৪২৪৩

পরিচ্ছেদঃ ১. প্রথম অনুচ্ছেদ - অতিথি আপ্যায়ন প্রসঙ্গে

৪২৪৩-[১] আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আল্লাহ ও শেষ দিনের প্রতি ঈমান রাখে, সে যেন অবশ্যই মেহমানের সম্মান করে। আর যে ব্যক্তি আল্লাহ ও শেষ দিনের প্রতি ঈমান রাখে, সে যেন তার প্রতিবেশীকে কষ্ট না দেয়। আর যে ব্যক্তি আল্লাহ ও শেষ দিনের প্রতি ঈমান রাখে, সে যেন অবশ্যই ভালো কথা বলে, নতুবা যেন চুপ থাকে। অপর এক বর্ণনায় ’’প্রতিবেশী’’র স্থলে রয়েছে, যে ব্যক্তি আল্লাহ ও শেষ দিনের প্রতি ঈমান রাখে, সে যেন অবশ্যই আত্মীয়ের হক আদায় করে। (বুখারী ও মুসলিম)[1]

بَابُ الضِّيَافَةِ

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ فَلْيُكْرِمْ ضَيْفَهُ وَمَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ فَلَا يُؤْذِ جَارَهُ وَمَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ فَلْيَقُلْ خَيْرًا أَوْ لِيَصْمُتْ» . وَفِي رِوَايَةٍ: بَدَلَ «الْجَارِ» وَمَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ فَلْيَصِلْ رحِمَه

عن ابي هريرة قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «من كان يومن بالله واليوم الاخر فليكرم ضيفه ومن كان يومن بالله واليوم الاخر فلا يوذ جاره ومن كان يومن بالله واليوم الاخر فليقل خيرا او ليصمت» . وفي رواية: بدل «الجار» ومن كان يومن بالله واليوم الاخر فليصل رحمه

ব্যাখ্যাঃ (مَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِاللهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ) ‘‘যে ব্যক্তি আল্লাহর ও শেষ দিনের প্রতি ঈমান রাখে’’ এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো পূর্ণ ঈমান রাখবে। এখানে আল্লাহ ও শেষ দিনের প্রতি ঈমান আনার কথা খাস বা নির্দিষ্টভাবে বলার কারণ হল- পরকালের প্রতি ইঙ্গিত। অর্থাৎ যে ব্যক্তি ঐ আল্লাহর প্রতি ঈমান আনল যিনি সৃষ্টি করেছেন। আর ঈমান নিয়ে আসলো যে, তাকে তার ‘আমলের প্রতিদান দেয়া হবে। সুতরাং সে অবশ্যই যেন উল্লেখিত বৈশিষ্ট্যগুলোর প্রতি ‘আমল করে। (ফাতহুল বারী ১০ম খন্ড, হাঃ ৬০১৮)

(فَلْيُكْرِمْ ضَيْفَهٗ) ‘‘সে যেন অবশ্যই তার মেহমানকে সম্মান করে’’ সফর থেকে আগমনকারী ব্যক্তি যিনি মুক্বীম (বাড়ীতে অবস্থানকারী) ব্যক্তির নিকট আগমন করেন তাকে মেহমান (الضيف) বলা হয়। (‘আওনুল মা‘বূদ ৬ষ্ঠ খন্ড, হাঃ ৩৭৪৪)

 মেহমানকে সম্মান করা হলো হাসি মুখে ও সুন্দর ভাষায় তার সাথে কথা বলা এবং প্রথম তিনদিন তাকে ভালো খাবার খেতে দেয়া, আর বাকী দিনগুলো স্বাভাবিক খাবার খেতে দেয়া। তিন দিনের পর সাদাকা বলে গণ্য করা হবে। সে ইচ্ছা হলে ভালো খাওয়াতে পারে আর ভালো নাও খাওয়াতে পারে। (তুহফাতুল আহ্ওয়াযী ৫ম খন্ড, হাঃ ১৯৬৭)

মেহমানকে সম্মান করার হুকুম ব্যক্তি ও অবস্থাভেদে ভিন্ন হতে পারে। কখনও ফরযে কিফায়াহ্ কখনও ফরযে ‘আইন, কখনও মুস্তাহাব। (ফাতহুল বারী ১০ম খন্ড, হাঃ ৬০১৮)

(فَلَا يُؤْذِ جَارَهٗ) ‘‘তার প্রতিবেশীকে কষ্ট না দেয়’’ এর অর্থ প্রতিবেশীকে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করা। যেমন, সে ধার চাইলে ধার দেয়া, সহযোগিতা চাইলে সহযোগিতা করা, অসুস্থ হলে সেবা করা, তার ভালো কিছু হলে তাকে অভিনন্দন জানানো, তার খারাপ কিছু হলে তাকে সান্তবনা দেয়া, সে মৃত্যুবরণ করলে তার জানাযায় অংশগ্রহণ করা। কোন কিছু কিনলে তাকে হাদিয়া স্বরূপ দেয়া ইত্যাদি। (ফাতহুল বারী ১০ম খন্ড, হাঃ ৬০১৮)

(فَلْيَقُلْ خَيْرًا أَوْ لِيَصْمُتْ) ‘‘যে যেন অবশ্যই ভালো কথা বলে, নতুবা যেন চুপ থাকে’’ এখানে প্রথম অংশ তথা ‘‘যে যেন অবশ্যই ভালো কথা বলে’’ এর দ্বারা খারাপ থেকে দূরে থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আর দ্বিতীয় অংশ তথা ‘‘যেন চুপ থাকে’’ এর দ্বারা ফাযীলাত অর্থাৎ মর্যাদার দ্বারা অলংকৃত হওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। মোটকথা, যে ব্যক্তি ঈমান রাখে সে আল্লাহর সৃষ্টির প্রতি কল্যাণকর কথা বলার মাধ্যমে ও অকল্যাণকর কথা থেকে চুপ থাকার মাধ্যমে সহনুভূতি দেখাবে। (ফাতহুল বারী ১০ম খন্ড, হাঃ ৬০১৮)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব ২১: খাদ্য (كتاب الأطعمة)