৫৫৫৪

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - হিসাব-নিকাশ, প্রতিশোধ গ্রহণ ও মীযানের বর্ণনা

৫৫৫৪-[৬] আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর কাছে ছিলাম, হঠাৎ তিনি হাসলেন। অতঃপর প্রশ্ন করলেন, তোমরা কি জান আমি কেন হাসছি? আমরা বললাম, আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলই ভালো জানেন। তিনি (সা.) বললেন, কিয়ামতের দিন বান্দা যে তার প্রভুর সাথে কথা বলবে, সে কথাটি স্মরণ করে হাসছি। বান্দা বলবে, হে প্রভু! তুমি কি আমাকে অবিচার থেকে নিরাপত্তা দান করনি? আল্লাহ তা’আলা বলবেন, হ্যাঁ। তখন বান্দা বলবে, আজ আমি আমার সম্পর্কে আপনজন ছাড়া আমার বিরুদ্ধে অন্য কারো সাক্ষ্য গ্রহণ করব না। তখন আল্লাহ তা’আলা বলবেন, তুমি আজ নিজেই তোমার সাক্ষী হিসেবে এবং কিরামান কাতিবীনের সাক্ষ্যই তোমার জন্য যথেষ্ট। অতঃপর তার মুখের উপর আল্লাহ তা’আলা মোহর লাগিয়ে দিবেন এবং অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে বলা হবে, তোমরা (কে কখন কি কি কাজ করেছ) বল? তখন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গসমূহ তাদের কৃতকর্মসমূহ প্রকাশ করে দেবে। এরপর তার মুখকে স্বাভাবিক অবস্থায় খুলে দেয়া হবে। তখন সে স্বীয় অঙ্গসমূহকে লক্ষ্য করে আক্ষেপের সাথে বলবে, হে হতভাগা অঙ্গসমূহ! তোরা দূর হ! তোদের ধ্বংস হোক। তোদের জন্যই তো আমি আমার প্রভুর সাথে তর্ক করছিলাম। (মুসলিম)

الفصل الاول (باب الحساب و القصاص و المیزان )

وَعَنْ أَنَسٍ قَالَ: كُنَّا عِنْدَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَضَحِكَ فَقَالَ: هَلْ تَدْرُونَ مِمَّا أَضْحَكُ؟ . قَالَ: قُلْنَا: اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ. قَالَ: مِنْ مُخَاطَبَةِ الْعَبْدِ رَبَّهُ يَقُولُ: يَا رَبِّ أَلَمْ تُجِرْنِي مِنَ الظُّلْمِ؟ قَالَ: يَقُولُ: بَلَى . قَالَ: فَيَقُولُ: فَإِنِّي لَا أُجِيزُ عَلَى نَفْسِي إِلَّا شَاهِدًا مِنِّي . قَالَ: فَيَقُولُ: كَفَى بِنَفْسِكَ الْيَوْمَ عَلَيْكَ شَهِيدًا وَبِالْكِرَامِ الْكَاتِبِينَ شُهُودًا . قَالَ: فَيُخْتَمُ عَلَى فِيهِ فَيُقَالُ لِأَرْكَانِهِ: انْطِقِي . قَالَ: «فَتَنْطِقُ بِأَعْمَالِهِ ثُمَّ يُخَلَّى بَيْنَهُ وَبَيْنَ الْكَلَامِ» . قَالَ: فَيَقُولُ: بُعْدًا لَكُنَّ وَسُحْقًا فعنكنَّ كنتُ أُناضلُ . رَوَاهُ مُسلم

رواہ مسلم (17 / 2969)، (7439) ۔
(صَحِيح)

وعن انس قال: كنا عند رسول الله صلى الله عليه وسلم فضحك فقال: هل تدرون مما اضحك؟ . قال: قلنا: الله ورسوله اعلم. قال: من مخاطبة العبد ربه يقول: يا رب الم تجرني من الظلم؟ قال: يقول: بلى . قال: فيقول: فاني لا اجيز على نفسي الا شاهدا مني . قال: فيقول: كفى بنفسك اليوم عليك شهيدا وبالكرام الكاتبين شهودا . قال: فيختم على فيه فيقال لاركانه: انطقي . قال: «فتنطق باعماله ثم يخلى بينه وبين الكلام» . قال: فيقول: بعدا لكن وسحقا فعنكن كنت اناضل . رواه مسلم رواہ مسلم (17 / 2969)، (7439) ۔ (صحيح)

ব্যাখ্যা: (لَا أُجِيزُ)-এর অর্থ (لا أقبل) অর্থাৎ অনুমোদন করব না বা গ্রহণ করব না। (عَلَى نَفْسِي إِلَّا شَاهِدًا مِنِّي) অর্থাৎ আমার শ্রেণি বা জাতি ব্যতীত সাক্ষী গ্রহণ করব না। কারণ মালায়িকাহ (ফেরেশতারা) আমাদের বিরুদ্ধে সৃষ্টির পূর্বে ফ্যাসাদ সৃষ্টির সাক্ষ্য প্রদান করেছিল।
(كَفَى بِنَفْسِكَ الْيَوْمَ عَلَيْكَ شَهِيدًا) সেদিন প্রত্যেকের বিচারের জন্য নিজের সাক্ষ্যই যথেষ্ট। কারণ প্রত্যেকের মুখের উপর মোহর মেরে দেয়া হবে। ফলে তাদের হাত কথা বলবে এবং তাদের কৃতকর্ম সম্পর্কে তাদের পা সাক্ষ্য দিবে।' (সূরা ইয়াসীন ৩৬: ৬৫) অন্যত্র রয়েছে, “যেদিন প্রকাশ করে দিবে তাদের জিহ্বা, হাত ও পা যা তারা করেছে।” (সূরা আন্ নূর ২৪: ২৪)
অন্য আয়াতে বলা হয়েছে, “তাদের কর্ণ, চক্ষু ও চামড়া তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য প্রদান করবে।”  (সূরাহ্ ফুসসিলাত ৪১: ২০)

আবূ ইয়া'লা, ইবনু আবূ হাতিম, তবারানী ও ইবনু মারদুওয়াইহ সা'ঈদ (রহিমাহুমুল্লাহ) থেকে বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, যখন কিয়ামত হবে, তখন কাফিরেরা তাদের ‘আমল বুঝতে পারবে। অতঃপর অস্বীকার করবে ও ঝগড়ায় লিপ্ত হবে। তাকে বলা হবে এরা তোমার পড়শি তোমাদের বিপক্ষে সাক্ষ্য দিচ্ছে। সে বলবে, তারা মিথ্যা বলছে। তাকে আবার বলা হবে, তোমার পরিবার-পরিজন তোমাকে ধ্বংস করেছে? সে বলবে, তারা মিথ্যা বলেছে। অতঃপর বলা হবে, তোমরা কসম খাও। তারা কসম খেলে আল্লাহ তাদের মুখ বন্ধ করে দিবেন। আর তাদের জিহ্বা, পা ও হাত বিপক্ষে সাক্ষ্য দিবে। অতঃপর তাদেরকে জাহান্নামে দাখিল করাবেন। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৮: সৃষ্টির সূচনা ও কিয়ামতের বিভিন্ন অবস্থা (كتاب أَحْوَال الْقِيَامَة وبدء الْخلق)