পরিচ্ছেদঃ ৪৫. প্রথম অনুচ্ছেদ - খুতবাহ্ ও সালাত
১৪১২-[১২] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি ইমামের সাথে সালাতের এক রাক্’আত পেল, সে যেন পূর্ণ সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) পেল। (বুখারী, মুসলিম)[1]
بَابُ الْخُطْبَةِ وَالصَّلَاةِ
وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: مَنْ أَدْرَكَ رَكْعَةً مِنَ الصَّلَاةِ مَعَ الإِمَام فقد أدْرك الصَّلَاة كلهَا
ব্যাখ্যা: (مَنْ أَدْرَكَ رَكْعَةً مِنَ الصَّلَاةِ) ইবনু মালিক (রহঃ) বলেন, আলোচ্য হাদীসে উল্লেখিত সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) দ্বারা সালাতুল জুমু‘আহ্ উদ্দেশ্য। আল্লামা ত্বীবী (রহঃ) বলেনঃ এটি জুমু‘আর সাথে খাস এবং এ দিকেই ইঙ্গিত করেছেন। আল বাগাবী (রহঃ) এবং এ দৃষ্টিকোণ থেকে আলোচ্য হাদীস তিনি সালাতুল জুমু‘আহ্ অধ্যায়ে উল্লেখ করেছেন। তবে মা‘মার এর বর্ণনায় রয়েছে যে, আলোচ্য হাদীসের صلاة (সালাত) শব্দটি মুত্বলাক্ব, তাতে জুমু‘আহ্ ও অন্যান্য সালাত সম্পৃক্ত।
মির্‘আত প্রণেতা বলেনঃ হাকিম (রহঃ) আওযা‘ঈ এবং ‘উসামাহ্ ইবনু যায়দ আল লায়সী, মালিক ইবনু আনাস (রাঃ), সালিহ ইবনু আবিল আখযার থেকে, তারা প্রত্যেকে যুহরী থেকে জুমু‘আর সালাতের ব্যাপারে পূর্ণ নাস (বক্তব্য) হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তবে আলোচ্য হাদীসের মুত্বলাক্ব শব্দটি ‘‘সালাতুল জুমু‘আহ্’’-কেই নির্দেশ করছে যে, ইমামের সাথে জুমু‘আর এক রাক্‘আত পাওয়া পূর্ণ জুমু‘আহ্ পাওয়া। অতঃপর তা (বাকী অংশ) আদায় করা আবশ্যক এবং এটাই অধিকাংশ বিদ্বানদের মত যথাক্রমে ইবনু মাস‘ঊদ, ইবনু ‘উমার (রাঃ), আনাস (রাঃ), ইবনুল মুসাইয়্যাব, হাসান, যুহরী, নাখ্‘ঈ, মালিক, সাওরী, শাফি‘ঈ, আহমাদ, ইসহাক্ব, আবী আস্ সাওর ও আবূ হানীফাহ্ (রহঃ) প্রমুখগণ। তবে ‘আত্বা, তাউস, মুজাহিদ ও মাকহূল (রহঃ) বলেনঃ যে খুতবাহ্ না পাবে সে যুহরের চার রাক্‘আত আদায় করবে। কেননা জুমু‘আর জন্য খুতবাহ্ শর্ত। তবে এটা গ্রহণযোগ্য নয়। কেননা খুতবাহ্ শর্তের উপর কোন প্রমাণ নেই। ইমাম শাফি‘ঈ, আহমাদ, মালিক ও মুহাম্মাদ (রহঃ) বলেনঃ যে ইমামের সাথে পূর্ণ রাক্‘আত পাবে না বরং সিজদা্ (সিজদা/সেজদা) কিংবা তাশাহুদ পাবে সে জুমু‘আহ্ পাবে না, তাকে চার রাক্‘আত যুহর আদায় করতে হবে। তিনি বলেনঃ ইমামের সালাম ফিরানোর পর যুহর আদায় করতে হবে এবং ইমামের পিছনে তার আনুগত্যের জন্য জুমু‘আর নিয়্যাত করতে হবে।
ইমাম আবূ হানীফাহ্ (রহঃ) বলেনঃ আলোচ্য হাদীসটি মুত্বলাক্ব, যা সকল সালাতের হুকুমের ফায়দা দিবে। আর অন্য সকল সালাতের হুকুম হলোঃ ইমামের সাথে সালাতে কিছু অংশ যখন পাবে, এমনকি যদি তাশাহুদও পাওয়া যায় তবে ততটুকু ইমামের সাথে আদায় করতে হবে এবং অবশিষ্ট সালাত আদায় করে নিতে হবে।
মির‘আত প্রণেতা বলেন, প্রাধান্য ও গ্রহণযোগ্য মত হলোঃ আবূ হানীফাহ্ (রহঃ)-এর মতঃ যে ব্যক্তি ইমামের সাথে জুমু‘আর সালাতের কিছু অংশ পাবে, যদি তাশাহুদও পেয়ে থাকে তবে ইমামের সাথে তাই আদায় করতে হবে। বাকী সালাত সালামের পর আদায় করতে হবে, যুহর আদায় করা যাবে না। কেননা (তোমরা যতটুকু পাবে তা আদায় করে নাও, আর যা ছুটে যাবে তা পূর্ণ করে নাও) হাদীসটি মুত্বলাক্ব অর্থাৎ যতটুকু ইমামের সাথে পাওয়া যায় এমনকি যদি শুধু সালামও পাওয়া যায় তবুও জুমু‘আহ্ আদায় হবে।
আর ইমাম শাফি‘ঈ যে মত ব্যক্ত করেছেন সে ব্যাপারে কোন সহীহ হাদীস পাইনি, যা তার কথার উপর দলীল হয়।