৯৪২

পরিচ্ছেদঃ ১৭. প্রথম অনুচ্ছেদ - তাশাহুদের মধ্যে দু‘আ

৯৪২-[৪] আবূ বকর আস্ সিদ্দীক্ব (রাঃ)হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট নিবেদন জানালাম, হে আল্লাহর রসূল! আমাকে এমন একটি দু’আ বলে দিন যা আমি সালাতে (তাশাহুদের পর) পড়ব। উত্তরে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এ দুআ পড়বে,

’’আল্লা-হুমা ইন্নী যলামতু নাফসী যুলমান কাসীরা। ওয়ালা- ইয়াগফিরুয্ যুনূবা ইল্লা- আনতা। ফাগফিরলী মাগফিরাতাম্ মিন ’ইনদিকা ওয়ারহামনী। ইন্নাকা আনতাল গফূরুর রহীম।’’

(অর্থাৎ- হে আল্লাহ! নিশ্চয়ই আমি আমার নাফসের উপর অনেক যুলম করেছি। তুমি ছাড়া গুনাহ মাফ করার কেউ নেই। অতএব আমাকে তোমার পক্ষ থেকে মাফ করে দাও। আমার ওপর রহম কর। তুমিই ক্ষমাকারী ও রহমতকারী।)। (বুখারী ও মুসলিম)[1]

بَابُ الدُّعَاءِ فِي التَّشَهُّدِ

وَعَنْ أَبِي بَكْرٍ الصِّدِّيقِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ أَنَّهُ قَالَ: قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ عَلِّمْنِي دُعَاءً أَدْعُو بِهِ فِي صَلَاتِي قَالَ: «قُلْ اللَّهُمَّ إِنِّي ظَلَمْتُ نَفْسِي ظُلْمًا كَثِيرًا وَلَا يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلَّا أَنْتَ فَاغْفِرْ لِي مَغْفِرَةً مِنْ عنْدك وارحمني إِنَّك أَنْت الغفور الرَّحِيم»

وعن ابي بكر الصديق رضي الله عنه انه قال: قلت يا رسول الله علمني دعاء ادعو به في صلاتي قال: «قل اللهم اني ظلمت نفسي ظلما كثيرا ولا يغفر الذنوب الا انت فاغفر لي مغفرة من عندك وارحمني انك انت الغفور الرحيم»

ব্যাখ্যা: (أَدْعُوْ بِه فِي صَلَاتِيْ ) শেষ তাশাহুদ অবসরে এবং আপনার ওপর দরূদ পাঠ শেষে আমি দু‘আ করি। ইমাম বুখারী (রহঃ) এ মতে অধ্যায় বেঁধেছেন بَابُ الدُّعَاءِ قَبْلَ السَّلَامِ ‘‘সালামের পূর্বে দু‘আ’’। অতঃপর তিনি আবূ বাকর (রাঃ)-এর হাদীস উল্লেখ করেন।

(ظَلَمْتُ نَفْسِيْ) ‘‘আমি যুলম করেছি আমার নাফসের উপর’’ ‘আযাব অপরিহার্য হয়েছে পাপ কাজে জড়িত হওয়ার কারণে অথবা প্রতিদান কম হবে।

হাফিয ইবনু হাজার বলেনঃ হাদীসের ভাষ্যে প্রমাণ হয় মানুষ ত্রুটি হতে মুক্ত না যদিও সে সত্যবাদী হয়।

আর সিনদী বলেনঃ মানুষের মধ্যে অনেক ত্রুটি রয়েছে যদিও সে অধিক সত্যবাদী কেননা আল্লাহর অফুরন্ত নি‘আমাত তার ওপর রয়েছে।

তার ক্ষমতা সামান্যতম নি‘আমাতের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে সক্ষম হয় না বরং তার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ সামষ্টিক আকারে হয় তারপরেও তা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা দরকার। সুতরাং তার জন্য অপরাগতা ও অনেক ত্রুটির স্বীকৃতি অবশিষ্ট থেকে যায়। আর কেনই বা হবে না রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর দু‘আর ভান্ডারে নিজেই দু‘আ করেছেন।

(وَلَا يَغْفِرُ الذُّنُوْبَ اِلَّا أَنْتَ) ‘‘কেবলমাত্র তুমিই গুনাহ ক্ষমা করো’’ এ বাক্যে আল্লাহ তা‘আলার একত্ববাদের স্বীকৃতি আর এ স্বীকৃতির মাধ্যমে তার ক্ষমা কামনা করা। যেমনটি আল্লাহ তা‘আলা বলেছেনঃ

‘‘তারা কখনো কোন অশ্লীল কাজ করে ফেললে কিংবা কোন মন্দ কাজে জড়িত হয়ে নিজের ওপর যুলম করে ফেললে আল্লাহকে স্মরণ করে এবং নিজের পাপের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে। আল্লাহ ছাড়া আর কে পাপ ক্ষমা করবেন?’’ (সূরাহ্ আ-লি ‘ইমরান ৩ : ১৩৫)

আল্লাহ এখানে ক্ষমা প্রার্থনাকারীর প্রশংসা করেছেন।

(إِنَّك أَنْتَ الْغَفُوْرُ الرَّحِيْمُ) ‘‘নিশ্চয় তুমি ক্ষমাশীল ও দয়াবান’’ দু’টিই আল্লাহর গুণ বাক্য শেষ করা হয়েছে ইতিপূর্বে বাক্যের বিপরীত غَفُوْرُ তথা ক্ষমার বিপরীতে اِغْفِرْ لِيْ আমাকে ক্ষমা করুন الرَّحِيْمُ দয়ার বিপরীতে ارْحَمْنِيْ আমার প্রতি রহম করুন।

আর এ হাদীসে অনেক শিক্ষা রয়েছে বিপদের সময় আল্লাহ তা‘আলার সুন্দর নামের ওয়াসীলায় দু‘আ করা এবং অকল্যাণকে প্রতিহত করা।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة)