৩৯৬৬

পরিচ্ছেদঃ ৫. প্রথম অনুচ্ছেদ - যুদ্ধবন্দীদের বিধিমালা

৩৯৬৬-[৭] আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন মক্কার আশিজন অস্ত্রধারী ঘাতক দল তান্’ঈম পাহাড়ের আড়াল হতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তার সাহাবীগণের ওপর অতর্কিত আক্রমণ করার জন্য নিচে নেমে অপেক্ষায় ছিল। কিন্তু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে বিনা মুকাবিলায় বন্দী করে ফেললেন এবং পরে তাদেরকে জীবিত ছেড়ে দিলেন।

অপর সূত্রে বর্ণিত আছে, তাদেরকে মুক্ত করে দিলেন। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তা’আলা আয়াত নাযিল করেন, অর্থাৎ- ’’আল্লাহ সে মহান সত্তা, যিনি মক্কার অদূরে তাদের (কাফিরদের) হাত তোমাদের ওপর হতে এবং তোমাদের হাত তাদের ওপর হতে বিরত রেখেছেন। (মুসলিম)[1]

بَابُ حُكْمِ الْاُسَرَاءِ

وَعَن أنسٍ: أَنَّ ثَمَانِينَ رَجُلًا مِنْ أَهْلِ مَكَّةَ هَبَطُوا عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْ جَبَلِ التَّنْعِيمِ مُتَسَلِّحِينَ يُرِيدُونَ غِرَّةَ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَأَصْحَابِهِ فَأَخَذَهُمْ سِلْمًا فَاسْتَحْيَاهُمْ. وَفِي رِوَايَةٍ: فَأَعْتَقَهُمْ فَأَنْزَلَ اللَّهُ تَعَالَى (وَهُوَ الَّذِي كَفَّ أَيْدِيَهُمْ عَنْكُمْ وَأَيْدِيَكُمْ عَنْهُمْ ببطنِ مكةَ)
رَوَاهُ مُسلم

وعن انس: ان ثمانين رجلا من اهل مكة هبطوا على رسول الله صلى الله عليه وسلم من جبل التنعيم متسلحين يريدون غرة النبي صلى الله عليه وسلم واصحابه فاخذهم سلما فاستحياهم. وفي رواية: فاعتقهم فانزل الله تعالى (وهو الذي كف ايديهم عنكم وايديكم عنهم ببطن مكة) رواه مسلم

ব্যাখ্যা: (مِنْ جَبَلِ التَّنْعِيْمِ) কামূসে আছে- তান্‘ঈম মক্কা থেকে তিন অথবা চার মাইল দূরে অবস্থিত একটি স্থান, বায়তুল্লাহর পথে হিল্ অঞ্চলের সীমানার নিকটবর্তী স্থান, এ নামে একে নামকরণ করার কারণ হলো এর ডান পাশে আছে নু‘আয়ম পর্বত, বাম পাশে আছে না‘ইম পর্বত আর উপত্যকার নাম না‘মান।

(فَأَخَذَهُمْ سِلْمًا) হুমায়দী বলেনঃ এর অর্থ হলো, الصُّلْحُ বা সন্ধি করা। কাযী বলেনঃ سِلْمًا শব্দটিকে সীন ও লাম বর্ণে যবর দিয়ে سَلَمًا পড়া যায় এবং ‘সীন’ বর্ণে যের এবং লাম বর্ণে সাকিন দিয়ে سِلْمًا-ও পড়া যায়। এ ক্ষেত্রে (فَأَخَذَهُمْ سَلَمًا) বাক্যাংশটির অর্থ তিনি তাদেরকে বন্দী করলেন। খত্ত্বাবী বলেনঃ উক্ত পঠন রীতিতে سَلَمًا শব্দ থেকে উদ্দেশ্য আত্মসমর্পণ, আনুগত্য। যেমন মহান আল্লাহর বাণী, ‘‘আর তারা তোমাদের কাছে আত্মসমর্পণের প্রস্তাব পাঠায়’’- (সূরা আন্ নিসা ৪ : ১০)।

ইবনুল আসীর বলেনঃ ঘটনার সাথে এটা সর্বাধিক মিল। কেননা তাদেরকে সন্ধির মাধ্যমে গ্রেপ্তার করা হয়নি, তাদেরকে কেবল দাপটের মাধ্যমে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা অপারগ হয়ে নিজেদেরকে সোপর্দ করেছে।

وَأَيْدِيَكُمْ عَنْهُمْ بِبَطْنِ مَكَّةَ ত্বীবী বলেনঃ মুসলিমদের ওপর মুশরিকদের হঠাৎ আক্রমণ করার ইচ্ছা করার পর তাদেরকে শাস্তি প্রদান করা থেকে মুসলিমদেরকে বিরত রাখা এবং তাদের আক্রমণ হতে মুসলিমদের নিরাপদে রাখা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াবলীর অন্তর্ভুক্ত। যদি আল্লাহ তাদের অন্তরে তাদের প্রতি দয়া, অনুকম্পা সৃষ্টি না করতেন তাহলে নিরাপত্তা অর্জন হতো না।

আমি (মিরকাতুল মাফাতীহ প্রণেতা) বলবঃ একে মহান আল্লাহর ‘‘অতঃপর তোমরা তাদেরকে হত্যা করনি বরং আল্লাহ তাদেরকে হত্যা করেছেন’’- (সূরা আল আনফাল ৮ : ১৭) এ বাণীর সাথে তুলনাকরণ সর্বাধিক সামঞ্জস্যশীল। বায়যাভী তাঁর তাফসীরে বলেনঃ ওটা হলো- ‘ইকরিমাহ্ বিন আবূ জাহাল পাঁচশত লোক নিয়ে হুদায়বিয়ার উদ্দেশে বের হলে আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খালিদ বিন ওয়ালীদকে সৈন্যবাহিনী দিয়ে প্রেরণ করলেন, অতঃপর তিনি তাদেরকে পরাস্ত করে মক্কার প্রাচীর বেষ্টনী এক জায়গাতে প্রবেশ করান, অতঃপর ফিরে আসেন।

সা‘ঈদ ইবনু জুবায়র বলেনঃ ইবনু জারীর এবং ইবনু আবূ হাতিম একে ইবনু আবূ আবযা থেকে বর্ণনা করেছেন। আমি (মিরকাতুল মাফাতীহ প্রণেতা) বলবঃ এটাই মহান আল্লাহর بِبَطْنِ مَكَّةَ এ বাণীর সাথে উপযোগী। একমতে বলা হয়েছে, এ আয়াত দ্বারা মক্কা বিজয় উদ্দেশ্য। আবূ হানীফাহ্ (রহঃ) এ আয়াত দ্বারা প্রমাণ গ্রহণ করেছেন যে, মক্কা বলপূর্বক বিজয় করা হয়েছে। বায়যাভী বলেনঃ এটা দুর্বল, কেননা সূরাটি এর পূর্বে অবতীর্ণ করা হয়েছে। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৯: জিহাদ (كتاب الجهاد)