পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - তাসবীহ (সুবহা-নাল্ল-হ), তাহমীদ (আল হাম্দুলিল্লা-হ), তাহলীল (লা- ইলা-হা ইল্লাল্ল-হ) ও তাকবীর (আল্ল-হু আকবার)- বলার সাওয়াব
২৩১২-[১৯] ’আমর ইবনু শু’আয়ব তাঁর পিতার মাধ্যমে তাঁর দাদা হতে বর্ণনা করেন। তাঁর দাদা বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি সকালে ও বিকালে একশ’বার করে ’সুবহা-নাল্ল-হ’ পড়বে, সে তাঁর মতো হবে (সাওয়াবের দিক দিয়ে) যে একশ’বার হজ করবে। যে ব্যক্তি সকালে ও বিকালে একশ’বার করে ’আলহামদুলিল্লা-হ’ পড়বে, সে আল্লাহর পথে একশ’ ঘোড়ায় একশ’ মুজাহিদ রওনা করে দেয়া ব্যক্তির মতো হবে। যে সকালে ও বিকালে একশ’বার করে ’লা- ইলা-হা ইল্লাল্ল-হ’ পড়বে, সে নবী ইসমা’ঈল (আঃ)-এর বংশের একশ’ লোক মুক্ত করে দেয়া ব্যক্তির সমতুল্য হবে। আর যে ব্যক্তি সকালে ও বিকালে একশ’বার করে ’আল্ল-হু আকবার’ পড়বে, সেদিন তার চেয়ে বেশি সাওয়াবের কাজ আর কেউ করতে পারবে না। অবশ্য যে ব্যক্তি ব্যতিক্রম, যে অনুরূপ ’আমল করেছে অথবা এর চেয়ে বেশি করেছে- (তিরমিযী; তিনি বলেন, হাদীসটি হাসান গরীব)[1]
وَعَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ جَدِّهِ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: مَنْ سَبَّحَ اللَّهَ مِائَةً بِالْغَدَاةِ وَمِائَةً بِالْعَشِيِّ كَانَ كَمَنْ حَجَّ مِائَةَ حَجَّةٍ وَمَنْ حَمِدَ اللَّهَ مِائَةً بِالْغَدَاةِ وَمِائَةً بِالْعَشِيِّ كَانَ كَمَنْ حَمَلَ عَلَى مِائَةِ فَرَسٍ فِي سَبِيلِ اللَّهِ وَمَنْ هَلَّلَ اللَّهَ مِائَةً بِالْغَدَاةِ وَمِائَةً بِالْعَشِيِّ كَانَ كَمَنْ أَعْتَقَ مِائَةَ رَقَبَةٍ مِنْ وَلَدِ إِسْمَاعِيلَ وَمَنْ كَبَّرَ اللَّهَ مِائَةً بِالْغَدَاةِ وَمِائَةً بِالْعَشِيِّ لَمْ يَأْتِ فِي ذَلِكَ الْيَوْمِ أَحَدٌ بِأَكْثَرِ مِمَّا أَتَى بِهِ إِلَّا مَنْ قَالَ مِثْلَ ذَلِكَ أَوْ زَادَ عَلَى مَا قَالَ. رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ. وَقَالَ: هَذَا حَدِيثٌ غَرِيب
ব্যাখ্যা: (بِالْغَدَاةِ وَمِائَةً بِالْعَشِىِّ) অর্থাৎ- দিনের শুরুতে এবং রাতের শুরুতে অথবা দিনে ও রাত্রে।
