পরিচ্ছেদঃ ১৭. রাতের সালাত, রাতের বেলা নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর সালাতের রাক’আত সংখ্যা, বিতর সালাত এক রাক’আত এবং এক রাক’আত সালাতও বিশুদ্ধ হওয়া প্রসঙ্গ
১৬১২। মুহাম্মদ ইবনুল মূসান্না আনাযী (রহঃ) ... যুরারা (রহঃ) সুত্রে বর্ণনা করেন যে, সা’দ ইবনু হিশাম ইবনু আমির (রহঃ) আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করার ইচ্ছা করে মদিনায় এলেন এবং সেখানে তাঁর একটি সম্পত্তি বিক্রি করে তা যূদ্ধাস্ত্র ও ঘোড়া সংগ্রহে ব্যয় করার এবং মৃত্যু পর্যন্ত রোমানদের বিরুদ্ধে জিহাদে আত্ননিয়োগ করার সংকল্প করলেন। মদিনায় আসার পর মদিনাবাসী কিছু লোকের সাথে সাক্ষাত হলে তাঁরা ঐ কাজ করতে নিষেধ করলেন এবং তাঁকে জানালেন যে, ছয় জনের একটি দল নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জীবদ্দশায় এরূপ ইচ্ছা করেছিল। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের নিষেধ করেন এবং বলেন, "আমার মধ্যে তোমাদের জন্য কি কোন আদর্শ নেই"?
মদিনাবাসীরা তাঁকে এ ঘটনা বর্ণনা করলে তিনি নিজের স্ত্রীর সাথে রাজ’আত, (পুনরায় স্ত্রীত্বে বরণ) করলেন। কেননা তিনি তাঁকে তালাক দিয়েছিলেন এবং তিনি তাঁর এ রাজ’আতের ব্যাপারে সাক্ষীও রাখলেন। এরপর তিনি ইবনু আব্বাস (রাঃ) এর কাছে গিয়ে তাঁকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বিতর সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলেন। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বললেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বিতর সম্পর্কে পৃথিবীর মধ্যে সর্বাধিক বিজ্ঞ ব্যাক্তি সম্পর্কে কি তোমাকে বলে দিব না? তিনি বললেন, তিনি কে? ইবনু আব্বাস (রাঃ) বললেন, তিনি আয়িশা (রাঃ)। তাঁর কাছে গিয়ে তুমি তাঁকে জিজ্ঞাসা করবে পরে আমার কাছে এসে তোমাকে দেওয়া তার জবাব সম্পর্কে অবহিত করবে।
আমি তখন তাঁর কাছে রওয়ানা হলাম। আর হাকীম ইবনু আফলাহ (রাঃ) এর কাছে গিয়ে আমার সঙ্গে আয়িশা (রাঃ) এর কাছে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করলাম। তিনি বললেন, আমি তো তাঁর নিকট যাই না। কেননা (বিবাদমান) দু’দল সম্পর্কে কোন মন্তব্য করতে আমি তাকে নিষেধ করেছিলাম, কিন্তু তিনি তাতে অংশগ্রহণ না করতে অস্বীকার করেন। সা’দ (রাঃ) বলেন, তখন আমি তাঁকে কসম দিলাম। তখন তিনি তৈরি হলেন। আমরা আয়িশা (রাঃ)-এর উদ্দেশ্যে চললাম এবং তাঁর কাছে গিয়ে অনুমতি চাইলাম। তিনি আমাদের অনুমতি দিলেন।
আমরা তাঁর ঘরে প্রবেশ করলে তিনি বললেন, হাকীম না কি? তিনি তাঁকে চিনে ফেলেছিলেন। উত্তরে হাকীম (রাঃ) বললেন, হ্যাঁ। আয়িশা (রাঃ) বললেন, তোমার সঙ্গে কে? হাকীম (রাঃ) বললেন, সা’দ ইবনু হিশাম। আয়িশা (রাঃ) বললেন, কোন হিশাম? হাকীম (রাঃ) বললেন, ইবনু আমির। তখন আয়িশা (রাঃ) তাঁর জন্য রহমতের দুআ করলেন এবং তাঁর সম্পর্কে ভাল মন্তব্য করলেন। রাবী কাতাদা (রহঃ) বলেছেন, আমির (রাঃ) উহুদের যুদ্ধে শহীদ হয়েছিলেন। আমি (সা’দ) বললাম, হে, উম্মুল মুমিনীন! আমাকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর আখলাক সম্পর্কে অবহিত করুন! তিনি বললেন, তুমি কি কুরআন পাঠ কর না? আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি বললেন, আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর চরিত্র তো ছিল আল কুরআনই।
