৩৪৬৫

পরিচ্ছেদঃ ৬০/৫৩. গুহার ঘটনা।

60/52. بَابُ أَمْ حَسِبْتَ أَنَّ أَصْحٰبَ الْكَهْفِ وَالرَّقِيْمِ (الكهف : 9)

৬০/৫২. অধ্যায় : মহান আল্লাহর বাণীঃ আসহাবে কাহাফ ও রাকীম সম্পর্কে আপনার কী ধারণা? (আত্ তওবা ১৮)

الْكَهْفُ الْفَتْحُ فِي الْجَبَلِ وَالرَّقِيْمُ الْكِتَابُ مَرْقُومٌ مَكْتُوْبٌ مِنْ الرَّقْمِ وَرَبَطْنَا عَلٰى قُلُوْبِهِمْ (الكهف : 14) أَلْهَمْنَاهُمْ صَبْرًا شَطَطًا إِفْرَاطًا الْوَصِيْدُ الْفِنَاءُ وَجَمْعُهُ وَصَائِدُ وَوُصُدٌ وَيُقَالُ الْوَصِيْدُ الْبَابُ مُؤْصَدَةٌ مُطْبَقَةٌ آصَدَ الْبَابَ وَأَوْصَدَ بَعَثْنٰهُمْ أَحْيَيْنَاهُمْ أَزْكٰى أَكْثَرُ رَيْعًا فَضَرَبَ اللهُ عَلٰى اٰذَانِهِمْ فَنَامُوْا رَجْمًام بِالْغَيْبِ (الكهف : 22) لَمْ يَسْتَبِنْ وَقَالَ مُجَاهِدٌ تَقْرِضُهُمْ تَتْرُكُهُمْ

কিতাব مَرْقُومٌ  শব্দটি الرَّقْمِ  হতে উদ্ভূত, অর্থ লিপিবদ্ধ। وَرَبَطْنَا عَلَى قُلُوْبِهِمْ এর অর্থ, তাদের অন্তরে আমি (ধৈর্যের) প্রেরণা দিয়েছি। যদি আমি তার অন্তরে সহনশীলতার প্রেরণা প্রদান না করতাম। شَطَطًا অতিশয় অতিরিক্ত। الْوَصِيْدُ গুহার পাড়। এটা একবচন। এর বহুবচন وَصَائِدُ  এবং وَوُصُدٌ  কেউ কেউ বলেন, الْوَصِيْدُ  অর্থ দরজা। مُؤْصَدَةٌ বন্ধ। এ অর্থেই ব্যবহার করা হয়। آصَدَ الْبَابَ وَأَوْصَدَ  আমি তাদেরকে জীবিত করলাম। أَزْكَى পবিত্র ও সুস্বাদু খাদ্য। অতঃপর আল্লাহ্ তাদের কানে ছাপ মেরে দিলেন। তারা ঘুমিয়ে পড়লো। رَجْمًا بِالْغَيْبِ যা স্পষ্ট হলো না। আর মুজাহিদ (রহ.) বলেন। تَقْرِضُهُمْ  তাদেরকে পাশ কেটে যায়।


