পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
২১৫৬-[৪৮] ’আবদুল্লাহ ইবনু ’আব্বাস ও আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) হতে বর্ণিত। দু’জনেই বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ (সাওয়াবের দিক দিয়ে) সূরা ’ইযা- যুলযিলাত’ কুরআনের অর্ধেকের সমান, ’কুল হুওয়াল্ল-হু আহাদ’ (কুরআনের) এক-তৃতীয়াংশের সমান, ’কুল ইয়া- আইয়ুহাল কা-ফিরূন’ এক-চতুর্থাংশের সমান। (তিরমিযী)[1]
اَلْفَصْلُ الثَّانِىْ
وَعَن ابْن عَبَّاس وَأنس بن مَالك رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمْ قَالَا: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: (إِذا زلزلت)
تعدل نصف الْقُرْآن (قل هُوَ الله أحد)
تعدل ثلث الْقُرْآن و (قل يَا أَيُّهَا الْكَافِرُونَ)
تَعْدِلُ رُبْعَ الْقُرْآنِ . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ
ব্যাখ্যা: সূরা যিলযালকে অর্ধেক কুরআনের সমান, সূরা ইখলাসকে এক তৃতীয়াংশের সমান এবং সূরা কাফিরূনকে এক চতুর্থাংশের সমান বলা হয়েছে। এটা সাওয়াবের দিক থেকেও হতে পারে, আলোচ্য বিষয় বস্ত্তর দিক থেকেও হতে পারে।
যেমন বলা হয়েছে সূরা যিলযাল কুরআনের অর্ধেকের সমান এজন্য যে, কুরআনের বিষয়বস্তুকে দু’ভাগে ভাগ করা হয়, একটি হলো আহকামুদ্ দুন্ইয়া, আরেকটি হলো আহকামুল আ-খিরাহ্। এ সূরাটিতে ইজমালান সমগ্র আহকামুল আ-খিরাহ্ তুলে ধরা হয়েছে। সুতরাং তা যেন কুরআনের অর্ধেক।
‘আল্লামা ত্বীবী (রহঃ) বলেন, এখানে আল কুরআনের ‘‘মাকসূদুল আ‘যম বিযযা-ত’’ (সত্তাগত মহান) উদ্দেশ্য হতে পারে। সেটা হলো শুরু এবং শেষ অবস্থা, যদিও সূরা যিলযাল শেষ বা কিয়ামতের অবস্থার বর্ণনা সম্বলিত একটি সূরা তথাপি আখিরাতের আহওয়াল বা অবস্থাদির উপর একটি পূর্ণাঙ্গ বিবরণ সম্বলিত সূরা। সুতরাং এ অর্থে এ সূরাটি যেন আল কুরআনের অর্ধেকের সমান।
আবার যে সূরাটিকে কুরআনের এক চতুর্থাংশের সমান বলে অভিহিত করা হয়েছে, অর্থাৎ- সূরা কাফিরূন সেটা এভাবে যে, আল কুরআনের বিবরণ হলো- ১. তাওহীদের উপর ২. নবূওয়াতের উপর ৩. জীবন-জীনদেগীর বিধানের উপর ৪. এবং পরকালীন অবস্থার উপর।
এর মধ্যে সূরা কাফিরূন প্রথমটি অর্থাৎ- তাওহীদকে অন্তর্ভুক্ত করে। কেননা শির্ক থেকে বেঁচে থাকা এবং সত্য দীনের উপর অবিচল থাকা- এটা তাওহীদের মূল স্বীকৃতি। সুতরাং এটি এক চতুর্থাংশের সমান।
অনুরূপ সূরা ইখলাস আল কুরআনের এক-তৃতীয়াংশের সমান। এটা এভাবে যে, আল কুরআনে তিন প্রকার ‘ইলম বর্ণিত হয়েছে। ১. ‘ইলমুত্ তাওহীদ ২. ইলমুশ্ শরায়ে ওয়াল আহকাম ৩. এবং ‘ইলমুল আখবার ওয়াল কুসাস বা ইতিহাস ও ঘটনা প্রবাহ। এ সূরাটিতে অর্থাৎ- সূরা ইখলাসে প্রথমটি অর্থাৎ- ‘ইলমুত তাওহীদ পূর্ণমাত্রায় বিধৃত হয়েছে। এ দৃষ্টিকোণ থেকে সূরাটি আল কুরআনের এক-তৃতীয়াংশের সমান। ইতিপূর্বে সূরা ইখলাসের আরো ব্যাখ্যা অতিবাহিত হয়েছে।