৩৯৪৫

পরিচ্ছেদঃ ৪. প্রথম অনুচ্ছেদ - যুদ্ধাভিযানে হত্যার বর্ণনা

৩৯৪৫-[৯] ’আব্দুল্লাহ ইবনু ’আওন হতে বর্ণিত। নাফি’ [ইবনু ’উমার (রাঃ)-এর মুক্ত দাস] তাঁকে লিখে জানান, ’আব্দুল্লাহ ইবনু ’উমার(রাঃ) তাঁকে বলেছেন, একদিন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বানী মুসত্বালিক-এর ওপর অতর্কিতভাবে আক্রমণ করেন, যখন তারা মুরয়সী’ নামক স্থানে নিজেদের গবাদিপশু নিয়ে বিভোর ছিল। ফলে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাদের মধ্যে যুদ্ধ করার সক্ষম লোকেদেরকে হত্যা করেন এবং নারী ও শিশু-কিশোরদেরকে বন্দী করলেন। (বুখারী, মুসলিম)[1]

بَابُ الْقِتَالِ فِى الْجِهَادِ

وَعَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَوْنٍ: أَنَّ نَافِعًا كَتَبَ إِلَيْهِ يُخْبِرُهُ أَنَّ ابْنَ عمر أخبرهُ أَن ابْن عمر أَخْبَرَهُ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَغَارَ عَلَى بَنِي الْمُصْطَلِقِ غَارِّينِ فِي نَعَمِهِمْ بِالْمُرَيْسِيعِ فَقتل الْمُقَاتلَة وسبى الذُّرِّيَّة

وعن عبد الله بن عون: ان نافعا كتب اليه يخبره ان ابن عمر اخبره ان ابن عمر اخبره ان النبي صلى الله عليه وسلم اغار على بني المصطلق غارين في نعمهم بالمريسيع فقتل المقاتلة وسبى الذرية

ব্যাখ্যা: (الْمُقَاتِلَةَ) এর দ্বারা এখানে ঐ ব্যক্তি উদ্দেশ্য যে ব্যক্তি যুদ্ধ করার উপযুক্ত। আর সে হলো জ্ঞানবান প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি। (الذُّرِّيَّةَ) এ শব্দ দ্বারা মহিলা ও শিশু উদ্দেশ্য। ইবনুল মালিক বলেনঃ অত্র হাদীসে কাফিরদের উদাসীন থাকাবস্থায় তাদেরকে হত্যা করা, তাদের সম্পদ গ্রাস করা বৈধ হওয়ার ব্যাপারে দলীল আছে।

ইবনুল হুমাম বলেনঃ বুখারী, মুসলিমে ইবনু ‘আওন থেকে বর্ণিত আছে : আমি নাফি‘র কাছে পত্র লিখলাম, এমতাবস্থায় আমি তাকে যুদ্ধের পূর্বে মানুষকে ইসলামের দিকে দা‘ওয়াত দেয়ার ব্যাপারে প্রশ্ন করি তখন তিনি আমার কাছে লিখলেন, এটা কেবল ইসলামের সূচনালগ্নে ছিল। আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বানু মুস্ত্বালিকে আক্রমণ করেছিলেন এমতাবস্থায় যে, তারা উদাসীন ছিল, তাদের প্রাণীগুলো পানি পান করছিল, এ আক্রমণে তিনি যোদ্ধদেরকে হত্যা করলেন, মহিলা ও শিশুদেরকে বন্দী করলেন, সেদিন তিনি জুওয়াইবিয়্যাহ্ বিনতু হারিস-কে লাভ করেন। ইবনু ‘উমার এ ব্যাপারে আমার কাছে হাদীস বর্ণনা করেছেন, আর তিনি ঐ বাহিনীতে ছিলেন। (মিরকাতুল মাফাতীহ)

শারহে মুসলিমে আছে- যে সকল কাফিরদের কাছে ইসলামের দা‘ওয়াত পৌঁছেছে আক্রমণের ব্যাপারে তাদেরকে সতর্ক না করেই তাদের ওপর আক্রমণ চালানো বৈধ হওয়ার ব্যাপারে তিনটি মত। এ কথা মা‘যূরী এবং কাযী বর্ণনা করেন।

একটি হলো- সতর্ক করা আবশ্যক। এ মতটি মালিক এবং অন্যান্যদের মত, এবং এটা দুর্বল মত।। দ্বিতীয়, সতর্ক করা আবশ্যক নয়, আর এটা তার অপেক্ষাও দুর্বল অথবা বাতিল। তৃতীয়, যদি তাদের কাছে দা‘ওয়াত পৌঁছে না থাকে তাহলে আবশ্যক আর পৌঁছে থাকলে আবশ্যক নয়, তবে মুস্তাহাব। আর এটাই বিশুদ্ধ মত, এ মত পোষণ করেছেন ইবনু ‘উমার-এর গোলাম নাফি‘, হাসান বাসরী, সাওরী, লায়স, শাফি‘ঈ, আবূ সাওর, ইবনুল মুনযির ও জুমহূর। ইবনুল মুনযির বলেনঃ এটা অধিকাংশ বিদ্বানদের উক্তি, বিশুদ্ধ হাদীসসমূহ এ অভিমতকেই সমর্থন করে।

অত্র হাদীস প্রমাণ করে, ‘আরবদেরকে দাস বানানো বৈধ, কেননা বানু মুসত্বালিক খুযা‘আহ্ গোত্রের অন্তর্গত ‘আরব বংশোদ্ভূত। এটা ইমাম শাফি‘ঈ-এর নতুন মত, আর এটাই সঠিক। আরও এ মত পোষণ করেছেন ইমাম মালিক, তাঁর সকল সাথীবর্গ, আবূ হানীফাহ্, আওযা‘ঈ এবং জুমহূর বিদ্বানগণ। বিদ্বানদের একটি দল বলেনঃ তাদের দাস বানানো যাবে না এটা ইমাম শাফি‘ঈ-এর প্রবীণ মত। (শারহে মুসলিম ১২তম খন্ড, হাঃ ১৭৩০; ‘আওনুল মা‘বূদ ৫ম খন্ড, হাঃ ২৬৩০)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৯: জিহাদ (كتاب الجهاد)