সা’দ (রহঃ) বলেন, তখন আমার ইচ্ছে ছিল যে, উঠে যাই এবং মৃত্যু পর্যন্ত কাউকে কোন বিষয় জিজ্ঞাসা করব না। পরে আবার মনে হল (আরো কিছু জিজ্ঞাসা করি) তাই আমি বললাম, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর রাতের ইবাদত সম্পর্কে আমাকে অবহিত করুন! তিনি বললেন, তুমি কি সূরা "ইয়া আয়্যুহাল মুয্যামিল" পড় না? আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি বললেন, মহান আল্লাহ এ সূরার প্রথমাংশ (ইবাদত) রাত্রি জাগরণ ফরয করে দিয়েছিলেন। তখন আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং তাঁর সাহাবীগণ এক বছর যাবত (তাহাজ্জুদের জন্য) রাত্রি জাগরণ করলেন। আর আল্লাহ তা’আলা এ সূরার শেষ অংশ বার মাস পর্যন্ত আসমানে রুখে রাখেন। অবশেষে এ সূরার শেষ অংশ নাযিল করে সহজ করে দিলেন। ফলে রাত্রি জাগরণ ফরয হওয়ার পরে নফলে পরিণত হয়।
সা’দ (রহঃ) বলেন, আমি বললাম, উাম্মুল হে মুমিনীন! আমাকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বিতর সম্পর্কে অবহিত করুন! তিনি বললেন, আমরা তাঁর জন্য তাঁর মিসওয়াক ও ওযুর পানি প্রস্তুত রাখতাম। রাতের যে সময় আল্লাহর ইচ্ছা হত তাকে জাগিয়ে দিতেন। তিনি তখন মিসওয়াক ও ওযু করতেন এবং নয় রাক’আত সালাত আদায় করতেন। তিনি এর মাঝে আর বসতেন না অষ্টম রাক’আত ব্যতীত। তখন তিনি আল্লাহর যিকর করতেন, তাঁর হামদ করতেন এবং তাঁর কাছে দু’আ করতেন। তারপর সালাম না করেই উঠে পড়তেন এবং নবম রাক’আত আদায় করে বসতেন এবং আল্লাহর যিকির ও তাঁর হামদ ও তাঁর কাছে দুআ করতেন। পরে এমন ভাবে সালাম বলতেন যা আমরা শুনতে পেতাম। সালাম করার পরে বসে দু’রাকআত সালাত আদায় করতেন। বৎস, এ হল মোট এগার রাকআত।
পরে যখন আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বায়োঃবৃদ্ধ হয়ে গেলেন এবং তিনি স্থুলদেহী হয়ে গেলেন, তখন সাত রাকআত দিয়ে বিতর আদায় করতেন। আর শেষ দু’ রাক’আতে তাঁর আগের আমলের অনুরূপ আমল করতেন। বৎস, এভাবে হল নয় রাক’আত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন কোন সালাত আদায় করতেন তখন তাতে স্থায়িত্ব রক্ষা করা পছন্দ করতেন। আর কখনো নিদ্রা বা কোন ব্যাধি তাঁর রাত জেগে ইবাদতের ব্যাপারে তাঁকে সংঘাত ঘটালে দিনের বেলা বার রাক’আত সালাত আদায় করে নিতেন।
আর আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একই রাতে পূর্ণ কুরআন পড়েছেন বলে আমার জানা নেই এবং তিনি ভোর পর্যন্ত সারা রাত সালাত আদায় করেননি এবং রমযান ব্যতীত অন্য কোন পূর্ণ মাস সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করেননি।
