পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - যেসব জিনিসের যাকাত দিতে হয়
১৭৯৯-[৬] ’আলী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি ঘোড়া ও গোলামের যাকাত মাফ করে দিয়েছি। তোমরা চল্লিশ দিরহাম রূপায় এক দিরহাম রূপা যাকাত আদায় করো (যদি রূপার নিসাবের পরিমাণ দু’শ দিরহাম হয়)। কারণ একশ’ নব্বই দিরহাম পর্যন্ত বা দু’শ দিরহামের কম রূপার যাকাত ফরয হয় না। দু’শ দিরহাম রূপা হলে পাঁচ দিরহাম যাকাত দিতে হবে। তিরমিযী, আবূ দাঊদ; আবূ দাঊদ হারিসুল আ’ওয়ার হতে ’আলীর এ বর্ণনাটি নকল করেছেন যে, যুহায়র বলেছেন, ’আলী (রাঃ) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বরাতে বলেছেন, চল্লিশ দিরহামে এক দিরহাম (চল্লিশ ভাগের এক ভাগ) আদায় করো। আর দু’শ দিরহাম পূর্ণ না হলে কোন কিছু আদায় করা ওয়াজিব নয়। দু’শ দিরহাম পুরা হলে তার মধ্যে পাঁচ দিরহাম যাকাত ওয়াজিব হবে। আর যখন দু’শত দিরহামের বেশী হবে, তখন এতে এ হিসেবে যাকাত ওয়াজিব হবে।
আর বকরীর নিসাব প্রত্যেক চল্লিশটিতে একটি বকরীর যাকাত ওয়াজিব। একশ’ বিশটি বকরী পর্যন্ত চলবে। সংখ্যায় এর চেয়ে একটি বেড়ে গেলে দু’শ পর্যন্ত দু’টি বকরী যাকাত হবে। আবার দু’শ হতে একটি বৃদ্ধি পেলে, তিনশ’ পর্যন্ত তিনটি বকরী যাকাত হবে। আর তিনশ’ হতে বেশী হলে (অর্থাৎ চারশ’ হলে) প্রত্যেক একশ’ বকরীতে একটি করে বকরী যাকাত দেয়া ওয়াজিব। যদি কারো নিকট নিসাব সংখ্যক বকরী না থাকে অর্থাৎ উনচল্লিশটি থাকে তাহলে যাকাত দিতে হবে না। আর গরুর যাকাতের নিসাব হলো, প্রত্যেক ত্রিশটি গরুতে এক বছরের একটি গরু, আর চল্লিশটি গরু হলে দু’বছর বয়সের একটি গরু যাকাত হিসেবে দেয়া ওয়াজিব। চাষাবাদ ও আরোহণের কাজে ব্যবহৃত গরুর কোন যাকাত নেই।[1]
عَنْ عَلِيٍّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: قَدْ عَفَوْتُ عَنِ الْخَيْلِ وَالرَّقِيقِ فَهَاتُوا صَدَقَةً الرِّقَةِ: مِنْ كُلِّ أَرْبَعِينَ دِرْهَمًا دِرْهَمٌ وَلَيْسَ فِي تِسْعِينَ وَمِائَةٍ شَيْءٌ فَإِذَا بَلَغَتْ مِائَتَيْنِ فَفِيهَا خَمْسَةُ دَرَاهِمَ . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَأَبُو دَاوُدَ
