পরিচ্ছেদঃ ২. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - সওম পর্বের বিক্ষিপ্ত মাস্আলাহ্
১৯৯০-[৯] সালমান ইবনু ’আমির হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যখন ইফতার করবে সে যেন খেজুর দিয়ে (শুরু) করে। কারণ খেজুর বারাকাতময়। যদি খেজুর না পায়, তাহলে যেন পানি দিয়ে ইফতার করে। কেননা পানি পবিত্র জিনিস। (আহমাদ, তিরমিযী, আবূ দাঊদ, ইবনু মাজাহ, দারিমী। فَإِنَّه بَرَكَةٌ [ফাইন্নাহূ বারাকাতুন] -এ অংশটুকু ইমাম তিরমিযী ছাড়া আর কেউ উল্লেখ করেননি।)[1]
وَعَنْ سَلْمَانَ بْنِ عَامِرٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِذَا أَفْطَرَ أَحَدُكُمْ فَلْيُفْطِرْ عَلَى تَمْرٍ فَإِنَّهُ بَرَكَةٌ فَإِنْ لَمْ يَجِدْ فَلْيُفْطِرْ عَلَى مَاءٍ فَإِنَّهُ طَهُورٌ» . رَوَاهُ أَحْمَدُ وَالتِّرْمِذِيُّ وَأَبُو دَاوُدَ وَابْنُ مَاجَهْ وَالدَّارِمِيُّ. وَلَمْ يَذْكُرْ: «فَإِنَّهُ بَرَكَةٌ» غَيْرُ التِّرْمِذِيِّ
ব্যাখ্যা: (فَلْيُفْطِرْ عَلٰى تَمْرٍ) ‘‘সে যেন খেজুর দিয়ে ইফতার করে।’’ এখানে আদেশ দ্বারা ওয়াজিব উদ্দেশ্য নয় বরং তা মুস্তাহাব। ইমাম শাওকানী বলেনঃ সুলায়মান-এর অত্র হাদীস এবং আনাস (রাঃ) বর্ণিত পরবর্তী হাদীস এ দু’ হাদীস প্রমাণ করে যে, খেজুর দিয়ে ইফতার বিধিসম্মত। খেজুর না পেলে পানি দিয়ে ইফতার করবে। তবে আনাস (রাঃ)-এর হাদীস প্রমাণ করে যে, শুকনো খেজুরের চাইতে (রুতাব) ভিজা খেজুর উত্তম। অতএব সম্ভব হলে তাকেই অগ্রাধিকার দিবে।
খেজুর দিয়ে ইফতার করার নির্দেশ এজন্য দেয়া হয়েছে যে, তা যেমন মিষ্টিদ্রব্য তেমনি তা প্রধান খাদ্যও বটে। সিয়ামের কারণে ক্ষুধার প্রভাবে শরীর ক্লান্ত হয়ে পরে এবং দৃষ্টিশক্তি দুর্বল হয়ে যায়। আর মিষ্টিদ্রব্য দ্রুত শক্তি বৃদ্ধি করে বিশেষভাবে দৃষ্টিশক্তি। তাই ক্লান্ত ও দুর্বলতা দৃঢ় করার জন্য মিষ্টিদ্রব্য দিয়ে ইফতার করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ইমাম শাওকানী বলেনঃ যেহেতু মিষ্টিদ্রব্য হওয়ার কারণে খেজুর দিয়ে ইফতার করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে, অতএব সকল প্রকার মিষ্টিদ্রব্য এর মধ্যে শামিল।
(فَإِنَّه بَرَكَةٌ) ‘‘তার মধ্যে বারাকাত রয়েছে’’ অর্থাৎ- খেজুরের মধ্যে বারাকাত এবং অনেক কল্যাণ আছে। ইবনুল কইয়্যিম বলেনঃ খেজুর অথবা পানি দিয়ে ইফতার করার নির্দেশ উম্মাতের প্রতি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পূর্ণ দয়া ও কল্যাণ কামিতার পরিচায়ক। কেননা সিয়াম পালনের কারণে কলিজার মধ্যে শুষ্কতা আসে। তা যদি পানি দ্বারা সিক্ত করার পর খাবার গ্রহণ করা হয় তাহলে এর পূর্ণ উপকারিতা লাভ হয়। আর খেজুরের গুণের কথা তো পূর্বেই উল্লেখ করা হয়েছে আর কল্বের উৎকর্ষণ সাধনে পানির বৈশিষ্ট্যের বিষয় একমাত্র চিকিৎসাবিদগণই অবহিত আছেন।