সা’দ (রহঃ) বলেন, পরে আমি ইবনু আব্বাস (রাঃ)-এর কাছে গেলাম এবং আয়িশা (রাঃ) বর্ণিত হাদীস তাঁর কাছে বর্ণনা করলাম। তিনি বললেন, ঠিকই বলেছেন। আমি যদি তাঁর কাছে যেতাম, অথবা বললেন, আমি যদি তাঁর সঙ্গে যেতাম তাহলে অবশ্যই আমি তাঁর কাছে গিয়ে সরাসরি তার মুখে এ হাদীস শুনতাম। সা’দ (রহঃ) বলেন, আমি বললাম, আমি যদি জানতাম যে, আপনি তাঁর কাছে যান না, তবে তাঁর হাদীস আমি আপনাকে শোনাতাম না।
باب صَلاَةِ اللَّيْلِ وَعَدَدِ رَكَعَاتِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي اللَّيْلِ وَأَنَّ الْوِتْرَ رَكْعَةٌ وَأَنَّ الرَّكْعَةَ صَلاَةٌ صَحِيحَةٌ
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى الْعَنَزِيُّ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ أَبِي عَدِيٍّ، عَنْ سَعِيدٍ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ زُرَارَةَ، أَنَّ سَعْدَ بْنَ هِشَامِ بْنِ عَامِرٍ، أَرَادَ أَنْ يَغْزُوَ، فِي سَبِيلِ اللَّهِ فَقَدِمَ الْمَدِينَةَ فَأَرَادَ أَنْ يَبِيعَ عَقَارًا لَهُ بِهَا فَيَجْعَلَهُ فِي السِّلاَحِ وَالْكُرَاعِ وَيُجَاهِدَ الرُّومَ حَتَّى يَمُوتَ فَلَمَّا قَدِمَ الْمَدِينَةَ لَقِيَ أُنَاسًا مِنْ أَهْلِ الْمَدِينَةِ فَنَهَوْهُ عَنْ ذَلِكَ وَأَخْبَرُوهُ أَنَّ رَهْطًا سِتَّةً أَرَادُوا ذَلِكَ فِي حَيَاةِ نَبِيِّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَنَهَاهُمْ نَبِيُّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَقَالَ " أَلَيْسَ لَكُمْ فِيَّ أُسْوَةٌ " . فَلَمَّا حَدَّثُوهُ بِذَلِكَ رَاجَعَ امْرَأَتَهُ وَقَدْ كَانَ طَلَّقَهَا وَأَشْهَدَ عَلَى رَجْعَتِهَا فَأَتَى ابْنَ عَبَّاسٍ فَسَأَلَهُ عَنْ وِتْرِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ أَلاَ أَدُلُّكَ عَلَى أَعْلَمِ أَهْلِ الأَرْضِ بِوِتْرِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ مَنْ قَالَ عَائِشَةُ . فَأْتِهَا فَاسْأَلْهَا ثُمَّ ائْتِنِي فَأَخْبِرْنِي بِرَدِّهَا عَلَيْكَ فَانْطَلَقْتُ إِلَيْهَا فَأَتَيْتُ عَلَى حَكِيمِ بْنِ أَفْلَحَ فَاسْتَلْحَقْتُهُ إِلَيْهَا فَقَالَ مَا أَنَا بِقَارِبِهَا لأَنِّي نَهَيْتُهَا أَنْ تَقُولَ فِي هَاتَيْنِ الشِّيعَتَيْنِ شَيْئًا فَأَبَتْ فِيهِمَا إِلاَّ مُضِيًّا . - قَالَ - فَأَقْسَمْتُ عَلَيْهِ فَجَاءَ فَانْطَلَقْنَا إِلَى عَائِشَةَ فَاسْتَأْذَنَّا عَلَيْهَا فَأَذِنَتْ لَنَا فَدَخَلْنَا عَلَيْهَا . فَقَالَتْ أَحَكِيمٌ فَعَرَفَتْهُ . فَقَالَ نَعَمْ . فَقَالَتْ مَنْ مَعَكَ قَالَ سَعْدُ بْنُ هِشَامٍ . قَالَتْ مَنْ هِشَامٌ قَالَ ابْنُ عَامِرٍ فَتَرَحَّمَتْ عَلَيْهِ وَقَالَتْ خَيْرًا - قَالَ قَتَادَةُ وَكَانَ أُصِيبَ يَوْمَ أُحُدٍ . فَقُلْتُ يَا أُمَّ الْمُؤْمِنِينَ أَنْبِئِينِي عَنْ خُلُقِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم . قَالَتْ أَلَسْتَ تَقْرَأُ الْقُرْآنَ قُلْتُ بَلَى . قَالَتْ فَإِنَّ خُلُقَ نَبِيِّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ الْقُرْآنَ . - قَالَ - فَهَمَمْتُ أَنْ أَقُومَ وَلاَ أَسْأَلَ أَحَدًا عَنْ شَىْءٍ حَتَّى أَمُوتَ ثُمَّ بَدَا لِي فَقُلْتُ أَنْبِئِينِي عَنْ قِيَامِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم . فَقَالَتْ أَلَسْتَ تَقْرَأُ ( يَا أَيُّهَا الْمُزَّمِّلُ) قُلْتُ بَلَى . قَالَتْ فَإِنَّ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ افْتَرَضَ قِيَامَ اللَّيْلِ فِي أَوَّلِ هَذِهِ السُّورَةِ فَقَامَ نَبِيُّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَأَصْحَابُهُ حَوْلاً وَأَمْسَكَ اللَّهُ خَاتِمَتَهَا اثْنَىْ عَشَرَ شَهْرًا فِي السَّمَاءِ حَتَّى أَنْزَلَ اللَّهُ فِي آخِرِ هَذِهِ السُّورَةِ التَّخْفِيفَ فَصَارَ قِيَامُ اللَّيْلِ تَطَوُّعًا بَعْدَ فَرِيضَةٍ . - قَالَ - قُلْتُ يَا أُمَّ الْمُؤْمِنِينَ أَنْبِئِينِي عَنْ وِتْرِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم . فَقَالَتْ كُنَّا نُعِدُّ لَهُ سِوَاكَهُ وَطَهُورَهُ فَيَبْعَثُهُ اللَّهُ مَا شَاءَ أَنْ يَبْعَثَهُ مِنَ اللَّيْلِ فَيَتَسَوَّكُ وَيَتَوَضَّأُ وَيُصَلِّي تِسْعَ رَكَعَاتٍ لاَ يَجْلِسُ فِيهَا إِلاَّ فِي الثَّامِنَةِ فَيَذْكُرُ اللَّهَ وَيَحْمَدُهُ وَيَدْعُوهُ ثُمَّ يَنْهَضُ وَلاَ يُسَلِّمُ ثُمَّ يَقُومُ فَيُصَلِّي التَّاسِعَةَ ثُمَّ يَقْعُدُ فَيَذْكُرُ اللَّهَ وَيَحْمَدُهُ وَيَدْعُوهُ ثُمَّ يُسَلِّمُ تَسْلِيمًا يُسْمِعُنَا ثُمَّ يُصَلِّي رَكْعَتَيْنِ بَعْدَ مَا يُسَلِّمُ وَهُوَ قَاعِدٌ فَتِلْكَ إِحْدَى عَشْرَةَ رَكْعَةً يَا بُنَىَّ فَلَمَّا أَسَنَّ نَبِيُّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَأَخَذَ اللَّحْمَ أَوْتَرَ بِسَبْعٍ وَصَنَعَ فِي الرَّكْعَتَيْنِ مِثْلَ صَنِيعِهِ الأَوَّلِ فَتِلْكَ تِسْعٌ يَا بُنَىَّ وَكَانَ نَبِيُّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا صَلَّى صَلاَةً أَحَبَّ أَنْ يُدَاوِمَ عَلَيْهَا وَكَانَ إِذَا غَلَبَهُ نَوْمٌ أَوْ وَجَعٌ عَنْ قِيَامِ اللَّيْلِ صَلَّى مِنَ النَّهَارِ ثِنْتَىْ عَشْرَةَ رَكْعَةً وَلاَ أَعْلَمُ نَبِيَّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَرَأَ الْقُرْآنَ كُلَّهُ فِي لَيْلَةٍ وَلاَ صَلَّى لَيْلَةً إِلَى الصُّبْحِ وَلاَ صَامَ شَهْرًا كَامِلاً غَيْرَ رَمَضَانَ . - قَالَ - فَانْطَلَقْتُ إِلَى ابْنِ عَبَّاسِ فَحَدَّثْتُهُ بِحَدِيثِهَا فَقَالَ صَدَقَتْ لَوْ كُنْتُ أَقْرَبُهَا أَوْ أَدْخُلُ عَلَيْهَا لأَتَيْتُهَا حَتَّى تُشَافِهَنِي بِهِ . - قَالَ - قُلْتُ لَوْ عَلِمْتُ أَنَّكَ لاَ تَدْخُلُ عَلَيْهَا مَا حَدَّثْتُكَ حَدِيثَهَا .
