পরিচ্ছেদঃ ১৫. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - অনাবাদী জমিন আবাদ করা ও সেচের পালা
৩০০৬-[১৬] সামুরাহ্ ইবনু জুনদুব হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক আনসারী লোকের বাগানে তাঁর কিছু খেজুর গাছ ছিল। আর ঐ আনসারীর সাথে তার পরিবার ছিল। তাই যখন সামুরাহ্ বাগানে প্রবেশ করতেন, তখন আনসারীর তাতে কষ্ট অনুভব হতো। এ কারণে আনসারী নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এসে বিষয়টি উল্লেখ করলেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সামুরাহ্ (রাঃ)-কে ডেকে তা বিক্রি করে দিতে বললেন, কিন্তু সামুরাহ্ তাতে অসম্মতি প্রকাশ করলেন। অতঃপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তার পরিবর্তে অন্য কোথাও গাছ নিয়ে নাও। কিন্তু সামুরাহ্ তাতেও রাজি হলো না। অতঃপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি তাকে তা দান কর, আর তোমার জন্য এতেই কল্যাণ (প্রতিদান) রয়েছে। সর্বোপরি তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাকে উৎসাহমূলক কথা বললেন, কিন্তু এতেও তিনি অস্বীকৃতি জানালেন। তখন তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তুমি প্রতিবেশীর পক্ষে অকল্যাণকামী। আর আনসারীকে বললেন, যাও তুমি তার গাছ কেটে ফেল। (আবূ দাঊদ)[1]
জাবির (রাঃ)-এর হাদীস ’যে জমি আবাদ করে’ জবরদখলের অধ্যায়ে সা’ঈদ বিন যায়দ -এর সূত্রে বর্ণনা করা হয়েছে। আর আমরা উল্লেখ করব আবূ সিরমাহ্’-এর হাদীস- ’যে ব্যক্তি অপরকে কষ্ট দেয় আল্লাহ তাকে কষ্ট দেয়’ ’বিচ্ছিন্নতা নিষিদ্ধ’ অধ্যায়ে।
وَعَنْ سَمُرَةَ بْنِ جُنْدُبٍ: أَنَّهُ كَانَتْ لَهُ عضد من نخل فِي حَائِطِ رَجُلٍ مِنَ الْأَنْصَارِ وَمَعَ الرَّجُلِ أَهْلُهُ فَكَانَ سَمُرَةُ يَدْخُلُ عَلَيْهِ فَيَتَأَذَّى بِهِ فَأتى النَّبِي صلى الله عَلَيْهِ وَسلم فذكرذلك لَهُ فَطَلَبَ إِلَيْهِ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسلم ليَبِيعهُ فَأبى فَطلب أَن يناقله فَأَبَى قَالَ: «فَهَبْهُ لَهُ وَلَكَ كَذَا» أَمْرًا رَغْبَةً فِيهِ فَأَبَى فَقَالَ: «أَنْتَ مُضَارٌّ» فَقَالَ لِلْأَنْصَارِيِّ: «اذْهَبْ فَاقْطَعْ نَخْلَهُ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ
وَذكر حَدِيث جَابر: «من أحيي أَرضًا» فِي «بَاب الْغَصْب» بِرِوَايَةِ سَعِيدِ بْنِ زَيْدٍ. وَسَنَذْكُرُ حَدِيثَ أَبِي صِرْمَةَ: «مَنْ ضَارَّ أَضَرَّ اللَّهُ بِهِ» فِي «بَاب مَا يُنْهِي من التهاجر»
ব্যাখ্যা: (أَنَّه كَانَتْ لَه عَضْدٌ مِنْ نَّخْلٍ) খত্ত্বাবী বলেনঃ عَضْدٌ এভাবে আবূ দাঊদের বর্ণনাতেও আছে। অর্থাৎ- এমন খেজুর বৃক্ষকে উদ্দেশ্য করছে ইতিপূর্বে যাতে খেজুর আসেনি এবং ফুলও আসেনি। আস্মা‘ঈ বলেন, যখন কোনো খেজুর বৃক্ষের ডাল থাকে এবং গ্রহণকারী তা হতে গ্রহণ করে তখন তাকে ‘আরবীতে (النَّخْلَة الْعَضِيدَة) বলে। এতে তথ্য রয়েছে যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অংশীদার হতে ক্ষতি প্রতিহত করতে নির্দেশ দিয়েছেন। এ হাদীসে এমন কিছু নেই যে, তিনি তার খেজুর বৃক্ষ উপড়িয়েছেন, বিষয়টি এ ধরনের হওয়ার সাথে সাদৃশ্য রাখছে যে, তিনি কেবল ক্ষতি হতে ব্যক্তিকে পৃথক রাখতেই এ কথা বলেছেন।
সিনদী বলেনঃ (عَضْدٌ مِنْ نَّخْلٍ) এ অংশ দ্বারা খেজুর বৃক্ষের স্তর উদ্দেশ্য করেছেন এবং এ কথাকে প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে যে, যদি তার অনেক খেজুর বৃক্ষ থাকত তাহলে আনসারীকে সেগুলো কাটার ব্যাপারে নির্দেশ করতেন না। আনসারীর কাছে পৌঁছার কারণে আনসারীর যে ক্ষতি সাধন হয় তার অপেক্ষা সামুরার বেশি ক্ষতি হওয়ার কারণে। আর يُنَاقِلَه শব্দের সর্বনামও খেজুর বৃক্ষ একটি হওয়ার উপর প্রমাণ বহন করছে। অতএব বিশুদ্ধ কথা হলো عضيد এমন খেজুর বৃক্ষ ব্যক্তি যা হতে হাত দ্বারা গ্রহণ করে।
নিহায়াহ্ গ্রন্থে আছে- তিনি খেজুর বৃক্ষের স্তর উদ্দেশ্য করেছেন। একমতে বলা হয়েছে, সেটা হলো (عَضْدٌ مِنْ نَّخْلٍ) খেজুর বৃক্ষের যখন কোনো ডাল থাকবে তখন ব্যক্তি সেখানে থেকে গ্রহণ করবে আর সেটাই হলো عضيد।
কামূসে আছে, العضد এবং العضيد বলতে খেজুর বৃক্ষের স্তর। তাতে আরও আছে طريقة বলতে দীর্ঘ খেজুর বৃক্ষ। أَنْتَ مُضَارٌّ অর্থাৎ- তুমি মানুষের ক্ষতি চাচ্ছ। আর যে ব্যক্তি মানুষের ক্ষতি চায় তার ক্ষতি প্রতিহত করা বৈধ এবং তোমার ক্ষতি প্রতিহত করা হবে, অর্থাৎ তোমার বৃক্ষ কাটা হবে। [ফাতহুল ওয়াদূদ দ্রষ্টব্য] (‘আওনুল মা‘বূদ ৬ষ্ঠ খন্ড, হাঃ ৩৬৩৩)