২৩১১

পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - তাসবীহ (সুবহা-নাল্ল-হ), তাহমীদ (আল হাম্‌দুলিল্লা-হ), তাহলীল (লা- ইলা-হা ইল্লাল্ল-হ) ও তাকবীর (আল্ল-হু আকবার)- বলার সাওয়াব

২৩১১-[১৮] সা’দ ইবনু আবূ ওয়াককাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি একবার নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে জনৈকা মহিলার কাছে গেলেন। তখন মহিলার সামনে কিছু খেজুরের বিচি; অথবা তিনি বলেছেন, কিছু কাঁকর ছিল, যা দিয়ে মহিলা গুণে গুণে তাসবীহ পড়ছিল। এটা দেখে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাকে বললেন, আমি কি এর চেয়ে তোমার পক্ষে সহজ তাসবীহ; অথবা বলেছেন, উত্তম তাসবীহ তোমাকে বলে দিব না? আর তা হচ্ছে,

’’সুবহা-নাল্ল-হি ’আদাদা মা- খলাকা ফিস্ সামা-য়ি, ওয়া সুবহা-নাল্ল-হি ’আদাদা মা- খলাকা ফিল আরযি, ওয়া সুবহা-নাল্ল-হি ’আদাদা মা- বায়না যা-লিকা ওয়া সুবহা-নাল্ল-হি ’আদাদা মা-হুওয়া খ-লিকুন ওয়াল্ল-হু আকবার মিসলা যা-লিকা ওয়াল হামদুলিল্লা-হি মিসলা যা-লিকা ওয়ালা- ইলা-হা ইল্লাল্ল-হু মিসলা যা-লিকা ওয়ালা- হাওলা ওয়ালা- ক্যুওয়াতা ইল্লা- বিল্লা-হি মিসলা যা-লিকা’’

(অর্থাৎ- আল্লাহর জন্য পাক-পবিত্রতা, যে পরিমাণ তিনি আসমানে সৃষ্টিজগত করেছেন। আল্লাহর জন্য পাক-পবিত্রতা তাঁর ওই সৃষ্টিজগতের অনুরূপ যা আসমান ও জমিনের মধ্যে আছে। আর আল্লাহর জন্য সব পাক-পবিত্রতা যে পরিমাণ তিনি ভবিষ্যতে সৃষ্টি করবেন। আর অনুরূপভাবে ’’আল্ল-হু আকবার’’’’আলহামদুলিল্লা-হি’’ ’’লা- ইলা-হা ইল্লাল্ল-হ’’ এবং ’’লা- হাওলা ওয়ালা- ক্যুওয়াতা ইল্লা- বিল্লা-হি’’ও পড়বে। (তিরমিযী, আবূ দাঊদ; তিরমিযী হাদীসটিকে গরীব বলেছেন)[1]

وَعَنْ سَعْدِ بْنِ أَبِي وَقَّاصٍ أَنَّهُ دَخَلَ مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَى امْرَأَةٍ وَبَيْنَ يَدَيْهَا نَوًى أَوْ حَصًى تُسَبِّحُ بِهِ فَقَالَ: «أَلَا أُخْبِرُكَ بِمَا هُوَ أَيْسَرُ عليكِ مِنْ هَذَا أَوْ أَفْضَلُ؟ سُبْحَانَ اللَّهِ عَدَدَ مَا خَلَقَ فِي السَّمَاءِ وَسُبْحَانَ اللَّهِ عَدَدَ مَا خَلَقَ فِي الْأَرْضِ وَسُبْحَانَ اللَّهِ عَدَدَ مَا بَيْنَ ذَلِكَ وَسُبْحَانَ اللَّهِ عَدَدَ مَا هُوَ خَالِقٌ وَاللَّهُ أَكْبَرُ مِثْلَ ذَلِكَ وَالْحَمْدُ لِلَّهِ مِثْلَ ذَلِكَ وَلَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ مِثْلَ ذَلِكَ وَلَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللَّهِ مِثْلَ ذَلِكَ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَأَبُو دَاوُدَ وَقَالَ التِّرْمِذِيُّ: هَذَا حَدِيث غَرِيب

وعن سعد بن ابي وقاص انه دخل مع النبي صلى الله عليه وسلم على امراة وبين يديها نوى او حصى تسبح به فقال: «الا اخبرك بما هو ايسر عليك من هذا او افضل؟ سبحان الله عدد ما خلق في السماء وسبحان الله عدد ما خلق في الارض وسبحان الله عدد ما بين ذلك وسبحان الله عدد ما هو خالق والله اكبر مثل ذلك والحمد لله مثل ذلك ولا اله الا الله مثل ذلك ولا حول ولا قوة الا بالله مثل ذلك» . رواه الترمذي وابو داود وقال الترمذي: هذا حديث غريب

