১২৪০

পরিচ্ছেদঃ ৩৩. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - ক্বিয়ামুল লায়ল-এর প্রতি উৎসাহ দান

১২৪০-[২২] ’আবদুল্লাহ ইবনু ’উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, তাঁর পিতা ’উমার ইবনুল খাত্ত্বাব (রাঃ) রাত্রে আল্লাহর ইচ্ছা মতো সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করতেন। রাত্রের শেষভাগে নিজ পরিবারকে সালাত আদায়ের জন্যে উঠিয়ে দিতেন। তিনি তাদের বলতেন, সালাত আদায় কর। তারপর এ আয়াত পাঠ করতেনঃ ’’ওয়া’মুর আহলাকা বিস্‌সলা-তি ওয়াসত্বাবির ’আলায়হা- লা- নাস্আলুকা রিযকবান। নাহনু নারযুকুকা ওয়াল ’আ-ক্বিবাতু লিত্ তাক্বওয়া-’’। অর্থাৎ ’’তোমার পরিবারের লোকজনদেরকে সালাতের আদেশ করতে থাকো। নিজেও (এ কষ্টের) জন্যে ধৈর্য ধারণ করতে থাকো। আমি তোমার নিকট রিযক্ব (রিজিক/রিযিক) চাই না। রিযক্ব তো আমিই তোমাকে দান করি। আখিরাতের সফলতা তো মুত্তাক্বী লোকদের জন্য’’- (সূরাহ্ ত্ব-হা- ২০: ১৩২)। (মালিক)[1]

وَعَنِ ابْنِ عُمَرَ أَنَّ أَبَاهُ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ كَانَ يُصَلِّي مِنَ اللَّيْلِ مَا شَاءَ اللَّهُ حَتَّى إِذَا كَانَ مِنْ آخِرِ اللَّيْلِ أَيْقَظَ أَهْلَهُ لِلصَّلَاةِ يَقُولُ لَهُمْ: الصَّلَاةُ ثُمَّ يَتْلُو هَذِهِ الْآيَةَ: (وَأْمُرْ أَهْلَكَ بِالصَّلَاةِ وَاصْطَبِرْ عَلَيْهَا لَا نَسْأَلُكَ رِزْقًا نَحن نرزقك وَالْعَاقبَة للتقوى)
رَوَاهُ مَالك

وعن ابن عمر ان اباه عمر بن الخطاب رضي الله عنه كان يصلي من الليل ما شاء الله حتى اذا كان من اخر الليل ايقظ اهله للصلاة يقول لهم: الصلاة ثم يتلو هذه الاية: (وامر اهلك بالصلاة واصطبر عليها لا نسالك رزقا نحن نرزقك والعاقبة للتقوى) رواه مالك

ব্যাখ্যা: উমার (রাঃ) রাতে পরিবারের লোকদের যে সালাতের জন্য জাগাতেন সেটা হলো তাহাজ্জুদের সালাত (সালাত/নামায/নামাজ)। কেউ কেউ অবশ্য ফাজ্‌রের (ফজরের) সালাতের সম্ভাবনার কথাও বলেছেন, তবে প্রথম মতটিই অধিক প্রকাশ বরং এটাই নির্দিষ্ট। কেননা তিনি এ সালাতের জন্য পরিবারের কাউকে উঠতে বাধ্য করেননি।

এরপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল-কুরআনের যে আয়াত পাঠ করেছেন, তাতে বলা হয়েছেঃ ‘তুমি তোমার আহলে পরিবারকে সালাতের নির্দেশ কর....।’ এখানে সালাত বলতে সকল প্রকার সালাতই এর অন্তর্ভুক্ত চাই ফরয হোক চাই নফল, চাই দিনের সালাত হোক চাই রাতের। উক্ত আয়াতের শেষে বলা হয়েছে, ‘আমিই তোমাকে রিযক্ব (রিজিক/রিযিক) দান করি....।’ এর ব্যাখ্যা হলোঃ রিযক্ব সন্ধানের ব্যস্ততা সালাত পরিহার করো না অথবা তা অসময়ে অনিয়মে আদায় করো না। ইমাম ইবনু কাসীর (রহঃ) বলেন, তুমি যদি যথাযথভাবে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) কায়িম করতে পার তাহলে আল্লাহ এমনভাবে রিযক্ব (রিজিক/রিযিক) দান করবেন যা তুমি কল্পনাও করতে পারনি, যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেছেনঃ ‘‘আর যে আল্লাহকে ভয় করে আল্লাহ তার পথ করে দিবেন, আর তাকে ধারণাতীত উৎস থেকে রিযক্ব দান করবেন.......’’- (সূরাহ্ আত্ব ত্বলাক্ব ৯ : ২-৩)।

ইবনুন নাজ্জার, ইবনু ‘আসাকির, ইবনু মারদূবিয়াহ প্রমুখ আবূ সা‘ঈদ আল খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেন, এ আয়াত যখন নাযিল হলো তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রায় আট মাস পর্যন্ত ফাজ্‌রের (ফজরের) সালাতের সময় দরজায় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে বলতে লাগলেন, ‘হে কক্ষবাসীগণ! নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের গুনাহের নাপাকী দূরীভূত করে পূর্ণরূপে পবিত্র করতে চাচ্ছেন।’ সম্ভবত ‘উমার (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর এই কর্মের অনুরসণ করে তিনিও তার পরিবারের লোকদেরকে ডাকতেন। অথবা ‘উমার (রাঃ) ডাকার জন্য পরিবারের লোকজনের বিরক্তি বা কষ্ট ক্লেশের অভিযোগের বিরুদ্ধে আত্মপক্ষের দলীল উপস্থাপনের জন্য উক্ত আয়াত তিলাওয়াত করতেন।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة)