৩১৮৫

পরিচ্ছেদঃ ৫. প্রথম অনুচ্ছেদ - (স্বামী-স্ত্রীর) সহবাস

৩১৮৫-[৩] উক্ত রাবী [জাবির (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকটে এসে বলল, আমার এক দাসী আছে, সে আমাদের কাজকর্ম করে। আমি তার সাথে সহবাস করি; কিন্তু সে গর্ভবতী হোক, এটা আমি চাই না? উত্তরে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তুমি ইচ্ছা করলে ’আযল করতে পার। তবে জেনে রেখ তার জন্য যা তাকদীরে নির্ধারিত হয়েছে তা অবশ্যই ঘটবে। কিছু দিন পরে উক্ত ব্যক্তি এসে বলল, সে দাসী (’আযল করা সত্ত্বেও) গর্ভবতী হয়েছে। তাই তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, আমি তো পূর্বেই বলেছি, তার জন্য যা অবধারিত আছে তা অবশ্যই হবে। (মুসলিম)[1]

بَابُ الْمُبَاشَرَةِ

وَعَنْهُ قَالَ: إِنَّ رَجُلًا أَتَى رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: إِن لي جَارِيَةً هِيَ خَادِمَتُنَا وَأَنَا أَطُوفُ عَلَيْهَا وَأَكْرَهُ أَنْ تَحْمِلَ فَقَالَ: «اعْزِلْ عَنْهَا إِنْ شِئْتَ فَإِنَّهُ سَيَأْتِيهَا مَا قُدِّرَ لَهَا» . فَلَبِثَ الرَّجُلُ ثمَّ أَتَاهُ فَقَالَ: إِن الْجَارِيَة قد حبلت فَقَالَ: «قَدْ أَخْبَرْتُكَ أَنَّهُ سَيَأْتِيهَا مَا قُدِّرَ لَهَا» . رَوَاهُ مُسلم

وعنه قال: ان رجلا اتى رسول الله صلى الله عليه وسلم فقال: ان لي جارية هي خادمتنا وانا اطوف عليها واكره ان تحمل فقال: «اعزل عنها ان شىت فانه سياتيها ما قدر لها» . فلبث الرجل ثم اتاه فقال: ان الجارية قد حبلت فقال: «قد اخبرتك انه سياتيها ما قدر لها» . رواه مسلم

ব্যাখ্যা : হাদীসে উল্লেখিত ‘আর্বী শব্দ جَارِيَةً মূলত বাদী বা দাসী অর্থেই ব্যবহার হয়, তবে কখনো কন্যা অর্থেও ব্যবহার হয়ে থাকে। এখানে দাসী অর্থেই ব্যবহৃত হয়েছে। বর্ণনাকারীর বর্ণনা ‘‘আমি তার নিকট যাতায়াত করি’’ এর অর্থ হলো তার সাথে সঙ্গম করি। কিন্তু তার গর্ভধারণ হোক এটা আমি পছন্দ করি না, সুতরাং আমি কি করতে পারি? এরূপ প্রশ্নের জবাবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন, তুমি ইচ্ছা করলে তার সাথে ‘আযল করতে পার।

ইবনুল মালিক বলেনঃ এ হাদীসের মাধ্যমে সঙ্গমকারীর ইচ্ছার ভিত্তিতে দাসীর সাথে ‘আযল করা বৈধ প্রমাণিত হয়, কিন্তু তা সাধারণ অর্থে সকল নারীর বেলায় প্রযোজ্য নয়।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লোকটিকে ‘আযলের অনুমতিদানের ভাষায় যে অর্থ প্রমাণিত হয়েছে তা হলো : তুমি ‘আযল করলে করতে পার, কিন্তু তাতে লাভই বা কি? ঐ মহিলার গর্ভে যা হবার তা হবেই। বাস্তবে ঘটলোও তাই। লোকটি তার দাসীর গর্ভে সন্তান ধারণের ভয়ে তার সাথে ‘আযল করে চলছিল, কিন্তু কিছু দিন পর সে আল্লাহর নাবীর কাছে এসে আরয করল, হে আল্লাহর রসূল! আমার ঐ দাসী তো গর্ভবতী হয়েছে! নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন বললেন, আমিতো তোমাকে আগেই জানিয়েছি তার গর্ভে আল্লাহ যা নির্ধারণ করে রেখেছিল তা অবশ্যই তার গর্ভে আসবে। জেনে রেখ, নিশ্চয় আমি আল্লাহর বান্দা ও রসূল ‘‘আমি কখনও মিথ্যা বলি না এবং নিজের পক্ষ থেকে বানিয়ে কোনো কথা বলি না’’। ইমাম নববী (রহঃ) বলেন, এর দ্বারা প্রমাণিত যে, ‘আযল করা সত্ত্বেও গর্ভ সঞ্চার সম্ভব। তবে তা কিভাবে? এ প্রশ্নের উত্তরে ‘আলী (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, পূর্বের অবশিষ্ট শুক্রানু যা তার পুরুষাঙ্গে রক্ষেত ছিল তাই গর্ভে নির্গত হয়েছে এবং তার মাধ্যমেই ভ্রূণ সৃষ্টি হয়েছে। ফতোয়ায় কাযীখান-এ এরূপ একটি যুক্তিও উপস্থাপন করা হয়েছে যে, পুরুষ ‘আযল করে হয়তো নারীর যৌনাঙ্গের বাহিরে তার রেতপাত করেছে, তা হতে কিছু শুক্রানু তার গর্ভাশয়ে প্রবেশ করে ভ্রূণ সঞ্চারিত হয়েছে। (শারহে মুসলিম ৯/১০ম খন্ড, হাঃ ১৪৩৯; মিরকাতুল মাফাতীহ)

[এছাড়াও মাযী বা কামরস যা পূর্বেই নির্গত হয় তাতেও শুক্রানু থাকতে পারে বলে বৈজ্ঞানিক মতামত রয়েছে, সুতরাং ‘আযল করা সত্ত্বেও গর্ভধারণ সম্পূর্ণ বিজ্ঞানসম্মত তাতে কোনই সন্দেহ নেই]


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৩: বিবাহ (كتاب النكاح)