৬২১০

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - সমষ্টিগতভাবে মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য

৬২১০-[১৫] কায়স ইবনু উবাদ (রহ.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন আমি মদীনায় মসজিদে বসা ছিলাম। এমন সময় এক লোক মসজিদে প্রবেশ করলেন, যার মুখমণ্ডলে নম্রতার ছাপ। (তাকে দেখে) লোকেরা বলে উঠল, এ লোকটি জান্নাতী। (আগন্তুক) লোকটি সংক্ষিপ্তভাবে দু’রাকআত সালাত আদায় করলেন, অতঃপর মসজিদ হতে বের হলেন। (বর্ণনকারী কায়স বলেন,) আমিও তার পিছনে পিছনে চলে বললাম, আপনি যখন মসজিদে প্রবেশ করেছিলেন, তখন লোকেরা বলেছিল, এ লোক জান্নাতী। তখন তিনি বললেন, আল্লাহর শপথ! কোন লোকের পক্ষে এমন কথা বলা উচিত নয়, যা সে জানে না। আসল ব্যাপারটি আমি তোমাকে পুরোপুরি বলছি, লোকেরা আমার সম্পর্কে এমন ধারণা কেন করে।
নবী (সা.) -এর সময়ে আমি একটি স্বপ্ন দেখেছিলাম এবং তা নবী (সা.) -এর কাছে বর্ণনা করলাম। আমি স্বপ্নে দেখলাম, আমি যেন একটি বাগানের মাঝে। এই বলে তিনি ঐ বাগানের বিশালতা ও তার সবুজ-শ্যামল শোভা-দৃশ্যের কথা উল্লেখ করলেন। অতঃপর বললেন, বাগানের মধ্যভাগে ছিল লোহার একটি খুঁটি। খুঁটিটির নিম্নাংশ মাটিতে এবং তার উপরের অংশ আকাশ পর্যন্ত। সে খুঁটিটির উপরের প্রান্তে রয়েছে একটি হাতল। আমাকে বলা হলো, এ খুঁটিতে আরোহণ কর আর আমি আরোহন করতে লাগলাম। অবশেষে খুঁটিটির উপরের প্রান্তে পৌছে আমি হাতলটি ধরে ফেললাম। তখন আমাকে বলা হলো, শক্তভাবে ধরে রাখ। অতঃপর ঐ কড়াটি আমার হাতে ধরা অবস্থায় আমি ঘুম হতে জেগে উঠলাম।
তারপর আমি নবী (সা.) -এর কাছে এ স্বপ্নের কথা উল্লেখ করলে তিনি (তার ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে) বললেন, ঐ বাগানটি হলো ’ইসলাম’, ঐ খুঁটিটি হলো ইসলামের খুঁটি, আর ঐ হাতলটি হলো ইসলামের সুদৃঢ় কড়া। অতএব তুমি মৃত্যু অবধি ইসলামের উপর অটল থাকবে। (রাবী বলেন,) আর ঐ লোকটি ছিলেন আবদুল্লাহ ইবনু সালাম (রাঃ)। (বুখারী ও মুসলিম)

الفصل الاول (بَاب جَامع المناقب)

وَعَنْ قَيْسِ بْنِ عُبَادٍ قَالَ: كُنْتُ جَالِسًا فِي مَسْجِدِ الْمَدِينَةِ فَدَخَلَ رَجُلٌ عَلَى وَجْهِهِ أَثَرُ الْخُشُوعِ فَقَالُوا: هَذَا رَجُلٌ مِنْ أَهْلِ الْجَنَّةِ فَصَلَّى رَكْعَتَيْنِ تَجَوَّزَ فِيهِمَا ثُمَّ خَرَجَ وَتَبِعْتُهُ فَقُلْتُ: إِنَّكَ حِينَ دَخَلْتَ الْمَسْجِدَ قَالُوا: هَذَا رَجُلٌ مِنْ أَهْلِ الْجَنَّةِ. قَالَ: وَاللَّهِ مَا يَنْبَغِي لِأَحَدٍ أَنْ يَقُولَ مَا لَا يَعْلَمُ فَسَأُحَدِّثُكَ لِمَ ذَاكَ؟ رَأَيْتُ رُؤْيَا عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَصَصْتُهَا عَلَيْهِ وَرَأَيْتُ كَأَنِّي فِي رَوْضَةٍ - ذَكَرَ مِنْ سَعَتِهَا وَخُضْرَتِهَا - وَسَطَهَا عَمُودٌ مِنْ حَدِيدٍ أَسْفَلُهُ فِي الْأَرْضِ وَأَعْلَاهُ فِي السَّمَاءِ فِي أَعْلَاهُ عُرْوَةٌ فَقِيلَ لِيَ: ارْقَهْ. فَقُلْتُ: لَا أَسْتَطِيعُ فَأَتَانِي مِنْصَفٌ فَرَفَعَ ثِيَابِي مِنْ خَلْفِي فرقِيتُ حَتَّى كُنْتُ فِي أَعْلَاهُ فَأَخَذْتُ بِالْعُرْوَةِ فَقِيلَ: اسْتَمْسِكْ فَاسْتَيْقَظْتُ وَإِنَّهَا لَفِي يَدِي فَقَصَصْتُهَا عَلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: «تِلْكَ الرَّوْضَةُ الْإِسْلَامُ وَذَلِكَ الْعَمُودُ عَمُودُ الْإِسْلَامِ وَتِلْكَ العروة الْعُرْوَةُ الْوُثْقَى فَأَنْتَ عَلَى الْإِسْلَامِ حَتَّى تَمُوتَ وَذَاكَ الرَّجُلُ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ سَلَامٍ» . مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ

