৫৮৯৪

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - মু'জিযার বর্ণনা

৫৮৯৪-[২৭] আবূ সাঈদ আল খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার আমরা রাসূলুল্লাহ (সা.) এর কাছে ছিলাম। তিনি গনীমতের সম্পদ বিতরণ করছিলেন। তখন বানী তামীম গোত্রের ’যুল খুওয়াইসিরাহ্’ নামক এক লোক এসে বলল, হে আল্লাহর রাসূল! ইনসাফ করুন। তখন রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, তোমার প্রতি দুঃখ! আমিই যদি ইনসাফ না করি, তাহলে ইনসাফ আর করবে কে? যদি আমি ইনসাফ না করি, তবে তো তুমি ধ্বংস ও ক্ষতিগ্রস্তই হলে। (অর্থাৎ তুমি ঈমানদার থাকবে না) তখন ’উমার (রাঃ) বললেন, আমাকে অনুমতি দিন, আমি তার ঘাড় উড়িয়ে দেই। রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, তাকে ছেড়ে দাও। কারণ, তার আরো কিছু সাথী আছে তোমাদের কেউ স্বীয় সালাতকে তাদের সালাতের সাথে এবং নিজের সিয়ামকে তাদের সিয়ামের সাথে তুলনা করলে নিজেদের সালাত সিয়ামকে তুচ্ছ মনে করবে। তারা কুরআন পাঠ করে। কিন্তু তা তাদের কণ্ঠনালী অতিক্রম করে না। তারা দীন ইসলাম হতে এমনভাবে বের হয়ে পড়বে, যেমন তীর শিকার ছেদ করে বের হয়ে পড়ে।
অতঃপর সে (শিকারী) তীরের বাঁট হতে ধারালো মাথা পর্যন্ত তাকিয়ে দেখে (কোথাও কোন কিছু লেগে আছে কিনা?) কিন্তু তাতে কিছু দেখতে পাওয়া যায়। অথচ তীরটি শিকারের নাড়িভুড়ি ও রক্ত-মাংস ভেদ করে গেছে। তাদের এক লোকের চিহ্ন হবে কালো বর্ণের, তার বাহুদ্বয়ের কোন এক বাহুর উপরে স্ত্রীলোকের স্তনের মতো ফুলা। অথবা বলেছেন, মাংসের একটি খণ্ডের মতো উঠে থাকবে, যা নাড়তে থাকবে এবং তারা উত্তম একটি দলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহে লিপ্ত হবে। বর্ণনাকারী আবূ সাঈদ আল খুদরী (রাঃ) বলেন, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, এ কথাগুলো আমি সরাসরি রাসূলুল্লাহ (সা.) হতে শুনেছি।
আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, ’আলী ইবনু আবূ ত্বালিব (রাঃ) সেই দলের খারিজীদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন। আমিও তার সাথে ছিলাম। যুদ্ধ শেষে ’আলী (রাঃ) (নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে) ঐ লোকটির খোঁজ নিতে নির্দেশ করেন। অতএব সন্ধান করে এক লোককে আনা হলো। বর্ণনাকারী আবূ সাঈদ আল খুদরী (রাঃ) বলেন, আমি তাকে লক্ষ্য করে দেখেছি, ঐ লোকটির সম্পর্কে নবী (সা.) যে চিহ্নসমূহ বলেছিলেন, তার মধ্যে সে সমস্ত চিহ্নগুলো বিদ্যমান ছিল।

