১২০০

পরিচ্ছেদঃ ৩১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - রাতের সালাত

১২০০-[১৩] হুযায়ফাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে রাত্রে (তাহাজ্জুদের) সালাত(সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করতে দেখেছেন। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিনবার ’’আল্ল-হু আকবার’’ বলে এ কথা বলেছেন : ’’যুল মালাকূতি ওয়াল জাবারূতি ওয়াল কিবরিয়া-য়ি ওয়াল ’আযামাতি’। তারপর তিনি সুবহা-নাকা আল্ল-হুম্মা ওয়া বিহামদিকা পড়ে সূরাহ্ আল বাক্বারাহ্ পড়তেন। এরপর রুকূ’ করতেন। তাঁর রুকূ’ প্রায় ক্বিয়ামের মতো (দীর্ঘ) ছিল। রুকূ’তে তিনি সুবহা-না রব্বিআল ’আযীম বলেছেন। তারপর রুকূ’ থেকে মাথা উঠিয়ে প্রায় রুকূ’ সমপরিমাণ সময় দাঁড়িয়েছেন। (এ সময়) তিনি বলতেন, ’লিরব্বিয়াল হামদু’ অর্থাৎ সব প্রশংসা আমার রবের জন্যে। তারপর তিনি সিজদা্ (সিজদা/সেজদা) করেছেন। তাঁর সাজদার সময়ও তাঁর ’ক্বাওমার’ বরাবর ছিল। সাজদায় তিনি বলতেন, সুবহা-না রব্বিয়াল আ’লা-। তারপর তিনি সিজদা্ হতে মাথা উঠালেন। তিনি উভয় সাজদার মাঝে সাজদার পরিমাণ সময় বসতেন। তিনি বলতেন, ’রব্বিগফির লী, ’রব্বিগফির লী’ হে আল্লাহ! আমাকে মাফ করো। হে আল্লাহ আমাকে মাফ করো। এভাবে তিনি চার রাক্’আত (সালাত) আদায় করলেন। (এ চার রাক্’আত সালাতে) সূরাহ্ আল বাক্বারাহ্, আ-লি ’ইমরান, আন্ নিসা, আল মায়িদাহ্ অথবা আল আন্’আম পড়তেন। এ হাদীসের একজন বর্ণনাকারী শু’বার সন্দেহ তৈরি হয়েছে যে, হাদীসে শেষ সূরাহ্ আল মায়িদাহ্ উল্লেখ করা হয়েছে না সূরাহ্ আল আন্’আম। (আবূ দাঊদ)[1]

عَنْ حُذَيْفَةَ: أَنَّهُ رَأَى النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُصَلِّي مِنَ اللَّيْلِ وَكَانَ يَقُولُ: «الله أكبر» ثَلَاثًا «ذُو الْمَلَكُوتِ وَالْجَبَرُوتِ وَالْكِبْرِيَاءِ وَالْعَظَمَةِ» ثُمَّ اسْتَفْتَحَ فَقَرَأَ الْبَقَرَةَ ثُمَّ رَكَعَ فَكَانَ رُكُوعُهُ نَحْوًا مِنْ قِيَامِهِ فَكَانَ يَقُولُ فِي رُكُوعِهِ: «سُبْحَانَ رَبِّيَ الْعَظِيمِ» ثُمَّ رَفَعَ رَأْسَهُ مِنَ الرُّكُوعِ فَكَانَ قِيَامُهُ نَحْوًا مِنْ رُكُوعِهِ يَقُولُ: «لِرَبِّيَ الْحَمْدُ» ثُمَّ سَجَدَ فَكَانَ سُجُودُهُ نَحْوًا مِنْ قِيَامِهِ فَكَانَ يَقُولُ فِي سُجُودِهِ: «سُبْحَانَ رَبِّيَ الْأَعْلَى» ثُمَّ رَفَعَ رَأْسَهُ مِنَ السُّجُودِ وَكَانَ يَقْعُدُ فِيمَا بَيْنَ السَّجْدَتَيْنِ نَحْوًا مِنْ سُجُودِهِ وَكَانَ يَقُولُ: «رَبِّ اغْفِرْ لِي رَبِّ اغْفِرْ لِي» فَصَلَّى أَرْبَعَ رَكَعَاتٍ قَرَأَ فِيهِنَّ (الْبَقَرَةَ وَآلَ عِمْرَانَ وَالنِّسَاءَ وَالْمَائِدَةَ أَوِ الْأَنْعَامَ)
شَكَّ شُعْبَة)
رَوَاهُ أَبُو دَاوُد

