পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ
৩৫৮১-[২৭] ইয়াযীদ ইবনু নু’আয়ম ইবনু হাযযাল (রহঃ) তাঁর পিতা হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, মা’ইয ইবনু মালিক ইয়াতীম ছিলেন এবং সে আমার পিতার তত্ত্বাবধানে প্রতিপালিত। অতঃপর তিনি এলাকার এক বাঁদীর সাথে যিনা করেন। তখন আমার পিতা তাকে বলেন, তুমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট যাও এবং তুমি যা কিছু করেছ তা তাঁকে এতদসম্পর্কে জানাও। সম্ভবত তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তোমার মাগফিরাতের জন্য দু’আ করবেন এবং এ কথা বলার উদ্দেশ্য তার জন্য গুনাহ মাফের একটি উপায়ন্তর বেরা করা, তাছাড়া আর কিছু ছিল না। অতঃপর মা’ইয এসে বললেন, হে আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! আমি যিনা করেছি। আমার ওপর আল্লাহ কিতাবের বিধান কার্যকর করুন। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তার দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলেন। মা’ইয পুনরায় বললেন, হে আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! আমি যিনা করেছি। আমার ওপর আল্লাহর কিতাবের ফায়সালা কার্যকর করুন। এমনকি তিনি চারবার স্বীকারোক্তি দিলেন। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি চারবার স্বীকারোক্তি দিয়েছ। এখন বল, তুমি কার সাথে যিনা করেছ? মা’ইয বললেন, অমুক নারীর সাথে।
তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তুমি কি তাকে জড়িয়ে ধরেছ? তিনি বললেন, হ্যাঁ। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তুমি কি তার সাথে যৌনাচার করেছ? তিনি বললেন, হ্যাঁ। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) পুনরায় জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কি তার সাথে সঙ্গম করেছ? তিনি বললেন, হ্যাঁ। বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার প্রতি ’রজমের’ আদেশ দিলে তাকে হাররাহ্ নামক অঞ্চলে নিয়ে যাওয়া হয়। অতঃপর যখন তাকে পাথর নিক্ষেপ করা শুরু হলো তখন পাথরের অসহ্য আঘাতের যন্ত্রণায় কাতর হয়ে তিনি অধৈর্য হয়ে পড়লেন এবং দৌড়ে পালিয়ে গেলেন। তারপর ’আব্দুল্লাহ ইবনু উনায়স তাকে এরূপ অবস্থায় পেলেন যে, তার সঙ্গীরা পাথর মারতে মারতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছে। তখন ’আব্দুল্লাহ উটের একটি পায়ের হাড্ডির আঘাতে তাকে মেরে ফেললেন। অতঃপর তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকটে এসে পুরো বিষয় বর্ণনা করলেন। তখন তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ তোমরা তাকে কেন ছেড়ে দিলে না। সম্ভবত সে তওবা্ করত এবং আল্লাহ তা’আলাও তার তওবা্ কবুল করে নিতেন। (আবূ দাঊদ)[1]
اَلْفَصْلُ الثَّالِثُ
وَعَنْ يَزِيدَ بْنِ نُعَيْمِ بْنِ هَزَّالٍ عَنْ أَبِيهِ قَالَ: كَانَ مَاعِزُ بْنُ مَالِكٍ يَتِيمًا فِي حِجْرِ أَبِي فَأَصَابَ جَارِيَةً مِنَ الْحَيِّ فَقَالَ لَهُ أَبِي: ائْتِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَأَخْبَرَهُ بِمَا صَنَعْتَ لَعَلَّهُ يَسْتَغْفِرُ لَكَ وَإِنَّمَا يُرِيدُ بِذَلِكَ رَجَاءَ أَنْ يَكُونَ لَهُ مَخْرَجًا فَآتَاهُ فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ إِني زنيتُ فأقِمْ عليَّ كتابَ اللَّهِ حَتَّى قَالَهَا أَرْبَعَ مَرَّاتٍ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِنَّكَ قَدْ قُلْتَهَا أَرْبَعَ مَرَّاتٍ فَبِمَنْ؟ قَالَ: بِفُلَانَةَ. قَالَ: «هَلْ ضَاجَعْتَهَا؟» قَالَ: نَعَمْ قَالَ: «هَلْ بَاشَرْتَهَا؟» قَالَ: نَعَمْ قَالَ: «هَلْ جَامَعْتَهَا؟» قَالَ: نَعَمْ قَالَ: فَأَمَرَ بِهِ أَنْ يُرْجَمَ فَأُخْرِجُ بِهِ إِلَى الْحَرَّةِ فَلَمَّا رُجِمَ فَوَجَدَ مَسَّ الْحِجَارَةِ فَجَزِعَ فَخَرَجَ يَشْتَدُّ فَلَقِيَهُ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ أُنَيْسٍ وَقَدْ عَجَزَ أَصْحَابُهُ فَنَزَعَ لَهُ بِوَظِيفِ بَعِيرٍ فَرَمَاهُ بِهِ فَقَتَلَهُ ثُمَّ أَتَى النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَذَكَرَ ذَلِكَ لَهُ فَقَالَ: «هَلَّا تَرَكْتُمُوهُ لَعَلَّهُ أَنْ يَتُوبَ. فَيَتُوبَ اللَّهُ عَلَيْهِ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد
ব্যাখ্যা: হাদীসে দলীল হিসেবে সাব্যস্ত হয় যে, যিনার স্বীকারকারী ব্যক্তি যদি পলায়ন করে তাহলে তাকে ছেড়ে দেয়া হবে আর সুস্পষ্টভাবে যদি তার স্বীকারোক্তিকে অস্বীকার করে তাহলে তার হাদ্দ আর প্রয়োগ করা হবে না। আর তা না হলে হাদ্দ প্রয়োগ করা হবে তথা রজম করা হবে। এটা শাফি‘ঈ ও আহমাদ-এর মত। আর মালিফীর প্রসিদ্ধ মত হলো পলায়ন করলেও হাদ্দ প্রয়োগ করা হবে।
কারো মতে তাৎক্ষণিক ধরতে পারলে শাস্তি প্রয়োগ করা হবে আর তাৎক্ষণিক ধরতে না পারলে অব্যাহতি দেয়া হবে। (‘আওনুল মা‘বূদ ৭ম খন্ড, হাঃ ৪৪১০)