৪৫৮৪

পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - শুভ ও অশুভ লক্ষণ

৪৫৮৪-[৯] ’আবদুল্লাহ ইবনু মাস্’ঊদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ অশুভ লক্ষণ গ্রহণ করা শির্কী কাজ। এ বাক্যটি তিনি তিনবার উচ্চারণ করেছেন। আর আমাদের মধ্যে কেউ নেই যার মনে অশুভ লক্ষণের ব্যাপারে উদ্রেক না হয়; কিন্তু আল্লাহর ওপরে পূর্ণ তাওয়াক্কুল বা ভরসা করলে তিনি তা দূরীভূত করে দেন। (আবূ দাঊদ ও তিরমিযী)[1]

ইমাম তিরমিযী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ আমি শুনেছি, ইমাম বুখারী (রহিমাহুল্লাহ) বলেছেনঃ সুলায়মান ইবনু হারব (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, হাদীসের শেষাংশটি এটা আমার মতে ইবনু মাস্’ঊদ-এর নিজস্ব কথা।

وَعَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «الطِّيَرَةُ شِرْكٌ» قَالَهُ ثَلَاثًا وَمَا مِنَّا إِلَّا وَلَكِنَّ اللَّهَ يُذْهِبُهُ بِالتَّوَكُّلِ. رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ وَالتِّرْمِذِيُّ وَقَالَ: سَمِعْتُ مُحَمَّدَ بْنَ إِسْمَاعِيلَ يَقُولُ: كَانَ سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ يَقُولُ فِي هَذَا الْحَدِيثِ: «وَمَا مِنَّا إِلَّا وَلَكِنَّ اللَّهَ يُذْهِبُهُ بِالتَّوَكُّلِ» . هَذَا عِنْدِي قَوْلُ ابْنِ مَسْعُودٍ

وعن عبد الله بن مسعود عن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال: «الطيرة شرك» قاله ثلاثا وما منا الا ولكن الله يذهبه بالتوكل. رواه ابو داود والترمذي وقال: سمعت محمد بن اسماعيل يقول: كان سليمان بن حرب يقول في هذا الحديث: «وما منا الا ولكن الله يذهبه بالتوكل» . هذا عندي قول ابن مسعود

ব্যাখ্যাঃ الطِّيَرَةُ شِرْكٌ অর্থাৎ শির্ক হয় তাদের বিশ্বাসের কারণে, তাদের বিশ্বাস হলো নিশ্চয় অশুভ লক্ষণ তাদের জন্য উপকার নিয়ে আসে অথবা তাদের থেকে ক্ষতিকে দূরীভূত করে। এটাকে যখন তারা আবশ্যক ভেবে কাজ করে তখন এ ক্ষেত্রে তারা যেন আল্লাহর সাথে শরীক স্থাপন করে ফেলে। আর এটাকে গুপ্ত শির্ক বলে। আর যে ব্যক্তি এ বিশ্বাস রাখে যে, আল্লাহ ব্যতীত অন্য কোন কিছু স্বতন্ত্রভাবে উপকার নিয়ে আসতে পারে অথবা ক্ষতি সাধন করতে পারে তবে সে অবশ্যই প্রকাশ্য শির্ক করল।

কাযী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ এটাকে কেবল শির্ক হিসেবেই নামকরণ করা হয়েছে। কেননা তারা অপছন্দনীয় বিষয় সংঘটিত হওয়ার ক্ষেত্রে অশুভ লক্ষণের বস্তুটিকে প্রভাবিতকরণ মনে করত। আর সঠিকভাবে কারণগুলো বিবেচনা করলে গোপন শির্ক হয়। সুতরাং এর সাথে যদি মূর্খতা ও খারাপ ‘আক্বীদাহ্যুক্ত হয় তবে কেমন হবে?

(إِلَّا) অর্থাৎ অশুভ লক্ষণের দিক থেকে কিছু না কিছু ক্ষতি তার হয়। এর কারণ হলো আত্মা তার দিকে ঝুঁকে পড়ে। এখানে মুসতাসনাকে বিলুপ্ত করা হয়েছে, কারণ তা উচ্চারণ করা অপছন্দনীয়।

‘আল্লামা তূরিবিশতী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ অর্থাৎ অশুভ লক্ষণের দিক থেকে তার সন্দেহের উদ্রেক হওয়ার কারণে। তিনি তার এ কথাকে পূর্ণ করাকে অপছন্দনীয় মনে করেছেন। এর কারণ হলো অপছন্দনীয় অবস্থা তার সাথে সংযুক্ত হচ্ছে। আর কথা বলার আদবের মধ্যে এটিও এক প্রকার যে, কথা বলার সময় খারাপ কথার প্রতি ইঙ্গিত করে উচ্চারণ না করে শেষ করা, যেন সেটি নিজের জন্যও খারাপের দৃষ্টান্ত না হয়। ‘আল্লামা খত্ত্বাবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ এর অর্থ হলো যার (অন্তরে) অশুভ লক্ষণ এসে পড়ে। আর এ বিষয়ে তার অন্তরে অপছন্দ অগ্রবর্তী হয়েছে। কিন্তু কথাকে সংক্ষিপ্ত করার জন্য তা বিলুপ্ত করা হয়েছে এবং শ্রোতার বুঝের উপর নির্ভর করা হয়েছে।

(وَمَا مِنَّا) থেকে নিয়ে শেষ পর্যন্ত নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কথা নয়, এটা ‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস্‘ঊদ -এর কথা। আর এটিই সঠিক কথা। শায়খ ইয্যুদ্দীন ইবনু ‘আবদুস্ সালাম  বলেন, (الطيرة والتطير) এর মধ্যে পার্থক্য হলো التطير বলা হয় অন্তরে খারাপ ধারণা পোষণ করাকে। আর الطيرة বলা হয় খারাপ ধারণার উপর ভিত্তি করে কোন কাজ করাকে।

(بِالتَّوَكُّلِ) অর্থাৎ তার ওপর নির্ভর করার কারণে এবং মহান আল্লাহর প্রতি সম্পৃক্ত করার কারণে। মোটকথা হলো কুমন্ত্রণা থেকে শিক্ষার কিছু নেই। যখনই অসর্তকতা চলে আসে, সাথে সাথেই ফিরে আসা আবশ্যক। (‘আওনুল মা‘বূদ ৭ম খন্ড, হাঃ ৩৯০৬; মিরক্বাতুল মাফাতীহ; তুফাতুল আহ্ওয়াযী ৪র্থ খন্ড, হাঃ ১৬১৪)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৩: চিকিৎসা ও ঝাড়-ফুঁক (كتاب الطب والرقى)