৩৫০

পরিচ্ছেদঃ ৪৩ : রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর বংশধরের প্রতি শ্রদ্ধা রাখা এবং তাঁদের মাহাত্ম্যের বিবরণ

আল্লাহ তা’আলা বলেন,

﴿ إِنَّمَا يُرِيدُ ٱللَّهُ لِيُذۡهِبَ عَنكُمُ ٱلرِّجۡسَ أَهۡلَ ٱلۡبَيۡتِ وَيُطَهِّرَكُمۡ تَطۡهِيرٗا ﴾ [الاحزاب: ٣٣]

অর্থাৎ “হে নবী-পরিবার! আল্লাহ তো কেবল তোমাদের মধ্য থেকে অপবিত্রতা দূর করতে চান এবং তোমাদেরকে সম্পূর্ণরূপে পবিত্র করতে চান।” (সূরা আহযাব ৩৩ আয়াত)

তিনি আরো বলেন,

﴿ ذَٰلِكَۖ وَمَن يُعَظِّمۡ شَعَٰٓئِرَ ٱللَّهِ فَإِنَّهَا مِن تَقۡوَى ٱلۡقُلُوبِ ٣٢ ﴾ [الحج: ٣٢]

অর্থাৎ “কেউ আল্লাহর (দ্বীনের) প্রতীকসমূহের সম্মান করলে এটা তো তার হৃদয়ের সংযমশীলতারই বহিঃপ্রকাশ।” (সূরা হজ্জ্ব ৩২ আয়াত)


১/৩৫০। ইয়াযীদ ইবনু হাইয়ান বলেন, আমি, হুস্বাইন ইবনু সাবরাহ ও ’আমর ইবনু মুসলিম যায়দ ইবনু আরক্বাম রাদিয়াল্লাহু ’আনহুর নিকট গেলাম। যখন আমরা তাঁর পাশে বসলাম, তখন হুস্বাইন তাঁকে বললেন, ’হে যায়দ! আপনি প্রভূত কল্যাণপ্রাপ্ত হয়েছেন; আপনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে দেখেছেন, তাঁর হাদীস শুনেছেন, তাঁর সাথে থেকে যুদ্ধ করেছেন এবং তাঁর পিছনে নামায পড়েছেন। হে যায়দ! আপনি প্রভূত কল্যাণপ্রাপ্ত হয়েছেন। আপনি আমাদেরকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কোন কথা শুনান, যা আপনি (স্বয়ং) তাঁর নিকট থেকে শুনেছেন।’ তিনি বললেন, ’হে ভাতিজা! আল্লাহর কসম! আমি বৃদ্ধ হয়ে গেছি এবং (নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে) আমার যে যুগটা কেটেছে, তাও যথেষ্ট পুরানো হয়ে গেছে। (ফলে) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর যে কথা আমার স্মরণে ছিল, তার কিছু ভুলে গেছি। সুতরাং আমি যা বলব, তা গ্রহণ কর এবং যা বর্ণনা করব না, তার জন্য আমাকে বাধ্য করো না।’

অতঃপর তিনি বললেন, ’একদিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের মাঝে মক্কা ও মদ্বীনার মধ্যে ’খুম’ নামক ঝর্ণার নিকটে খুতবাহ দেওয়ার জন্য দাঁড়ালেন। তিনি সর্বাগ্রে আল্লাহর প্রশংসা করলেন এবং ওয়ায করলেন ও উপদেশ দিলেন। অতঃপর বললেন, ’’আম্মা বা’দ। হে লোকেরা! শোনো, আমি একজন মানুষ মাত্র, শীঘ্রই (আমার নিকট) আমার প্রতিপালকের দূত আসবেন এবং আমি (আল্লাহর নিকট যাওয়ার জন্য) তাঁর ডাকে সাড়া দেব। আমি তোমাদের মাঝে দু’টি ভারী (গুরুত্বপূর্ণ) বস্তু ছেড়ে যাচ্ছি। তার মধ্যে একটি আল্লাহর কিতাব, যাতে হিদায়াত ও আলো রয়েছে। সুতরাং তোমরা আল্লাহর কিতাবকে গ্রহণ কর এবং তা মযবুত করে ধারণ কর।’’ সুতরাং তিনি আল্লাহর কিতাবের উপর (আমল করার প্রতি) উদ্বুদ্ধ ও অনুপ্রাণিত করলেন। অতঃপর বললেন, ’’(আর দ্বিতীয় বস্তুটি হচ্ছে,) আমার পরিবার; আমি তোমাদেরকে আমার পরিবারের ব্যাপারে আল্লাহর স্মরণ দিচ্ছি।

