২০৭৬

পরিচ্ছেদঃ ৭. প্রথম অনুচ্ছেদ - নফল সিয়ামের ইফতারের বিবরণ

’আল্লামা ’আলী কারী (রহঃ) বলেন, অপর অনুলিপিতে রয়েছে(في توابع لصوم التطوع) অর্থাৎ- নফল সিয়ামের অনুগামী।


২০৭৬-[১] ’আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার কাছে এলেন। তিনি বললেন, তোমার কাছে কী (খাবার) কিছু আছে? আমি বললাম, না (কিছুতো নেই)। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তাহলে আমি (আজ) সিয়াম পালন করবো! এরপর আর একদিন তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমার কাছে এলেন। (জিজ্ঞেস করলেন, তোমার কাছে কী খাবার কিছু আছে?) আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আমাদের জন্য ’হায়স’ হাদিয়্যাহ্ এসেছে। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, আনো, আমাকে দেখাও। আমি সকাল থেকে সওম রেখেছি। তারপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ’হায়স’ খেয়ে নিলেন। (মুসলিম)[1]

بَابُ فِى الْاِفْطَارِ مِنَ التَّطَوُّعِ

وَعَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا قَالَتْ: دَخَلَ عَلَيَّ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ذَاتَ يَوْمٍ فَقَالَ: «هَلْ عِنْدَكُمْ شَيْءٌ؟» فَقُلْنَا: لَا قَالَ: «فَإِنِّي إِذًا صَائِمٌ» . ثُمَّ أَتَانَا يَوْمًا آخَرَ فَقُلْنَا: يَا رَسُولَ اللَّهِ أُهْدِيَ لَنَا حَيْسٌ فَقَالَ: «أَرِينِيهِ فَلَقَدْ أَصْبَحْتُ صَائِمًا» فَأَكَلَ. رَوَاهُ مُسلم

وعن عاىشة رضي الله عنها قالت: دخل علي النبي صلى الله عليه وسلم ذات يوم فقال: «هل عندكم شيء؟» فقلنا: لا قال: «فاني اذا صاىم» . ثم اتانا يوما اخر فقلنا: يا رسول الله اهدي لنا حيس فقال: «ارينيه فلقد اصبحت صاىما» فاكل. رواه مسلم

ব্যাখ্যা: ‘আল্লামা সিনদী (রহঃ) বলেন, আলোচ্য হাদীস প্রমাণ করে যে, কোন ধরনের ওযর ছাড়াই নফল সিয়াম ভঙ্গ করা জায়িয এবং এর উপর অধিকাংশ ‘উলামায়ে আহনাফদের মত রয়েছে। কিন্তু তারা কাযা ওয়াজিব করেছেন। ‘আল্লামা ইবনুল হাম্মাম বলেন, যখন নফল সিয়াম পালনকারিণী রমণীর ঋতুস্রাব আসার কারণে ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় সিয়াম ভঙ্গ হবে, তখন অবশ্যই তা কাযা করতে হবে। এ ব্যাপারে আমাদের ‘উলামাগণের মাঝে কোন মতপার্থক্য নেই। তবে ইমাম শাফি‘ঈ (রহঃ)-এর বিপরীত মত দিয়েছেন। অর্থাৎ তাঁর মতে কাযা ওয়াজিব নয়। ‘আল্লামা খাত্ত্বাবী (রহঃ) বলেন, রাত হওয়ার পূর্বেই নফল সিয়াম ভঙ্গ করা জায়িয, তবে তিনি কাযার কথা উল্লেখ করেননি এবং এর উপর একাধিক সাহাবীর ‘আমল রয়েছে। তাদের মধ্য হতে ‘আবদুল্লাহ বিন মাস্‘ঊদ, হুযায়ফাহ্, আবূ দারদা, আবূ আইয়ূব আল আনসারী (রাঃ) এবং অনুরূপ কথা বলেছেন ইমাম শাফি‘ঈ ও ইমাম আহমাদ (রহঃ)। ‘আল্লামা ইবনুল কুদামাহ্ (রহঃ) বলেন, যে নফল সিয়াম শুরু করবে, তার জন্য তা পূর্ণ করা মুস্তাহাব, ওয়াজিব নয়। সুতরাং তা পরিত্যাগ করলে তার ওপর কাযা নেই। ইবনু ‘উমার ও ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, তারা দু’জনই সিয়াম অবস্থায় সকাল করলেন, অতঃপর সিয়াম ভঙ্গ করলেন।

ইবনু ‘উমার (রাঃ) বলেন, যদি মানতের সিয়াম ও রমাযানের কাযা না হয়, তবে সিয়াম ভঙ্গে কোন সমস্যা নেই। অর্থাৎ- তাতে কোন কাযা নেই। ‘আল্লামা আসকালানী (রহঃ) বলেন, কোন কারণ ছাড়া নফল সিয়াম ভঙ্গ করা জায়িয, এটা জমহূর ‘উলামাগণের মত। আর তারা কাযা ওয়াজিব করেননি, বরং তা মুস্তাহাব রেখেছেন। মির্‘আত প্রণেতা বলেন, নফল সিয়াম ভঙ্গ করা জায়িয এটা জমহূর ‘উলামাগণের কথা দ্বারা প্রমাণিত। আর এটা কাযা ওয়াজিব নয়, এটা জুহায়ফাহ্ এর হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। যা বর্ণনা করেছেন বুখারী ও তিরমিযী। আর এ হাদীসের প্রথম অংশের দ্বারা এটাও প্রমাণিত হয়েছে যে, নফল সিয়ামের জন্য দিনের বেলা নিয়্যাত করা জায়িয আছে।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৭: সওম (রোযা) (كتاب الصوم)