৪৪৭২

পরিচ্ছেদঃ ৩. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - চুল আঁচড়ানো

৪৪৭২-[৫৪] ’আবদুল্লাহ ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা ইসমিদ সুরমা লাগাও। কেননা তা দৃষ্টিশক্তি প্রখর করে এবং পলকের চুল অধিক জন্মায়। বর্ণনাকারী ইবনু ’আব্বাস(রাঃ) বলেনঃ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর একটি সুরমাদানি ছিল, তিনি প্রত্যেক রাত্রে তা হতে এ চোখে তিনবার, ঐ চোখে তিনবার সুরমার শলাকা লাগাতেন। (তিরমিযী)[1]

وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «اكْتَحِلُوا بِالْإِثْمِدِ فَإِنَّهُ يَجْلُو الْبَصَرَ وَيُنْبِتُ الشَّعْرَ» . وَزَعَمَ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَتْ لَهُ مُكْحُلَةٌ يَكْتَحِلُ بِهَا كُلَّ لَيْلَةٍ ثَلَاثَةً فِي هَذِهِ وَثَلَاثَةً فِي هَذِه. رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ

وعن ابن عباس ان النبي صلى الله عليه وسلم قال: «اكتحلوا بالاثمد فانه يجلو البصر وينبت الشعر» . وزعم ان النبي صلى الله عليه وسلم كانت له مكحلة يكتحل بها كل ليلة ثلاثة في هذه وثلاثة في هذه. رواه الترمذي

ব্যাখ্যাঃ (اكْتَحِلُوا بِالْإِثْمِدِ) তোমরা ইসমিদের সুরমা লাগাও। "إثمد" শব্দটির ‘হামযা’ ও ‘মীম’ হরফে যের দিয়ে ইসমিদ। আবার ‘মীম’ হরফে পেশ দিয়ে ইসমুদও পড়া যায়। ইসমিদ বা ইসমুদ এক জাতের পাথর যা থেকে সুরমা তৈরি হয়। কেউ কেউ বলেন, সুরমা বলে আমরা যেটাকে জানি সেটাই ইসমুদ। তবে বাহ্যত বুঝা যায়, এটি সুরমার বিশেষ একটি প্রকার। যেমন আবূ দাঊদে ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)-এর সূত্রে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত হাদীসে রয়েছে- وَإِنَّ خَيْرَ أَكْحَالِكُمُ الإِثْمِدُ ‘‘আর তোমাদের সুরমাসমূহের মাঝে সর্বধিক উত্তম হলো ইসমিদ।’’

তিরমিযীর বর্ণনার শব্দ- وخير ما اكتحلتم به الإثمد ‘‘আর তোমরা যা দিয়ে সুরমা ব্যবহার করো তন্মধ্যে উত্তম হচ্ছে ইসমিদ।’’ (তিরমিযী হাঃ ২০৪৮)

তিরমিযীর বর্ণনাটি আমরা সামনেই দেখব। এসব বর্ণনা থেকে বুঝা যায় যে, ইসমিদ হচ্ছে সুরমার একটি প্রকার এবং তা সবচেয়ে ভালো মানের সুরমা।

(فَإِنَّهٗ يَجْلُو الْبَصَرَ) কেননা তা দৃষ্টি প্রকাশ করে। এটি সুরমা ব্যবহারের একটি উপকার। দৃষ্টি প্রকাশ করে অর্থাৎ দৃষ্টিকে সুন্দর এবং চোখের জ্যোতি বাড়ায় এবং চোখের মধ্যে মাথা থেকে নেমে আসা ময়লা পরিষ্কার করে। এর মাধ্যমে মূলত দৃষ্টিকে স্বচছ রাখে।

(وَيُنْبِتُ الشَّعْرَ) আর চুল গজায়। এটি সুরমা ব্যবহারের দ্বিতীয় উপকার। এখানে চুল বলতে চোখের চুল তথা চোখের পাপড়ি উদ্দেশ্য।

(وَزَعَمَ) "زعم" এর শাব্দিক অর্থ ধারণা করা। তবে অনেক সময় শব্দটি নিশ্চিত কথার ওপর প্রয়োগ হয়। এখানে এই অর্থই উদ্দেশ্য। এখানে রসূলের সুরমা ব্যবহারের রীতির ধারণাকারী বা কথাটির প্রবক্তা হলেন ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)। বিভিন্ন বর্ণনা থেকেও তা প্রমাণিত হয়। তবে কেউ কেউ বলেন, এ কথার প্রবক্তা হলেন হাদীসটির বর্ণনাকারী ইমাম তিরমিযীর শায়খ মুহাম্মাদ ইবনু হুমায়দ। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)

(ثَلَاثَةً فِي هٰذِه وَثَلَاثَةً فِي هٰذِه) তিনবার এ চোখে তিনবার ওই চোখে। অর্থাৎ ডান চোখে তিনবার এবং বাম চোখে তিনবার। প্রতি রাতে এ চোখে তিনবার আর ও চোখে তিনবারের অর্থ এই নয় যে, রাতে তিন সময়ে সুরমা লাগাতেন। বরং উদ্দেশ্য হলো, সুরমা ব্যবহারের সময় সুরমার ব্যবহারে কাঠি বা শলা তিন বার চোখে লাগাতেন এবং প্রতিবার শলায় সুরমা নিতেন। যেমন কোন কোন বর্ণনায় রয়েছে- مَنِ اكْتَحَلَ فَلْيُوتِرْ অর্থাৎ যে সুরমা ব্যবহার করবে সে যেন বিজোড় করে। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ; তুহফাতুল আহ্ওয়াযী ৫ম খন্ড, হাঃ ১৭৫৭)


হাদিসের মানঃ সহিহ/যঈফ [মিশ্রিত]
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২২: পোশাক-পরিচ্ছদ (كتاب اللباس )