৩৪৬৫. ইবনু ’উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমাদের আগের যুগের লোকদের মধ্যে তিনজন লোক ছিল। তাঁরা পথ চলছিল। হঠাৎ তাদের বৃষ্টি পেয়ে গেল। তখন তারা এক গুহায় আশ্রয় নিল। অমনি তাদের গুহার মুখ বন্ধ হয়ে গেল। তাদের একজন অন্যদেরকে বললেন, বন্ধুগণ আল্লাহর কসম! এখন সত্য ব্যতীত কিছুই তোমাদেরকে রেহাই করতে পারবে না। কাজেই, এখন তোমাদের প্রত্যেকের সেই জিনিসের উসিলায় দু’আ করা দরকার, যে সম্পর্কে জানা রয়েছে যে, এ কাজটিতে সে সত্যতা আছে। তখন তাদের একজন দু’আ করলেন- হে আল্লাহ! আপনি জানেন যে, আমার একজন মজদুর ছিল। সে এক ফারাক১ চাউলের বিনিময়ে আমার কাজ করে দিয়েছিল। পরে সে মজুরী না নিয়েই চলে গিয়েছিল। আমি তার এ মজুরী দিয়ে কিছু একটা করার ইচ্ছা করলাম এবং কৃষি কাজে লাগালাম। এতে যা উৎপাদন হল, তার বিনিময়ে আমি একটি গাভী কিনলাম। সেই মজদুর আমার নিকট এসে তার মজুরী দাবী করল। আমি তাকে বললাম, এ গাভীটির দিকে তাকাও এবং তা হাঁকিয়ে নিয়ে যাও। সে জবাব দিল, আমার আপনার নিকট মাত্র এক ’ফারাক’ চালই পাওনা। আমি তাকে বললাম গাভিটি নিয়ে যাও। কেননা সেই এক ’ফারাক’ দ্বারা যা উৎপাদিত হয়েছে, তারই বিনিময়ে এটি কেনা হয়েছে। তখন সে গাভীটি হাঁকিয়ে নিয়ে গেল। আপনি জানেন যে, তা আমি একমাত্র আপনার ভয়েই করেছি। তাহলে আমাদের হতে সরিয়ে দিন। তখন তাদের নিকট হতে পাথরটি কিছুটা সরে গেল। তাদের আরেকজন দু’আ করল, হে আল্লাহ্! আপনি জানেন যে, আমার মা-বাপ খুব বৃদ্ধ ছিলেন। আমি প্রতি রাতে তাঁদের জন্য আমার বকরীর দুধ নিয়ে তাঁদের নিকট যেতাম। এক রাতে তাদের নিকট যেতে আমি দেরী করে ফেললাম। অতঃপর এমন সময় গেলাম, যখন তাঁরা দু’জনে ঘুমিয়ে পড়েছেন। এদিকে আমার পরিবার পরিজন ক্ষুধার কারণে চিৎকার করছিল। আমার মাতা-পিতাকে দুধ পান না করান পর্যন্ত ক্ষুধায় কাতর আমার সন্তানদেরকে দুধ পান করাইনি। কেননা, তাদেরকে ঘুম হতে জাগানটি আমি পছন্দ করিনি। অপরদিকে তাদেরকে বাদ দিতেও ভাল লাগেনি। কারণ, এ দুধটুকু পান না করলে তাঁরা উভয়েই দুর্বল হয়ে যাবেন। তাই আমি ভোর হয়ে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করছিলাম। আপনি জানেন যে, এ কাজ আমি করেছি, একমাত্র আপনার ভয়ে, তাই আমাদের হতে সরিয়ে দিন। অতঃপর পাথরটি তাদের হতে আরেকটু সরে গেল। এমনকি তারা আসমান দেখতে পেল। অপর ব্যক্তি দু’আ করল, হে আল্লাহ্! আপনি জানেন যে, আমার একটি চাচাত বোন ছিল। সবেচেয়ে সে আমার নিকট অধিক প্রিয় ছিল। আমি তার সঙ্গে বাসনা করছিলাম। কিন্তু সে একশ’ দ্বীনার প্রদান ছাড়া ঐ কাজে রাযী হতে চাইল না। আমি স্বর্ণ মুদ্রা অর্জনের চেষ্টা আরম্ভ করলাম এবং তা অর্জনে সমর্থও হলাম। অতঃপর কথিত মুদ্রাসহ তার নিকট উপস্থিত হয়ে তাকে তা অর্পণ করলাম। সেও তার দেহ আমার জন্য অর্পণ করলো। আমি যখন তার দুই পায়ের মাঝে বসে পড়লাম তখন সে বলল, আল্লাহকে ভয় কর, অন্যায় ও অবৈধভাবে পবিত্র ও রক্ষিত আবরুকে বিনষ্ট করো না। আমি তৎক্ষণাৎ সরে পড়লাম ও স্বর্ণমুদ্রা ছেড়ে আসলাম। হে আল্লাহ্! আপনি জানেন যে, আমি প্রকৃতই আপনার ভয়ে তা করেছিলাম। তাই আমাদের রাস্তা প্রশস্ত করে দিন। আল্লাহ্ সংকট দূরীভূত করলেন। তারা বের হয়ে আসল। (২২১৫) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩২০৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৩২১৬)