ব্যাখ্যা: হাদীসে বিচি অথবা কঙ্কর দ্বারা তাসবীহ গণনা বৈধ হওয়ার ব্যাপারে প্রমাণ রয়েছে। এক মতে বলা হয়েছে, এভাবে তাসবীহ এর দানা দ্বারা তাসবীহ গণনা বৈধ রয়েছে আর তা গাঁথা দানা ও বিক্ষিপ্ত দানার মাঝে পার্থক্য না থাকার কারণে। আর বৈধতার কারণ মূলত রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মহিলাকে হুকুমের দিকে দিক-নির্দশনা করা বৈধতার পরিপন্থী না। ‘উবায়দুল্লাহ মুবারকপূরী বলেন, তবে এ ক্ষেত্রে আমার দৃষ্টি দেয়ার আছে, কেননা হাদীসটি দুর্বল। যদিও ইমাম তিরমিযী একে হাসান বলেছেন, ইমাম হাকিম ও যাহাবী একে সহীহ বলেছেন কিন্তু কঙ্কর অথবা বিচি দ্বারা তাসবীহ গণনা করা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কর্ম, উক্তি অথবা তার মৌনসম্মতি কর্তৃক মারফূ' সূত্রে কোন হাদীস প্রমাণিত হয়নি। আর কল্যাণ কেবল নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে প্রমাণিত হয়েছে তার অনুসরণার্থে; পরবর্তীদের নবআবিষ্কারে না।

(أَلَا أُخْبِرُكِ بِمَا هُوَ أَيْسَرُ عَلَيْكِ مِنْ هٰذَا أَوْ أَفْضَلُ؟) ইমাম ত্বীবী বলেন, নিশ্চয়ই তা সর্বোত্তম; কেননা তাতে শিথিলতা সম্পর্কে স্বীকৃতি রয়েছে, কেননা সে তার গুণকীর্তন পরিসংখ্যান করার ব্যাপারে সক্ষম না, আর বিচি দ্বারা তাসবীহ গণনাতে ঐ ব্যাপারে ঝুঁকি রয়েছে যে, সে পরিসংখ্যানের ব্যাপারে সক্ষম। কারী বলেন, হাদীসে বিচি দ্বারা তাসবীহ গণনা করতে ঝুঁকি আবশ্যক হয়ে যায় না, এরপর কারী শ্রেষ্ঠত্বের অন্যান্য দিকসমূহ উল্লেখ করেছেন যেগুলোর কোনটিই জখমমুক্ত নয় এবং চিন্তাশীলের কাছে যা গোপন না।

(عَدَدَ مَا بَيْنَ ذٰلِكَ) অর্থাৎ- আকাশ, জমিন, বাতাস, পাখি, মেঘমালা এবং এগুলো ছাড়া অন্যান্যদের হতে যা উল্লেখ করা হয়েছে তার মাঝে যা আছে তা।

(عَدَدَ مَا هُوَ خَالِقٌ) অর্থাৎ- এরপর যা তিনি সৃষ্টি করবেন। ইবনু হাজার একেই পছন্দ করেছেন এবং এটিই সর্বাধিক প্রকাশ্যমান। তবে সবাধিক সূক্ষ্ম ও গোপনীয় ত্বীবী যা বলেছেন, অর্থাৎ- অনাদী হতে অনন্ত পর্যন্ত তিনি যা সৃষ্টি করবেন তা। উদ্দেশ্য নিরবিচ্ছিন্নতা বিশ্লেষণের পরে অস্পষ্টতা। কেননা (اسم الفاعل) কে যখন আল্লাহ তা‘আলার দিকে সম্বন্ধ করা হবে তখন তা সৃষ্টির শুরু থেকে নিয়ে শেষ পর্যন্ত স্থায়িত্বের উপকারিতা দিবে। উদাহরণ স্বরূপ কেউ যদি বলে আল্লাহ ক্ষমতাবান, জ্ঞানী তখন সে কোন এক কালকে বাদ দিয়ে অপর কালকে উদ্দেশ্য করতে পারবে না।


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১০: আল্লাহ তা‘আলার নামসমূহ (كتاب اسماء الله تعالٰى)