পরিচ্ছেদঃ ১. প্রথম অনুচ্ছেদ - রোগী দেখা ও রোগের সাওয়াব
১৫৪৭-[২৫] ’আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি একবার রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে মহামারীর ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলাম। জবাবে তিনি আমাকে বললেন, এটা এক রকম ’আযাব। আল্লাহ যার উপর চান এ ’আযাব পাঠান। কিন্তু মু’মিনদের জন্য তা তিনি রহমত গণ্য করেছেন। তোমাদের যে কোন লোক মহামারী কবলিত এলাকায় সাওয়াবের আশায় সবরের সাথে অবস্থান করে এবং আস্থা রাখে যে, আল্লাহ তার জন্য যা নির্ধারণ করে রেখেছেন তাই হবে, তাছাড়া আর কিছু হবে না, তার জন্য রয়েছে শাহীদের সাওয়াব। (বুখারী)[1]
بَابُ عِيَادَةِ الْمَرِيْضِ وَثَوَابِ الْمَرَضِ
وَعَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا قَالَتْ: سَأَلَتْ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنِ الطَّاعُونِ فَأَخْبَرَنِي: «أَنَّهُ عَذَابٌ يَبْعَثُهُ اللَّهُ عَلَى مَنْ يَشَاءُ وَأَنَّ اللَّهَ جَعَلَهُ رَحْمَةً لِلْمُؤْمِنِينَ لَيْسَ مِنْ أَحَدٍ يَقَعُ الطَّاعُونُ فَيَمْكُثُ فِي بَلَدِهِ صَابِرًا مُحْتَسِبًا يَعْلَمُ أَنَّهُ لَا يُصِيبُهُ إِلَّا مَا كَتَبَ اللَّهُ لَهُ إِلَّا كَانَ لَهُ مِثْلُ أَجْرِ شَهِيدٍ» . رَوَاهُ الْبُخَارِيُّ
ব্যাখ্যা: (يَبْعَثُهُ اللّهُ عَلى مَنْ يَشَاءُ) আল্লাহ যার প্রতি ইচ্ছা করেন তা প্রেরণ করেন তথা কাফির অথবা পাপীদের ওপর যেরূপ ফির‘আওন বংশধরের ঘটনা ও মূসার সাথী বাল্‘আম-এর সাথে ঘটনা।
(رَحْمَةً لِلْمُؤْمِنِيْنَ) এই উম্মাতের জন্য রহমাত স্বরূপ আহমাদে বর্ণিত আবূ আসীব-এর হাদীস,
فَالطَّاعُوْنُ شَهَادَةٌ لِلْمُؤْمِنِيْنَ وَرَحْمَةٌ لَهُمْ وَرِجْسٌ عَلَى الْكَافِرِ.
প্লেগ রোগ হল মু’মিনদের জন্য শাহাদাত এবং রহমাত স্বরূপ আর কাফিরদের জন্য শাস্তি স্বরূপ।
সুতরাং এটা সুস্পষ্ট যে, প্লেগ রহমাত সরূপ আর এটা মুসলিমদের জন্য খাস। আর কাফিরদের ক্ষেত্রে হলে তা শাস্তি যা আখিরাতের পূর্বে দুনিয়াতে জলদি ব্যবস্থা করা হয়েছে। আর এই উম্মাতের মধ্যে যারা পাপী তাদের জন্য প্লেগ রোগ কি শাহাদাতের মর্যাদার কারণ হবে কিনা? বা শুধুমাত্র পরিপূর্ণ মু’মিনের সাথেই খাস। আর পাপী লোক দ্বারা উদ্দেশ্য কাবীরাহ্ (কবিরা) গুনাহকারী যাদেরকে প্লেগ আক্রমণ করলে সে শাহাদাতের মর্যাদা পাবে না তার এই পাপ কাজে জড়িত থাকার কারণে।
আল্লাহ তা‘আলার বাণীঃ ‘‘যারা দুষ্কর্মে উপার্জন করেছে তারা কি মনে করে যে, আমি তাদের সে লোকদের মতো করে দেব যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে।’’ (সূরাহ্ আল জা-সিয়াহ্ ৪৫ : ২১)
(فَيَمْكُثُ فِي بَلَدِه) মহামারী আক্রান্ত এলাকায় অবস্থান করে যেখান হতে বের হয় না বিরক্ত বা ব্যাকুল হয়ে বড় প্রতিদানের আশায় ধৈর্য ধারণ করে। আর কেউ ব্যাস্ত হয় অথবা আফসোস করে সেখান হতে বের হতে না পেরে আর ধারণা করে এখান হতে যদি বের হতে পারত তাহলে আসলেই এ রোগে আক্রান্ত হত না। এ ব্যক্তি এ রোগে মারা গেলে শাহাদাতের মর্যাদা লাভ করতে পারবে না।
(إِلَّا كَانَ لَه مِثْلُ أَجْرِ شَهِيْدٍ) ‘তার জন্য শাহীদের অনুরূপ সাওয়াব রয়েছে’ শাহীদের অনুরূপ সাওয়াব ব্যক্তির মধ্যে উদ্দেশ্য হল যে মহামারীতে আক্রান্ত হয়ে মারা যায় সে শাহীদ আর যারা এ মহামারী আক্রান্তে মারা যায় না তাদের জন্য শাহীদের অনুরূপ সাওয়াব রয়েছে। যদিও স্বয়ং শাহাদাতের মর্যাদা অর্জিত হবে না। অতএব যারা শাহীদের গুণে গুণান্বিত তাদের মর্যাদা সুউচ্চ তাদের চেয়ে যাদেরকে শাহীদের অনুরূপ সাওয়াব দেয়া হয়।
অনুরূপ তার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে যে ব্যক্তি আল্লাহর কালিমাকে সুউচ্চ করার নিয়্যাতে জিহাদের উদ্দেশে বের হয়, অতঃপর অন্য কোন কারণে মারা যায় যুদ্ধে নিহত হওয়া ছাড়া আল্লাহর অনুগ্রহ অনেক প্রশস্ত আর মু’মিনের নিয়্যাত বেশী কার্যকরী কাজের চেয়েও।