অপর এক বর্ণনাতে আছে- (গনীমাতের সম্পদ বণ্টনের বিষয়ে) এমন এক লোক তাঁর সম্মুখে আসলো, যার চক্ষু দুটি ছিল কোটরাগত, কপাল উঁচু- সামনের দিকে বের হয়ে রয়েছে, দাড়ি ছিল ঘন, গণ্ডদ্বয় ছিল ফুলা আর মাথা ছিল ন্যাড়া। সে বলল, হে মুহাম্মাদ। আল্লাহকে ভয় কর। উত্তরে তিনি (সা.) বললেন, আমিই যদি নাফরমানি করি, তাহলে আল্লাহর আনুগত্য করবে কে? স্বয়ং আল্লাহ তা’আলা আমাকে দুনিয়াবাসীর ওপর আমানতদার বানিয়েছেন। আর তোমরা কি আমাকে আমানতদার মনে করো না? এ সময় এক লোক এ লোককে হত্যা করার জন্য [নবী (সা.) -এর কাছে] অনুমতি চাইলেন; কিন্তু তিনি নিষেধ করলেন। উক্ত লোকটি যখন চলে গেল, তখন নবী (সা.) বললেন, এ লোকের পরবর্তী বংশধরের মধ্যে এমন এক সম্প্রদায়ের আগমন ঘটবে, যারা কুরআন পড়বে, কিন্তু তা তাদের কণ্ঠনালী অতিক্রম করবে না। তারা দীন ইসলাম হতে এমনভাবে বের হয়ে যাবে যেমন শিকার হতে তীর বের হয়ে যায়। তারা ইসলামের অনুসারীদেরেকে হত্যা করবে এবং মূর্তিপূজারীদেরকে আপন অবস্থায় ছেড়ে রাখবে। যদি আমি তাদের নাগাল পেতাম, তাহলে অবশ্যই আমি তাদের সকলকে ’আদ জাতির মতো হত্যা করতাম। (বুখারী ও মুসলিম)

الفصل الاول (بَاب فِي المعجزا)

وَعَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ قَالَ بَيْنَمَا نَحْنُ عِنْدَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَهُوَ يَقْسِمُ قَسْمًا أَتَاهُ ذُو الْخوَيْصِرَة وَهُوَ رجلٌ من بني تَمِيم فَقَالَ يَا رسولَ الله اعْدِلْ فَقَالَ وَيلك وَمن يَعْدِلُ إِذَا لَمْ أَعْدِلْ قَدْ خِبْتَ وَخَسِرْتَ إِن لم أكن أعدل فَقَالَ عمر لَهُ ائْذَنْ لي أضْرب عُنُقه فَقَالَ دَعْهُ فَإِنَّ لَهُ أَصْحَابًا يَحْقِرُ أَحَدُكُمْ صَلَاتَهُ مَعَ صَلَاتِهِمْ وَصِيَامَهُ مَعَ صِيَامِهِمْ يَقْرَءُونَ الْقُرْآنَ لَا يُجَاوِزُ تَرَاقِيَهُمْ يَمْرُقُونَ مِنَ الدِّينِ كَمَا يَمْرُقُ السَّهْمُ مِنَ الرَّمِيَّةِ يُنْظَرُ إِلَى نَصْلِهِ إِلَى رُصَافِهِ إِلَى نَضِيِّهِ وَهُوَ قِدْحُهُ إِلَى قُذَذِهِ فَلَا يُوجَدُ فِيهِ شَيْءٌ قَدْ سَبَقَ الْفَرْثَ وَالدَّمَ آيَتُهُمْ رَجُلٌ أَسْوَدُ إِحْدَى عَضُدَيْهِ مِثْلُ ثَدْيِ الْمَرْأَةِ أَوْ مِثْلُ الْبَضْعَةِ تَدَرْدَرُ وَيخرجُونَ على حِين فِرْقَةٍ مِنَ النَّاسِ قَالَ أَبُو سَعِيدٍ أَشْهَدُ أَنِّي سَمِعْتُ هَذَا الْحَدِيثَ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَأَشْهَدُ أَنَّ عَلِيَّ بْنَ أَبِي طَالِبٍ قَاتَلَهُمْ وَأَنَا مَعَهُ فَأَمَرَ بذلك الرجل فالْتُمِسَ فَأُتِيَ بِهِ حَتَّى نَظَرْتُ إِلَيْهِ عَلَى نَعْتِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الَّذِي نَعَتَهُ وَفِي رِوَايَةٍ: أَقْبَلَ رَجُلٌ غَائِرُ الْعَيْنَيْنِ نَاتِئُ الجبين كَثُّ اللِّحْيَةِ مُشْرِفُ الْوَجْنَتَيْنِ مَحْلُوقُ الرَّأْسِ فَقَالَ يَا مُحَمَّد اتَّقِ الله فَقَالَ: «فَمن يُطِيع اللَّهَ إِذَا عَصَيْتُهُ فَيَأْمَنُنِي اللَّهُ عَلَى أَهْلِ الْأَرْضِ وَلَا تَأْمَنُونِي» فَسَأَلَ رَجُلٌ قَتْلَهُ فَمَنَعَهُ فَلَمَّا وَلَّى قَالَ: «إِنَّ مِنْ ضِئْضِئِ هَذَا قَوْمًا يَقْرَءُونَ الْقُرْآنَ لَا يُجَاوِزُ حَنَاجِرَهُمْ يَمْرُقُونَ من الإِسلام مروق السهْم من الرَّمية يقتلُون أَهْلَ الْإِسْلَامِ وَيَدَعُونَ أَهْلَ الْأَوْثَانِ لَئِنْ أَدْرَكْتُهُمْ لأقتلنهم قتل عَاد» . مُتَّفق عَلَيْهِ