Sa'd b. Hisham b. 'Amir decided to participate in the expedition for the sake of Allah, so he came to Medina and he decided to dispose of his property there and buy arms and horses instead and fight against the Romans to the end of his life. When he came to Medina, he met the people of Medina. They dissuaded him to do such a thing, and informed him that a group of six men had decided to do so during the lifetime of the Messenger of Allah (ﷺ) and the Messenger of Allah (ﷺ) forbade them to do it, and said:
Is there not for you a model pattern in me? And when they narrated this to him (Sa'd b. Hisham), he returned to his wife, though he had divorced her and made (people) witness to his reconciliation. He then came to Ibn 'Abbas and asked him about the Witr of the Messenger of Allah (ﷺ). Ibn 'Abbas said: Should I not lead you to one who knows best amongst the people of the world about the Witr of the Messenger of Allah (ﷺ)? He said: Who is it? He (Ibn 'Abbas) said: It is 'A'isha. So go to her and ask her (about Witr) and then come to me and inform me about her answer that she would give you. So I came to Hakim b. Aflah and requested him to take me to her. He said: I would not go to her, for I forbade her to speak anything (about the conflict) between the two groupS, but she refused (to accept my advice) and went (to participate in that corflict). I (requested) him (Hakim) with an oath to lead me to her. So we went to 'A'isha and we begged permission to meet her. She granted us permission and we went in. She said: Are you Hakim? (She recognised him.) He replied: Yes. She said: Who is there with you? He said: He is Sa'd b. Hisham. She said: Which Hisham? He said: He is Hisham b. 'Amir. She blessed him ('Amir) with mercy from Allah and spoke good of him (Qatada said that he died as a martyr in Uhud). I said: Mother of the Faithful, tell me about the character of the Messenger of Allah (ﷺ). She said: Don't you read the Qur'an? I said: Yes. Upon this she said: The character of the Messenger of Allah (ﷺ) was the Qur'an. He said: I felt inclined to get up and not ask anything (further) till death. But then I changed my mind and said: Inform me about the observance (of the night prayer) of the Messenger of Allah (ﷺ). She said: Did you not recite:" O thou wrapped up"? He said: Yes. She said: Allah, the Exalted and the Glorious, made the observance of the night prayer at the beginning of this Surah obligatory. So the Messenger of Allah (may peace be upon him and his Companions around him observed this (night prayer) for one year. Allah held back the concluding portion of this Surah for twelve months in the Heaven till (at the end of this period) Allah revealed the concluding verses of this Surah which lightened (the burden of this prayer), and the night prayer became a supererogatory prayer after being an obligatory one. I said: Mother of the Faithful, inform me about the Witr of the Messenger of Allah (ﷺ). She said: I used to prepare tooth stick for him and water for his ablution, and Allah would rouse him to the extent He wished during the night. He would use the tooth stick, and perform ablution, and would offer nine rak'ahs, and would not sit but in the eighth one and would remember Allah, and praise Him and supplicate Him, then he would get up without uttering the salutation and pray the ninth rak'ah. He would then sit, remember, praise Him and supplicate Him and then utter a salutation loud enough for us to hear. He would then pray two rak'ahs sitting after uttering the salutation, and that made eleven rak'ahs. O my son, but when the Messenger of Allah (ﷺ) grew old and put on flesh, he observed Witr of seven, doing in the two rak'ahs as he had done formerly, and that made nine. O my son, and when the Messenger of Allah (ﷺ) observed prayer, he liked to keep on observing it, and when sleep or pain overpowered him and made it impossible (for him) to observe prayer in the night, he prayed twelve rak'ahs daring the day. I am not aware of Allah's Prophet (ﷺ) having recited the whole Qur'an during one single night, or praying through the night till morning, or fasting a complete month, except Ramadan. He (the narrator) said: I then went to Ibn 'Abbas and narrated to him the hadith (transmitted from her), and he said: She says the truth If I went to her and got into her presence, I would have listened to it orally from her. He said: If I were to know that you do not go to her. I would not have transmitted this hadith to you narrated by her.
