পরিচ্ছেদঃ ১৯. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - সালাতের মাঝে যে সব কাজ করা নাজায়িয ও যে সব কাজ করা জায়িয
৯৯৬-[১৯] আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বললেন, হে আনাস! সালাতে তুমি তোমার দৃষ্টিকে সাজদার স্থানে রাখবে। (এ হাদীসটিকে ইমাম বায়হাক্বী ’সুনানে কাবীরের আনাস (রাঃ) থেকে হাসান এর সূত্রে হাদীসটি মারফূ’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন)[1]
وَعَنْ أَنَسٍ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «يَا أَنَسُ اجْعَلْ بَصَرَكَ حَيْثُ تَسْجُدُ» . رَوَاهُ الْبَيْهَقِيُّ فِي سُنَنِهِ الْكَبِيرِ مِنْ طَرِيق الْحسن عَن أنس يرفعهُ
ব্যাখ্যা: অত্র হাদীস প্রমাণ করে যে, সালাতে সর্বাবস্থায় সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায়কারী তার দৃষ্টি সাজদার স্থানের দিকে নিবিষ্ট রাখবে। শাফি‘ঈ মাযহাবের অনুসারীদের ‘আমল এটাই। ইমাম আহমাদ (রহঃ)-এর অভিমতও তাই। ত্বীবী বলেনঃ সালাত আদায়কারীর জন্য মুস্তাহাব হলো কিয়াম অবস্থায় দৃষ্টি সাজদার স্থানের দিকে রাখবে। রুকূ' অবস্থায় পায়ের দিকে রাখবে। সাজদার অবস্থায় নাকের দিকে রাখবে। তাশাহুদে থাকা অবস্থায় কোলের দিকে রাখবে। ইমাম আবূ হানীফাহ্ এবং তার অনুসারীদের মত এটাই। তারা আরো বলেন, সালাম ফিরানোর সময় দৃষ্টি কাঁধের দিকে রাখবে।
আমি (‘উবায়দুল্লাহ মুবারকপুরী) বলছিঃ ইমাম মালিক (রহঃ)-এর অভিমত হল, সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায়কারী ব্যক্তি ক্বিবলার দিকে দৃষ্টি রাখবে। ইমাম বুখারী এ মতের দিকেই ঝুঁকেছেন। হাফিয ইবনু হাজার ফাতহুল বারীতে বলেছেনঃ যায়ন ইবনু মুনীর বলেন, ইমামের দিকে মুক্তাদীগণের দৃষ্টি রাখা ইকতিদা করার উদ্দেশের অন্তর্ভুক্ত। কোন দিকে দৃষ্টি না ফিরিয়ে যদি ইমামের কার্যাবলীর প্রতি দৃষ্টি রাখা সম্ভব হয় তাহলে তা স্বীয় সালাত বিশুদ্ধকরণের অন্তর্ভুক্ত।
ইবনু বাত্তাল বলেনঃ উপরোক্ত বক্তব্য ইমাম মালিক (রহঃ)-এর বক্তব্যকেই সমর্থন করে যাতে তিনি বলেছেন সালাত আদায়কারী স্বীয় দৃষ্টি ক্বিবলার দিকে নিবদ্ধ রাখবে। হাফিয ইবনু হাজার বলেনঃ ইমাম ও মুক্তাদীর বিষয়ে এক্ষেত্রে পার্থক্য করা সম্ভব। ইমামের জন্য মুস্তাহাব হলো তিনি সাজদার স্থানের দিকে দৃষ্টি রাখবেন। অনুরূপভাবে মুক্তাদীগণও সাজদার দিকে দৃষ্টি রাখবে। তবে যে ক্ষেত্রে ইমামের কার্যাবলী নিরীক্ষণ করা প্রয়োজন সেক্ষেত্রে ইমামের দিকে তথা ক্বিবলার দিকে দৃষ্টি রাখবে। আর একাকী সালাত আদায়কারীর হুকুম ইমামের মতই। আল্লাহই অধিক অবগত আছেন।
আমি (‘উবায়দুল্লাহ মুবারকপুরী) বলছি, হাফিয ইবনু হাজার (রহঃ)-এর বক্তব্য উত্তম। ইমাম শাফি‘ঈ ও ইমাম আহমাদ (রহঃ)-এর বক্তব্যকে আনাস (রাঃ) সূত্রে বায়হাক্বী’র বর্ণিত হাদীস সমর্থন করে। তাতে আছে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ ‘‘হে আনাস (রাঃ)! তোমার দৃষ্টি সাজদার স্থানের দিকে নিবদ্ধ রাখ।’’