متفق علیہ ، رواہ البخاری (3344) و مسلم (143 / 1064)، (2451) ۔
(مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ)

وعن ابي سعيد الخدري قال بينما نحن عند رسول الله صلى الله عليه وسلم وهو يقسم قسما اتاه ذو الخويصرة وهو رجل من بني تميم فقال يا رسول الله اعدل فقال ويلك ومن يعدل اذا لم اعدل قد خبت وخسرت ان لم اكن اعدل فقال عمر له اىذن لي اضرب عنقه فقال دعه فان له اصحابا يحقر احدكم صلاته مع صلاتهم وصيامه مع صيامهم يقرءون القران لا يجاوز تراقيهم يمرقون من الدين كما يمرق السهم من الرمية ينظر الى نصله الى رصافه الى نضيه وهو قدحه الى قذذه فلا يوجد فيه شيء قد سبق الفرث والدم ايتهم رجل اسود احدى عضديه مثل ثدي المراة او مثل البضعة تدردر ويخرجون على حين فرقة من الناس قال ابو سعيد اشهد اني سمعت هذا الحديث من رسول الله صلى الله عليه وسلم واشهد ان علي بن ابي طالب قاتلهم وانا معه فامر بذلك الرجل فالتمس فاتي به حتى نظرت اليه على نعت النبي صلى الله عليه وسلم الذي نعته وفي رواية: اقبل رجل غاىر العينين ناتى الجبين كث اللحية مشرف الوجنتين محلوق الراس فقال يا محمد اتق الله فقال: «فمن يطيع الله اذا عصيته فيامنني الله على اهل الارض ولا تامنوني» فسال رجل قتله فمنعه فلما ولى قال: «ان من ضىضى هذا قوما يقرءون القران لا يجاوز حناجرهم يمرقون من الاسلام مروق السهم من الرمية يقتلون اهل الاسلام ويدعون اهل الاوثان لىن ادركتهم لاقتلنهم قتل عاد» . متفق عليه متفق علیہ ، رواہ البخاری (3344) و مسلم (143 / 1064)، (2451) ۔ (متفق عليه)

ব্যাখ্যা: রাসূলুল্লাহ (সা.) জি'রানাহ্ নামক স্থানে খায়বার যুদ্ধে পাওয়া গনীমতের মাল বণ্টন করছিলেন। তখন বানূ তামীম গোত্রের যুল খুওয়াইসারাহ্ নামক এক ব্যক্তি আসলো। সে ছিল একজন মুনাফিক এবং খাওয়ারিযদের প্রধান। সেই খাওয়ারিযদের প্রথম প্রকাশ ঘটেছিল ‘আলী (রাঃ)-এর যুগে। সে এসে বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি ইনসাফ করুন।
অথচ রাসূল (সা.) মানুষের অভাব বুঝে তাদের প্রয়োজন অনুপাতে ইনসাফের সাথে গনীমতের মাল বণ্টন করছিলেন। তারপরেও যখন সে আল্লাহর রাসূলকে এই কথা বলল তখন তিনি রেগে গেলেন এবং বললেন তোমার বরবাদী হোক। আমি যদি ইনসাফ না করি তাহলে কে ইনসাফ করবে।
সেই স্থানে ‘উমার (রাঃ)-ও উপস্থিত ছিলেন। তিনি বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি অনুমতি দিন। আমি তার গর্দান উড়িয়ে দিচ্ছি। কিন্তু আল্লাহর রাসূল (সা.) তাকে অনুমতি না দিয়ে ছেড়ে দিতে বললেন।
বেহ শারহুস্ সুন্নাহ্ গ্রন্থে বলা হয়েছে যে, রাসূল (সা.) কেন তাকে হত্যা করতে নিষেধ করলেন। অথচ তিনি বলেছেন, যদি আমি তাদেরকে পাই তাহলে অবশ্যই আমি তাদেরকে হত্যা করব।
এর উত্তরে এভাবে বলা হয়ে থাকে যে, আল্লাহর রাসূল (সা.) তাদেরকে হত্যা করার ইচ্ছার কথা বলেছেন তাদেরকে হত্যা করার বৈধতা দেয়ার জন্য। আর তিনি অন্য কারণে তাকে হত্যা না করে ছেড়ে দিয়েছেন। সেটি হলো যে, মুশরিকরা বলাবলি করবে যে, মুহাম্মাদ নিজের সাথিদেরকেও হত্যা করে।
আকমাল এ বিষয়টির সাথে আরো কিছু বিষয় উল্লেখ করেন। আর তা হলো, রাসূল (সা.) তাকে হত্যা না করার কারণে তার উত্তম চরিত্রের আরো ব্যাপক প্রকাশ ঘটিয়েছেন। কারণ তিনি নিজের জন্য কোন প্রতিশোধ নেননি। অথচ সে তাকেই হীন চোখে লক্ষ্য করে বলেছে, হে মুহাম্মাদ! আপনি ইনসাফ করুন। আপনি আল্লাহকে ভয় করুন। অপর বর্ণনায় আছে, সে বলেছেন, এই বণ্টনের মাঝে কোন ধরনের ইনসাফ করা হয়নি। একজন রসূলের ব্যাপারে এ জাতীয় কথা সত্যিই অনেক বেদনাদায়ক, যা সহ্য করার মতো নয়। তারপরেও তিনি (সা.) ধৈর্যধারণ করেছেন।
(يَقْرَءُونَ الْقُرْآنَ) অর্থাৎ তারা কুরআন পড়বে। এখানে বুঝানো হয়েছে তারা দীর্ঘ সময় কুরআন তিলাওয়াত করবে। মদ, মাখরাজ, তাজবীদ, তারতীল সবকিছুর প্রতিই তারা খুব বেশি লক্ষ্য রাখবে এবং এই ক্ষেত্রে তারা অতিরঞ্জন করবে।
(لَا يُجَاوِزُ تَرَاقِيَهُمْ) অর্থাৎ তা তাদের কণ্ঠনালীকেও অতিক্রম করবে না। এখানে বুঝানো হয়েছে যে, তাদের পঠিত বিষয় তাদের কণ্ঠনালীকে অতিক্রম করবে না। কিন্তু এখানে এর দ্বারা ইঙ্গিত করা হয়েছে যে, তাদের ‘আমল উপরে উঠবে না এবং তাদের কুরআন তিলাওয়াত কবুলও হবে না।

কাষী ‘ইয়ায (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, তাদের কুরআন তিলাওয়াত করাটা তাদের জিহ্বাকে অতিক্রম করে হৃদয়ে পৌছবে না এবং সেই তিলাওয়াতে তাদের হৃদয়ের কোন পরিবর্তনও ঘটবে না।
(يَمْرُقُونَ مِنَ الدِّينِ....) অর্থাৎ তারা দীন থেকে বের হয়ে যাবে যেভাবে ধনুক তীর থেকে বের হয়ে যায়। এর দ্বারা দুটি উদ্দেশ্য হতে পারে- (১) তারা তীরের গতিতে ইমামের আনুগত্য থেকে বের হয়ে যাবে। (২) তারা তীরের গতিতে মুসলিমদের দল থেকে বের হয়ে যাবে।
তাদের বের হয়ে যাওয়াকে এখানে তীরের সাথে তুলনা করা হয়েছে এটি বুঝানোর জন্য যে, তীর ধনুক থেকে বের হয়ে যাওয়ার পর ধনুকে যেমন তীরের কোন চিহ্ন থাকে না। ঠিক তাদেরও ইসলাম থেকে বের হয়ে যাওযার পর তাদের মাঝে ইসলামের কোন চিহ্ন থাকবে না।
(وَيخرجُونَ على حِين فِرْقَةٍ مِنَ النَّاسِ) অর্থাৎ তারা সর্বোত্তম দলের বিরুদ্ধে বের হয়ে পড়বে। মিরকাত প্রণেতা বলেন, এখানে সর্বোত্তম দল বলে বুঝানো হয়েছে ‘আলী (রাঃ) এবং তার সাথীদেরকে।
(إِنَّ مِنْ ضِئْضِئِ هَذَا قَوْمًا...) অর্থাৎ নিশ্চয় এই ব্যক্তির ভিতর থেকে এমন এক সম্প্রদায়... এর ব্যাখ্যায় তুরিবিশতী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, যারা হাদীসের এই অংশ থেকে মনে করেন যে, তার থেকে যারা জন্মগ্রহণ করবে তারাই পরবর্তীতে খাওয়ারিয হবে। তারা আসল বিষয় থেকে অনেক দূরে চলে গেছেন। কারণ নবী (সা.) কর্তৃক তাকে এ কথা বলার সময় থেকে খাওয়ারিযদের প্রথম প্রকাশ পাওয়া পর্যন্ত এটি সম্ভব নয়। কেননা খাওয়ারিযদের প্রথম প্রকাশ ঘটেছিল ‘আলী (রাঃ)-এর শাসন আমলে। অতএব, রাসূল (সা.) কর্তৃক যুল খুওয়াইসারার উদ্দেশে উক্ত কথা বলার সময় থেকে ‘আলী (রাঃ)-এর শাসন ‘আমল পর্যন্ত যে সময়ের ব্যবধান আছে সেই সময়ের মধ্যে শুধু যুল খুওয়াইসারার সন্তানদের সংখ্যা এত বেশি পরিমাণে হওয়া সম্ভব নয়। তাহলে অনিবার্য কারণেই অন্য ব্যাখ্যা নিতে হবে। আর তা হলো হাদীসে তার ভিতর বলতে বুঝানো হয়েছে, তার মতাদর্শের।
অতএব যারা সর্বপ্রথম ‘আলী (রাঃ)-এর শাসন আমলে খাওয়ারিয হিসেবে বের হয়ে যায় তারা ছিল যুল খুওয়াইসারার মতাদর্শের লোক।
(يَمْرُقُونَ من الإِسلام) অর্থাৎ তারা ইসলাম থেকে বের হয়ে যাবে। মিরকাত প্রণেতা বলেন, যারা খাওয়ারিযদের কাফির বলে তারা এ হাদীসকে দলীল হিসেবে পেশ করে থাকে। আর ইসলাম থেকে বের হয়ে যাওয়া বলতে বুঝায় পরিপূর্ণভাবে ইসলাম থেকে বের হয়ে যাওয়াকে অথবা ইমামের আনুগত্য থেকে বের হয়ে যাওয়াকে।
ইমাম খত্ত্বাবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, এখানে ইসলাম থেকে বের হয়ে যাওয়ার অর্থ হলো ইমামের আনুগত্য থেকে বের হয়ে যাওয়া।
(لَئِنْ أَدْرَكْتُهُمْ لأقتلنهم قتل عَاد) অর্থাৎ যদি আমি তাদেরকে পাই তাহলে অবশ্যই আমি তাদেরকে ‘আদ জাতির মতো হত্যা করব।
মিরকাত প্রণেতা বলেন, তাদেরকে ‘আদ জাতির মতো হত্যা করার দ্বারা উদ্দেশ্য হলো, ‘আদ জাতিকে যেভাবে প্রবল বায়ু দিয়ে সমূলে ধ্বংস করা হয়েছে ঠিক রাসূল (সা.) তাদেরকেও সমূলে ধ্বংস করার ইচ্ছা করেছেন। কেউ কেউ বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর এ কথা দ্বারাই প্রমাণিত হয় যে, খাওয়ারিযদের হত্যা করা বৈধ। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৯: চারিত্রিক গুণাবলি ও মর্যাদাসমূহ (كتاب الْفَضَائِل وَالشَّمَائِل)