পরিচ্ছেদঃ ১৪. প্রথম অনুচ্ছেদ - অনুগ্রহ ও স্বজনে সদাচার
৪৯১৯-[৯] আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলা সকল মাখলূক সৃষ্টি করলেন। আর যখন তা থেকে অবসর হলেন, তখন রহিম তথা ’’আত্মীয়তা’’ উঠে দাঁড়াল এবং আল্লাহ রহমানুর্ রহীম-এর কোমর ধরল। তখন আল্লাহ তা’আলা বললেনঃ থামো, কি চাও বলো? ’’আত্মীয়তা’’ জিজ্ঞেস করল, এ স্থান তার, যে তোমার কাছে আত্মীয়তার সম্পর্কচ্ছেদ থেকে রেহাই চায়। আল্লাহ তা’আলা বললেনঃ তুমি কি এ কথায় সম্মত আছ, যে ব্যক্তি তোমাকে বহাল ও সমুন্নত রাখবে, তার সাথে আমিও সম্পর্ক বহাল রাখব; আর যে তোমাকে ছিন্ন করবে, আমিও তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করব? রহিম তথা আত্মীয়তা উত্তর দিল, হ্যাঁ, রাযি আছি, হে আমার প্রভু! আল্লাহ তা’আলা বললেনঃ তাহলে তোমার সাথে আমার এ ওয়া’দাই রইল। (বুখারী ও মুসলিম)[1]
بَابُ الْبِرِّ وَالصِّلَةِ
وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: خُلِقَ اللَّهُ الْخَلْقَ فَلَمَّا فَرَغَ مِنْهُ قَامَتِ الرَّحِمُ فَأَخَذَتْ بِحَقْوَيِ الرَّحْمَنِ فَقَالَ: مَهْ؟ قَالَتْ: هَذَا مقَام العائذ بك من القطيعةِ. قَالَ: أَلَا تَرْضَيْنَ أَنْ أَصِلَ مَنْ وَصَلَكِ وَأَقْطَعَ مَنْ قَطَعَكِ؟ قَالَتْ: بَلَى يَا رَبِّ قَالَ: فَذَاك . مُتَّفق عَلَيْهِ
ব্যাখ্যাঃ ইবনু আবূ জামরাহ্ (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ এখানে সৃষ্টি দ্বারা সকল মানবকে উদ্দেশ্য হতে পারে। কিংবা শুধুমাত্র মুকাল্লাফিন বা দায়িত্বপ্রাপ্ত বান্দাগণ উদ্দেশ্য হতে পারে। উক্ত হাদীসের কথাটি আকাশ জমিন সৃষ্টি করার পরও হতে পারে অথবা আকাশ জমিন সৃষ্টির বিষয়টি লাওহে মাহফূযে সংরক্ষেত হওয়ার পরও হতে পারে, অথবা বানী আদামের সকল রূহ সৃষ্টির পরও হতে পারে। হাদীসে বলা হয়েছে ‘‘রহিম তথা আত্মীয়তা বলবে’’- এ কথার উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ইবনু আবী জামরাহ্ বলেনঃ সম্ভাবনা আছে রহিম অবস্থা অনুযায়ী কথা বলেছিল, অথবা জবান দ্বারাই কথা বলেছিল। এখানে প্রশ্ন হলো জবান দিয়ে যদি রহিম কথাই বলে তাহলে রহিম-এর রূপ বর্তমানে যে রকম আছে সে রকমই ছিল নাকি আল্লাহ রব্বুল ‘আলামীন কথা বলার সময় তাকে জবান এবং বিবেক দিয়েছিলেন? এর উত্তরে সহীহ কথা হলো যে রকম আছে সে রকমই ছিল কিন্তু আল্লাহ তাকে বলার শক্তি দিয়েছিলেন। কেউ কেউ বলেছেন যে, একজন ফেরেশতাই রহিম-এর জবানে কথা বলেছিল।
(أَصِلَ مَنْ وَصَلَكِ وَأَقْطَعَ مَنْ قَطَعَكِ) হাদীসের এ অংশটিকে বলা হয়েছে আল্লাহ রহিম তথা আত্মীয়তা-কে বললেন, ‘‘তোমার সম্পর্ক যে বজায় রাখবে আমি তার সাথে সম্পর্ক বজায় রাখব, যে তোমার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করবে আমিও তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করব।’’ ইবনু আবী জামরাহ্ বলেনঃ এখানে সম্পর্ক বজায় রাখার বিষয়টি আল্লাহর পক্ষ থেকে ইহসানের ইঙ্গিত বহন করছে তাদের জন্য যারা আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখবে। অনুরূপ সম্পর্ক ছিন্ন অর্থ ইহসান থেকে মাহরুম করে দেয়া। (ফাতহুল বারী ১০ম খন্ড, হাঃ ৫৯৮৭)