পরিচ্ছেদঃ উপবাস, রুক্ষ ও নীরস জীবন যাপন করা, পানাহার ও পোশাক ইত্যাদি মনোরঞ্জনমূলক বস্ত্ততে অল্পে তুষ্ট হওয়া এবং প্রবৃত্তির দাসত্ব বর্জন করার মাহাত্ম্য
(৩৫৬) আবূ আব্দুল্লাহ জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ (রাঃ) বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে (এক অভিযানে) পাঠালেন এবং আবূ উবাইদাহ (রাঃ) কে আমাদের নেতা বানালেন। (আমাদেরকে পাঠানোর উদ্দেশ্য ছিল,) আমরা যেন কুরাইশের এক কাফেলার পশ্চাদ্ধাবন করি। তিনি আমাদেরকে পাথেয় স্বরূপ এক থলি খেজুর দিলেন। আমাদেরকে দেওয়ার মত এ ছাড়া অন্য কিছু পেলেন না। সুতরাং আবূ উবাইদাহ (রাঃ) আমাদেরকে একটি একটি করে খেজুর দিতেন। তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হল, ’আপনারা সেটা দিয়ে কী করতেন?’ তিনি বললেন, ’আমরা তা বাচ্চার চুষার মত চুষতাম, তারপর পানি পান করতাম। সুতরাং এটা আমাদের জন্য সারাদিন রাত পর্যন্ত যথেষ্ট হত। আর আমরা লাঠি দ্বারা গাছের পাতা ঝরাতাম, তারপর তা পানিতে ভিজিয়ে খেতাম।
আমরা (একবার) সমুদ্র উপকূলে পথ চলছিলাম, অতঃপর সমুদ্র তীরে বালির বড় ঢিবির মত একটি জিনিস দেখতে পেলাম। এরপর তার কাছাকাছি এসে দেখলাম যে, একটা বড় জন্তু, যাকে আম্বার (মাছ) বলা হয়।’ আবূ উবাইদাহ বললেন, ’এটা তো মৃত (ফলে তা আমাদের জন্য অবৈধ)।’ পুনরায় তিনি বললেন, ’না (অবৈধ নয়) বরং আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দূত এবং আল্লাহর পথে (বের হয়েছি) আর তোমরা (এখন) নিরুপায়, সেহেতু খাও।’
সুতরাং আমরা তিনশ’জন লোক একমাস তারই দ্বারা জীবনধারণ করলাম, এমনকি শেষ পর্যন্ত আমরা মোটা হয়ে গেলাম। আমরা ঐ জন্তুর চোখের গর্ত থেকে ঘড়া ঘড়া তেল বের করতাম এবং বলদের মত মাংসের ফালি কাটতাম। একদা আবূ উবাইদাহ (রাঃ) আমাদের মধ্য হতে তেরো জনকে নিয়ে ঐ মাছের একটি চোখের কোটরে বসিয়ে দিলেন। আর তার পাঁজরের একখানি হাড় নিয়ে দাঁড় করালেন। অতঃপর তিনি আমাদের সব চেয়ে বড় উটটার উপর হাওদা চাপিয়ে তার নীচে দিয়ে পার করে দিলেন।
আমরা তার মাংস ফালি পাথেয় সরূপ সাথে নিলাম। অতঃপর যখন আমরা আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এলাম এবং তাঁর কাছে ঐ মাছের কথা আলোচনা করলাম, তখন তিনি বললেন, তা জীবিকা ছিল, যা আল্লাহ তা’আলা তোমাদের জন্য বের করেছিলেন। আমাদেরকে খাওয়ানোর মত তোমাদের কাছে তার কিছু মাংস আছে কি? (এ কথা শুনে) আমরা তাঁর নিকট কিছু মাংস পাঠালাম, সুতরাং তিনি তা ভক্ষণ করলেন।
وَعَنْ أَبيْ عَبدِ اللهِ جَابِرٍ بْنِ عَبْدِ اللهِ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا قَالَ : بَعَثَنَا رَسُولُ اللهِ ﷺ وَأمَّرَ عَلَيْنَا أَبَا عُبَيْدَةَ نَتَلَقَّى عِيراً لِقُرَيْشٍ وَزَوَّدَنَا جِرَاباً مِنْ تَمْرٍ لَمْ يَجِدْ لَنَا غَيْرَهُ فَكَانَ أَبو عُبيدَةَ يُعْطِينَا تَمْرَةً تَمْرَةً فَقِيلَ : كَيْفَ كُنْتُمْ تَصْنَعُونَ بِهَا ؟ قَالَ : نَمَصُّهَا كَمَا يَمَصُّ الصَّبي ثُمَّ نَشْرَبُ عَلَيْهَا مِنَ الْمَاءِ فَتَكْفِينَا يَوْمَنَا إِلَى اللَّيْلِ وَكُنَّا نَضْرِبُ بِعِصيِّنَا الخَبَطَ ثُمَّ نَبُلُّهُ بِالماءِ فَنَأكُلُهُ قَالَ : وَانْطَلَقْنَا عَلَى سَاحِلِ الْبَحْرِ فَرُفِعَ لَنَا عَلَى سَاحِلِ الْبَحْرِ كَهَيْئَةِ الكَثِيبِ الضَّخْمِ فَأَتَيْنَاهُ فَإذَا هِيَ دَابَّةٌ تُدْعَى الْعَنبَرَ فَقَالَ أَبُو عُبَيْدَةَ : مَيْتَةٌ ثُمَّ قَالَ : لاَ بَلْ نَحْنُ رُسُلُ رَسُولِ اللهِ ﷺ وَفِي سَبِيلِ اللهِ وَقَدِ اضْطُرِرْتُمْ فَكُلُوا فَأقَمْنَا عَلَيْهِ شَهْراً وَنَحْنُ ثَلاَثُمِئَةٍ حَتَّى سَمِنَّا وَلَقَدْ رَأيْتُنَا نَغْتَرِفُ مِن وَقْبِ عَيْنِهِ بِالقِلاَلِ الدُّهْنَ وَنَقْطَعُ مِنْهُ الفِدَرَ كالثَّوْرِ أَوْ كَقَدْرِ الثَّوْرِ وَلَقَدْ أَخَذَ مِنَّا أَبُو عُبَيْدَةَ ثَلاثَةَ عَشَرَ رَجُلاً فَأقْعَدَهُمْ في وَقْبِ عَيْنِهِ وَأخَذَ ضِلْعاً مِنْ أضْلاَعِهِ فَأقَامَهَا ثُمَّ رَحَلَ أعْظَمَ بَعِيرٍ مَعَنا فَمَرَّ مِنْ تَحْتهَا وَتَزَوَّدْنَا مِنْ لَحْمِهِ وَشَائِقَ فَلَمَّا قَدِمْنَا المَدِينَةَ أَتَيْنَا رَسُولَ اللهِ ﷺ فَذَكَرْنَا ذَلِكَ لَهُ فَقَالَ هُوَ رِزْقٌ أخْرَجَهُ اللهُ لَكُمْ فَهَلْ مَعَكُمْ مِنْ لَحْمِهِ شَيْءٌ فَتُطْعِمُونَا ؟ فَأرْسَلْنَا إِلَى رَسُوْلِ اللهِ ﷺ مِنْهُ فَأكَلَهُ رواه مسلم