২৩৪৯

পরিচ্ছেদঃ ২. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - ক্ষমা ও তাওবাহ্

২৩৪৯-[২৭] ’আবদুল্লাহ ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) আল্লাহর কালামের এ বাণী, ’’ইল্লাল্লামামা’’ অর্থাৎ- ’’সগীরাহ্ গুনাহ ছাড়া’’। এক্ষেত্রে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ হে আল্লাহ! যদি তুমি ক্ষমা করো, ক্ষমা করো বড় গুনাহ। কেননা এমন কোন বান্দা আছে কি, যে সগীরাহ্ গুনাহ করেনি। (তিরমিযী; তিনি বলেছেন, হাদীসটি হাসান সহীহ গরীব)[1]

وَعَن ابْن عَبَّاس: فِي قَوْله تَعَالَى: (إِلَّا اللمم)
قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ:
إِنْ تَغْفِرِ اللَّهُمَّ تَغْفِرْ جَمَّا وَأَيُّ عَبْدٍ لَكَ لَا أَلَمَّا
رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ. وَقَالَ: هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيب

وعن ابن عباس: في قوله تعالى: (الا اللمم) قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: ان تغفر اللهم تغفر جما واي عبد لك لا الما رواه الترمذي. وقال: هذا حديث حسن صحيح غريب

ব্যাখ্যা: فِىْ قَوْلِه تَعَالٰى: (إِلَّا اللَّمَمَ) এ বাণীটি (সূরা আন্ নাজম ৫৩ : ৩২) الَّذِينَ يَجْتَنِبُونَ كَبَائِرَ الْإِثْمِ এ বাণীর তাফসীরস্বরূপ। কাবীরাহ্ গুনাহ প্রত্যেক এমন গুনাহকে বলা হয় যে ব্যাপারে আল্লাহ জাহান্নামের ভয় দেখিয়েছেন অথবা যার জন্য শাস্তি নির্ধারণ করেছেন অথবা যার কর্তার ব্যাপক দোষ বর্ণনা করা হয়েছে। আর কাবীরাহ্ গুনাহের বিশ্লেষণে বিদ্বানদের দীর্ঘ আলোচনা আছে। আর তারা যেমনিভাবে কাবীরাহ্ গুনাহের অর্থ এবং তার সারবস্ত্ত সম্পর্কে মতানৈক্য করেছেন তেমনিভাবে তারা তার সংখ্যা সম্পর্কে মতানৈক্য করেছেন আর فواحش বলতে কাবীরাহ্ গুনাহসমূহ থেকে যা অশ্লীল যেমন যিনা অনুরূপ। একমতে বলা হয়েছে, তা প্রত্যেক এমন গুনাহ যাতে হুমকি রয়েছে অথবা বিশেষ করে যিনা। (إلا اللمم) সগীরাহ্ গুনাহসমূহ, কেননা তারা সগীরাহ্ গুনাহ থেকে বাঁচতে অক্ষম। আভিধানিক অর্থে اللمم এর মূল হল যা কম এবং ছোট, আর এ কারণে (ألمم بالمكان) যার অর্থ : স্থানটিতে তার অবস্থান কম হয়েছে। ألمم بالطعام অর্থাৎ- খাদ্য থেকে তার খাওয়া কম হয়েছে। আরো বলা হয়ে থাকে অবাধ্যতায় আপতিত না হয়ে অবাধ্যতার কাছাকাছি হওয়া।

(قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ) অর্থাৎ- মু’মিন ব্যক্তি সগীরাহ্ গুনাহ থেকে মুক্ত না এর সমর্থন, (إِنْ تَغْفِرْ اَللّٰهُمَّ تَغْفِرْ جَمَّا) অর্থাৎ- অনেক বড় (وأى عبد لك لا ألما), অর্থাৎ- কোন বান্দা নিষ্পাপ নয়। পংতিটি উমাইয়্যাহ্ বিন আবিস্ সালত-এর জাহিলী যুগে যে ‘ইবাদাতগুজার ছিল, পুনরুত্থানে বিশ্বাসী ছিল ইসলামী যুগ পেয়েছিল তবে ইসলাম গ্রহণ করেনি। তার কবিতা বিভিন্ন উপদেশাবলী ও বাস্তবতাকে শামিল করার দরুন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার কবিতাকে ভালবাসতেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার কবিতাংশকে উচ্চারণ করার দরুন তা হাদীসে পরিণত হয়েছে। وَمَا عَلَّمْنَاهُ الشِّعْرَ وَمَا يَنْبَغِيْ لَه (সূরা ইয়াসীন ৩৬ : ৬৯) আল্লাহর এ বাণীতে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে কবিতার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞারোপ করা হয়েছে আর তা দ্বারা উদ্দেশ্য কবিতা তৈরি করা আবৃত্তি করা নয়। আর এটিই বিশুদ্ধ। অর্থাৎ- আপনার ব্যাপার হল বড়, অনেক গুনাহসমূহ ক্ষমা করা, উপরন্তু ছোট গুনাহসমূহ ক্ষমা করা। কেননা ছোট গুনাহসমূহ থেকে কেউ মুক্ত থাকতে পারে না। আর নিশ্চয়ই তা পুণ্য কর্মের মাধ্যমে মোচন হয়ে যায়।

ইমাম ত্বীবী বলেন, হে আল্লাহ! আপনার মর্যাদা হল বড় বড় গুনাহ থেকে অনেক গুনাহ ক্ষমা করা। পক্ষান্তরে ছোট অপরাধসমূহ আপনার দিকে সম্বন্ধ করা হয় না, কেননা তা থেকে কেউ মুক্ত নয়, নিশ্চয়ই তা কাবীরাহ্ গুনাহসমূহ থেকে বিরত থাকার মাধ্যমে মোচন হয়ে যায়।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১০: আল্লাহ তা‘আলার নামসমূহ (كتاب اسماء الله تعالٰى)