আমি তোমাদেরকে আমার পরিবারের ব্যাপারে আল্লাহর স্মরণ দিচ্ছি।’’ তারপর হুস্বাইন তাঁকে বললেন, ’রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামএর পরিবার কারা? হে যায়দ! তাঁর স্ত্রীরা কি তাঁর পরিবারভুক্ত নন?’ তিনি (যায়দ) বললেন, ’(নিঃসন্দেহে) স্ত্রীরা তাঁর পরিবারভুক্ত। কিন্তু তাঁর পরিবার (বলতে) তাঁরা, যাঁদের উপর তাঁর (মৃত্যুর) পর সাদকাহ হারাম করা হয়েছে।’ হুস্বাইন জিজ্ঞেস করলেন, ’তাঁরা কারা?’ যায়দ জবাব দিলেন, ’তাঁরা হচ্ছেন আলীর পরিবার, আক্বীলের পরিবার, জা’ফরের পরিবার এবং আব্বাসের পরিবার।’ হুস্বাইন বললেন, ’এদের সকলের প্রতি সাদকাহ হারাম করা হয়েছে?’ তিনি বললেন, ’হ্যাঁ।’

অন্য এক বর্ণনায় আছে, শোনো, ’’আমি তোমাদের মাঝে দু’টি ভারী (গুরুত্বপূর্ণ) জিনিস ছেড়ে যাচ্ছি। তার মধ্যে একটি হল আল্লাহর কিতাব; আর তা আল্লাহর রশি। যে ব্যক্তি তার অনুসরণ করবে, সে সঠিক পথে থাকবে এবং যে তা পরিহার করবে, সে ভ্রষ্টতায় থাকবে।’’(মুসলিম) [1]

بَابُ إِكْرَامِ أَهْلِ بَيْتِ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَبَيَانِ فَضْلِهِمْ - (43)

