقَالَ يَا مُحَمَّدُ قُلْتُ لَبَّيْكَ رَبِّ قَالَ فِيمَ يخْتَصم الْمَلأ الْأَعْلَى قلت لَا أَدْرِي رب قَالَهَا ثَلَاثًا قَالَ فَرَأَيْتُهُ وَضَعَ كَفَّهُ بَيْنَ كَتِفَيَّ حَتَّى وَجَدْتُ بَرْدَ أَنَامِلِهِ بَيْنَ ثَدْيَيَّ فَتَجَلَّى لِي كُلُّ شَيْءٍ وَعَرَفْتُ فَقَالَ يَا مُحَمَّدُ قُلْتُ لَبَّيْكَ رَبِّ قَالَ فِيمَ يَخْتَصِمُ الْمَلأ الْأَعْلَى قلت فِي الْكَفَّارَات قَالَ مَا هُنَّ قُلْتُ مَشْيُ الْأَقْدَامِ إِلَى الْجَمَاعَاتِ وَالْجُلُوسُ فِي الْمَسَاجِد بَعْدَ الصَّلَوَاتِ وَإِسْبَاغُ الْوَضُوءِ حِينَ الْكَرِيهَاتِ قَالَ ثُمَّ فِيمَ؟ قُلْتُ: فِي الدَّرَجَاتِ. قَالَ: وَمَا هن؟ إطْعَام الطَّعَام ولين الْكَلَام وَالصَّلَاة وَالنَّاس نيام. ثمَّ قَالَ: سل قل اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ فِعْلَ الْخَيْرَاتِ وَتَرْكَ الْمُنْكَرَاتِ وَحُبَّ الْمَسَاكِينِ وَأَنْ تَغْفِرَ لِي وَتَرْحَمَنِي وَإِذَا أَرَدْتَ فِتْنَةً قوم فتوفني غير مفتون أَسأَلك حَبَّكَ وَحُبَّ مَنْ يَحْبُكُ وَحُبَّ عَمَلٍ يُقَرِّبُنِي إِلَى حبك . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّهَا حَقٌّ فَادْرُسُوهَا ثُمَّ تَعَلَّمُوهَا» . رَوَاهُ أَحْمَدُ وَالتِّرْمِذِيُّ وَقَالَ: هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ وَسَأَلْتُ مُحَمَّد ابْن إِسْمَاعِيل عَن هَذَا الحَدِيث فَقَالَ: هَذَا حَدِيث صَحِيح

ব্যাখ্যা: হাদীসটি স্বব্যাখ্যাত। রাত্রির সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) শেষে কিংবা সালাতরত অবস্থায় নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর গভীর নিদ্রা চলে আসে। সে অবস্থায় তিনি যা কিছু দেখেন তা’ কোন চর্মচক্ষুর দর্শন ছিল না। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর স্বপ্নও ওয়াহী, তাই এখানে যা কিছু তিনি দেখেছেন এবং তাঁর রবের সাথে তার যা কিছু কথোপকথন হয়েছে তা’ যেভাবে বর্ণনায় এসেছে, আমাদেরকে কোনরূপ পরিবর্তন, পরিবর্ধন, সংযোজন কিংবা বিয়োজন ছাড়া সেভাবেই বিশ্বাস ও গ্রহণ করতে হবে। কেবল হাদীসের শেষদিকে যে দু‘আ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহ তা‘আলার হুকুমে করেছেন, সেগুলোর অর্থ পরিষ্কার ও স্পষ্ট বিধায় আমরাও এরূপ দু‘আ করতে পারি।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
২১৮৮ | সুনান আদ-দারেমী (হাদিসবিডি)

পরিচ্ছেদঃ ১২. স্বপ্নে মহান আল্লাহ কে দেখা সম্পর্কে

২১৮৮. আব্দুর রহমান ইবনু আয়িশ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি: “আমি আমার রবকে সর্বোত্তম সূরতে (স্বপ্নে) দেখেছি।” তিনি (মহান আল্লাহ) বললেন: ’মালাউল আ’লা’ (সর্বোচ্চ পরিষদ) কী নিয়ে বিতর্ক করছে?’ তখন আমি বললাম, “হে রব! আপনিই ভাল জানেন।”তিনি বলেন: “অত:পর তিনি তাঁর হাতের তালু[1] আমার উভয় কাঁধের উপর রাখলেন; এমনকি আমি আমার বুকে তাঁর হাতের শীতলতা অনূভব করলাম। এভাবে আমি আসমান ও যমীনসমূহে যা রয়েছে তা জানতে পারলাম। একথা বলে তিনি তিলাওয়াত করলেন: “এভাবে আমরা ইবরহীমকে আসমান ও যমিনসমূহের মুলুকিয়াত বা রাজত্ব দর্শন করালাম, যাতে সে দৃঢ় বিশ্বাসীদের অন্তর্ভূক্ত হতে পারে।[2] সূরা আন’আম ৫৭।”

بَاب فِي رُؤْيَةِ الرَّبِّ تَعَالَى فِي النَّوْمِ

أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُبَارَكِ حَدَّثَنِي الْوَلِيدُ حَدَّثَنِي ابْنُ جَابِرٍ عَنْ خَالِدِ بْنِ اللَّجْلَاجِ وَسَأَلَهُ مَكْحُولٌ أَنْ يُحَدِّثَهُ قَالَ سَمِعْتُ عَبْدَ الرَّحْمَنِ بْنَ عَائِشٍ يَقُولُ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ رَأَيْتُ رَبِّي فِي أَحْسَنِ صُورَةٍ قَالَ فِيمَ يَخْتَصِمُ الْمَلَأُ الْأَعْلَى فَقُلْتُ أَنْتَ أَعْلَمُ يَا رَبِّ قَالَ فَوَضَعَ كَفَّهُ بَيْنَ كَتِفَيَّ فَوَجَدْتُ بَرْدَهَا بَيْنَ ثَدْيَيَّ فَعَلِمْتُ مَا فِي السَّمَوَاتِ وَالْأَرْضِ وَتَلَا وَكَذَلِكَ نُرِي إِبْرَاهِيمَ مَلَكُوتَ السَّمَوَاتِ وَالْأَرْضِ وَلِيَكُونَ مِنْ الْمُوقِنِينَ


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ

পরিচ্ছেদঃ আল্লাহর দীদার

(৩৮) ইবনে আব্বাস (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আজ রাত্রে স্বপ্নে আমার রব তাবারাকা অতা’আলা সুন্দর আকৃতিতে আমার কাছে এসে বললেন, ’হে মুহাম্মাদ! তুমি কি জানো, সর্বোচ্চ ফিরিশতা-সভা কী বিষয়ে বাদানুবাদ করে?’ আমি বললাম, ’না।’ অতঃপর তিনি তাঁর হাত আমার দুই কাঁধের মাঝে রাখলেন। এমনকি আমি আমার বক্ষস্থলে তার শীতলতা অনুভব করলাম। সুতরাং (তার ফলে) আমি জানতে পারলাম আসমানে যা আছে এবং যমীনে যা আছে।

অতঃপর তিনি বললেন, ’হে মুহাম্মাদ! তুমি কি জানো, সর্বোচ্চ ফিরিশতা-সভা কী বিষয়ে বাদানুবাদ করে?’ আমি বললাম, ’হ্যাঁ। কাফফারা (পাপের প্রায়শ্চিত্ত) ও মর্যাদাসমূহের ব্যাপারে। কাফফারা হল, নামায আদায়ের পর মসজিদে অবস্থান করা, জামাআতের উদ্দেশ্যে পায়ে হেঁটে যাওয়া এবং কষ্টের সময় পূর্ণরূপে উযূ করা। আর মর্যাদাসমূহ হল, সালাম প্রচার করা, অন্নদান করা এবং রাতে লোকেরা যখন ঘুমিয়ে থাকে, তখন নামায পড়া। তিনি বললেন, ’সত্য বলেছ। যে এগুলি পালন করবে, সে কল্যাণের সাথে জীবন-যাপন করবে, কল্যাণের সাথে মৃত্যুবরণ করবে এবং সে সেদিনকার মতো নিষ্পাপ হয়ে যাবে, যেদিন তার মা তাকে জন্ম দিয়েছিল।---’