পরিচ্ছেদঃ ১৭. রাতের সালাত, রাতের বেলা নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর সালাতের রাক’আত সংখ্যা, বিতর সালাত এক রাক’আত এবং এক রাক’আত সালাতও বিশুদ্ধ হওয়া প্রসঙ্গ
১৬১৫। ইসহাক ইবনু ইবরাহীম ও মুহাম্মদ ইবনু রাফি (রহঃ) ... যুরারা ইবনু আওফা (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, সা’দ ইবনু হিশাম (রহঃ) তাঁর প্রতিবেশী ছিলেন। তিনি তাঁকে বললেন যে, তিনি তাঁর স্ত্রীকে তালাক দিয়ে দিয়েছেন। এরপর রাবী সাঈদ (রহঃ) এর হাদীসের মর্মানুযায়ী বর্ণনা করেছেন। তবে তাতে রয়েছে আয়িশা (রাঃ) বললেন, কোন হিশাম? তিনি বললেন, ইবনু আমির আয়িশা (রাঃ) বললেন, তিনি ভালো লোক ছিলেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে উহুদ যূদ্ধে শহীদ হয়েছেন। তাতে আরো রয়েছে হাকীম ইবনু আফলাহ (রাঃ) বললেন, আচ্ছা! আমি যদি জানতাম যে, তুমি তাঁর কাছে যাও না তবে আমি তোমাকে তার হাদীস বলতাম না।
باب صَلاَةِ اللَّيْلِ وَعَدَدِ رَكَعَاتِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي اللَّيْلِ وَأَنَّ الْوِتْرَ رَكْعَةٌ وَأَنَّ الرَّكْعَةَ صَلاَةٌ صَحِيحَةٌ
وَحَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، وَمُحَمَّدُ بْنُ رَافِعٍ، كِلاَهُمَا عَنْ عَبْدِ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ زُرَارَةَ بْنِ أَوْفَى، أَنَّ سَعْدَ بْنَ هِشَامٍ، كَانَ جَارًا لَهُ فَأَخْبَرَهُ أَنَّهُ، طَلَّقَ امْرَأَتَهُ . وَاقْتَصَّ الْحَدِيثَ بِمَعْنَى حَدِيثِ سَعِيدٍ وَفِيهِ قَالَتْ مَنْ هِشَامٌ قَالَ ابْنُ عَامِرٍ . قَالَتْ نِعْمَ الْمَرْءُ كَانَ أُصِيبَ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَوْمَ أُحُدٍ . وَفِيهِ فَقَالَ حَكِيمُ بْنُ أَفْلَحَ أَمَا إِنِّي لَوْ عَلِمْتُ أَنَّكَ لاَ تَدْخُلُ عَلَيْهَا مَا أَنْبَأْتُكَ بِحَدِيثِهَا .
Zurara b. Aufa reported that Sa'd b. Hisham was his neighbour and he informed him that he had divorced his wife and he narrated the hadith like the one transmitted by Sa'd. She ('A'isha) said:
Who is Hisham? He said: The son of 'Amir. She said: What a fine man he was; he participated in the Battle of Uhud along with the Messenger of Allah (ﷺ). Hakim b. Aflah said: If I ever knew that you do not go to 'A'isha, I would not have informed you about her hadith (So that you would have gone to her and heard it from her orally).
