৭৪৭

পরিচ্ছেদঃ ৬৮. মুশরিকদের পাত্রের পানি দিয়ে উযু করা এবং তা দ্বারা তাইয়াম্মুম করা

৭৪৭(১)। আহমাদ ইবনে মুহাম্মাদ ইবনে আবদুল্লাহ ইবনে যিয়াদ আল-কাত্তান (রহঃ) ... ইমরান ইবনে হুসাইন (রাঃ) বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে সফরে ছিলাম। লোকজন সারা রাত ধরে সফর অব্যাহত রাখলো। এমনকি যখন প্রভাত ঘনিয়ে এলো তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিশ্রাম নেয়ার জন্য যাত্রাবিরতি করলেন। লোকজনের চোখে প্রবল ঘুম চাপলো এবং তারা ঘুমিয়ে গেল, এমনকি সূর্য উপরে উঠে গেল। লোকজনের মধ্যে সর্বপ্রথম আবু বাকর (রাঃ) সজাগ হলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘুম থেকে সজাগ হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত কেউ তাকে ঘুম থেকে সজাগ করেনি। উমার (রাঃ) ঘুম থেকে সজাগ হয়ে তাঁর মাথার কাছে বসে সশব্দে তাকবীর বলতে লাগলেন। তাতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘুম থেকে সজাগ হলেন। তিনি সজাগ হয়ে দেখলেন, সূর্য উঠে গেছে। তিনি বললেনঃ তোমরা রওয়ানা হও। তিনি কিছু দূর সফর করলেন, ততক্ষণ সূর্য উজ্জ্বল হলো। তিনি জন্তযান থেকে অবতরণ করলেন এবং আমাদের নিয়ে নামায পড়লেন।

লোকজনের মধ্যে এক ব্যক্তি বিচ্ছিন্ন থাকলো, আমাদের সাথে নামায পড়লো না। তিনি নামায শেষ করে বললেনঃ হে অমুক! কোন জিনিস তোমাকে আমাদের সঙ্গে নামায পড়া থেকে বিরত রেখেছে? সে বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি নাপাক হয়েছি। অতঃপর তিনি তাকে পাক মাটি দিয়ে তাইয়াম্মুম করে নামায পড়ার নির্দেশ দিলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে দ্রুত সামনের একটি কাফেলায় গিয়ে পানি তালাশ করতে বললেন। তখন আমরা প্রচণ্ড তৃষ্ণার্ত ছিলাম। তথাপি আমরা সফর অব্যাহত রাখলাম। আমরা সামনে এক মহিলাকে দেখতে পেলাম। সে তার পদদ্বয় পানির মশকের সাথে ঝুলিয়ে রেখেছিল। আমরা তাকে বললাম, পানি কোথায়? সে বলল, এখানে পানি নেই। আমরা তাকে বললাম, তোমার পরিবার থেকে পানি কতটুকু দূরে? সে বলল, এক দিন এক রাতের পথ (দূরে)।

আমরা তাকে বললাম, তুমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট চলো। সে বলল, রাসূলুল্লাহ কি? তার আমাদের সাথে না গিয়ে কোন উপায়ান্তর ছিলো না। অতএব আমরা তাকে নিয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এলাম এবং সে যা বলেছে তাও তাঁর নিকট বর্ণনা করলাম। তবে সে বলল, সে ইয়াতীম শিশুর জননী। তিনি বলেন, তিনি তার মশক দু’টি নামানোর নির্দেশ দিলেন। আমরা চল্লিশজন পিপাসিত ব্যক্তি তৃপ্তি মিটিয়ে পানি পান করলাম এবং আমাদের সমস্ত মশক ও পাত্র ভরে (পানি) নিলাম। আমাদের ঐ সঙ্গী গোসল করলো। তবে আমরা উট হাঁকাইনি (পানি পান করাইনি)। তার মশক পানির প্রাচুর্যে ফেটে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল।

তিনি আমাদের বললেনঃ তোমাদের কাছে যা আছে নিয়ে এসো। অতএব সেই মহিলার জন্য মাংস ও খেজুর একত্র করা হলো। এমনকি তার জন্য একটি থলিতে তা ভর্তি করা হলো। এরপর তিনি বললেনঃ তুমি যাও এবং এ থেকে তোমার পরিবারের লোকদের খেতে দাও। আর তুমি জেনে রাখো! আমরা তোমার পানি মোটেও খরচ করিনি। সে তার পরিবারের লোকজনের নিকট এসে বলল, আমি অবশ্যই একজন বড় যাদুকরের সাথে সাক্ষাত করেছি, তবে কি তিনি নবী? যেমন তারা ধারণা করেন। আল্লাহ সেই মহিলার কারণে ঐ সম্প্রদায়কে হেদায়াত দান করেন। ফলে সেই মহিলা ইসলাম গ্রহণ করলো এবং তারাও ইসলাম গ্রহণ করলো (বুখারী, তায়াম্মুম, বাব ৬, নং ৩৪৪; মুসলিম)।

بَابُ الْوُضُوءِ وَالتَّيَمُّمِ مِنْ آنِيَةِ الْمُشْرِكِينَ

حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ زِيَادٍ الْقَطَّانُ ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْكَرِيمِ بْنُ الْهَيْثَمِ ، حَدَّثَنَا أَبُو الْوَلِيدِ الطَّيَالِسِيُّ ، نَا سَلْمُ بْنُ زَرِيرٍ ، قَالَ : سَمِعْتُ أَبَا رَجَاءٍ يَقُولُ : حَدَّثَنَا عِمْرَانُ بْنُ حُصَيْنٍ ، قَالَ : " كُنَّا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ - فَأَدْلَجُوا لَيْلَتَهُمْ ، حَتَّى إِذَا كَانُوا فِي وَجْهِ الصُّبْحِ ، عَرَّسَ رَسُولُ اللَّهِ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ - فَغَلَبَتْهُمْ أَعْيُنُهُمْ ، حَتَّى ارْتَفَعَتِ الشَّمْسُ ، فَكَانَ أَوَّلَ مَنِ اسْتَيْقَظَ مِنْ مَنَامِهِ أَبُو بَكْرٍ - رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ - وَكَانَ لَا يُوقِظُ رَسُولَ اللَّهِ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ - مِنْ مَنَامِهِ أَحَدٌ ، حَتَّى يَسْتَيْقِظَ رَسُولُ اللَّهِ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ - فَاسْتَيْقَظَ عُمَرُ - رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ - فَقَعَدَ عِنْدَ رَأْسِهِ ، وَجَعَلَ يُكَبِّرُ وَيَرْفَعُ صَوْتَهُ ، حَتَّى اسْتَيْقَظَ رَسُولُ اللَّهِ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ - فَلَمَّا اسْتَيْقَظَ فَرَأَى الشَّمْسَ قَدْ بَزَغَتْ ، قَالَ : " ارْتَحِلُوا " . فَسَارَ شَيْئًا حَتَّى إِذَا ابْيَضَّتِ الشَّمْسُ نَزَلَ فَصَلَّى بِنَا ، وَاعْتَزَلَ رَجُلٌ مِنَ الْقَوْمِ لَمْ يُصَلِّ مَعَنَا ، فَلَمَّا انْصَرَفَ ، قَالَ : " يَا فُلَانُ ، مَا مَنَعَكَ أَنْ تُصَلِّيَ مَعَنَا ؟ " ، قَالَ : يَا رَسُولَ اللَّهِ ، أَصَابَتْنِي جَنَابَةٌ . فَأَمَرَهُ أَنْ يَتَيَمَّمَ الصَّعِيدَ ، ثُمَّ صَلَّى ، فَعَجِلَنِي رَسُولُ اللَّهِ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ - فِي رَكْبٍ بَيْنَ يَدَيْهِ أَطْلُبُ الْمَاءَ ، وَقَدْ عَطِشْنَا عَطَشًا شَدِيدًا ، فَبَيْنَا نَحْنُ نَسِيرُ إِذَا نَحْنُ بِامْرَأَةٍ سَادِلَةٍ رِجْلَيْهَا بَيْنَ مَزَادَتَيْنِ ، قُلْنَا لَهَا : أَيْنَ الْمَاءُ ؟ قَالَتْ : أَيْهَاتَ أَيْهَاتَ ، لَا مَاءَ . قُلْنَا : كَمْ بَيْنَ أَهْلِكِ وَبَيْنَ الْمَاءِ ؟ قَالَتْ : يَوْمٌ وَلَيْلَةٌ . قُلْنَا : انْطَلِقِي إِلَى رَسُولِ اللَّهِ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ - . فَقَالَتْ : وَمَا رَسُولُ اللَّهِ ؟ فَلَمْ نُمْلِّكْهَا مِنْ أَمْرِهَا شَيْئًا حَتَّى اسْتَقْبَلْنَا بِهَا رَسُولَ اللَّهِ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ - فَحَدَّثَتْهُ بِمِثْلِ الَّذِي حَدَّثَتْنَا غَيْرَ أَنَّهَا حَدَّثَتْهُ أَنَّهَا مُؤْتِمَةٌ ، قَالَ : فَأَمَرَ بِمَزَادَتَيْهَا فَمَجَّ فِي الْعَزْلَاوَيْنِ ، فَشَرِبْنَا عِطَاشًا أَرْبَعِينَ رَجُلًا حَتَّى رَوِينَا ، وَمَلَأْنَا كُلَّ قِرْبَةٍ مَعَنَا وَإِدَاوَةٍ ، وَغَسَّلْنَا صَاحِبَنَا غَيْرَ أَنَّا لَمْ نَسْقِ بَعِيرًا ، وَهِيَ تَكَادُ تَتَصَدَّعُ مِنَ الْمَاءِ ، ثُمَّ قَالَ لَنَا : " هَاتُوا مَا عِنْدَكُمْ " . فَجَمَعَ لَهَا مِنَ الْكِسَرِ وَالتَّمْرِ حَتَّى صَرَّ لَهَا صُرَّةً ، فَقَالَ : " اذْهَبِي فَأَطْعِمِي عِيَالَكِ وَاعْلَمِي أَنَّا لَمْ نَرْزَأْ مِنْ مَائِكِ شَيْئًا " . فَلَمَّا أَتَتْ أَهْلَهَا ، قَالَتْ : لَقَدْ لَقِيتُ أَسْحَرَ النَّاسِ أَوْ هُوَ نَبِيٌّ كَمَا زَعَمُوا . فَهَدَى اللَّهُ ذَلِكَ الصِّرْمَ بِتِلْكَ الْمَرْأَةِ ، وَأَسْلَمَتْ وَأَسْلَمُوا . أَخْرَجَهُ الْبُخَارِيُّ ، عَنْ أَبِي الْوَلِيدِ بِهَذَا الْإِسْنَادِ وَأَخْرَجَهُ مُسْلِمٌ ، عَنْ أَحْمَدَ بْنِ سَعِيدٍ الدَّارِمِيِّ ، عَنْ أَبِي عَلِيٍّ الْحَنَفِيِّ ، عَنْ سَلْمِ بْنِ زَرِيرٍ