متفق علیہ ، رواہ البخاری (3813) و مسلم (148 / 2484)، (6381) ۔
(مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ)

وعن قيس بن عباد قال: كنت جالسا في مسجد المدينة فدخل رجل على وجهه اثر الخشوع فقالوا: هذا رجل من اهل الجنة فصلى ركعتين تجوز فيهما ثم خرج وتبعته فقلت: انك حين دخلت المسجد قالوا: هذا رجل من اهل الجنة. قال: والله ما ينبغي لاحد ان يقول ما لا يعلم فساحدثك لم ذاك؟ رايت رويا على عهد رسول الله صلى الله عليه وسلم فقصصتها عليه ورايت كاني في روضة - ذكر من سعتها وخضرتها - وسطها عمود من حديد اسفله في الارض واعلاه في السماء في اعلاه عروة فقيل لي: ارقه. فقلت: لا استطيع فاتاني منصف فرفع ثيابي من خلفي فرقيت حتى كنت في اعلاه فاخذت بالعروة فقيل: استمسك فاستيقظت وانها لفي يدي فقصصتها على النبي صلى الله عليه وسلم فقال: «تلك الروضة الاسلام وذلك العمود عمود الاسلام وتلك العروة العروة الوثقى فانت على الاسلام حتى تموت وذاك الرجل عبد الله بن سلام» . متفق عليه متفق علیہ ، رواہ البخاری (3813) و مسلم (148 / 2484)، (6381) ۔ (متفق عليه)

ব্যাখ্যা: উক্ত হাদীসের ব্যাখ্যায় ইমাম নবাবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, 'আবদুল্লাহ ইবনু সালাম (রাঃ) তাদের কথাকে অস্বীকার করেছেন, এই কারণে যে, তারা তার জান্নাতী হওয়ার বিষয়টি অকাট্যভাবে বলছিল। আর হতে পারে যে, সা'দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস-এর হাদীসটি তখনো তিনি শুনেননি। যে হাদীসে রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন যে, আবদুল্লাহ ইবনু সালাম জান্নাতী।
অথবা এটিও হতে পারে যে, তিনি নিজের প্রশংসা শুনতে চাননি। তাই বিনয়ের সাথেই এ বিষয়টি কায়স ইবনু 'উবাদ-এর সাথে বর্ণনা করেছেন।
হাদীসে বলা হয়েছে, আবদুল্লাহ ইবনু সালাম (রাঃ) ঘুম থেকে জেগে উঠলেন তখনও তা তার হাতেই ছিল। এই কথাটির ব্যাখ্যা হতে পারে এভাবে যে, যদি সরাসরি ধরে নেয়া হয় যে, তা তার হাতে তখনও ছিল। তাহলে এটিও হতে পারে। কারণ আল্লাহর কাছে অসম্ভব কিছু নেই। কিন্তু এটি একটি অভ্যাস পরিপন্থী বিষয় হয়ে যায়। তাই এক্ষেত্রে বিভিন্ন ব্যাখ্যাকারী বলেছেন, তিনি যখন ঘুম থেকে জেগে উঠলেন তখন দেখেন তার হাত মুষ্টিবদ্ধই আছে। (মিরক্বাতুল মাফাতীহঃ শারহুন নাবাবী ১৬শ খণ্ড, ৩৮ পৃ., হা. ২৪৮৪)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৩০: মান-মর্যাদা (كتاب المناقب)