عن حذيفة: انه راى النبي صلى الله عليه وسلم يصلي من الليل وكان يقول: «الله اكبر» ثلاثا «ذو الملكوت والجبروت والكبرياء والعظمة» ثم استفتح فقرا البقرة ثم ركع فكان ركوعه نحوا من قيامه فكان يقول في ركوعه: «سبحان ربي العظيم» ثم رفع راسه من الركوع فكان قيامه نحوا من ركوعه يقول: «لربي الحمد» ثم سجد فكان سجوده نحوا من قيامه فكان يقول في سجوده: «سبحان ربي الاعلى» ثم رفع راسه من السجود وكان يقعد فيما بين السجدتين نحوا من سجوده وكان يقول: «رب اغفر لي رب اغفر لي» فصلى اربع ركعات قرا فيهن (البقرة وال عمران والنساء والماىدة او الانعام) شك شعبة) رواه ابو داود

ব্যাখ্যা: (ثُمَّ اسْتَفْتَحَ) অতঃপর (ইসতিফতাহ) অর্থাৎ সালাত শুরু করার দু‘আ পাঠ করলেন অথবা ক্বিরাআত (কিরআত) পাঠ শুরু করলেন। ইবনু হাজার বলেন, সানা এর স্থলে উপরোক্ত দু‘আ পাঠ করার পর ক্বিরাআত (কিরআত) পাঠ করলেন।

(فَقَرَأَ الْبَقَرَةَ) তিনি সূরাহ্ বাক্বারাহ্ পাঠ করলেন। অর্থাৎ প্রথমে সূরাহ্ আল ফা-তিহাহ্ পাঠ করার পর সূরাহ্ আল বাক্বারাহ্ সম্পূর্ণ পাঠ করলেন। যদিও এখানে সূরাহ্ আল ফা-তিহাহ্ পাঠের কথা উল্লেখ নেই। কেননা এটা সর্বজনবিদিত যে, সূরাহ্ ফা-তিহাহ্ ব্যতীত সালাত হয় না। তাই তা উল্লেখ করেননি।

(فَكَانَ قِيَامُه نَحْوًا مِنْ رُكُوعِه) তার ক্বিয়াম (কিয়াম) রুকূ‘র মতই দীর্ঘ ছিল। অর্থাৎ রুকূ‘ থেকে সোজা হয়ে দাঁড়নোটা রুকূ‘র সমপরিমাণ অথবা তার কাছাকাছি পরিমাণ দীর্ঘ ছিল। এতে বুঝা যায় যে, সোজা হয়ে দাঁড়ানোটাও সালাতের একটি দীর্ঘ রুকন। তবে শাফি‘ঈদের নিকট রুকূ‘র পরে এই দাঁড়ানোটা একটা রুকন হলেও তা দীর্ঘ রুকন নয়।

হাদীসের শিক্ষাঃ

১। দুই সাজদার মাঝে সোজা হয়ে বসা অবস্থায় আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করা একটি বিধিবদ্ধ নিয়ম।

২। নফল সালাতে দীর্ঘ ক্বিরাআত (কিরআত) পাঠ করা এবং সকল রুকন দীর্ঘ করা মুস্তাহাব। এতে তাদের দাবী প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে যারা মনে করেছে যে, রুকূ‘র পরে এবং দুই সাজদার মাঝের স্থিতি অবস্থা দীর্ঘ করা মাকরূহ।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة)