পরিচ্ছেদঃ ৫. প্রথম অনুচ্ছেদ - (স্বামী-স্ত্রীর) সহবাস
৩১৮৩-[১] জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইয়াহূদীগণ বলত, কেউ যদি পিছন দিক হতে স্ত্রীর যৌনাঙ্গে সঙ্গম করে তাহলে সন্তান ট্যারা বা টেগ্রা হয়। এমতাবস্থায় কুরআন মাজীদের এ আয়াত নাযিল হয়, অর্থাৎ- ’’তোমাদের স্ত্রীগণ তোমাদের শস্যক্ষেত্র, তোমরা তোমাদের শস্যক্ষেত্রে যেভাবে ইচ্ছা যেতে পার’’- (সূরা আল বাকারা ২ : ২২৩)। (বুখারী ও মুসলিম)[1]
بَابُ الْمُبَاشَرَةِ
عَنْ جَابِرٍ قَالَ: كَانَتِ الْيَهُودُ تَقُولُ: إِذَا أَتَى الرَّجُلُ امْرَأَتَهُ مِنْ دُبُرِهَا فِي قُبُلِهَا كَانَ الْوَلَد أَحول فَنزلت: (نساوكم حرث لكم فَأتوا حَرْثكُمْ أَنى شِئْتُم)
ব্যাখ্যা: ইবনুল মালিক বলেন, স্ত্রীর পশ্চাৎদ্বারে সঙ্গম সকল ধর্মেই নিষিদ্ধ। কিন্তু পশ্চাৎদিক থেকে সম্মুখের দ্বারে সঙ্গত হওয়া মোটেও নিষিদ্ধ নয়। ইয়াহূদীদের বিশ্বাস ছিল যে, পশ্চাদ্বিক থেকে সঙ্গত হলে তাতে কোনো সন্তান জন্মগ্রহণ করলে সে হবে ট্যারা, এটি একটি কুসংস্কার ও ভ্রান্তধারণা। এই ভ্রান্তধারণা অপনোদনের জন্য আল্লাহ তা‘আলা এ আয়াত নাযিল করেন, ‘‘তোমাদের স্ত্রীগণ হলো তোমাদের শষ্যক্ষেত্র স্বরূপ; অতএব তোমরা যেভাবে ইচ্ছা স্বীয় ক্ষেত্রে গমন কর।’’
স্ত্রীগণ দ্বারা বিবাহিত ও মালিকানা স্বত্বের দাসীই কেবল উদ্দেশ্য। তাদেরকে ক্ষেতের সাথে তুলনা করা হয়েছে; ক্ষেত যেমন বীজ থেকে ফসল উৎপন্ন করে তদ্রূপ স্ত্রীগণও মানব সন্তানের উৎপাদন ক্ষেত্র। আর এর উপযোগী পন্থা হলো সম্মুখ পথে সঙ্গম হওয়া। পশ্চাৎদ্বার হলো মলের পথ তা (সন্তান) উৎপাদনের ক্ষেত্রও নয়, উপরন্তু এটি ঘৃণিত ও কদর্য কর্ম। ‘‘তোমরা যেভাবে ইচ্ছা স্বীয় ক্ষেত্রে গমন কর’’ এর অর্থ হলো দাঁড়িয়ে, বসে, শুয়ে অথবা সম্মুখভাগ হতে অথবা পিছন দিক হতে যেভাবেই ইচ্ছা স্ত্রী গমন তোমাদের জন্য বৈধ, তবে কর্ম সম্পাদন করতে হবে কেবল সম্মুখ দ্বার দিয়ে। আর এতে তোমাদের এবং এর মাধ্যমে জন্মগ্রহণকৃত সন্তানের কোনই ক্ষতির আশংকা নেই।
শারহেস্ সুন্নাহ্ গ্রন্থাকার বলেনঃ সমস্ত ইমাম ও মুহাদ্দিস একমত যে, পুরুষ যে পন্থা ও প্রক্রিয়াই হোক না কেন সম্মুখদ্বারে সঙ্গত হলেই তা বৈধ। অত্র আয়াত তার দলীল ‘আল্লামা ত্বীবী (রহঃ)-বলেন, স্ত্রীকে ক্ষেতের সাথে তুলনা করার দ্বারা ইশারা করা হয়েছে এই দিকে যে, উৎপাদন ক্ষেত্র হলো সম্মুখদ্বার, আর তা যেন লঙ্ঘিত না হয়। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, সে ব্যক্তি অভিশপ্ত যে তার স্ত্রীর পশ্চাতদ্বার দিয়ে সঙ্গত হয়। সুতরাং তা সর্বসম্মত হারাম। (ফাতহুল বারী ৮ম খন্ড, হাঃ ৪৫২৮; শারহে মুসলিম ৯/১০ম খন্ড, হাঃ ১৪৩৫; মিরকাতুল মাফাতীহ)