৩৮৭১

পরিচ্ছেদঃ ১. প্রথম অনুচ্ছেদ - যুদ্ধাস্ত্রের প্রস্তুতিকরণ

৩৮৭১-[১১] আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ’আযবা নামক একটি উষ্ট্রী ছিল। দৌড় প্রতিযোগিতায় কোনো উটই তাকে পরাজিত করতে পারত না। একবার জনৈক গ্রাম্য ’আরব একটি উটের পিঠে আরোহণ করে এলো এবং তাকে পিছনে ফেলে দিল। এটা মুসলিমদের জন্য বেদনাদায়ক হলো। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, দুনিয়াতে কোনো কিছুই সমুন্নত হয় না; আল্লাহ তা’আলার চিরন্তন সত্য কথা হলো তাকে (কোনো সময়) অবনত করে দেন। (বুখারী)[1]

بَابُ إِعْدَادِ اٰلَةِ الْجِهَادِ

وَعَن أنسٍ قَالَ: كَانَتْ نَاقَةٌ لِرَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ تُسَمَّى الْعَضْبَاءَ وَكَانَتْ لَا تُسْبَقُ فَجَاءَ أَعْرَابِيٌّ عَلَى قَعُودٍ لَهُ فَسَبَقَهَا فَاشْتَدَّ ذَلِكَ عَلَى الْمُسْلِمِينَ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّ حَقًّا عَلَى اللَّهِ أَنْ لَا يَرْتَفِعَ شَيْءٌ مِنَ الدُّنْيَا إِلَّا وضَعه» . رَوَاهُ البُخَارِيّ

وعن انس قال: كانت ناقة لرسول الله صلى الله عليه وسلم تسمى العضباء وكانت لا تسبق فجاء اعرابي على قعود له فسبقها فاشتد ذلك على المسلمين فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «ان حقا على الله ان لا يرتفع شيء من الدنيا الا وضعه» . رواه البخاري

ব্যাখ্যা: (كَانَتْ نَاقَةٌ لِرَسُوْلِ اللّٰهِ ﷺ تُسَمَّى الْعَضْبَاءَ) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর একটি উটনী ছিল, যার নাম ছিল ‘আযবা, মূলত ‘আযবা বলা হয় এমন উটকে যার কান ফাটা, কিন্তু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ উটনীর কান ফাটা ছিল না। বরং এ উটনীর নাম ছিল ‘আযবা।

(كَانَتْ لَا تُسْبَقُ) ‘‘তা প্রতিযোগিতায় পরাজিত হত না’’ অর্থাৎ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর এ উট এত দ্রুতগামী ছিল যে, কোনো উট প্রতিযোগিতায় তাকে পিছে ফেলতে পারত না।

(فَجَاءَ أَعْرَابِىٌّ عَلٰى قَعُوْدٍ لَه فَسَبَقَهَا) এক বেদুঈন তার ক‘ঊদ নিয়ে আসলো আর তা প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হলো। অর্থাৎ এ ক‘ঊদটি প্রতিযোগিতায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘আযবা উটনী পিছে ফেলে দিয়ে তা বিজয়ী হয়ে গেল। قَعُوْدٍ (ক‘ঊদ) বলা হয় ঐ পুরুষ উটকে যার বয়স দুই বৎসর থেকে ছয় বৎসরের মধ্যে এবং যার বয়স ছয় বৎসরের বেশী হয়ে তাকে جمل (জামাল) বলা হয়। তেমনিভাবে قَعُوْدٌ ঐ উটকে বলা হয় যা বাহন হওয়ার উপযোগী এবং মাদী উটের উপর সওয়ার হতে সক্ষম। (‘আওনুল মা‘বূদ ৮ম খন্ড, হাঃ ৪৭৯৪)

জাওহারী বলেনঃ সওয়ার হওয়ার উপযোগী স্বল্প বয়সের উটকে قَعُوْدٌ বলা হয়। কমপক্ষে তার বয়স দুই বৎসর এবং ছয় বৎসর বয়সে উপনীত হলে তাকে جمل বলা হয়। আযহারী বলেনঃ একমাত্র পুরুষ উটকেই قَعُوْدٌ বলা হয়। মাদী উটকে বলা হয় قَلُوصٌ (কলূস)। (ফাতহুল বারী ৮ম খন্ড, হাঃ ২৮৭২)

(فَاشْتَدَّ ذٰلِكَ عَلَى الْمُسْلِمِيْنَ) বিষয়টি মুসলিমদের নিকট কষ্টকর মনে হলো, অর্থাৎ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উটের এ পরাজয় মুসলিমদের হৃদয়ে কষ্টের কারণ হলো।

(إِنَّ حَقًّا عَلَى اللّٰهِ أَنْ لَّا يَرْتَفِعَ شَيْءٌ مِنَ الدُّنْيَا إِلَّا وَضَعَه) আল্লাহর কর্তব্য হলো দুনিয়াতে কোনো বস্তু বেশী মর্যাদাবান হলে তার মর্যাদা কমিয়ে দেয়া অর্থাৎ দুনিয়াতে কোনো বস্তুর মর্যাদা বেশী বেড়ে গেলে তার মর্যাদা কমিয়ে দেয়া আল্লাহ তা‘আলার স্থায়ী বিধান। (মিরকাতুল মাফাতীহ ৭ম খন্ড, পৃঃ ৩৯৫)

হাদীসের শিক্ষা:

১. প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণের উদ্দেশে ঘোড়া পালন করা বৈধ।

২. বিনয় প্রকাশের প্রতি উৎসাহ প্রদান।

৩. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উত্তম চরিত্র এবং তাঁর বিনয় প্রকাশ।

৪. সাহাবীদের অন্তরে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মর্যাদা।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৯: জিহাদ (كتاب الجهاد)