৫২৪০

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - গরীবদের ফযীলত ও নবী (সা.) -এর জীবন-যাপন

৫২৪০-[১০] ’উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন আমি রসূলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে উপস্থিত হয়ে দেখলাম তিনি একখানা খেজুর পাতার চাটাইয়ের উপর শুয়ে আছেন। তাঁর ও চাটাইয়ের মাঝে কোন বিছানা ছিল না। ফলে চাটাই তাঁর দেহে চিহ্ন বসিয়ে দিয়েছিল। আর তিনি ঠেস দিয়েছিলেন (খেজুর গাছের) আঁশপূর্ণ একটি চামড়ার বালিশের উপর। আমি বললাম : হে আল্লাহর রসূল! আল্লাহর কাছে দু’আ করুন তিনি যেন আপনার উম্মাতকে সচ্ছলতা প্রদান করেন। পারসিক ও রোমীয়গণকে সচ্ছলতা প্রদান করা হয়েছে, অথচ তারা (কাফির) আল্লাহর ইবাদত করে না। (এ কথা শুনে) রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন : হে খত্ত্বাব-এর পুত্র! তুমি কি এখনো এ ধারণায় রয়েছ? তারা তো এমন এক সম্প্রদায়, যাদেরকে পার্থিব জীবনে নিআমাতসমূহ আগাম প্রদান করা হয়েছে। অপর এক বর্ণনায় আছে- তুমি কি এতে সন্তুষ্ট নও যে, তারা দুনিয়াপ্রাপ্ত হোক আর আমাদের জন্য থাকুক পরকাল? (বুখারী ও মুসলিম)।

الفصل الاول - (بَابُ فَضْلِ الْفُقَرَاءِ وَمَا كَانَ مِنْ عَيْشِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ)

وَعَن عمر قَالَ: دَخَلْتُ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَإِذَا هُوَ مُضْطَجِعٌ عَلَى رِمَالِ حَصِيرٍ لَيْسَ بَيْنَهُ وَبَيْنَهُ فِرَاشٌ قَدْ أَثَّرَ الرِّمَالُ بِجَنْبِهِ مُتَّكِئًا عَلَى وِسَادَةٍ مِنْ أَدَمٍ حَشْوُهَا لِيفٌ. قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ: ادْعُ اللَّهَ فَلْيُوَسِّعْ عَلَى أُمَّتِكَ فَإِنَّ فَارِسَ وَالرُّومَ قَدْ وُسِّعَ عَلَيْهِمْ وَهُمْ لَا يَعْبُدُونَ اللَّهَ. فَقَالَ: «أَوَ فِي هَذَا أَنْتَ يَا ابْنَ الْخطاب؟ أُولئكَ قوم عجلت لَهُم طيبتاتهم فِي الْحَيَاةِ الدُّنْيَا» . وَفِي رِوَايَةٍ: «أَمَا تَرْضَى أَنْ تَكُونَ لَهُمُ الدُّنْيَا وَلَنَا الْآخِرَةُ؟» . مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ

متفق علیہ ، رواہ البخاری (2468) و مسلم (31 ، 30 / 1479)، (3691 و 3692) ۔
(مُتَّفق عَلَيْهِ)

وعن عمر قال: دخلت على رسول الله صلى الله عليه وسلم فاذا هو مضطجع على رمال حصير ليس بينه وبينه فراش قد اثر الرمال بجنبه متكىا على وسادة من ادم حشوها ليف. قلت: يا رسول الله: ادع الله فليوسع على امتك فان فارس والروم قد وسع عليهم وهم لا يعبدون الله. فقال: «او في هذا انت يا ابن الخطاب؟ اولىك قوم عجلت لهم طيبتاتهم في الحياة الدنيا» . وفي رواية: «اما ترضى ان تكون لهم الدنيا ولنا الاخرة؟» . متفق عليه متفق علیہ ، رواہ البخاری (2468) و مسلم (31 ، 30 / 1479)، (3691 و 3692) ۔ (متفق عليه)

ব্যাখ্যা : (رِمَالِ حَصِيرٍ) এর অর্থ খেজুর পাতা দ্বারা বানানো চাটাই। রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর রাজকীয় খাটপালঙ্কে শয়নের কথা, কিন্তু তিনি দুনিয়ার এসব বিলাস-ব্যসনের প্রতি মোটেও ভ্রুক্ষেপ করেননি। তিনি সাদাসিধে মাটিতে খেজুর পাতার চাটাইয়ের উপর শুয়ে থাকতেন। এটাও ছিল নিখাদ চাটাইয়ের উপর শোয়া। এই চাটাইয়ের উপর চাদর কিংবা কম্বল কিছুই ছিল না, ফলে চাটাইয়ের দাগ তাঁর দেহে লেগে যেত। বালিশটিও কি নরম বা আরামদায়ক ছিল? মোটেও না; চামড়ার খোলশে খেজুরের ছাল, কোন মত মাথাটা বিছানা থেকে একটু উঁচু করে শোবার ব্যবস্থা।
‘উমার (রাঃ) রোম-পারস্যবাসীর সুখ-সমৃদ্ধির কথা তুলে আল্লাহর কাছে দু'আ করতে বললেন যে, হে আল্লাহর রসূল! আপনার উম্মতেরা আল্লাহর ইবাদত করে তারা কেন দরিদ্র থাকবে, আল্লাহ তা'আলা যেন তাদের সম্পদ বাড়িয়ে দেন। আল্লাহর রসূল তার উত্তরে উক্ত কথাগুলো বলেন। অর্থাৎ মু'মিনদের জন্য আখিরাতে চিরস্থায়ী সুখ আর নি'আমাত আল্লাহ নির্ধারণ করে রেখেছেন।
(মিরক্বাতুল মাফাতীহ; ইবনু মাজাহ হা, ৪১৫৩, আল লুম'আহ্ ৮ম খণ্ড, ৪৬১ পৃ.)।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৬: মন-গলানো উপদেশমালা (كتاب الرقَاق)