পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৩৮৩৩-[৪৬] ’আব্দুল্লাহ ইবনু হুবাশী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে সর্বোত্তম ’আমলের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, দীর্ঘ ক্বিয়ামের সালাত আদায়। আবার জিজ্ঞেস করা হলো, কোন্ দান সর্বোত্তম? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, অভাবগ্রস্ত অবস্থায় দানের প্রয়াস। আবার জিজ্ঞেস করা হলো, কোন্ হিজরত সর্বোত্তম? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, আল্লাহ তা’আলা যা নিষেধ করেছেন তা বর্জন করা। আবার জিজ্ঞেস করা হলো, কোন্ জিহাদ সর্বোত্তম? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, মুশরিকদের বিরুদ্ধে জান ও মাল দ্বারা জিহাদ করা। অতঃপর জিজ্ঞেস করা হলো, কোন্ ধরনের মৃত্যু (শহীদ হওয়া) উত্তম? উত্তরে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, যার রক্ত প্রবাহিত হয়েছে এবং তার সওয়ারীর পাও কেটে ফেলা হয়েছে। (আবূ দাঊদ)[1]
নাসায়ী-এর বর্ণনায় আছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট থেকে সর্বোত্তম ’আমলের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, সন্দেহ সংশয়মুক্ত ঈমান, গনীমাতে প্রাপ্ত মালে চুরি বা আত্মসাৎমুক্ত জিহাদ এবং মাকবুল (গ্রহণযোগ্য) হজ্জ/হজ। আবার জিজ্ঞেস করা হলো, কোন্ সালাত সর্বোত্তম? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, দীর্ঘ কুনূত। অতঃপর অন্যান্য বর্ণনায় তারা (আবূ দাঊদ ও নাসায়ী) উভয়ে ঐকমত্যে আছেন।
اَلْفَصْلُ الثَّانِىْ
وَعَن عبدِ الله بنِ حُبَشيٍّ: أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ سُئِلَ أَيُّ الْأَعْمَالِ أَفْضَلُ؟ قَالَ: «طُولُ الْقِيَامِ» قِيلَ: فَأَيُّ الصَّدَقَةِ أَفْضَلُ؟ قَالَ: «جُهْدُ الْمُقِلِّ» قِيلَ: فَأَيُّ الْهِجْرَةِ أَفْضَلُ؟ قَالَ: «مَنْ هَجَرَ مَا حَرَّمَ اللَّهُ عَلَيْهِ» قِيلَ: فَأَيُّ الْجِهَادِ أَفْضَلُ؟ قَالَ: «مَنْ جَاهَدَ الْمُشْرِكِينَ بِمَالِهِ وَنَفْسِهِ» . قِيلَ: فَأَيُّ الْقَتْلِ أَشْرَفُ؟ قَالَ: «مَنْ أُهْرِيقَ دَمُهُ وَعُقِرَ جَوَادُهُ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ
وَفِي رِوَايَةِ للنسائي: أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ سُئِلَ: أيُّ الأعمالِ أفضلُ؟ قَالَ: «إِيمانٌ لَا شكَّ فِيهِ وَجِهَادٌ لَا غُلُولَ فِيهِ وَحَجَّةٌ مَبْرُورَةٌ» . قِيلَ: فَأَيُّ الصَّلَاةِ أَفْضَلُ؟ قَالَ: «طُولُ الْقُنُوتِ» . ثمَّ اتفقَا فِي الْبَاقِي
ব্যাখ্যা: আলোচ্য হাদীসে বেশ কিছু ‘আমলকে সর্বোত্তম ‘আমল হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। তন্মধ্যে অন্যতম একটি হচ্ছে এমন জিহাদ, যাতে মুজাহিদ ব্যক্তি গনীমাতের মাল চুরি করেনি; বরং নিজের জান ও মাল দিয়ে জিহাদে অংশগ্রহণ করে। সুতরাং এ হাদীসটিতেও জিহাদের ফযীলত আলোচনা করা হয়েছে।
কারো মতে হাদীসে বর্ণিত শব্দ ‘‘মুক্বিল’’ দ্বারা উদ্দেশ্য হলো ঐ দরিদ্র ব্যক্তি, যে ক্ষুধায় ধৈর্য ধরতে পারে। এও বলা হয় যে, মুক্বিল দ্বারা উদ্দেশ্য হলো ধনী হৃদয়। যেমনটি রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর হাদীসে এসেছে: «أفضل الصدقة ما كان عن ظهر غنى» অর্থাৎ- সর্বোত্তম সাদাকা হচ্ছে যা ধনী হওয়ার প্রাক্কালে করা হয়।
হাদীসের বাণী «طول القنوت» বলতে বুঝানো হয়েছে লম্বা ক্বিয়াম বিশিষ্ট সালাতকে। কেউ কেউ বলেন, এর দ্বারা যে কোনো সালাত উদ্দেশ্য। কারো মতে এখানে রাতের সালাত তথা ক্বিয়ামুল্ লায়ল উদ্দেশ্য। আর এটাই নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ‘আমলের সাথে বেশী সামঞ্জস্যপূর্ণ। (নাসায়ী হাঃ ২৫২৫)