بَابُ حَدِيْثُ الغَار

حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيْلُ بْنُ خَلِيْلٍ أَخْبَرَنَا عَلِيُّ بْنُ مُسْهِرٍ عَنْ عُبَيْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ عَنْ نَافِعٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ بَيْنَمَا ثَلَاثَةُ نَفَرٍ مِمَّنْ كَانَ قَبْلَكُمْ يَمْشُوْنَ إِذْ أَصَابَهُمْ مَطَرٌ فَأَوَوْا إِلَى غَارٍ فَانْطَبَقَ عَلَيْهِمْ فَقَالَ بَعْضُهُمْ لِبَعْضٍ إِنَّهُ وَاللهِ يَا هَؤُلَاءِ لَا يُنْجِيكُمْ إِلَّا الصِّدْقُ فَليَدْعُ كُلُّ رَجُلٍ مِنْكُمْ بِمَا يَعْلَمُ أَنَّهُ قَدْ صَدَقَ فِيْهِ فَقَالَ وَاحِدٌ مِنْهُمْ اللَّهُمَّ إِنْ كُنْتَ تَعْلَمُ أَنَّهُ كَانَ لِيْ أَجِيْرٌ عَمِلَ لِيْ عَلَى فَرَقٍ مِنْ أَرُزٍّ فَذَهَبَ وَتَرَكَهُ وَأَنِّيْ عَمَدْتُ إِلَى ذَلِكَ الْفَرَقِ فَزَرَعْتُهُ فَصَارَ مِنْ أَمْرِهِ أَنِّيْ اشْتَرَيْتُ مِنْهُ بَقَرًا وَأَنَّهُ أَتَانِيْ يَطْلُبُ أَجْرَهُ فَقُلْتُ لَهُ اعْمِدْ إِلَى تِلْكَ الْبَقَرِ فَسُقْهَا فَقَالَ لِيْ إِنَّمَا لِيْ عِنْدَكَ فَرَقٌ مِنْ أَرُزٍّ فَقُلْتُ لَهُ اعْمِدْ إِلَى تِلْكَ الْبَقَرِ فَإِنَّهَا مِنْ ذَلِكَ الْفَرَقِ فَسَاقَهَا فَإِنْ كُنْتَ تَعْلَمُ أَنِّيْ فَعَلْتُ ذَلِكَ مِنْ خَشْيَتِكَ فَفَرِّجْ عَنَّا فَانْسَاحَتْ عَنْهُمْ الصَّخْرَةُ فَقَالَ الْآخَرُ اللَّهُمَّ إِنْ كُنْتَ تَعْلَمُ أَنَّهُ كَانَ لِيْ أَبَوَانِ شَيْخَانِ كَبِيْرَانِ فَكُنْتُ آتِيْهِمَا كُلَّ لَيْلَةٍ بِلَبَنِ غَنَمٍ لِيْ فَأَبْطَأْتُ عَلَيْهِمَا لَيْلَةً فَجِئْتُ وَقَدْ رَقَدَا وَأَهْلِيْ وَعِيَالِيْ يَتَضَاغَوْنَ مِنْ الْجُوعِ فَكُنْتُ لَا أَسْقِيْهِمْ حَتَّى يَشْرَبَ أَبَوَايَ فَكَرِهْتُ أَنْ أُوقِظَهُمَا وَكَرِهْتُ أَنْ أَدَعَهُمَا فَيَسْتَكِنَّا لِشَرْبَتِهِمَا فَلَمْ أَزَلْ أَنْتَظِرُ حَتَّى طَلَعَ الْفَجْرُ فَإِنْ كُنْتَ تَعْلَمُ أَنِّيْ فَعَلْتُ ذَلِكَ مِنْ خَشْيَتِكَ فَفَرِّجْ عَنَّا فَانْسَاحَتْ عَنْهُمْ الصَّخْرَةُ حَتَّى نَظَرُوْا إِلَى السَّمَاءِ فَقَالَ الْآخَرُ اللَّهُمَّ إِنْ كُنْتَ تَعْلَمُ أَنَّهُ كَانَ لِيْ ابْنَةُ عَمٍّ مِنْ أَحَبِّ النَّاسِ إِلَيَّ وَأَنِّيْ رَاوَدْتُهَا عَنْ نَفْسِهَا فَأَبَتْ إِلَّا أَنْ آتِيَهَا بِمِائَةِ دِيْنَارٍ فَطَلَبْتُهَا حَتَّى قَدَرْتُ فَأَتَيْتُهَا بِهَا فَدَفَعْتُهَا إِلَيْهَا فَأَمْكَنَتْنِيْ مِنْ نَفْسِهَا فَلَمَّا قَعَدْتُ بَيْنَ رِجْلَيْهَا فَقَالَتْ اتَّقِ اللهَ وَلَا تَفُضَّ الْخَاتَمَ إِلَّا بِحَقِّهِ فَقُمْتُ وَتَرَكْتُ الْمِائَةَ دِيْنَارٍ فَإِنْ كُنْتَ تَعْلَمُ أَنِّيْ فَعَلْتُ ذَلِكَ مِنْ خَشْيَتِكَ فَفَرِّجْ عَنَّا فَفَرَّجَ اللهُ عَنْهُمْ فَخَرَجُوْا

