৪৮৯০

পরিচ্ছেদঃ ১২. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - ঠাট্টা ও কৌতুক প্রসঙ্গে

৪৮৯০-[৭] ’আওফ ইবনু মালিক আল আশজা’ঈ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি তাবূকের যুদ্ধের সময় রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে উপস্থিত হলাম। তিনি একটি চামড়ার তাঁবুর মধ্যে অবস্থান করছিলেন। আমি সালাম প্রদান করলে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমার সালামের জবাব দিলেন এবং বললেন, ভিতরে চলে এসো। আমি বললামঃ হে আল্লাহর রসূল! আমার সম্পূর্ণ শরীরটি নিয়েই ভিতরে আসব? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ হ্যাঁ, সম্পূর্ণটা নিয়েই। তখন আমি ভিতরে প্রবেশ করলাম। ’উসমান ইবনু আবূ ’আতিকাহ্ বলেনঃ ’আওফ ইবনু মালিক-এর ’’আমি সম্পূর্ণ প্রবেশ করব?’’ বলে কৌতুক করার কারণ ছিল, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর তাঁবুটি ছোট ছিল। (আবূ দাঊদ)[1]

وَعَنْ عَوْفِ بْنِ مَالِكٍ الْأَشْجَعِيِّ قَالَ: أَتَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي غَزْوَةِ تَبُوكَ وَهُوَ فِي قُبَّةٍ مِنْ أَدَمٍ فَسَلَّمْتُ فَرَدَّ عَلَيَّ وَقَالَ: «ادْخُلْ» فَقُلْتُ: أَكُلِّي يَا رَسُولَ اللَّهِ؟ قَالَ: «كُلُّكَ» فَدَخَلْتُ. قَالَ عُثْمَان بن أبي عَاتِكَة: إِنَّمَا قَالَ أَدْخُلُ كُلِّي مِنْ صِغَرِ الْقُبَّةِ. رَوَاهُ أَبُو دَاوُد

وعن عوف بن مالك الاشجعي قال: اتيت رسول الله صلى الله عليه وسلم في غزوة تبوك وهو في قبة من ادم فسلمت فرد علي وقال: «ادخل» فقلت: اكلي يا رسول الله؟ قال: «كلك» فدخلت. قال عثمان بن ابي عاتكة: انما قال ادخل كلي من صغر القبة. رواه ابو داود

ব্যাখ্যাঃ (أَكُلِّي يَا رَسُولَ اللهِ؟) সাহাবী (রাঃ) রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে এ কথা বলার কারণ হলো যে তাবুর মধ্যে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন, সে তাবুটি ছোট ছিল। যেমনটি সামনে বর্ণনা আসছে। আর অত্র হাদীসটি হতে বুঝা যাচ্ছে যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেরূপ সাহাবীদের সাথে ঠাট্টা-কৌতুক করতেন, ঠিক তেমনি সাহাবীরাও নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে ঠাট্টা-কৌতুক করতেন। (‘আওনুল মা‘বূদ ৮ম খন্ড, হাঃ ৪৯৯২)

তাবূক যুদ্ধ : ৯ম হিজরীর রজব মাসে তাবূক যুদ্ধ সংগঠিত হয়। মুতার যুদ্ধে রোমকদের বিরুদ্ধে প্রথম অভিযানের ১৩ মাস পর এটি ছিল তাদের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় অভিযান। আর এটিই ছিল রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর অংশগ্রহণে তার জীবনের শেষ যুদ্ধ।

এ অভিযানে মুসলিম বাহিনীতে সৈন্যসংখ্যা ছিল ৩০,০০০ (ত্রিশ হাজার) এবং রোমকদের সৈন্য সংখ্যা ছিল ৪০,০০০ (চল্লিশ হাজার)-এর বেশী। যাদের মধ্যে লাখাম ও জুযামসহ অন্যান্য ‘আরব খ্রিষ্টান গোত্রসমূহ ছিল। যারা ইতিমধ্যে শামের (بلقاء) ‘বালকা’ পর্যন্ত এসে গিয়েছিল। গত বছরে মুতার যুদ্ধের শোচনীয় পরাজয়ের প্রতিশোধ নেবার জন্য তারা সরাসরি মদীনায় হামলার এই গোপন প্রস্তুতি নেয়। তাতে মদীনার সর্বত্র রোমক ভীতির (خَوْفُ غَسَّانَ) সঞ্চার হয়। কিন্তু এতদসত্ত্বেও রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের প্রতিরোধে রোমান সীমান্ত অভিমুখে যাত্রা করলে তারা সংবাদ পেয়ে ভীত হয়ে পালিয়ে যায়। রমাযান মাসে মুসলিম বাহিনী বিনা যুদ্ধে জয়ী হয়ে মদীনায় ফিরে আসে। এ অভিযানকালে সূরাহ্ তাওবার অনেকগুলো আয়াত নাযিল হয়। পঞ্চাশ দিনের এ দীর্ঘ সফরে ৩০ দিন যাতায়াতে এবং ২০ দিন তাবূকে অবস্থানে ব্যয়িত হয়।ৎ

(ইবনু হিশাম ২/৫১৫-১৬, যাদুল মা‘আদ ৩/৪৬১, আর্ রা্হীক ৪২০, সীরাতুর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ৫৮৩ পৃঃ)

এ যুদ্ধে সাহাবীগণ প্রচুর পরিমাণে দান করেন। এ যুদ্ধের জন্য আবূ বকর (রাঃ) তার সমস্ত সম্পদ এনে পেশ করেন এবং ‘উমার ফারূক (রাঃ) তার অর্ধেক সম্পদ পেশ করেন। এ যুদ্ধ থেকে ফিরে (مسجد الضرار) ‘মসজিদে যিরার’ বা অনিষ্টকারী মসজিদকে ভেঙ্গে ফেলা হয়।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আউফ ইবনু মালিক (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৫: শিষ্টাচার (كتاب الآداب)