পরিচ্ছেদঃ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাদীসে যে خِدَاجٌ (অসম্পূর্ণতার) কথা বলেছেন, এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো এমন অসম্পূর্ণতা, যাতে সালাত শুদ্ধ হয় না; এমন অসম্পূর্ণতা নয় যা সহ সালাত শুদ্ধ হয়ে যায়
১৭৮৬. আবূ হুরাইরা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “ঐ সালাত শুদ্ধ হয় না, যাতে সূরা ফাতিহা পাঠ করা হয় না।” অধঃস্তন রাবী বলেন, “আমি বললাম, “আর যদি আমি ইমামের পেছনে থাকি?” তখন তিনি আমার হাত ধরলেন এবং বললেন, “তুমি মনে মনে পড়বে।”[1]
আবূ হাতিম ইবনু হিব্বান রহিমাহুল্লাহ বলেন, “সালাত শুদ্ধ হয় না” বলার হাদীসে এই কথা ইমাম শু‘বাহ ছাড়া আর কেউ বলেননি এবং ইমাম শু‘বাহ থেকে ওয়াহাব বিন জারীর এবং মুহাম্মাদ বিন কাসীর ছাড়া আর কেউ হাদীসটি বর্ণনা করেননি।”
আবূ হাতিম ইবনু হিব্বান রহিমাহুল্লাহ আরো বলেন, “شَرَائِطِ الْأَخْبَارِ কিতাবে যেমনটা আমরা বর্ণনা করেছি যে, কুর‘আনের হুকুমগুলো কখনো স্বয়ং সম্পূর্ণ হয়, আর কখনো স্বয়ং সম্পূর্ণ হয় না, এমনকি কোন কোন সময় এমন স্বয়ংসম্পূর্ণ হয় যে, কুরআনের কিছু কিছু হুকুম যেভাবে আম বা সাধারণভাবে বর্ণিত হয়, সেভাবে সাধারণভাবেই প্রয়োগ হয়। আবার কোন কোন সময় স্বয়ং সম্পূর্ণ হয় না, এমনকি কিছু হুকুম ব্যাখ্যাহীন শব্দ ব্যবহারের ন্যায় ব্যবহৃত হয়, তবে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুন্নাত তথা হাদীস সেসবের ব্যাখ্যা করেছে।
অপরদিকে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সমস্ত সুন্নাত তথা হাদীস স্বয়ংসম্পূর্ণ, সেসবের ব্যাখ্যার জন্য কুরআনের শরনাপন্ন হওয়ার প্রয়োজন পড়ে না, বরং হাদীস কুরআনের দ্বর্থবোধক, ব্যাখ্যাহীন হুকুমের ব্যাখ্যা প্রদান করে। মহান আল্লাহ বলেছেন, وَأَنْزَلْنَا إِلَيْكَ الذِّكْرَ لَتُبَيِّنَ لِلنَّاسِ مَا نُزِّلَ إِلَيْهِمْ (আর আমরা আপনার প্রতি যিকর অবতীর্ণ করেছি, যাতে আপনি মানুষের কাছে ব্যাখ্যা করতে পারেন, যা তাদের প্রতি অবতীর্ণ করা হয়েছে। -সূরা নাহল: ৪৪)
কাজেই মহান আল্লাহ জানিয়ে দিলেন যে, أَقِيمُوا الصَّلَاةَ وَآتُوا الزَّكَاةَ ( তোমরা সালাত প্রতিষ্ঠা করো, যাকাত প্রদান করো।–সূরা বাকারাহ: ৪৩) এবং এই জাতীয় যত ব্যাখ্যাহীন হুকুম কুরআনে রয়েছে, এসবের ব্যাখ্যাকারী হলেন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। এটা একেবারেই অসম্ভব যে, কোন ব্যাখ্যাকৃত জিনিস ব্যাখ্যাহীন জিনিসের মুখাপেক্ষী হবে। বরং ব্যাখ্যাহীন জিনিসের প্রয়োজন ব্যাখ্যাকৃত জিনিসের শরনাপন্ন হওয়া। এটা ঠিক তার কথার বিপরীত যে ব্যক্তি বলে যে, হাদীসসমূহকে কুরআনের সামনে পেশ করা আবশ্যক। এভাবে সে এমন কিছু নিয়ে আসে, যা হাদীসের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় এবং মানুষের বিবেক-বুদ্ধিও তার বিশুদ্ধতাকে প্রতিহত করে।”
ذِكْرُ الْبَيَانِ بِأَنَّ الْخِدَاجَ الَّذِي قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي هَذَا الْخَبَرِ هُوَ النَّقْصُ الَّذِي لَا تُجْزِئُ الصَّلَاةُ مَعَهُ دُونَ أَنْ يَكُونَ نَقْصًا تَجُوزُ الصَّلَاةُ به