(كَانَ كَمَنْ حَجَّ مِائَةَ حَجَّةٍ) অর্থাৎ- নফল হজ। হাদীসটি ঐ ব্যাপারে প্রমাণ বহন করছে, যে আল্লাহর সাথে আন্তরিক সম্পর্ক ঠিক রেখে সহজ-সাবলীলভাবে ‘ইবাদাত করা উদাসীনতার সাথে জটিলভাবে ‘ইবাদাত করা অপেক্ষা উত্তম। হাদীসটি অধিক উৎসাহিতকরণে এবং বহুগুণ সাওয়াব অর্জন হয় এমন তাসবীহের মাঝে, বহুগুণ সাওয়াব অর্জন হয় এমন অন্যান্য হাজ্জের সাথে সমতা রদকরণে নাকিসকে কামিলের সাথে মিলিয়ে দেয়া অধ্যায়ের অন্তর্ভুক্ত হওয়া সম্ভব।
(عَلٰى مِائَةِ فَرَسٍ فِىْ سَبِيلِ اللّٰهِ) অর্থাৎ- জিহাদের মতো ক্ষেত্রে চাই দান স্বরূপ হোক, চাই ধার স্বরূপ হোক। তিরমিযীতে এর পরে আছে অথবা রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, সে একশতটি যুদ্ধ করল। এটি বর্ণনাকারীর সন্দেহ।
(كَانَ كَمَنْ أَعْتَقَ مِائَةَ رَقَبَةٍ) উল্লেখিত অংশে আর্থিক ‘ইবাদাতের সাথে নির্দিষ্ট ধনীদের সম্পর্কে নিঃস্ব মুহাজির জিকিরকারীদের সান্তবনা দেয়া হয়েছে।
(مِنْ وَلَدِ إِسْمَاعِيلَ) ইসমা‘ঈলের সন্তান থেকে দাস আযাদ করাকে নির্দিষ্ট করার কারণ হল কেননা ইসমা‘ঈল বংশের দাসদের অন্যান্য বংশের দাসদের ওপর শ্রেষ্ঠত্ব রয়েছে।
আর এটা এ কারণে যে, মুহাম্মাদ, ইসমা‘ঈল, ইব্রাহীম এরা একে অপর থেকে উদ্ভূত। ত্বীবী বলেন, তাঁর উক্তি (مِنْ وَلَدِ إِسْمَاعِيلَ) দাস আযাদের ক্ষেত্রে পূর্ণতা দান, কেননা দাস আযাদ করা মহৎ উদ্দেশ্য। আর তা ইসমা‘ঈল (আঃ)-এর বংশধর থেকে হওয়া আরো গুরুত্বের দাবীদার। যা সৃষ্টির মাঝে বংশের দিক থেকে সর্বাধিক সম্মানিত মহৎ, দৃষ্টান্তপূর্ণ বংশ।
(لَمْ يَأْتِ فِىْ ذٰلِكَ الْيَوْمِ أَحَدٌ) অর্থাৎ- কিয়ামতের দিন উদ্দেশ্য।
(بِأَكْثَرَ) অর্থাৎ- অধিক সাওয়াব নিয়ে, বা (উদ্দেশ্য) সর্বোত্তম ‘আমল নিয়ে আর এখানে (أكثر) দ্বারা বিশ্লেষণ করা হয়েছে, কেননা তা (أفضل) অর্থে ব্যবহৃত।
(مِمَّا أَتٰى بِه) অর্থাৎ- সে যা সম্পাদন করেছে অথবা তার মত। এক মতে বলা হয়েছে এর বাহ্যিক দিক হল নিশ্চয়ই এটা এর পূর্বে যা আছে তার অপেক্ষা উত্তম। অনেক বিশুদ্ধ হাদীস যা প্রমাণ করেছে তা হল, নিশ্চয়ই সর্বোত্তম হল এ (لا إله إلا الله), অতঃপর (الحمد لله), তারপর (الله أكبر), তারপর (سبحان الله) পাঠ করা। সুতরাং তখন এ বলে ব্যাখ্যা করতে হবে (لا إله إلا الله) পাঠকারী এবং উল্লেখিত জিকির পাঠকারীগণ ছাড়া অন্য কেউ তাদের অপেক্ষা ঐ দিন উত্তম ‘আমল সম্পাদন করতে পারবে না।