পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ
২১৬৯-[৬১] আয়ফা’ ইবনু ’আবদিল কালা’ঈ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি আরয করল, হে আল্লাহর রসূল! কুরআনের কোন্ সূরা বেশি মর্যাদাপূর্ণ? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, ক্বুল হুওয়াল্ল-হু আহাদ। সে আবার জিজ্ঞেস করল, কুরআনের কোন্ আয়াত বেশি মর্যাদার? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, আয়াতুল কুরসী- ’’আল্ল-হু লা ইলা-হা ইল্লা- হুওয়াল হাইয়্যূল কইয়্যূম’’। সে পুনরায় বলল, হে আল্লাহর নবী! কুরআনের কোন্ আয়াত এমন, যার বারাকাত আপনার ও আপনার উম্মাতের কাছে পৌঁছতে আপনি ভালবাসেন? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, সূরা আল বাকারাহ্’র শেষাংশ। কেননা আল্লাহ তা’আলা তাঁর ’আরশের নীচের ভাণ্ডার হতে তা এ উম্মাতকে দান করেছেন। দুনিয়া ও আখিরাতের এমন কোন কল্যাণ নেই যা এতে নেই। (দারিমী)[1]
اَلْفَصْلُ الثَّالِثُ
وَعَنْ أَيْفَعَ بْنِ عَبْدٍ الْكَلَاعِيِّ قَالَ: قَالَ رَجُلٌ: يَا رَسُولَ اللَّهِ أَيُّ سُورَةِ الْقُرْآنِ أَعْظَمُ؟ قَالَ: (قُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ)
قَالَ: فَأَيُّ آيَةٍ فِي الْقُرْآنِ أَعْظَمُ؟ قَالَ: آيَةُ الْكُرْسِيِّ (اللَّهُ لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ الْحَيُّ الْقَيُّومُ)
قَالَ: فَأَيُّ آيَةٍ يَا نَبِيَّ اللَّهِ تُحِبُّ أَنْ تُصِيبَكَ وَأُمَّتَكَ؟ قَالَ: «خَاتِمَةُ سُورَةِ الْبَقَرَةِ فَإِنَّهَا مِنْ خَزَائِنِ رَحْمَةِ اللَّهِ تَعَالَى مِنْ تَحْتِ عَرْشِهِ أَعْطَاهَا هَذِهِ الْأُمَّةَ لَمْ تتْرك خيرا من يخر الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ إِلَّا اشْتَمَلَتْ عَلَيْهِ» . رَوَاهُ الدَّارِمِيُّ
ব্যাখ্যা: এক ব্যক্তি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে প্রশ্ন করলেন, কুরআনের কোন্ সূরাটি সবচেয়ে বড়? রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উত্তর দিলেন সূরা ‘‘কুল হুওয়াল্ল-হু আহাদ’’ বা সূরা আল ইখলাস। প্রশ্নকারীর এ প্রশ্নটি ছিল তাওহীদের দিক থেকে। এ ভিত্তিতে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জওয়াবও ছিল। কিন্তু এটি ঐ হাদীসের বিরোধী নয় যাতে বলা হয়েছে সূরা আল ফাতিহাহ্ হলো আল কুরআনের সবচেয়ে বড় সূরা। অথবা বলা হয় সূরা আল ফাতিহাহ্’র পরে সূরা আল ইখলাস হলো আল কুরআনের সবচেয়ে বড় সূরা। ইবনু হাজার আসকালানী (রহঃ) বলেন, সূরা আল ফাতিহাহ্ সবচেয়ে বড় হওয়া সংক্রান্ত সবগুলো হাদীস সহীহ, কিন্তু আল ইখলাস সংক্রান্ত হাদীসটি তা নয়।
লুম্‘আত গ্রন্থকার স্বীয় গ্রন্থে বলেন, ইতিপূর্বে অতিবাহিত হয়েছে যে, আল কুরআনের সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ সূরা হলো সূরা আল ফাতিহাহ্, এ শ্রেষ্ঠত্ব কয়েকটি দিক থেকে। (১) পবিত্র কুরআনুল কারীমের মূল উদ্দেশ্য এটাতে বিদ্যমান। (২) সালাতে সেটা পাঠ করা (সর্বসম্মতভাবে) ওয়াজীব, (কেননা সূরা আল ফাতিহাকেই সালাত বলা হয়েছে)। পক্ষান্তরে সূরা আল ইখলাস আল্লাহ তা‘আলার তাওহীদ বর্ণনার ক্ষেত্রে শ্রেষ্ঠ, আয়াতুল কুরসী আল্লাহ তা‘আলার চিরন্তন ও চিরস্থায়ী গুণাবলী বর্ণনার ক্ষেত্রে শ্রেষ্ঠ, আর সূরা আল বাকারার শেষ আয়াত দু’টি আল্লাহর নিকট দুনিয়া-আখিরাতের কল্যাণ চাওয়ার ক্ষেত্রে শ্রেষ্ঠ।
আল কুরআনের কোন্ আয়াতটি শ্রেষ্ঠ আয়াত? এ প্রশ্নের উত্তরে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ...اللَّهُ لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ الْحَيُّ الْقَيُّومُ অর্থাৎ- আয়াতুল কুরসী শ্রেষ্ঠ আয়াত। লোকটি আবার যখন প্রশ্ন করলেন যে, হে আল্লাহর রসূল! আল কুরআনের কোন্ আয়াতটির কল্যাণ ও সাওয়াব আপনার জন্য এবং আপনার উম্মাতের জন্য পছন্দ করেন? এর উত্তরে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, সূরা আল বাকারাহ্’র শেষ আয়াত, অর্থাৎ- ...آمَنَ الرَّسُولُ بِمَا أُنْزِلَ إِلَيْهِ থেকে শেষ পর্যন্ত। এটা আল্লাহ তা‘আলার ‘আরশে ‘আযীমের নিচে রহমাতের ভাণ্ডার থেকে উৎসারিত হয়েছে, বান্দার জন্য দুনিয়া আখিরাতের সকল কল্যাণ এতে নিহিত।