৩৬৭

পরিচ্ছেদঃ

৩৬৭। জিবরীলের হাদীস হাদীস নং ১৮৪ দ্রষ্টব্য।


১৮৪। ইয়াহইয়া বিন ইয়ামার এবং হুমাইদ বিন আবদুর রহমান আল-হিময়ারী বলেন, আমরা উভয়ে আবদুল্লাহ ইবনে উমারের সাথে সাক্ষাত করলাম। তখন অদৃষ্ট ও তদসংক্রান্ত বিষয়ে লোকদের ধ্যান ধারণার কথা উল্লেখ করলাম। আবদুল্লাহ ইবনে উমার বললেন, তোমরা যখন তাদের নিকট ফিরে যাবে, তখন বলবে, আবদুল্লাহ ইবনে উমার তোমাদের থেকে দায়মুক্ত আর তোমরা তার থেকে দায়মুক্ত। এ কথা তিনবার বললেন। (অর্থাৎ অদৃষ্ট সম্পর্কে প্রচলিত ধ্যান ধারণার সাথে তার কোন সম্পর্ক নেই। তিনি এর সমর্থকও নন, বিরোধীও নন।—অনুবাদক) তারপর বললেন, আমাকে উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) বলেছেন যে, তাঁরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট উপস্থিত ছিলেন, সহসা তার নিকট এমন এক ব্যক্তি পদব্রজে এল, যার চেহারা ও চুল চমৎকার এবং পরিধানে সাদা কাপড় ছিল। উপস্থিত লোকেরা মুখ চাওয়া চাওয়ি করতে লাগলো। আমরা কেউ তাকে চিনিওনা, আর সে কোন মুসাফিরও নয়।

তারপর বললো, ইয়া রাসূলাল্লাহ, আমি কি আপনার কাছে আসবো? তিনি বললেন, হ্যাঁ। তারপর সে এল এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাঁটুর সাথে হাঁটু গেড়ে এবং নিজের উরুদ্বয়ের ওপর হাত রেখে বসলো। তারপর জিজ্ঞেস করলো, ইসলাম কী? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ সাক্ষ্য দেয়া যে, আল্লাহ ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই এবং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার রাসূল, আর নামায কায়েম করবে, যাকাত দেবে, রমযানে রোযা রাখবে এবং আল্লাহর ঘরে হজ্জ আদায় করবে। সে বললো, ঈমান কী? তিনি বললেনঃ তুমি আল্লাহ, তার ফেরেশতা, জান্নাত, জাহান্নাম, মৃত্যুর পর পুনরুজীবিত হওয়া ও সব রকমের ভাগ্যের প্রতি ঈমান আনবে।

সে বললোঃ ইহসান কী? তিনি বললেনঃ আল্লাহর জন্য কাজ করবে এমনভাবে যেন তাকে তুমি দেখছ, আর যদি তুমি তাকে না দেখ, তবে নিশ্চয়ই তিনি তোমাকে দেখছেন। সে বললোঃ কিয়ামত কবে হবে? তিনি বললেন, জিজ্ঞাসাকারীর চেয়ে জিজ্ঞাসিত ব্যক্তি এ ব্যাপারে বেশি জানে না। সে বললো কিয়ামতের নিদর্শনাবলী কী কী? তিনি বললেনঃ এক সময় যারা নগ্ন থাকতো, খালি পায়ে চলতো ও ছাগল চরাতো, তারা বড় বড় অট্রালিকায় বসে দম্ভ করবে এবং দাসীরা এমন সন্তান জন্ম দেবে যারা তাদের প্রভু হবে।

এরপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ লোকটিকে আমি চাই। তখন সবাই তাকে খোজাখুঁজি করলো। কিন্তু কিছুই দেখলো না। এরপর দুই বা তিনদিন কেটে গেল। তারপর বললেন, ওহে খাত্তাবের ছেলে, জান কে এসব প্রশ্ন করছিল। উমার (রাঃ) বললেন, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলই ভালো জানেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ও হচ্ছে জিবরীল। তোমাদেরকে তোমাদের দীন শেখাতে এসেছিল।

উমার (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে মুযাইনা বা জুহাইনা গোত্রের এক ব্যক্তি বললোঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ, আমরা যে কাজ করি তা কি পূর্ব-নির্ধারিত ব্যাপার (অর্থাৎ অদৃষ্টের লিখন) নাকি এখন নতুনভাবে করা হয়? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ পূর্ব-নির্ধারিত ব্যাপার। এ সময় এক ব্যক্তি অথবা কোন এক ব্যক্তি বললোঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ, তাহলে আমরা আমল করে কী লাভ? তিনি বললেন, জান্নাতবাসীর জন্য জান্নাতের উপযুক্ত আমল সহজ করে দেয়া হয় এবং জাহান্নামবাসীর জন্য জাহান্নামের উপযুক্ত আমল সহজ করে দেয়া হয়।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মুসনাদে আহমাদ
মুসনাদে উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) [উমারের বর্ণিত হাদীস] (مسند عمر بن الخطاب)