পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - সমষ্টিগতভাবে মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য
৬২৫৪-[৫৯] উক্ত রাবী [আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর সামনে আযমী (অনারব) লোকেদের আলোচনা উঠল। তখন রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, তোমাদের, অথবা বললেন, তোমাদের কিছু সংখ্যক অপেক্ষা সেই আযমীগণ অথবা বললেন, তাদের কতিপয় লোক আমার কাছে অধিক নির্ভরযোগ্য। (তিরমিযী)
اَلْفصْلُ الثَّالِثُ (بَاب جَامع المناقب)
وَعَنْهُ قَالَ: ذُكِرَتِ الْأَعَاجِمُ عِنْدَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: لَأَنَا بِهِمْ أَوْ بِبَعْضِهِمْ أَوْثَقُ مِنِّي بِكُمْ أَوْ بِبَعْضِكُمْ رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ
اسنادہ ضعیف ، رواہ الترمذی (3932 وقال : غریب) * صالح بن ابی صالح مھران ضعیف (انظر تقریب التھذیب : 2867) و سفیان بن وکیع خعیف ایضًا ۔
(ضَعِيف)
ব্যাখ্যা: (لَأَنَا بِهِمْ أَوْ بِبَعْضِهِمْ) এটা রাবীর সন্দেহের কারণে। (بِهِمْ) দ্বারা তাদের সবাই উদ্দেশ্য হওয়া বেশি স্পষ্ট। অতএব (أَوْ بِبَعْضِهِمْ أَوْثَقُ) তার বিরোধী নয়। অর্থাৎ দীন তলবে তাদের ওপর নির্ভর করা বেশি প্রত্যাশিত। (مِنِّي بِكُمْ أَوْ بِبَعْضِكُمْ) কেউ বলেন, এতে অনারবদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রকাশ পেয়েছে। আমি বলব, এর ভাবার্থ আল্লাহর বাণী: وَ لَوۡ نَزَّلۡنٰهُ عَلٰی بَعۡضِ الۡاَعۡجَمِیۡنَ ﴿۱۹۸﴾ فَقَرَاَهٗ عَلَیۡهِمۡ مَّا کَانُوۡا بِهٖ مُؤۡمِنِیۡنَ ﴿۱۹۹﴾ “আমি যদি তা কোন অনারবের প্রতি অবতীর্ণ করতাম; অতঃপর সে তা তাদের নিকট পাঠ করত, তাহলে তারা তাতে বিশ্বাস আনত না”- (সূরা আশ শুআরা ২৬: ১৯৮-১৯৯)।
তিনি আরো বলেন, (وَ لَوۡ جَعَلۡنٰهُ قُرۡاٰنًا اَعۡجَمِیًّا لَّقَالُوۡا لَوۡ لَا فُصِّلَتۡ اٰیٰتُهٗ ؕ ءَؔاَعۡجَمِیٌّ وَّ عَرَبِیٌّ ؕ) “আমি যদি একে অনারব ভাষায় (অবতীর্ণ) কুরআন করতাম তাহলে তারা অবশ্যই বলত- এর আয়াতগুলো সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করা হলো না কেন? আশ্চর্য ব্যাপার। কিতাব হলো অনারব দেশীয় আর শ্রোতারা হলো ‘আরবীভাষী...”- (সূরাহ্ ফুসসিলাত ৪১: ৪৪)।
ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, (بِكُمْ) অথবা (بَعْدُكُمْ) থেকে উদ্দেশ্য হলো এক বিশেষ দল। যাদের আল্লাহর পথে ব্যয় করার জন্য আহ্বান করা হলে তারা না করে বসে পড়ত। এটা তাদের ওপর ভৎসনা ও নিন্দাস্বরূপ যা প্রমাণিত। হাদীসে বর্ণিত আল্লাহর এ বাণী দ্বারা:
(وَ اِنۡ تَتَوَلَّوۡا یَسۡتَبۡدِلۡ قَوۡمًا غَیۡرَکُمۡ) “...তোমরা যদি মুখ ফিরিয়ে নাও তাহলে তিনি তোমাদের পরিবর্তে অন্য জাতিকে নিয়ে আসবে..."- (সূরাহ্ মুহাম্মাদ ৪৭: ৩৮)। কারণ এরপরে তা বর্ণিত হয়েছে, (هٰۤاَنۡتُمۡ هٰۤؤُلَآءِ تُدۡعَوۡنَ لِتُنۡفِقُوۡا فِیۡ سَبِیۡلِ اللّٰهِ ۚ فَمِنۡکُمۡ مَّنۡ یَّبۡخَلُ) “দেখ, তোমরা তো তারাই, তোমাদেরকে আল্লাহর পথে ব্যয় করার জন্য ডাক দেয়া হচ্ছে, তখন তোমাদের কিছু লোকে কৃপণতা করছে...”- (সূরাহ মুহাম্মাদ ৪৭: ৩৮)।
অর্থাৎ তোমরা এমন প্রত্যক্ষদর্শী যার অবস্থা সম্পর্কে অভিজ্ঞতা ও আল্লাহর পথে খরচ করা তোমাদের জন্য কল্যাণকর তা জানার পরেও তোমাদেরকে ডাকা হলে তোমরা বিরত থাকছ এবং পৃষ্ঠপ্রদর্শন করছ। যদি তোমাদের এ পৃষ্ঠপ্রদর্শন চলতে থাকে তাহলে আল্লাহ তোমাদের পরিবর্তে এমন জাতির উত্থান ঘটাবেন যারা স্বীয় জান ও মালকে আল্লাহর পথে ব্যয় করবে। আর তারা তোমাদের মতো চূড়ান্ত বখিলতা দেখাবে না। এটা তাদের জন্য খরচ করার প্রতি উৎসাহ দান ও উপস্থাপনাস্বরূপ। অতএব এতে অগ্রাধিকার প্রদান আবশ্যক হয় না। আমি বলব, যদি সেটা সাধারণভাবে অগ্রাধিকার প্রদানকে আবশ্যক করে তাহলে তা কুরআন ও সুন্নাহর বিপরীত হবে। যেহেতু এ অর্থ শব্দের ব্যপকতার মাধ্যমে ফুটে উঠছে। বিশেষ কোন কারণে নয়। আর যদি এর মর্মার্থ সাধারণভাবে অগ্রাধিকার প্রদানকে আবশ্যক না করে তবুও সঠিক। কারণ তারা কোন কোন গুণে ‘আরবদের চেয়ে শ্রেষ্ঠ।
আর এটা নতুন কিছু নয় যে, পাওয়া যাবে (مفضول) (যার ওপর অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে) এর মধ্যে বেশি মর্যাদা (فاضل) তথা শ্রেষ্ঠ ব্যক্তির তুলনায় অতএব নিঃসন্দেহে অনারব জাতির চাইতে ‘আরব জাতিই অধিক শ্রেষ্ঠ। বস্তুত আলোচনা হলো কোন কোন লোকের ব্যাপারে আর আল্লাহ বান্দাদের সম্পর্কে অধিক জ্ঞাত। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)