وَعَن يَزِيدَ بنِ حَيَّانَ، قَالَ : انْطَلَقْتُ أنَا وحُصَيْنُ بْنُ سَبْرَة، وَعَمْرُو ابنُ مُسْلِم إِلَى زَيْدِ بْنِ أرقَمَ رضي الله عنه، فَلَمَّا جَلسْنَا إِلَيْهِ قَالَ لَهُ حُصَيْن : لَقَدْ لقِيتَ يَا زَيْدُ خَيْراً كَثِيراً، رَأيْتَ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم، وَسَمِعتَ حَدِيثَهُ، وغَزوْتَ مَعَهُ، وَصَلَّيْتَ خَلْفَهُ : لَقَدْ لَقِيتَ يَا زَيْدُ خَيْراً كَثيراً، حَدِّثْنَا يَا زَيْدُ مَا سَمِعْتَ مِنْ رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ : يَا ابْنَ أخِي، وَاللهِ لقد كَبِرَتْ سِنِّي، وَقَدُمَ عَهدِي، وَنَسِيتُ بَعْضَ الَّذِي كُنْتُ أعِي مِنْ رَسُولِ الله صلى الله عليه وسلم، فَمَا حَدَّثْتُكُمْ، فَاقْبَلُوا، وَمَا لاَ فَلاَ تُكَلِّفُونيهِ . ثُمَّ قَالَ: قَامَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم يَوماً فِينَا خَطِيباً بمَاءٍ يُدْعَى خُمَّاً بَيْنَ مَكَّةَ وَالمَدِينَةِ، فَحَمِدَ الله، وَأثْنَى عَلَيهِ، وَوعظَ وَذَكَّرَ، ثُمَّ قَالَ: «أمَّا بَعدُ، ألاَ أَيُّهَا النَّاسُ، فَإنَّمَا أنَا بَشَرٌ يُوشِكَ أنْ يَأتِي رَسُولُ ربِّي فَأُجِيبَ، وَأنَا تَارِكٌ فِيكُم ثَقَلَيْنِ : أوَّلُهُمَا كِتَابُ اللهِ، فِيهِ الهُدَى وَالنُّورُ، فَخُذُوا بِكِتَابِ الله، وَاسْتَمْسِكُوا بِهِ»، فَحَثَّ عَلَى كِتَابِ الله، وَرَغَّبَ فِيهِ، ثُمَّ قَالَ: «وَأهْلُ بَيْتِي أُذكِّرُكُمُ اللهَ في أهلِ بَيْتي، أُذَكِّرُكُمُ الله في أَهلِ بَيتي»فَقَالَ لَهُ حُصَيْنٌ : وَمَنْ أهْلُ بَيتهِ يَا زَيْدُ، أَلَيْسَ نِسَاؤُهُ مِنْ أهْلِ بَيْتِهِ ؟ قَالَ : نِسَاؤُهُ مِنْ أهْلِ بَيتهِ، وَلكِنْ أهْلُ بَيتِهِ مَنْ حُرِمَ الصَّدَقَةَ بَعدَهُ، قَالَ : وَمَنْ هُمْ ؟ قَالَ : هُمْ آلُ عَلِيٍّ وَآلُ عَقِيلٍ وَآلُ جَعفَرَ وآلُ عَبَّاسٍ . قَالَ : كُلُّ هَؤُلاَءِ حُرِمَ الصَّدَقَةَ ؟ قَالَ : نَعَمْ. رواه مسلم ، وفي رواية: ألاَ وَإنّي تَارِكٌ فِيكُمْ ثَقَليْنِ : أحَدُهُما كِتَابُ الله وَهُوَ حَبْلُ الله، مَنِ اتَّبَعَهُ كَانَ عَلَى الهُدَى، وَمَنْ تَرَكَهُ كَانَ عَلَى ضَلالَة

وعن يزيد بن حيان، قال : انطلقت انا وحصين بن سبرة، وعمرو ابن مسلم الى زيد بن ارقم رضي الله عنه، فلما جلسنا اليه قال له حصين : لقد لقيت يا زيد خيرا كثيرا، رايت رسول الله صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم، وسمعت حديثه، وغزوت معه، وصليت خلفه : لقد لقيت يا زيد خيرا كثيرا، حدثنا يا زيد ما سمعت من رسول الله صلى الله عليه وسلم قال : يا ابن اخي، والله لقد كبرت سني، وقدم عهدي، ونسيت بعض الذي كنت اعي من رسول الله صلى الله عليه وسلم، فما حدثتكم، فاقبلوا، وما لا فلا تكلفونيه . ثم قال: قام رسول الله صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم يوما فينا خطيبا بماء يدعى خما بين مكة والمدينة، فحمد الله، واثنى عليه، ووعظ وذكر، ثم قال: «اما بعد، الا ايها الناس، فانما انا بشر يوشك ان ياتي رسول ربي فاجيب، وانا تارك فيكم ثقلين : اولهما كتاب الله، فيه الهدى والنور، فخذوا بكتاب الله، واستمسكوا به»، فحث على كتاب الله، ورغب فيه، ثم قال: «واهل بيتي اذكركم الله في اهل بيتي، اذكركم الله في اهل بيتي»فقال له حصين : ومن اهل بيته يا زيد، اليس نساوه من اهل بيته ؟ قال : نساوه من اهل بيته، ولكن اهل بيته من حرم الصدقة بعده، قال : ومن هم ؟ قال : هم ال علي وال عقيل وال جعفر وال عباس . قال : كل هولاء حرم الصدقة ؟ قال : نعم. رواه مسلم ، وفي رواية: الا واني تارك فيكم ثقلين : احدهما كتاب الله وهو حبل الله، من اتبعه كان على الهدى، ومن تركه كان على ضلالة