وَفِي رِوَايَةٍ لأبي دَاوُد عَن الْحَارِث عَنْ عَلِيٍّ قَالَ زُهَيْرٌ أَحْسَبُهُ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهُ قَالَ: هَاتُوا رُبْعَ الْعُشْرِ مِنْ كُلِّ أَرْبَعِينَ دِرْهَمًا دِرْهَمٌ وَلَيْسَ عَلَيْكُمْ شَيْءٌ حَتَّى تَتِمَّ مِائَتَيْ دِرْهَمٍ. فَإِذَا كَانَتْ مِائَتَيْ دِرْهَمٍ فَفِيهَا خَمْسَةُ دَرَاهِمَ. فَمَا زَادَ فَعَلَى حِسَابِ ذَلِكَ. وَفِي الْغَنَمِ فِي كُلِّ أَرْبَعِينَ شَاةً شَاةٌ إِلَى عِشْرِينَ وَمِائَة ز فَإِن زَادَت وَاحِدَة فشاتان إِلَى مِائَتَيْنِ. فَإِن زَادَتْ فَثَلَاثُ شِيَاهٍ إِلَى ثَلَاثِمِائَةٍ فَإِذَا زَادَتْ على ثَلَاث مائَة فَفِي كُلِّ مِائَةٍ شَاةٌ. فَإِنْ لَمْ تَكُنْ إِلَّا تِسْعٌ وَثَلَاثُونَ فَلَيْسَ عَلَيْكَ فِيهَا شَيْءٌ
وَفِي الْبَقَرِ: فِي كُلِّ ثَلَاثِينَ تَبِيعٌ وَفِي الْأَرْبَعين مُسِنَّة وَلَيْسَ على العوامل شَيْء
ব্যাখ্যা: ঘোড়া ও গোলামে যাকাত নেই, যদি ব্যবসায়ের জন্য না হয়। আর প্রতি ৪০ দিরহামে এক দিরহাম যাকাত ধার্য হয় যদি ২০০ দিরহাম জমা হয়। আর দু’শত দিরহাম হলে পাঁচ দিরহাম ওয়াজিব হয়। তবে হানাফী মাযহাবে ঘোড়ায় যাকাত ফরয হবে। তারা এ হাদীসের উত্তর দেন যে, এখানে আরোহণের ও জিহাদের ঘোড়ার কথা বলা হয়েছে। বাকী ঘোড়াতে যাকাত ফরয হবে।
৩০টি গরুতে এক বৎসরের একটি বাচ্চা বাছুর যাকাত ফরয হয়। আর ৪০টি হলে ২ বৎসরের একটি বাচ্চা বাছুর ওয়াজিব হয়। ২ বৎসরের বাছুর নর হোক বা নারী হোক তাতে কোন অসুবিধা নেই।
রৌপ্যের নিসাব হল দুইশত দিরহাম। অর্থাৎ একশত নব্বই দিরহাম হলেও তাতে কোন যাকাত লাগবে না। তবে নিসাবের উপর যে পরিমাণই বেশি হোক সেই বর্ধিত অংশে যাকাত ওয়াজিব হবে। অর্থাৎ যদি দুইশত দিরহামের উপর এক দিরহাম বেশি হয় তাহলে তাতেও চল্লিশ ভাগের একভাগ যাকাত দিতে হবে। ফসলাদি, শস্যাদি এবং ফলমূলের ক্ষেত্রেও একই বিধান প্রযোজ্য। অর্থাৎ পাচ ওয়াসাক্বের বেশি যতটুকুই বেশি হোক না কেন তাতে হিসাব করে যাকাত দিতে হবে। নগদ মুদ্রাও একই শ্রেণীভুক্ত। অর্থাৎ নগদ মুদ্রার ক্ষেত্রে নিসাবের অতিরিক্ত যে পরিমাণ হবে তাতে হিসাব করে যাকাত দিতে হবে। তবে চতুষ্পদ জন্তুর ক্ষেত্রে তা ভিন্ন। কেননা রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ ক্ষেত্রে কতগুলো স্তর করে দিয়েছেন এবং সেই স্তরের মধ্যবর্তীগুলোর ক্ষেত্রে আবশ্যক করেননি যতক্ষণ না পরবর্তী স্তরে পৌঁছে। যদিও রৌপ্যের মাস্আলার ক্ষেত্রে ইমাম আবূ হানীফাহ্ (রহঃ) বিপরীত মত পেশ করেছেন।