পরিচ্ছেদঃ ১৫. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - সৃষ্টির প্রতি দয়া ও অনুগ্রহ
৪৯৭৫-[২৯] ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি কোন ইয়াতীমকে নিজের খাদ্য-পানীয়তে ঠাঁই দেবে, তার জন্য আল্লাহ তা’আলা নিশ্চয় জান্নাত অবধারিত করে দেবেন, যতক্ষণ পর্যন্ত সে এমন কোন পাপ না করে, যা মার্জনা করা হয় না। যে ব্যক্তি তিনটি কন্যা বা তিনটি বোনকে প্রতিপালন করবে, তাদের শিষ্টাচার শেখাবে এবং অনুগ্রহ ও অনুকম্পা প্রদর্শন করবে, যতক্ষণ না আল্লাহ তা’আলা তাদেরকে পরমুখাপেক্ষিতা হতে মুক্ত করেন, তার জন্য আল্লাহ তা’আলা জান্নাত অবধারিত করেছেন। এক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করল : হে আল্লাহর রসূল! দু’ কন্যা বা দু’ বোনের লালন-পালনে কি সাওয়াব হবে? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ দু’জনের ব্যাপারে একই সাওয়াব মিলবে। যদি কেউ (সাহাবায়ে কিরাম) এক বোন বা কন্যার ব্যাপারে জিজ্ঞেস করতেন, তবে তার সম্পর্কেও রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এটাই বলতেন। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আরো বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলা যে ব্যক্তির দু’টো প্রিয় বস্তু নিয়ে গিয়েছেন, তার জন্য জান্নাত অবধারিত রয়েছে। জিজ্ঞেস করা হলো, হে আল্লাহর রসূল! তার প্রিয় বস্তুদ্বয় কি? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ তার চক্ষুদ্বয়। (শারহুস্ সুন্নাহ্)[1]
وَعَنِ ابْنِ
عَبَّاسٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ آوَى يَتِيمًا إِلَى طَعَامِهِ وَشَرَابِهِ أَوْجَبَ اللَّهُ لَهُ الْجَنَّةَ أَلْبَتَّةَ إِلَّا أَنْ يَعْمَلَ ذَنْبًا لَا يُغْفَرُ. وَمَنْ عَالَ ثَلَاثَ بَنَاتٍ أَوْ مِثْلَهُنَّ مِنَ الْأَخَوَاتِ فَأَدَّبَهُنَّ وَرَحِمَهُنَّ حَتَّى يُغْنِيَهُنَّ اللَّهُ أَوْجَبَ اللَّهُ لَهُ الْجَنَّةَ» . فَقَالَ رَجُلٌ: يَا رَسُولَ الله واثنتين؟ قَالَ: «واثنتين» حَتَّى قَالُوا: أَوْ وَاحِدَةً؟ لَقَالَ: وَاحِدَةً «وَمَنْ أَذْهَبَ اللَّهُ بِكَرِيمَتَيْهِ وَجَبَتْ لَهُ الْجَنَّةُ» قِيلَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ وَمَا كَرِيمَتَاهُ؟ قَالَ: «عَيْنَاهُ» . رَوَاهُ فِي «شرح السّنة»
হাদীসটি য‘ঈফ হওয়ার কারণ, এর সনদে ‘‘হুসায়ন ইবনু কায়স আবূ আলী আর্ রুহাবী’’ নামের বর্ণনাকারীর উপাধি হান্শ। হাদীস বিশারদগণ তাকে য‘ঈফ বলেছেন। দেখুন- হিদায়াতুর্ রুওয়াত ৪/৪২৭ পৃঃ।
ব্যাখ্যাঃ যে মুসলিম কোন ইয়াতীমকে নিজের খাওয়ার সাথী বানাবে আল্লাহ তাকে জান্নাত দিবেন। হ্যাঁ, তবে যদি সে এমন গুনাহ করে থাকে যা ক্ষমার অযোগ্য তাহলে ভিন্ন কথা। এখানে ক্ষমার অযোগ্য পাপ হলো শির্ক। ইবনুল মালিক (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ এটা হলো সৃষ্টির প্রতি জুলুম নির্যাতন চালানো। মিরক্বাত গ্রন্থকার ‘আল্লামা মুল্লা ‘আলী কারী হানাফী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ ইয়াতীম পালনের দ্বারা মানুষের হক নষ্ট করার পাপ ক্ষমা হবে না। বান্দাদের হক নষ্টের মধ্যে এটাও শামিল যে, কেউ ইয়াতীমের মাল অন্যায়ভাবে ভক্ষণ করবে। মোটকথা হলো যারা ইয়াতীম লালন করবে তাদের আল্লাহর ইচ্ছায় ক্ষমা করে দেয় হবে। (তুহফাতুল আহওয়াযী ৫ম খন্ড, হাঃ ৪৯৭৫)