৫৭০৭

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - সৃষ্টির সূচনা ও নবী-রাসূলদের আলোচনা

৫৭০৭-[১০] উক্ত রাবী [আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: একদিন আইয়ুব আলায়হিস সালাম উলঙ্গ অবস্থায় গোসল করছিলেন, এমনি অবস্থায় তাঁর ওপর সোনালী পঙ্গপাল পতিত হলো। তখন আইয়ুব আলায়হিস সালাম সেগুলোকে দ্রুত ধরে কাপড়ে রাখতে লাগলেন। তখন তার প্রভু তাকে ডেকে বললেন, হে আইয়ূব! তুমি যা দেখছ, আমি কি তা হতে তোমাকে অমুখাপেক্ষী করে দেইনি। উত্তরে তিনি বললেন, হ্যা, নিশ্চয় আপনার ’ইজ্জতের শপথ! কিন্তু আপনার বারাকাত ও কল্যাণ হতে তো আমি অভাবমুক্ত নই। (বুখারী)

الفصل الاول (بَاب بدءالخلق وَذِكْرِ الْأَنْبِيَاءِ عَلَيْهِمُ الصَّلَاةُ وَالسَّلَامُ)

وَعَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: بَيْنَا أَيُّوبُ يَغْتَسِلُ عُرْيَانًا فَخَرَّ عَلَيْهِ جَرَادٌ مِنْ ذَهَبٍ فَجَعَلَ أَيُّوبُ يَحْثِي فِي ثَوْبِهِ فَنَادَاهُ رَبُّهُ: يَا أَيُّوبُ أَلَمْ أَكُنْ أَغْنَيْتُكَ عَمَّا تَرَى؟ قَالَ: بَلَى وَعِزَّتِكَ وَلَكِن لَا غنى بِي عَن بركتك . رَوَاهُ البُخَارِيّ

رواہ البخاری (279) ۔
(صَحِيح)

وعنه قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: بينا ايوب يغتسل عريانا فخر عليه جراد من ذهب فجعل ايوب يحثي في ثوبه فناداه ربه: يا ايوب الم اكن اغنيتك عما ترى؟ قال: بلى وعزتك ولكن لا غنى بي عن بركتك . رواه البخاري رواہ البخاری (279) ۔ (صحيح)

ব্যাখ্যা: (بَيْنَا أَيُّوبُ يَغْتَسِلُ عُرْيَانًا) “একদিন আইয়ুব আলায়হিস সালাম বিবস্ত্র অবস্থায় গোসল করছিলেন। অর্থাৎ মানুষ থেকে আড়াল হয়ে একাকি অবস্থায় কাপড় ছাড়া গোসল করছিলেন। তাই বুখারী (রহিমাহুল্লাহ) অধ্যায়টি এভাবে রচনা করেন, “নির্জনে বিবস্ত্র হয়ে গোসল করা এবং আঁড় করে গোসল করা।” ইমাম বুখারী (রহিমাহুল্লাহ) যে অধ্যায়ে এই হাদীসটি উল্লেখ করেন তারা পুরো শিরোনামটি এমন -  مَنِ اغْتَسَلَ عُرْيَانًا وَحْدَهُ فِي الْخَلْوَةِ، وَمَنْ تَسَتَّرَ فَالتَّسَتُّرُ أَفْضَلُ (وَقَالَ بَهْزٌ عَنْ أَبِيهِ عَنْ جَدِّهِ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «اللَّهُ أَحَقُّ أَنْ يُسْتَحْيَا مِنْهُ مِنَ النَّاسِ».)
“নির্জনে বিবস্ত্র হয়ে গোসল করা এবং পর্দা করে গোসল করা। তবে পর্দা করে গোসল করাই উত্তম। বাহয ইবনু হাকীম তার পিতা ও দাদার সূত্রে নবী (সা.) -এর বাণী বর্ণনা করেন, আল্লাহ তা'আলা লজ্জা পাওয়ার জন্য মানুষের চেয়ে অধিক হকদার।” (সহীহুল বুখারী- অধ্যায়, অনুচ্ছেদ: গোসল, নির্জনে বিবস্ত্র গোসল...)

 এ হাদীস থেকে নির্জনে উলঙ্গ হয়ে গোসল করার বৈধতা প্রমাণিত হয়, যদিও নির্জনে ও বিবস্ত্র না হয়েই গোসল করা উত্তম। যেমনটি বুখারীর অনুচ্ছেদ থেকে প্রমাণিত হয়। তবে আইয়ূব আলায়হিস সালাম গোসলের সময় পুরো বিবস্ত্র ছিলেন বলে প্রমাণিত হয় না। হতে পারে লুঙ্গি পরা ছিল এবং শরীরের অন্যান্য অঙ্গ খোলা ছিল। কেননা হাদীসের বাক্য (فَجَعَلَ أَيُّوبُ يَحْثِي فِي ثَوْبِهِ) “আইয়ূব তার কাপড়ে স্বর্ণের টিড়িগুলো তুলতে লাগলেন”; এখানে লুঙ্গি পরিহিত থাকার প্রতি ইঙ্গিত রয়েছে। তবে নির্জন অবস্থায় বস্ত্রহীন হয়ে গোসল বৈধ হিসেবে পুরো বিবস্ত্র থাকারও সম্ভাবনা রয়েছে। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)
(أَلَمْ أَكُنْ أَغْنَيْتُكَ عَمَّا تَرَى) “তুমি যা দেখছ তা থেকে আমি কি তোমাকে অমুখাপেক্ষী করে দেইনি?” ‘আল্লামাহ্ ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, আল্লাহ তা'আলার পক্ষ থেকে এমন বলা তিরস্কার নয়। কেননা ধনী হলেও সে তার ধনে তৃপ্ত হয় না, বরং আরো বেশি চায়। তাই আল্লাহ তা'আলার পক্ষ থেকে এমন বলা হয় স্নেহ ও পরীক্ষাস্বরূপ। তিনি এটা বলে দেখেন, বান্দা তার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে কিনা। তখন সে তার অধিক কৃতজ্ঞ হয়। তাই আইয়ূব আলায়হিস সালাম আল্লাহ তা'আলার কথার উত্তর দিয়ে বলেন, (بَلَى وَعِزَّتِكَ وَلَكِن لَا غنى بِي عَن بركتك) “অবশ্যই, হে আমার রব! তবে আপনার বরকত থেকে আমার অমুখাপেক্ষিতা নেই”।  (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৮: সৃষ্টির সূচনা ও কিয়ামতের বিভিন্ন অবস্থা (كتاب أَحْوَال الْقِيَامَة وبدء الْخلق)