পরিচ্ছেদঃ ২. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - সফরের নিয়ম-শৃঙ্খলা
৩৯১৯-[২৮] সা’ঈদ ইবনু আবূ হিন্দ (রহঃ) আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ এক প্রকারের উট শায়ত্বনের জন্য হয় এবং একপ্রকারের ঘরও শায়ত্বনের জন্য হয়। মূলত শায়ত্বনের উট হলো যা আমি দেখেছি; তোমাদের মধ্যে কেউ কেউ খুব স্বাস্থ্যসম্মত উত্তম উট সঙ্গে নিয়ে সফরে বের হয়, কিন্তু নিজেও তাতে আরোহণ করে না এবং সে তার এমন ভাইয়ের নিকট দিয়ে পথ অতিক্রম করে যার নিকট সওয়ারী নেই, আর তাকে আরোহণও করায় না। আর শায়ত্বনের ঘর, আমি তা দেখিনি। রাবী সা’ঈদ বলেন, আমার ধারণা, তাই শায়ত্বনের ঘর ঐ সমস্ত ’হাওদা’ই (আসন) হবে, যা লোকেরা মূল্যবান রেশমী কাপড় দ্বারা ঢেকে রাখে। (আবূ দাঊদ)[1]
وَعَنْ سَعِيدِ بْنِ أَبِي هِنْدٍ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «تَكُونُ إِبِلٌ لِلشَّيَاطِينِ وَبُيُوتٌ لِلشَّيَاطِينِ» . فَأَمَّا إِبِلُ الشَّيَاطِينِ فَقَدْ رَأَيْتُهَا: يَخْرُجُ أَحَدُكُمْ بِنَجِيبَاتٍ مَعَهُ قَدْ أَسْمَنَهَا فَلَا يَعْلُو بَعِيرًا مِنْهَا وَيَمُرُّ بِأَخِيهِ قَدِ انْقَطَعَ بِهِ فَلَا يَحْمِلُهُ وَأَمَّا بُيُوتُ الشَّيَاطِينِ فَلَمْ أَرَهَا كَانَ سَعِيدٌ يَقُولُ: لَا أُرَاهَا إِلَّا هَذِهِ الْأَقْفَاصَ الَّتِي يَسْتُرُ النَّاسُ بِالدِّيبَاجِ. رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ
ব্যাখ্যা: (تَكُوْنُ إِبِلٌ لِلشَّيَاطِينِ) ‘‘এক প্রকারের উট শায়ত্বনের জন্য’’ এর দ্বারা এমন উট উদ্দেশ্য যা পালন করা হয় অহংকার প্রদর্শন ও মাল বৃদ্ধির জন্য। এর দ্বারা শারী‘আতসম্মত কোনো কাজ সম্পাদন করা উদ্দেশ্য নয় এবং এমন কোনো কাজেও ব্যবহার করা হয় না যা দ্বারা আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করা যায়।
(وَبُيُوْتٌ لِلشَّيَاطِيْنِ) ঘর হবে শায়ত্বনের জন্য। অর্থাৎ- ঐ অতিরিক্ত ঘর যা প্রয়োজনহীন অথবা যা বানানো হয়েছে হারাম উপায়ে অর্জিত মাল দ্বারা অথবা যে ঘর নির্মাণ করা হয়েছে শুধুমাত্র সুনাম ও সুখ্যাতি অর্জনের জন্য।
(فَلَا يَعْلُوْ بَعِيرًا مِنْهَا) সে ঐ উটগুলোর কোনটিতে আরোহণ করে না, অর্থাৎ উটগুলোকে শুধুমাত্র সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্যই লালন পালন করে, তাতে সে নিজেও আরোহণ করে না।
(وَيَمُرُّ بِأَخِيْهِ قَدِ انْقَطَعَ بِه فَلَا يَحْمِلُه) সে তার এমন ভাইয়ের নিকট দিয়ে অতিক্রম করে যে পথ চলতে দুর্বল হয়ে পড়েছে, কিন্তু সে তার ঐ দুর্বল ভাইকে তাতে আরোহণ করায় না।
পশু সৃষ্টিই করা হয়েছে তার উপর আরোহণের মাধ্যমে তা দ্বারা উপকৃত হওয়ার জন্য। অতএব সে যখন তার দুর্বল কোনো ভাইকে তাতে আরোহণ করায় না যে পথ চলতে অক্ষম এতে সে উক্ত উটকে উপকার সাধন হতে বিরত রাখার মাধ্যমে শায়ত্বনের আনুগত্য করল। সুতরাং তা যেন শায়ত্বনের জন্যই। কাযী ‘ইয়ায বলেনঃ শায়ত্বনের উট দ্বারা উদ্দেশ্য যে উট তার সঙ্গী নির্ধারণ করেছেন। অর্থাৎ- ‘‘সেই মোটাসোটা উত্তম উট’’ যে ব্যক্তি সফরে তা নিজের সাথে রাখে কিন্তু নিজেও সে উটে আরোহণ করে না এবং প্রয়োজনের সময় অন্যকেও তার উপর আরোহণ করায় না। আর শায়ত্বনের জন্য ঘর দ্বারা উদ্দেশ্য সেই হাওদাজ যা রেশমের কাপড় দ্বারা তৈরি যা দাম্ভিক লোকেরা সফরে সঙ্গে নিয়ে যায়। এ ব্যাখ্যা করেছেন তাবি‘ঈগণ। (মিরকাতুল মাফাতীহ; ‘আওনুল মা‘বূদ ৫ম খন্ড, হাঃ ২৫৬৫)