عَن ابْنِ عَبَّاسٍ عَن النَّبِىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ أَتَانِى رَبِّى فِى أَحْسَنِ صُورَةٍ فَقَالَ يَا مُحَمَّدُ قُلْتُ لَبَّيْكَ رَبِّى وَسَعْدَيْكَ قَالَ فِيمَ يَخْتَصِمُ الْمَلأُ الأَعْلَى قُلْتُ رَبِّى لاَ أَدْرِى فَوَضَعَ يَدَهُ بَيْنَ كَتِفَىَّ فَوَجَدْتُ بَرْدَهَا بَيْنَ ثَدْيَىَّ فَعَلِمْتُ مَا بَيْنَ الْمَشْرِقِ وَالْمَغْرِبِ قَالَ يَا مُحَمَّدُ فَقُلْتُ لَبَّيْكَ رَبِّ وَسَعْدَيْكَ قَالَ فِيمَ يَخْتَصِمُ الْمَلأُ الأَعْلَى قُلْتُ فِى الدَّرَجَاتِ وَالْكَفَّارَاتِ وَفِى نَقْلِ الأَقْدَامِ إِلَى الْجَمَاعَاتِ وَإِسْبَاغِ الْوُضُوءِ فِى الْمَكْرُوهَاتِ وَانْتِظَارِ الصَّلاَةِ بَعْدَ الصَّلاَةِ وَمَنْ يُحَافِظْ عَلَيْهِنَّ عَاشَ بِخَيْرٍ وَمَاتَ بِخَيْرٍ وَكَانَ مِنْ ذُنُوبِهِ كَيَوْمَ وَلَدَتْهُ أُمُّه


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ

পরিচ্ছেদঃ আল্লাহর প্রশংসামূলক কতক বাক্যের ফযিলত

১৩৬. মুয়ায ইবনু জাবাল রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: একদা ফজর সালাতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামবিলম্ব করলেন, আমরা প্রায় সূর্যের অগ্রভাগ দেখার কাছাকাছি ছিলাম, অতঃপর তিনি দ্রুত বের হলেন, সালাতের ঘোষণা দেয়া হল, তিনি দ্রুত সালাত আদায় করলেন, যখন সালাম ফিরালেন উচ্চ স্বরে আমাদেরকে বললেন: “তোমরা তোমাদের কাতারে থাক যেরূপ আছ”। অতঃপর আমাদের দিকে ফিরে বললেন: “আমি অবশ্যই তোমাদের বলব কি কারণে আজ আমার বিলম্ব হয়েছে। আমি রাতে উঠে ওযু করেছি অতঃপর যা তাওফিক হয়েছে সালাত আদায় করেছি, সালাতে আমার তন্দ্রা এসে যায় তাই আমার কষ্ট হচ্ছিল, হঠাৎ দেখি আমার রব আমার সামনে সর্বোত্তম আকৃতিতে। তিনি আমাকে বললেন: হে মুহাম্মদ, আমি বললাম: লাব্বাইক আমার রব। তিনি বললেন: ঊর্ধ্বজগতের ফেরেশতারা কি নিয়ে তর্ক করছে? আমি বললাম: হে আমার রব আমি জানি না, -তিনি তা তিনবার বললেন- রাসূল বলেন: আমি দেখলাম তিনি (আল্লাহ) নিজ হাতের তালু আমার ঘাড়ের ওপর রাখলেন, এমনকি আমি তার আঙ্গুলের শীতলতা আমার বুকের মধ্যে অনুভব করেছি, ফলে আমার সামনে প্রত্যেক বস্তু জাহির হল ও আমি চিনলাম। অতঃপর বললেন: হে মুহাম্মদ, আমি বললাম: লাব্বাইক হে আমার রব। তিনি বললেন: ঊর্ধ্ব জগতের ফেরেশতারা কি নিয়ে তর্ক করছে? আমি বললাম: কাফফারা সম্পর্কে। তিনি বললেন: তা কি? আমি বললাম: জামাতের জন্য হাঁটা, সালাতের পর মসজিদে বসে থাকা, কষ্টের সময় পূর্ণরূপে ওযু করা। তিনি বলেন: অতঃপর কোন বিষয়ে? আমি বললাম: পানাহার করানো, সুন্দর কথা বলা, মানুষের ঘুমিয়ে থাকাবস্থায় রাতে সালাত আদায় করা। তিনি (আল্লাহ) বললেন: তুমি চাও, আমি বললাম:

اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ فِعْلَ الْخَيْرَاتِ وَتَرْكَ الْمُنْكَرَاتِ وَحُبَّ الْمَسَاكِينِ وَأَنْ تَغْفِرَ لِي وَتَرْحَمَنِي وَإِذَا أَرَدْتَ فِتْنَةَ قَوْمٍ فَتَوَفَّنِي غَيْرَ مَفْتُونٍ، أَسْأَلُكَ حُبَّكَ وَحُبَّ مَنْ يُحِبُّكَ، وَحُبَّ عَمَلٍ يُقَرِّبُ إِلَى حُبِّكَ

“হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছে কল্যাণের কাজ করার তৌফিক চাই, খারাপ কাজ ছেড়ে দেয়ার তৌফিক চাই, অভাবীদের জন্য ভালোবাসা, আর আপনি যেন আমাকে ক্ষমা করেন ও আমার প্রতি রহম করেন। আর যখন আপনি কোন কাওমকে ফিতনা তথা পরীক্ষায় নিপতিত করতে চান, তখন আমাকে পরীক্ষায় নিপতিত না করে মৃত্যু দিন। আমি আপনার কাছে আপনার ভালোবাসা, আপনাকে যে ভালোবাসে তার ভালবাসা এবং এমন আমলের ভালোবাসা চাই যা আমাকে আপনার ভালোবাসার নিকটে নিয়ে যাবে।” রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: নিশ্চয় এ বাক্যগুলো সত্য, তোমরা এগুলো শিখ ও শিক্ষা দাও”। [তিরমিযি] হাদিসটি সহিহ।

136- عَنْ مُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ ( قَالَ: احْتُبِسَ عَنَّا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ذَاتَ غَدَاةٍ عَنْ صَلَاةِ الصُّبْحِ حَتَّى كِدْنَا نَتَرَاءَى عَيْنَ الشَّمْسِ، فَخَرَجَ سَرِيعًا فَثُوِّبَ بِالصَّلَاةِ، فَصَلَّى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَتَجَوَّزَ فِي صَلَاتِهِ فَلَمَّا سَلَّمَ دَعَا بِصَوْتِهِ فَقَالَ لَنَا: «عَلَى مَصَافِّكُمْ كَمَا أَنْتُمْ» ثُمَّ انْفَتَلَ إِلَيْنَا ثُمَّ قَالَ: «أَمَا إِنِّي سَأُحَدِّثُكُمْ مَا حَبَسَنِي عَنْكُمْ الْغَدَاةَ، إنِّي قُمْتُ مِنْ اللَّيْلِ فَتَوَضَّأْتُ وَصَلَّيْتُ مَا قُدِّرَ لِي فَنَعَسْتُ فِي صَلَاتِي حتى اسْتَثْقَلْتُ فَإِذَا أَنَا بِرَبِّي -تَبَارَكَ وَتَعَالَى- فِي أَحْسَنِ صُورَةٍ، فَقَالَ: يَا مُحَمَّدُ, قُلْتُ: لَبَّيْكَ رَبِّ. قَالَ: فِيمَ يَخْتَصِمُ الْمَلَأُ الْأَعْلَى؟ قُلْتُ: لَا أَدْرِي رَبِّ-قَالَهَا ثَلَاثًا- قَالَ: فَرَأَيْتُهُ وَضَعَ كَفَّهُ بَيْنَ كَتِفَيَّ حَتَّى وَجَدْتُ بَرْدَ أَنَامِلِهِ بَيْنَ ثَدْيَيَّ فَتَجَلَّى لِي كُلُّ شَيْءٍ وَعَرَفْتُ. فَقَالَ: يَا مُحَمَّدُ، قُلْتُ: لَبَّيْكَ رَبِّ، قَالَ: فِيمَ يَخْتَصِمُ الْمَلَأُ الْأَعْلَى؟ قُلْتُ: فِي الْكَفَّارَاتِ، قَالَ: مَا هُنَّ؟ قُلْتُ: مَشْيُ الْأَقْدَامِ إِلَى الْجَمَاعَاتِ وَالْجُلُوسُ فِي الْمَسَاجِدِ بَعْدَ الصَّلَوَاتِ، وَإِسْبَاغُ الْوُضُوءِ فِي الْمَكْرُوهَاتِ، قَالَ: ثم فِيم؟َ قُلْتُ: إِطْعَامُ الطَّعَامِ، وَلِينُ الْكَلَامِ وَالصَّلَاةُ بِاللَّيْلِ وَالنَّاسُ نِيَامٌ، قَالَ: سَلْ، قُلْتُ: اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ فِعْلَ الْخَيْرَاتِ وَتَرْكَ الْمُنْكَرَاتِ وَحُبَّ الْمَسَاكِينِ وَأَنْ تَغْفِرَ لِي وَتَرْحَمَنِي وَإِذَا أَرَدْتَ فِتْنَةَ قَوْمٍ فَتَوَفَّنِي غَيْرَ مَفْتُونٍ، أَسْأَلُكَ حُبَّكَ وَحُبَّ مَنْ يُحِبُّكَ، وَحُبَّ عَمَلٍ يُقَرِّبُ إِلَى حُبِّكَ». قَالَ رَسُولُ اللَّه صلى الله عليه وسلم : ِ «إِنَّهَا حَقٌّ فَادْرُسُوهَا ثُمَّ تَعَلَّمُوهَا». ( ت ) صحيح


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ৮ পর্যন্ত, সর্বমোট ৮ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে