পরিচ্ছেদঃ ২. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - ক্ষমা ও তাওবাহ্
২৩৫৭-[৩৫] ’আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলতেন, হে আল্লাহ! আমাকে তাদের অন্তর্ভুক্ত করো যারা ভাল কাজ করে খুশী হয় ও মন্দ কাজ করে ক্ষমা চায়। (ইবনু মাজাহ, বায়হাক্বী- দা’ওয়াতুল কাবীর)[1]
وَعَنْ عَائِشَةَ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يَقُولُ: «اللَّهُمَّ اجْعَلْنِي مِنَ الَّذِينَ إِذا أحْسَنوا استبشَروا وإِذا أساؤوا اسْتَغْفَرُوا» . رَوَاهُ ابْنُ مَاجَهْ وَالْبَيْهَقِيُّ فِي الدَّعَوَاتِ الْكَبِير
ব্যাখ্যা: (اَللّٰهُمَّ اجْعَلْنِىْ مِنَ الَّذِينَ إِذا أحْسَنُوْا) অর্থাৎ- ভাল বিদ্যা অর্জন করে ও ভাল ‘আমল করে।
(اِسْتَبْشَرُوْا) অর্থাৎ- ভাল বিদ্যা ও ভাল ‘আমলের তাওফীক পেয়ে তারা আনন্দিত হয়।
আল্লাহ বলেন, قُلْ بِفَضْلِ اللهِ وَبِرَحْمَتِهِ فَبِذٰلِكَ فَلْيَفْرَحُوْا
অর্থাৎ- ‘‘(হে নাবী!) বলুন, তারা যেন আল্লাহর রহমাতে তথা কুরআন ও তার অনুগ্রহের প্রতি আনন্দিত হয়।’’ (সূরা ইউনুস ১০ : ৫৮)
(وَإِذَا أَسَاؤُوْا) আর বিদ্যা ও ‘আমলে যখন ঘাটতি করে, অর্থাৎ- মন্দ বিদ্যা অর্জন ও মন্দ কাজ করে। (اِسْتَغْفَرُوْا) বাহ্যিকভাবে বিপরীতে যা বলা দরকার তা হল, (واذا اساؤا حزنوا) অর্থাৎ- যখন তারা মন্দ কর্ম করে চিন্তিত হয়। তা না বলে এ ধরনের বলার কারণ মূলত ঐ দিকে ইঙ্গিত করার জন্য যে, শুধুমাত্র চিন্তিত হওয়া কোন উপকারে আসে না। চিন্তা কেবল তখনই উপকারে আসে যখন পাপী ঐ পাপ হতে ক্ষমা প্রার্থনা করে যা গুনাহের উপর স্থায়ী হওয়াকে দূরীভূত করে। এভাবে মিরকাতে আছে।
ইমাম ত্বীবী (রহঃ) বলেন, যখন তারা ভাল কাজ করে আনন্দিত হয়। অর্থাৎ- যখন তারা নিষ্ঠার সাথে কোন ভাল কাজ করে, অতঃপর সে কাজে তাকে বদলা দেয়া হয়, ফলে সে জান্নাত লাভ করে আনন্দিত হয়। যেমন আল্লাহ বলেন, وَأَبْشِرُوْا بِالْجَنَّةِ الَّتِيْ كُنْتُمْ تُوْعَدُوْنَ অর্থাৎ- ঐ জান্নাতের ব্যাপারে তোমরা খুশি হও যার প্রতিশ্রুতি তোমাদেরকে দেয়া হয়েছে’’- (সূরা ফুসসিলাত ৪১ : ৩০)। এটি ইঙ্গিতসূচক বাণী।
(وَإِذَا أَسَاؤُوْا اِسْتَغْفَرُوْا) অর্থাৎ- তাদেরকে ধীরে ধীরে পাকড়াওয়ের মাধ্যমে কষ্ট দিবেন না। পক্ষান্তরে যারা নিজেদের মন্দ কর্মকে ভাল মনে করে তারা এক সময় ধ্বংস হয়ে যায়। যেমন আল্লাহ বলেন, أَفَمَنْ زُيِّنَ لَهٗ سُوْءُ عَمَلِهٖ فَرَاٰهُ حَسَنًا فَإِنَّ اللّٰهَ يُضِلُّ مَنْ يَّشَآءُ অর্থাৎ- ‘‘যার কাছে তার মন্দ কর্মকে চাকচিক্য করে দেয়া হয়েছে, অতঃপর সে তা ভাল মনে করে তাহলে তার জানা উচিত আল্লাহ যাকে ইচ্ছা পথভ্রষ্ট করেন’’- (সূরা আর ফা-ত্বির ৩৫ : ৮)।
নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এমনটি করতেন জাতিকে শিক্ষা দেয়ার্থে এবং ক্ষমা প্রার্থনা করার আবশ্যকীয়তার দিকে দিক নির্দেশনা দেয়ার্থে। অন্যথায় নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সকল উত্তম ব্যক্তিদের অপেক্ষাও শ্রেষ্ঠ।