পরিচ্ছেদঃ ১. প্রথম অনুচ্ছেদ - রোগী দেখা ও রোগের সাওয়াব
১৫৪৬-[২৪] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ শহীদরা পাঁচ প্রকার- (১) মহামারীতে মৃত ব্যক্তি, (২) পেটের অসুখে আক্রান্ত হয়ে মৃত ব্যক্তি, (৩) পানিতে ডুবে মৃত ব্যক্তি, (৪) দেয়াল চাপা পড়ে মৃত ব্যক্তি এবং (৫) আল্লাহর পথে জিহাদ করে মৃত ব্যক্তি। (বুখারী, মুসলিম)[1]
بَابُ عِيَادَةِ الْمَرِيْضِ وَثَوَابِ الْمَرَضِ
وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «الشُّهَدَاءُ خَمْسَةٌ الْمَطْعُونُ وَالْمَبْطُونُ وَالْغَرِيقُ وَصَاحب الْهدم والشهيد فِي سَبِيل الله»
ব্যাখ্যা: شُهَدَاءُ শব্দটি شَهِيْدٌ শব্দের বহুবচন। শাহীদকে শাহীদ বলা হয় কয়েকটি কারণে এজন্য যে, তার মৃত্যুর সময় মালায়িকাহ্ (ফেরেশতারা) উপস্থিত হয়। ফলে সে এমন ব্যক্তি যার নিকট উপস্থিত হওয়া যায়। অথবা এজন্যে যে, সে জান্নাতের সাক্ষ্যপ্রাপ্ত হয়। উপরোক্ত দুই অর্থে شَهِيْدٌ শব্দটি مَشْهُوْدٌ অর্থে ব্যবহৃত। অথবা এজন্যে যে, শাহীদকে শাহীদ বলা হয় যে, সে আল্লাহ তা‘আলার নিকট জীবিত এবং উপস্থিত থাকে। অথবা আল্লাহ তা‘আলা তার জন্য সম্মানসমূহে প্রস্ত্তত করে রেখেছেন তা সে প্রত্যক্ষ করেছে। অথবা, ক্বিয়ামাতের (কিয়ামতের) দিন সকল মিথ্যুক উম্মাতদের বিরুদ্ধে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে সে সাক্ষ্যদাতা হবে। আর উপরোক্ত তিন অর্থে شَهِيْدٌ শব্দটি شَاهِيْدٌ (শাহীদ) অর্থে ব্যবহৃত।
শাহীদের সংখ্যার বিষয়ে হাদীসে বিভিন্নতা পরিলক্ষিত হয়। যেমন অত্র হাদীসে এ সংখ্যা পাঁচ বলা হয়েছে। আবার আগত জাবির (রাঃ) বিন আতীক-এর হাদীসে এর সংখ্যা সাত এসেছে আল্লাহর রাস্তায় শাহীদ ব্যতীত। আর তিরমিযী আহমাদ বর্ণিত ‘উমারের হাদীসে এ সংখ্যা চারের কথা এসেছে।
এ বিষয়ে হাফিয ইবনে হাজার আসক্বালানী (রহঃ) বলেছেন, যে বিষয়টি সুস্পষ্ট তা হলো নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একবার সর্বনিম্ন সংখ্যা অবহিত করেছেন। আবার অন্য সময়ে তা অধিক বলেছেন। তবে এ ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা করা উদ্দেশ্য তার নয়।
আল্লাহর রাস্তায় শাহীদ ব্যক্তির বিধান হলো তার গোসল বা সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) নেই, যা অন্যের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। যিনি আল্লাহর রাস্তায় শাহীদ হন তিনিই প্রকৃত শাহীদ আর বাকীরা রূপকার্থে শাহীদ, আল্লাহর রাস্তায় শাহীদের সাওয়াবের ন্যায় সাওয়াবের অর্থে শাহীদ (যদিও মর্যাদাগতভাবে পার্থক্য বিদ্যমান)। ‘উলামাগণ উল্লেখ করেছেন শাহীদ তিন শ্রেণীর। প্রথমতঃ দুনিয়া আখিরাতে শাহীদ, আর এ হল আল্লাহর রাস্তায় শাহীদ। দ্বিতীয়তঃ শুধু আখিরাতের শাহীদ, দুনিয়ায় নয়। আর এরা হলো বাকী চার শ্রেণী। তৃতীয়তঃ শুধু দুনিয়ার শাহীদ আখিরাতের নয়। এরা হল যারা গনীমাতে খিয়ানাত করে বা পৃষ্ঠপদর্শন করে মারা যায়।