حدثنا احمد بن محمد بن عبد الله بن زياد القطان ، حدثنا عبد الكريم بن الهيثم ، حدثنا ابو الوليد الطيالسي ، نا سلم بن زرير ، قال : سمعت ابا رجاء يقول : حدثنا عمران بن حصين ، قال : " كنا مع رسول الله - صلى الله عليه وسلم - فادلجوا ليلتهم ، حتى اذا كانوا في وجه الصبح ، عرس رسول الله - صلى الله عليه وسلم - فغلبتهم اعينهم ، حتى ارتفعت الشمس ، فكان اول من استيقظ من منامه ابو بكر - رضي الله عنه - وكان لا يوقظ رسول الله - صلى الله عليه وسلم - من منامه احد ، حتى يستيقظ رسول الله - صلى الله عليه وسلم - فاستيقظ عمر - رضي الله عنه - فقعد عند راسه ، وجعل يكبر ويرفع صوته ، حتى استيقظ رسول الله - صلى الله عليه وسلم - فلما استيقظ فراى الشمس قد بزغت ، قال : " ارتحلوا " . فسار شيىا حتى اذا ابيضت الشمس نزل فصلى بنا ، واعتزل رجل من القوم لم يصل معنا ، فلما انصرف ، قال : " يا فلان ، ما منعك ان تصلي معنا ؟ " ، قال : يا رسول الله ، اصابتني جنابة . فامره ان يتيمم الصعيد ، ثم صلى ، فعجلني رسول الله - صلى الله عليه وسلم - في ركب بين يديه اطلب الماء ، وقد عطشنا عطشا شديدا ، فبينا نحن نسير اذا نحن بامراة سادلة رجليها بين مزادتين ، قلنا لها : اين الماء ؟ قالت : ايهات ايهات ، لا ماء . قلنا : كم بين اهلك وبين الماء ؟ قالت : يوم وليلة . قلنا : انطلقي الى رسول الله - صلى الله عليه وسلم - . فقالت : وما رسول الله ؟ فلم نملكها من امرها شيىا حتى استقبلنا بها رسول الله - صلى الله عليه وسلم - فحدثته بمثل الذي حدثتنا غير انها حدثته انها موتمة ، قال : فامر بمزادتيها فمج في العزلاوين ، فشربنا عطاشا اربعين رجلا حتى روينا ، وملانا كل قربة معنا واداوة ، وغسلنا صاحبنا غير انا لم نسق بعيرا ، وهي تكاد تتصدع من الماء ، ثم قال لنا : " هاتوا ما عندكم " . فجمع لها من الكسر والتمر حتى صر لها صرة ، فقال : " اذهبي فاطعمي عيالك واعلمي انا لم نرزا من ماىك شيىا " . فلما اتت اهلها ، قالت : لقد لقيت اسحر الناس او هو نبي كما زعموا . فهدى الله ذلك الصرم بتلك المراة ، واسلمت واسلموا . اخرجه البخاري ، عن ابي الوليد بهذا الاسناد واخرجه مسلم ، عن احمد بن سعيد الدارمي ، عن ابي علي الحنفي ، عن سلم بن زرير

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
সুনান আদ-দারাকুতনী
১. পবিত্রতা (كتاب الطهارة)