৪৯২০

পরিচ্ছেদঃ ১৪. প্রথম অনুচ্ছেদ - অনুগ্রহ ও স্বজনে সদাচার

৪৯২০-[১০] উক্ত রাবী [আবূ হুরায়রা (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ’’রহিম’’ (আত্মীয়তা) শব্দটি আল্লাহ তা’আলার গুণবাচক নাম ’’রহমান’’ থেকে উদ্ভূত। আল্লাহ তা’আলা ’’রহম’’ (আত্মীয়তা)-কে বলেছেনঃ যে ব্যক্তি তোমাকে সংযোজন করে, আমি তার সাথে সংযোজিত হবো; আর যে ব্যক্তি তোমাকে ছিন্ন করবে আমি তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করব। (বুখারী)[1]

بَابُ الْبِرِّ وَالصِّلَةِ

وَعَنْهُ
قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: الرَّحِمُ شِجْنَةٌ مِنَ الرَّحْمَنِ. فَقَالَ اللَّهُ: مَنْ وَصَلَكِ وَصَلْتُهُ وَمَنْ قَطَعَكِ قَطَعْتُهُ . رَوَاهُ البُخَارِيّ

وعنه قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: الرحم شجنة من الرحمن. فقال الله: من وصلك وصلته ومن قطعك قطعته . رواه البخاري

ব্যাখ্যাঃ (شِجْنَةٌ) শব্দের অর্থ বিভিন্ন গাছের শিকড়, যা একটি আরেকটির মধ্যে প্রবেশ করে থাকে। বলা হয়ে থাকে الحديث ذو شجون অর্থাৎ এমন কথা যার এক বাক্য অন্য বাক্যের মাঝে অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেছে। হাদীসে উল্লেখিত শব্দ (مِنَ الرَّحْمٰنِ) অর্থাৎ رحم এর উৎপত্তি মহান আল্লাহর الرَّحْمٰنِ নাম থেকেই। বস্তুতঃ এ ‘রহিম’ হলো আল্লাহ রব্বুল ‘আলামীনের দয়ার একটি অংশ, তাই যারা রহিম তথা আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখবে তারা আল্লাহর দয়া লাভে ধন্য হবে। আর যারা রহিম তথা আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করবে তারা আল্লাহর রহম বা দয়া থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে।

ইমাম কুরতুবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ আত্মীয়তার যে সম্পর্কের কথা বজায় রাখতে বলা হয়েছে তা মোটামোটি দু’ শ্রেণীর- ১। عامة তথা ব্যাপক। ২। خاصة বিশেষ কোন সম্পর্ক।

عامة তথা ব্যাপক আত্মীয়তার সম্পর্ক হলো দীনের দিক দিয়ে সকল মুসলিম একে অপরের সাথে সম্পর্ক বজায় রাখবে, পরস্পর পরস্পরকে ভালোবাসবে, শ্রদ্ধা করবে, একে অন্যের প্রতি ইনসাফ করবে, একে অন্যের আবশ্যিক হক ও প্রয়োজনীয় হক আদায়ে সচেষ্ট থাকবে। অপরদিকে خاصة তথা বিশেষ দৃষ্টিকোণ থেকে আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখার অর্থ হলো আত্মীয়-স্বজনদের কল্যাণে অর্থ ব্যয় করা, তাদের খোঁজ-খবর নেয়া, ভুল-ভ্রান্তি ক্ষমা দৃষ্টিতে দেখা।

ইবনু আবূ জামরাহ্ (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখার কয়েকটি মাধ্যম হতে পারে, যেমন- একে অন্যের কল্যাণে অর্থ ব্যয়ের মাধ্যমে, বিপদে সাহায্য করার মাধ্যমে, তার অকল্যাণ দূর করার মাধ্যমে, তার সাথে হাসোজ্জ্বল চেহারা নিয়ে সাক্ষাতের মাধ্যমে এবং তার জন্য দু‘আ করার মাধ্যমে।

(ফাতহুল বারী ১০ম খন্ড, হাঃ ৫৯৮৮)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৫: শিষ্টাচার (كتاب الآداب)