৫৩০১

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - তাওয়াক্কুল (আল্লাহর ওপর ভরসা) ও সবর (ধৈর্যধারণ) প্রসঙ্গে

৫৩০১-[৭] আবূ যার (রাঃ) নাবী (সা.) হতে বর্ণনা করেন, তিনি (সা.) বলেছেন: কোন বৈধ বস্তুকে হারাম করা এবং ধনসম্পদকে ধ্বংস করার নাম দুনিয়া বর্জন করা নয়, বরং প্রকৃত দুনিয়া বর্জন হলো, আল্লাহ তা’আলার হাতে যা আছে তা অপেক্ষা তোমার হাতে যা আছে তা বেশি নির্ভরযোগ্য মনে না করা এবং যখন তোমার ওপর কোন বিপদ এসে পড়ে তখন সেই বিপদ তোমার ওপর পতিত না হওয়ার পরিবর্তে সাওয়াবের আশায় তা বাকি থাকার প্রতি আগ্রহ বেশি হওয়া। [তিরমিযী ও ইবনু মাজাহ; আর ইমাম তিরমিযী (রহিমাহুল্লাহ) বলেছেন, এ হাদীসটি গবীর, বর্ণনাকারী ’আমর ইবনু ওয়াক্বিদ মুনকারুল হাদীস)

اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَاب التَّوَكُّل وَالصَّبْر)

وَعَنْ أَبِي ذَرٍّ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «الزَّهَادَةُ فِي الدُّنْيَا لَيْسَتْ بِتَحْرِيم وَلَا إِضَاعَةِ الْمَالِ وَلَكِنَّ الزَّهَادَةَ فِي الدُّنْيَا أَنْ لَا تَكُونَ بِمَا فِي يَدَيْكَ أَوْثَقَ بِمَا فِي يَد اللَّهِ وَأَنْ تَكُونَ فِي ثَوَابِ الْمُصِيبَةِ إِذَا أَنْتَ أُصِبْتَ بِهَا أَرْغَبَ فِيهَا لَوْ أَنَّهَا أُبْقِيَتْ لَكَ» رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَابْنُ مَاجَهْ وَقَالَ التِّرْمِذِيُّ: هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ وَعَمْرُو بْنُ وَاقِدٍ الرَّاوِي مُنكر الحَدِيث

اسنادہ ضعیف جذا ، رواہ الترمذی (2340) و ابن ماجہ (4100) * عمرو بن واقد : متروک ۔
(ضَعِيف)

وعن ابي ذر عن النبي صلى الله عليه وسلم قال: «الزهادة في الدنيا ليست بتحريم ولا اضاعة المال ولكن الزهادة في الدنيا ان لا تكون بما في يديك اوثق بما في يد الله وان تكون في ثواب المصيبة اذا انت اصبت بها ارغب فيها لو انها ابقيت لك» رواه الترمذي وابن ماجه وقال الترمذي: هذا حديث غريب وعمرو بن واقد الراوي منكر الحديث اسنادہ ضعیف جذا ، رواہ الترمذی (2340) و ابن ماجہ (4100) * عمرو بن واقد : متروک ۔ (ضعيف)