(43) Chapter: Showing reverence to the Family of Allah's Messenger (pbuh)


Allah, the Exalted, says:
"Allah wishes only to remove Ar-Rijs (evil deeds and sins) from you, O members of the family (of the Prophet (PBUH)), and to purify you with a thorough purification.'' (33:33)
"And whosoever honours the Symbols of Allah, then it is truly from the piety of the heart.'' (22:32)


Yazid bin Haiyan reported:
I went along with Husain bin Sabrah and 'Amr bin Muslim to Zaid bin Arqam (May Allah be pleased with them) and, as we sat by his side, Husain said to him, "Zaid, you acquired great merits, you saw Messenger of Allah (ﷺ), listened to him talking, fought by his side in (different) battles, and offered Salat (prayer) behind him. Zaid, you have indeed earned great merits. Could you narrate to us what you heard from Messenger of Allah (ﷺ)?" Zaid said, "By Allah! I have grown old and have almost spent up my age and I have forgotten some of the things which I remembered in connection with Messenger of Allah (ﷺ), so accept what I narrate to you, do not compel me to narrate what I fail to narrate".

He then said, "One day Messenger of Allah (ﷺ) stood up to deliver a Khutbah at a watering place known as Khumm between Makkah and Al-Madinah. He praised Allah, extolled Him, and exhorted (us) and said, 'Amma Ba'du. O people, I am a human being. I am about to receive a messenger (the angel of death) from my Rubb and I will respond to Allah's Call, but I am leaving with you two weighty things: the first is the Book of Allah, in which there is right guidance and light, so hold fast to the Book of Allah and adhere to it.' He exhorted (us to hold fast) to the Book of Allah and then said, 'The second is the members of my household, I remind you (to be kind) to the members of my family. I remind you (to be kind) to the members of my family. Husain said to Zaid, "Who are the members of his household, O Zaid? Aren't his wives the members of his family?"
Thereupon Zaid said, "His wives are the members of his family. (But here) the members of his family are those for whom Zakat is forbidden". He asked, "Who are they?" Zaid said, "Ali and the offspring of 'Ali, 'Aqil and the offspring of 'Aqil and the offspring of Ja'far and the offspring of 'Abbas." Husain asked, "For all of them the acceptance of Zakat is forbidden?" Zaid (May Allah be pleased with him) said, "Yes".

[Muslim].

Another narration is: Messenger of Allah (ﷺ) said, "I am leaving behind me two weighty things. One of them is the Book of Allah; that is the strong rope of Allah. Whosoever holds firmly to it, will be the guided, and whosoever leaves it goes astray".

Commentary: This Hadith brings out the following points:
1. Messenger of Allah (PBUH) was a human being. He too was subject to the inevitable law of death.

2. It stresses upon the establishment of a firm bond with the Book of Allah (the Qur'an) and lays emphasis on showing respect and honour to the members of the Prophet's family.

3. The members of the Prophet's family are classified into two categories:
Firstly, wives of Messenger of Allah (PBUH) or Mothers of the believers. This is established from the categorical Verses of the Noble Qur'an.Secondly, persons who have close relationship with Messenger of Allah (PBUH) . They are Banu Hashim and Banu Abdul-Muttalib and include descendants of `Ali, `Aqil, Ja`far, `Abbas and Harith (May Allah be pleased with them). Sadaqah is unlawful for the latter category.


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
রিয়াযুস স্বা-লিহীন (রিয়াদুস সালেহীন)
বিবিধ (كتاب المقدمات)