৩৪৫৩

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ

৩৪৫৩-[৮] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি পাহাড়ের উপর থেকে পড়ে আত্মহত্যা করবে, সে ঐরূপভাবে জাহান্নামের মাঝে সর্বদা নিক্ষিপ্ত হতে থাকবে। আর যে বিষপানে আত্মহত্যা করেছে, সেও সর্বদা ঐরূপভাবে জাহান্নামে স্বীয় হাতে বিষপানরত থাকবে। আর যে কোনো ধারালো অস্ত্র দ্বারা আত্মহত্যা করেছে, সে জাহান্নামের মধ্যে সর্বদা ঐরূপ ধারালো অস্ত্র দ্বারা স্বীয় হাতে নিজের পেটকে ফুঁড়তে থাকবে। (বুখারী ও মুসলিম)[1]

اَلْفَصْلُ الْأَوَّلُ

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ تَرَدَّى مِنْ جَبَلٍ فَقَتَلَ نَفْسَهُ فَهُوَ فِي نَارِ جَهَنَّمَ يَتَرَدَّى فِيهَا خَالِدًا مُخَلَّدًا فِيهَا أَبَدًا وَمَنْ تَحَسَّى سُمًّا فَقَتَلَ نَفْسَهُ فَسُمُّهُ فِي يَدِهِ يَتَحَسَّاهُ فِي نَارِ جَهَنَّمَ خَالِدًا مُخَلَّدًا فِيهَا أَبَدًا وَمَنْ قَتَلَ نَفْسَهُ بِحَدِيدَةٍ فَحَدِيدَتُهُ فِي يَدِهِ يَتَوَجَّأُ بِهَا فِي بَطْنِهِ فِي نَارِ جهنَّمَ خَالِدا مخلَّداً فِيهَا أبدا»

عن ابي هريرة قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم من تردى من جبل فقتل نفسه فهو في نار جهنم يتردى فيها خالدا مخلدا فيها ابدا ومن تحسى سما فقتل نفسه فسمه في يده يتحساه في نار جهنم خالدا مخلدا فيها ابدا ومن قتل نفسه بحديدة فحديدته في يده يتوجا بها في بطنه في نار جهنم خالدا مخلدا فيها ابدا

ব্যাখ্যা: এ হাদীসের আলোকে আত্মহত্যাকারী ব্যক্তির শেষ পরিণতি সম্পর্কে অবগত হওয়া যায়। যে ব্যক্তি আত্মহত্যা করবে সে জাহান্নামী হবে। এখন প্রশ্ন হলো যে, আত্মহত্যাকারী কি চিরস্থায়ী জাহান্নামী হবে? এ প্রশ্নের উত্তরে বলা যায় যে, যদি আত্মহত্যাকারী ব্যক্তি আত্মহত্যার সময় ঈমানের সাথে থাকে তবে সে এ পাপের শাস্তি ভোগ করার পর জাহান্নাম থেকে মুক্তি পাবে। আর যদি সে ঈমান ত্যাগ করে মারা যায় তবে সে চিরস্থায়ী জাহান্নামী হবে। হাদীসের উক্তি (خَالِدًا مُخَلَّدًا فِيهَا أَبَدًا) এর দ্বারা তাকিদ আরোপ করা হয়েছে। অর্থাৎ কেউ যেন আত্মহত্যার মতো জঘন্য অপরাধ না করে, এ কথা দ্বারা সেদিকে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। অথবা এ কথা দ্বারা বুঝা যায় যে, আত্মহত্যাকারী ব্যক্তি শাস্তির উপযোগী হয়ে পড়েছে। অথবা এর দ্বারা দীর্ঘস্থায়ী শাস্তির কথা বুঝানো হয়েছে (‘আল্লামা কাযী ‘ইয়ায-এর অভিমত এটাই)। আত্মহত্যাকারী ব্যক্তি যে মাধ্যমে আত্মহত্যা করবে জাহান্নামে বসে সে নিজের সাথে অনুরূপ ব্যবহার করবে, অর্থাৎ কেউ যদি বিষপানে আত্মহত্যা করে তবে সে জাহান্নামে ও বিষপান করতে থাকবে আবার যে ব্যক্তি নিজেকে কোনো ধারালো ছুরির আঘাতে হত্যা করবে জাহান্নামে বসেও সে নিজেকে ধারালো ছুরি দ্বারা আঘাত করতে থাকবে। ‘আল্লামা ত্বীবী বলেনঃ আত্মহত্যাকারী যদি এ কাজকে হালাল মনে করে তাহলে সে কাফির হওয়ার কারণে চীর জাহান্নামী হবে, অন্যথায় নয়।

আত্মহত্যাকারী ব্যক্তির জন্য জানাযা সালাত আদায় করা যাবে কিনা- এ প্রশ্নের জবাবে বলা যায় যে, প্রত্যেক কালিমাহ্ স্বীকারকারীর ব্যক্তির জানাযা হবে। যদি কালিমাহ্ স্বীকারকারী কোনো ব্যক্তি আত্মহত্যা করে তার জানাযা হবে। এ মর্মে মারফূ‘ সূত্রে ইবনু ‘উমার থেকে বর্ণিত হাদীস (صَلُّوا خَلْفَ مَنْ قَالَ لَا إِلٰهَ إِلَّا اللّٰهُ، وَصَلُّوا عَلٰى مَنْ مَاتَ مِنْ أَهْلِ لَا إِلٰهَ إِلَّا اللّٰهُ) অর্থাৎ- তোমরা তার পিছে সালাত আদায় কর, যে لَا إِلٰهَ إِلَّا اللّٰهُ স্বীকার করে এবং যে لَا إِلٰهَ إِلَّا اللّٰهُ স্বীকার করে তার জানাযা আদায় কর। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৬: কিসাস (প্রতিশোধ) (كتاب القصاص)