ব্যাখ্যা : (الزَّهَادَةُ فِي الدُّنْيَا لَيْسَتْ بِتَحْرِيم..) হালালকে হারামে পরিণত করা এবং সম্পদ ধ্বংস করার নাম দুনিয়াবিমুখতা নয়, যেমনটি কতিপয় অজ্ঞ লোকেরা করে থাকে। এই ধারণাবশত হয়েই সে গোশত, মিষ্টি, ফলমূল খাওয়া এবং সুন্দর কাপড় পরিধান করা ও বিবাহ-শাদি ইত্যাদি বৈধ কাজ পরিত্যাগ করে থাকে। অথচ আল্লাহ তা'আলা বলেন, (یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا لَا تُحَرِّمُوۡا طَیِّبٰتِ مَاۤ اَحَلَّ اللّٰهُ لَکُمۡ وَ لَا تَعۡتَدُوۡا ؕ اِنَّ اللّٰهَ لَا یُحِبُّ الۡمُعۡتَدِیۡنَ ﴿۸۷﴾)
“হে ঈমানদারগণ! পবিত্র বস্তুরাজি যা আল্লাহ তোমাদের জন্য হালাল করে দিয়েছেন সেগুলোকে হারাম করে নিও না আর সীমালঙ্ন করো না, অবশ্যই আল্লাহ সীমালঙ্নকারীদের ভালোবাসেন না।” (সূরাহ্ আল মায়িদাহ্ ৫: ৮৭)
এমনিভাবে রাসূল (সা.) থেকে প্রমাণিত রয়েছে যে, তিনি এ সমস্ত কাজ করেছেন। তার চেয়ে পরিপূর্ণ অবস্থা আর কারো হতে পারে না।
(وَلَا إِضَاعَةِ الْمَالِ) এমনিভাবে দুনিয়াবিমুখতা অর্থ সম্পদ নষ্ট করা নয়। ফলে সম্পদকে নষ্ট করবে এবং যথাস্থানে তা ব্যয় না করে সাগরে ফেলে দিবে অথবা ধনী-দরিদ্র বিচার না করে সকলকে দিয়ে দিবে এবং প্রয়োজনের মুহূর্তে মানুষের নিকট হাত পাতবে।

(وَلَكِنَّ الزَّهَادَةَ فِي الدُّنْيَا أَنْ لَا تَكُونَ بِمَا فِي يَدَيْكَ أَوْثَقَ بِمَا فِي يَد اللَّهِ) বরং সত্যিকার দুনিয়াবিমুখতা হলো তোমার নিকট যে ধন-সম্পদ ও ব্যবসা-বাণিজ্য রয়েছে তার চেয়ে আল্লাহর তা'আলার নিকট যা কিছু রয়েছে তার প্রতি অধিক আকাক্ষিত হওয়া। যেমন ইবনু মাজার হাদীসে রয়েছে : আল্লাহর নিকট তার ধনভাণ্ডারে প্রকাশ্য অপ্রকাশ্য যা কিছু রয়েছে তা তোমার কাছে যা আছে তা থেকে অধিক আকাঙ্ক্ষিত বিষয় হওয়া উচিত। অতএব হাদীসের অর্থ হচ্ছে আল্লাহ তা'আলা তোমার জন্য রিযকের যে ওয়াদা করেছেন তার ওপর ভরসা থাকা উচিত এবং এ ধারণা রাখা যে, তিনি তোমাকে এমনভাবে রিযক দিবেন যা তুমি কল্পনাও করতে পারনি এবং এমনভাবে দান করবেন যা তুমি কখনো উপার্জন করতে সক্ষম হওনি। এটা তোমার নিকট যে ধন-সম্পদ, ব্যবসা-বাণিজ্য, মান সম্মান ইত্যাদি যা কিছু আছে তার থেকে অধিক শক্তিশালী ও স্থায়ী। কেননা তোমার সম্পদ একদিন শেষ হয়ে যাবে, ধ্বংস হয়ে যাবে কিন্তু আল্লাহর নিকট যা আছে তা চিরস্থায়ী। যেমন আল্লাহ তা'আলা বলেন, (مَا عِنۡدَکُمۡ یَنۡفَدُ وَ مَا عِنۡدَ اللّٰهِ بَاقٍ ؕ)
“তোমাদের কাছে যা আছে তা শেষ হয়ে যাবে, আর আল্লাহর কাছে যা আছে তা টিকে থাকবে...” (সূরাহ্ আল নাহল ১৬:৯৬)।
(وَأَنْ تَكُونَ فِي ثَوَابِ الْمُصِيبَةِ إِذَا أَنْتَ أُصِبْتَ بِهَا أَرْغَبَ فِيهَا) আর এমন যেন না হয়, তুমি সাওয়াবের আশায় বিপদে পতিত হওয়াকে অধিক কামনা করবে বিপদ না আশা থেকে। অর্থাৎ এমন মনে করবে না বিপদ আসলেই অধিক সাওয়াব হবে আর বিপদ না আসলে তোমারা সাওয়াব ছুটে যাবে। (তুহফাতুল আহ্ওয়াযী ৬/২৩৪০, মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৬: মন-গলানো উপদেশমালা (كتاب الرقَاق)