1786 - أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ إِسْحَاقَ بْنِ خُزَيْمَةَ قَالَ: حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى الذُّهْلِيُّ قَالَ: حَدَّثَنَا وَهْبُ بْنُ جَرِيرٍ قَالَ: حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ الْعَلَاءِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ عَنْ أَبِيهِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: (لَا تُجْزِئُ صَلَاةٌ لَا يُقْرَأُ فِيهَا بِفَاتِحَةِ الْكِتَابِ) قُلْتُ: وَإِنْ كُنْتُ خَلْفَ الْإِمَامِ؟ قَالَ: فَأَخَذَ بِيَدِي وَقَالَ: (اقْرَأْ في نفسك)
الراوي : أَبُو هُرَيْرَةَ | المحدث : العلامة ناصر الدين الألباني | المصدر : التعليقات الحسان على صحيح ابن حبان
الصفحة أو الرقم: 1786 | خلاصة حكم المحدث: صحيح ـ ((الإرواء)) (502)، ((صحيح أبي داود)) (779)
قَالَ أَبُو حَاتِمٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ: لَمْ يَقُلْ فِي خَبَرِ الْعَلَاءِ هَذَا: (لَا تُجْزِئُ صَلَاةٌ) إِلَّا شُعْبَةُ وَلَا عَنْهُ إِلَّا وَهْبُ بْنُ جَرِيرٍ وَمُحَمَّدُ بْنُ كَثِيرٍ وَقَالَ: هَذِهِ الْأَخْبَارُ مِمَّا ذَكَرْنَا فِي كِتَابِ (شَرَائِطِ الْأَخْبَارِ) أَنَّ خِطَابَ الْكِتَابِ قَدْ يَستقِلُّ بِنَفْسِهِ فِي حَالَةٍ دُونَ حَالَةٍ حَتَّى يُسْتَعْمَلَ عَلَى عُمُومِ مَا وَرَدَ الْخَطَّابُ فِيهِ وَقَدْ لَا يستقِلُّ فِي بَعْضِ الْأَحْوَالِ حَتَّى يُسْتَعْمَلَ عَلَى كَيْفِيَّةِ اللَّفْظِ الْمُجْمَلِ الَّذِي هُوَ مُطْلَقُ الْخِطَابِ فِي الْكِتَابِ دُونَ أَنْ تُبَيِّنَهَا السُّنَنُ وَسُنَنُ الْمُصْطَفَى صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كُلُّهَا مُسْتَقِلَّةٌ بِأَنْفُسِهَا لَا حَاجَةَ بِهَا إِلَى الْكِتَابِ الْمُبَيِّنَةُ لِمُجْمَلِ الْكِتَابِ وَالْمُفُسِّرَةُ لِمُبْهَمِهِ قَالَ اللَّهُ جَلَّ وَعَلَا: {وَأَنْزَلْنَا إِلَيْكَ الذِّكْرَ لَتُبَيِّنَ لِلنَّاسِ مَا نُزِّلَ إِلَيْهِمْ} [النحل: 44] فَأَخْبَرَ جَلَّ وَعَلَا أَنَّ الْمُفَسِّرَ لِقَوْلِهِ: {أَقِيمُوا الصَّلَاةَ وَآتُوا الزَّكَاةَ} [البقرة: 43] وَمَا أَشَبْهَهَا مِنْ مُجْمَلِ الْأَلْفَاظِ فِي الْكِتَابِ رَسُولُهُ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَمُحَالٌ أَنْ يَكُونَ الشَّيْءُ الْمُفَسَّرُ لَهُ الْحَاجَةُ إِلَى الشَّيْءِ الْمُجْمَلِ وَإِنَّمَا الْحَاجَةُ تَكُونُ لِلْمُجْمَلِ إِلَى الْمُفَسَّرِ ضِدَّ قَوْلِ مَنْ زَعَمَ أَنَّ السُّنَنَ يَجِبُ عَرْضُهَا عَلَى الْكِتَابِ فَأَتَى بِمَا لَا يُوَافِقُهُ الْخَبَرُ وَيَدْفَعُ صِحَّتَهُ النَّظَرُ.
হাদীসটিকে আল্লামা শুআইব আল আরনাঊত রহিমাহুল্লাহ মুসলিমের শর্তে সহীহ বলেছেন। আল্লামা নাসির উদ্দিন আলবানী রহিমাহুল্লাহ হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন। (সহীহ আবূ দাঊদ: ৭৭৯)