পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ - হিসাব-নিকাশ, প্রতিশোধ গ্রহণ ও মীযানের বর্ণনা
৫৫৬১-[১৩] ’আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন এক লোক রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর সামনে এসে বসে বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আমার কাছে কতিপয় গোলাম আছে। আমার কাছে মিথ্যা কথা বলে, আমার ধন-সম্পদ খিয়ানত করে এবং আমার নির্দেশের অবাধ্য হয়, তাই আমি তাদেরকে গালমন্দ করি এবং মারধরও করে থাকি। (কিয়ামতে) তাদের ব্যাপারে আমার অবস্থা কী হবে? তখন রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, যখন কিয়ামত সংঘটিত হবে তখন গোলামদের খিয়ানত, অবাধ্য, মিথ্যা বলা এবং তোমার শাস্তি দেয়া সবকিছুর হিসাব নেয়া হবে। যদি তোমার শাস্তি প্রদান তাদের অন্যায়ের সমান হয়, তখন ব্যাপার সমান সমান থাকবে। তুমি পুণ্যও পাবে না এবং তোমাকে কোন শাস্তিও দেয়া হবে না। আর যদি তোমার শাস্তি প্রদান তাদের অন্যায়ের তুলনায় কম হয়, তখন তাদের অতিরিক্ত অপরাধের শাস্তি না দেয়ার জন্য তুমি সাওয়াব পাবে। কিন্তু যদি তোমার শাস্তি প্রদান তাদের অন্যায়ের তুলনায় বেশি হয়, তখন গোলামদের জন্য তোমার নিকট থেকে প্রতিশোধ নেয়া হবে। এ সকল কথা শুনে লোকটি অন্যত্র সরে দাঁড়াল এবং চিৎকার দিয়ে কাঁদতে লাগল। তখন রাসূলুল্লাহ (সা.) তাকে লক্ষ্য করে বললেন, তুমি কি আল্লাহর এ বাণীটি পড়নি?
(وَنَضَعُ الْمَوَازِينَ الْقِسْطَ لِيَوْمِ الْقِيَامَةِ فَلَا تُظْلَمُ نَفْسٌ شَيْئًا وَإِنْ كَانَ مِثْقَالَ حَبَّةٍ مِنْ خَرْدَلٍ أَتَيْنَا بِهَا وَكَفَى بِنَا حَاسِبِينَ) “কিয়ামতের দিন আমি ন্যায় ও নির্ভুল ওযনের পাল্লা স্থাপন করব এবং কোন লোকের প্রতি একটুও যুলম হবে না। যদি কোন ’আমল সরিষা দানা পরিমাণও হয় আমি তাও উপস্থিত করব, আর আমি হিসাব গ্রহণকারী হিসেবে যথেষ্ট"- (সূরাহ আল আম্বিয়া- ২১: ৪৭)। তখন লোকটি বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আমি আমার নিজের এবং ঐ সমস্ত গোলামদের ব্যাপারে তাদেরকে আমার কাছ থেকে পৃথক করে দেয়া অপেক্ষা উত্তম আর কিছু পচ্ছি না। আমি আপনাকে সাক্ষী করে বলছি যে, তারা সকলেই মুক্ত। (তিরমিযী)
اَلْفصْلُ الثَّالِثُ (باب الحساب و القصاص و المیزان)
عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ: جَاءَ رَجُلٌ فَقَعَدَ بَيْنَ يَدَيْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّ لِي مَمْلُوكِينَ يَكْذِبُونَنِي وَيَخُونُونَنِي وَيَعْصُونَنِي وَأَشْتِمُهُمْ وَأَضْرِبُهُمْ فَكَيْفَ أَنَا مِنْهُمْ؟ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِذَا كَانَ يَوْمُ الْقِيَامَةِ يُحْسَبُ مَا خَانُوكَ وَعَصَوْكَ وَكَذَّبُوكَ وَعِقَابُكَ إِيَّاهُمْ فَإِنْ كَانَ عِقَابُكَ إِيَّاهُمْ بِقَدْرِ ذُنُوبِهِمْ كَانَ كَفَافًا لَا لَكَ وَلَا عَلَيْكَ وَإِنْ كَانَ عِقَابُكَ إِيَّاهُمْ دُونَ ذَنْبِهِمْ كَانَ فَضْلًا لَكَ وَإِنْ كَانَ عِقَابُكَ إِيَّاهُمْ فَوْقَ ذُنُوبِهِمْ اقْتُصَّ لَهُمْ مِنْكَ الْفَضْلُ فَتَنَحَّى الرَّجُلُ وَجَعَلَ يَهْتِفُ وَيَبْكِي فَقَالَ لَهُ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: أَمَا تَقْرَأُ قَوْلَ اللَّهِ تَعَالَى: (وَنَضَعُ الْمَوَازِينَ الْقِسْطَ لِيَوْمِ الْقِيَامَةِ فَلَا تُظْلَمُ نَفْسٌ شَيْئًا وَإِنْ كَانَ مِثْقَالَ حَبَّةٍ مِنْ خَرْدَلٍ أَتَيْنَا بِهَا وَكَفَى بِنَا حَاسِبِينَ) فَقَالَ الرَّجُلُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ مَا أَجِدُ لِي وَلِهَؤُلَاءِ شَيْئًا خَيْرًا مِنْ مُفَارَقَتِهِمْ أُشْهِدُكَ أَنهم كلَّهم أحرارٌ. رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ
اسنادہ ضعیف ، رواہ الترمذی (3165 وقال : غریب) * الزھری مدلس و عنعن
ব্যাখ্যা: (مَمْلُوكِينَ) ক্রীতদাস শব্দটি বহু বচনে ব্যবহৃত হয়েছে। এখানে পুরুষ-মহিলা উভয়েই শামিল। অধিকাংশের প্রতি খেয়াল রেখে পুংলিঙ্গের সীগাহ ব্যবহার করা হয়েছে।
(فَكَيْفَ أَنَا مِنْهُمْ) অর্থাৎ তাদের গালমন্দ ও শাস্তির দেয়ার কারণে আল্লাহর সামনে আমার কি অবস্থা হবে? এ প্রশ্নের উত্তরে রাসূলুল্লাহ (সা.) বিস্তারিত বিবরণ দেন যা হাদীসের নীচের অংশ বিধৃত হয়েছে। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)