حدثنا اسماعيل بن خليل اخبرنا علي بن مسهر عن عبيد الله بن عمر عن نافع عن ابن عمر رضي الله عنهما ان رسول الله صلى الله عليه وسلم قال بينما ثلاثة نفر ممن كان قبلكم يمشون اذ اصابهم مطر فاووا الى غار فانطبق عليهم فقال بعضهم لبعض انه والله يا هولاء لا ينجيكم الا الصدق فليدع كل رجل منكم بما يعلم انه قد صدق فيه فقال واحد منهم اللهم ان كنت تعلم انه كان لي اجير عمل لي على فرق من ارز فذهب وتركه واني عمدت الى ذلك الفرق فزرعته فصار من امره اني اشتريت منه بقرا وانه اتاني يطلب اجره فقلت له اعمد الى تلك البقر فسقها فقال لي انما لي عندك فرق من ارز فقلت له اعمد الى تلك البقر فانها من ذلك الفرق فساقها فان كنت تعلم اني فعلت ذلك من خشيتك ففرج عنا فانساحت عنهم الصخرة فقال الاخر اللهم ان كنت تعلم انه كان لي ابوان شيخان كبيران فكنت اتيهما كل ليلة بلبن غنم لي فابطات عليهما ليلة فجىت وقد رقدا واهلي وعيالي يتضاغون من الجوع فكنت لا اسقيهم حتى يشرب ابواي فكرهت ان اوقظهما وكرهت ان ادعهما فيستكنا لشربتهما فلم ازل انتظر حتى طلع الفجر فان كنت تعلم اني فعلت ذلك من خشيتك ففرج عنا فانساحت عنهم الصخرة حتى نظروا الى السماء فقال الاخر اللهم ان كنت تعلم انه كان لي ابنة عم من احب الناس الي واني راودتها عن نفسها فابت الا ان اتيها بماىة دينار فطلبتها حتى قدرت فاتيتها بها فدفعتها اليها فامكنتني من نفسها فلما قعدت بين رجليها فقالت اتق الله ولا تفض الخاتم الا بحقه فقمت وتركت الماىة دينار فان كنت تعلم اني فعلت ذلك من خشيتك ففرج عنا ففرج الله عنهم فخرجوا


Narrated Ibn `Umar:

Allah's Messenger (ﷺ) said, "Once three persons (from the previous nations) were traveling, and suddenly it started raining and they took shelter in a cave. The entrance of the cave got closed while they were inside. They said to each other, 'O you! Nothing can save you except the truth, so each of you should ask Allah's Help by referring to such a deed as he thinks he did sincerely (i.e. just for gaining Allah's Pleasure).' So one of them said, 'O Allah! You know that I had a laborer who worked for me for one Faraq (i.e. three Sas) of rice, but he departed, leaving it (i.e. his wages). I sowed that Faraq of rice and with its yield I bought cows (for him). Later on when he came to me asking for his wages, I said (to him), 'Go to those cows and drive them away.' He said to me, 'But you have to pay me only a Faraq of rice,' I said to him, 'Go to those cows and take them, for they are the product of that Faraq (of rice).' So he drove them. O Allah! If you consider that I did that for fear of You, then please remove the rock.' The rock shifted a bit from the mouth of the cave. The second one said, 'O Allah, You know that I had old parents whom I used to provide with the milk of my sheep every night. One night I was delayed and when I came, they had slept, while my wife and children were crying with hunger. I used not to let them (i.e. my family) drink unless my parents had drunk first. So I disliked to wake them up and also disliked that they should sleep without drinking it, I kept on waiting (for them to wake) till it dawned. O Allah! If You consider that I did that for fear of you, then please remove the rock.' So the rock shifted and they could see the sky through it. The (third) one said, 'O Allah! You know that I had a cousin (i.e. my paternal uncle's daughter) who was most beloved to me and I sought to seduce her, but she refused, unless I paid her one-hundred Dinars (i.e. gold pieces). So I collected the amount and brought it to her, and she allowed me to sleep with her. But when I sat between her legs, she said, 'Be afraid of Allah, and do not deflower me but legally. 'I got up and left the hundred Dinars (for her). O Allah! If You consider that I did that for fear of you than please remove the rock. So Allah saved them and they came out (of the cave)."


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
সহীহ বুখারী (তাওহীদ পাবলিকেশন)
৬০/ আম্বিয়া কিরাম ('আঃ) (كتاب أحاديث الأنبياء)