৫৪৭৩

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - কিয়ামতের পূর্বলক্ষণসমূহ এবং দাজ্জালের বর্ণনা

৫৪৭৩-[১০] হুযায়ফাহ্ (রাঃ) নবী (সা.) হতে বর্ণনা করেন। তিনি (সা.) বলেছেন: দাজ্জাল নিজের সাথে পানি ও আগুন নিয়ে বের হবে। মানুষ দৃশ্যত যা পানি ধারণা করবে, মূলত তা হবে জ্বলন্ত আগুন। আর মানুষ যা আগুন ধারণা করবে, বাস্তবে তা হবে ঠাণ্ডা মিষ্টি পানি। অতএব তোমাদের যে কেউ সেই দাজ্জালের যুগ পাবে, সে যেন যা আগুন দেখতে পায় তাতে প্রবেশ করে। কেননা তা হবে সুস্বাদু মিষ্ট পানি। (বুখারী ও মুসলিম)

সহীহ মুসলিমে এতে আরো অতিরিক্ত বর্ণনা করেছেন, দাজ্জাল হবে মুদিত চক্ষুবিশিষ্ট। তার চক্ষুর উপর নখ পরিমাণ মোটা চামড়া থাকবে, চক্ষুদ্বয়ের মধ্যবর্তী স্থানে লেখা থাকবে কাফির। প্রত্যেক শিক্ষিত ও অশিক্ষিত মুমিন তা পড়তে পারবে।

الفصل الاول (بَابُ الْعَلَامَاتِ بَيْنَ يَدَيِ السَّاعَةِ وَذِكْرِ الدَّجَّالِ)

وَعَنْ حُذَيْفَةَ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «إِنَّ الدَّجَّالَ يَخْرُجُ وَإِنَّ مَعَهُ مَاءً وَنَارًا فَأَمَّا الَّذِي يَرَاهُ النَّاسُ مَاءً فَنَارٌ تَحْرِقُ وَأَمَّا الَّذِي يَرَاهُ النَّاسُ نَارًا فَمَاءٌ بَارِدٌ عَذْبٌ فَمَنْ أَدْرَكَ ذَلِكَ مِنْكُمْ فَلْيَقَعْ فِي الَّذِي يَرَاهُ نَارًا فَإِنَّهُ مَاءٌ عَذْبٌ طَيِّبٌ» . مُتَّفق عَلَيْهِ. وَزَاد مُسلم: «إِن الدجالَ ممسوحُ العينِ عَلَيْهَا ظفرةٌ غليظةٌ مَكْتُوب بَين عَيْنَيْهِ كَافِر يَقْرَؤُهُ كل مُؤمن كاتبٌ وَغير كَاتب»

متفق علیہ ، رواہ البخاری (7131) و مسلم (102 ۔ 105 / 2934)، (7367 و 7368) ۔
(مُتَّفق عَلَيْهِ)

وعن حذيفة عن النبي صلى الله عليه وسلم قال: «ان الدجال يخرج وان معه ماء ونارا فاما الذي يراه الناس ماء فنار تحرق واما الذي يراه الناس نارا فماء بارد عذب فمن ادرك ذلك منكم فليقع في الذي يراه نارا فانه ماء عذب طيب» . متفق عليه. وزاد مسلم: «ان الدجال ممسوح العين عليها ظفرة غليظة مكتوب بين عينيه كافر يقروه كل مومن كاتب وغير كاتب» متفق علیہ ، رواہ البخاری (7131) و مسلم (102 ۔ 105 / 2934)، (7367 و 7368) ۔ (متفق عليه)

ব্যাখ্যা: (إِنَّ الدَّجَّالَ يَخْرُجُ وَإِنَّ مَعَهُ مَاءً وَنَارً)“দাজ্জাল বের হবে এবং তার সাথে থাকবে পানি এবং আগুন।” (مَاءً) পানি বলতে বুঝানো হয়েছে পানি থেকে উৎপন্ন নি'আমাত সামগ্রী।
পূর্বের হাদীসে বাহ্যিকভাবে যাকে জান্নাত বলে ঘোষণা করা হয়েছে। যারা তার অনুসরণ করবে তারা তাই চাবে। আর (نَارًا) আগুন বলতে বুঝানো হয়েছে, যা মূলত শাস্তি ও কষ্টের কারণ হবে এবং এর দ্বারা সে তার অবাধ্যদেরকে ভয় দেখাবে।
(فَأَمَّا الَّذِي يَرَاهُ النَّاسُ مَاءً فَنَارٌ تَحْرِقُ وَأَمَّا الَّذِي يَرَاهُ النَّاسُ نَارًا فَمَاءٌ بَارِدٌ عَذْبٌ) অর্থাৎ মানুষ যাকে পানি হিসেবে দেখবে তা হবে দগ্ধকারী আগুন আর যাকে আগুন হিসেবে দেখবে মূলত সেটাই হবে সুপেয় পানি। এর অর্থ হলো আল্লাহ তা'আলা দাজ্জালের আগুনকে সুপেয় ঠাণ্ডা পানিতে রূপান্তরিত করবেন তাদের জন্য যারা তাকে অবিশ্বাস ও ঘৃণা প্রকাশ করবে। যেভাবে আল্লাহ তা'আলা ইবরাহীমের জন্য নমরূদের আগুনকে শীতল ও আরামদায়ক করে দিয়েছিলেন। আর দাজ্জালের সত্যতার প্রমাণের জন্য যা দিয়েছেন তা দগ্ধকারী আগুনে পরিণত করবেন। মূলকথা হলো, সে ফিতনাহ প্রসার করার জন্য যা কিছুই প্রকাশ করবে তা বাস্তব নয় বরং তা ধারণা ও ধাধা, যেমনটি যাদুকররা করে থাকে। আর আল্লাহ সেগুলোকে বাস্তব আগুন ও পানিতে পরিণত করতে সক্ষম। যেহেতু তিনি সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী।
অতএব তোমাদের মধ্যে যারা দাজ্জাল ও তার কার্যাবলী দেখবে তারা যেন তার আগুনকেই গ্রহণ করে এবং তাকে মিথ্যাবাদী হিসেবে সাব্যস্ত করে। তার আগুনকে কোন পরোয়া না করে, কেননা তার আগুন মূলত সুপেয় পানি হবে অথবা আল্লাহ তা পানিতে রূপান্তরিত করে দিবেন।
সহীহ মুসলিম-এর বর্ণনায় আছে, (الدَّجَّالُ مَمْسُو حُ الْعَيْنِ) অর্থাৎ দাজ্জালের একচক্ষু কপালের ন্যায় সমান থাকবে, তাতে চোখের কোন চিহ্ন থাকবে না। তার উপর মোটা মাংসখণ্ড বা চামড়া দিয়ে ঢাকা থাকবে। আর তার দুই চোখের মাঝে (كَافِرٌ) লেখা থাকবে। যা প্রত্যেক মু'মিন ব্যক্তি পড়তে পারবে। সে শিক্ষিত হোক বা না হোক। সহীহ মুসলিমে মু'মিন এর পরিবর্তে মুসলিম কথা উল্লেখ আছে। (মিরকাতুল মাফাতীহ ৫৪৭৩, ফাতহুল বারী ১৩/৭১৩০)।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৭: ফিতনাহ (كتاب الْفِتَن)