পরিচ্ছেদঃ ৩২১. রাতের (তাহজ্জুদ) নামায সম্পর্কে।
১৩৪৬. আলী ইবন হুসায়েন (রহঃ) .... যুরারাহ ইবন আওফ (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একদা আয়েশা (রাঃ)-কে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লামের মধ্যরাত্রির নামায পাঠ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেনঃ তিনি ইশার নামায জামাআতে আদায়ের পর গৃহে আসতেন। অতঃপর তিনি চার রাকাআত নামায আদায় করে বিছানায় গমন করে ঘুমিয়ে পড়তেন। এ সময় উযুর পানির বদনা তাঁর শিয়রে ঢাকা অবস্থায় থাকত এবং মিসওয়াকও তাঁর পাশে থাকত। অতঃপর তিনি রাত্রির বিশেষ সময়ে আল্লাহ্র নির্দেশে জাগ্রত হয়ে মিসওয়াক করত ভালোভাবে উযু করতেন। পরে তিনি জায়নামাযে গমন করে আট রাকাত নামায আদায় করতেন। তিনি এই নামাযের রাকাআতসমুহে সূরা ফাতিহা এবং কুরআনের অন্য সূরা পাঠ করতেন, যা আল্লাহর ইচ্ছা হত এরূপ আরো আয়াত পাঠ করতেন।
তিনি এই আট রাকাত নামায আদায়কালে মাঝখানে না বসে শেষ রাকাতের পরে বসতেন এবং সালাম ফিরাবার পূর্বে দণ্ডায়মান হয়ে নবম রাকাত আদায় করে বসতেন। অতঃপর আল্লাহ্র ইচ্ছানুযায়ী দু’আ করতেন এবং তাঁর নিকট প্রার্থনা করতেন এবং তাঁর প্রতি আকৃষ্ট হতেন। পরিশেষে তিনি স্বশব্দে সালাম ফিরাতেন যার ফলে গৃহের লোকেরা জাগ্রত হবার উপক্রম হত। অতঃপর তিনি বসে দুই রাকাত নামায আদায় করতেন এবং এখানে সূরা ফাতেহা পাঠের পর বসাবস্থায় রুকূ করতেন, অতঃপর দ্বিতীয় রাকাত রুকূ ও সিজদার সাথে বসে আদায় করতেন। পরে তিনি আল্লাহ্র মর্জি অনুযায়ী দুআ করতঃ সালাম ফিরিয়ে নামায শেষ করতেন। তাঁর শরীর মোবারক ভারী ও দুর্বল হয়ে পড়লে তিনি নয় রাকাতের স্থলে দুই রাকাত বাদ দিয়ে ছয় এবং তার সাথে এক রাকাত যোগ করে সাত রাকাত আদায় করতেন এবং তাঁর ইন্তেকালের পূর্বে পর্যন্ত এরূপে নামায আদায় করতেন।
باب فِي صَلاَةِ اللَّيْلِ
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ حُسَيْنٍ الدِّرْهَمِيُّ، حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عَدِيٍّ، عَنْ بَهْزِ بْنِ حَكِيمٍ، حَدَّثَنَا زُرَارَةُ بْنُ أَوْفَى، : أَنَّ عَائِشَةَ، - رضى الله عنها - سُئِلَتْ عَنْ صَلاَةِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي جَوْفِ اللَّيْلِ، فَقَالَتْ : كَانَ يُصَلِّي صَلاَةَ الْعِشَاءِ فِي جَمَاعَةٍ، ثُمَّ يَرْجِعُ إِلَى أَهْلِهِ فَيَرْكَعُ أَرْبَعَ رَكَعَاتٍ، ثُمَّ يَأْوِي إِلَى فِرَاشِهِ وَيَنَامُ وَطَهُورُهُ مُغَطًّى عِنْدَ رَأْسِهِ، وَسِوَاكُهُ مَوْضُوعٌ حَتَّى يَبْعَثَهُ اللَّهُ سَاعَتَهُ الَّتِي يَبْعَثُهُ مِنَ اللَّيْلِ، فَيَتَسَوَّكُ وَيُسْبِغُ الْوُضُوءَ، ثُمَّ يَقُومُ إِلَى مُصَلاَّهُ فَيُصَلِّي ثَمَانِ رَكَعَاتٍ يَقْرَأُ فِيهِنَّ بِأُمِّ الْكِتَابِ وَسُورَةٍ مِنَ الْقُرْآنِ وَمَا شَاءَ اللَّهُ، وَلاَ يَقْعُدُ فِي شَىْءٍ مِنْهَا حَتَّى يَقْعُدَ فِي الثَّامِنَةِ، وَلاَ يُسَلِّمُ، وَيَقْرَأُ فِي التَّاسِعَةِ، ثُمَّ يَقْعُدُ فَيَدْعُو بِمَا شَاءَ اللَّهُ أَنْ يَدْعُوَهُ، وَيَسْأَلُهُ وَيَرْغَبُ إِلَيْهِ وَيُسَلِّمُ تَسْلِيمَةً وَاحِدَةً شَدِيدَةً، يَكَادُ يُوقِظُ أَهْلَ الْبَيْتِ مِنْ شِدَّةِ تَسْلِيمِهِ، ثُمَّ يَقْرَأُ وَهُوَ قَاعِدٌ بِأُمِّ الْكِتَابِ، وَيَرْكَعُ وَهُوَ قَاعِدٌ، ثُمَّ يَقْرَأُ الثَّانِيَةَ فَيَرْكَعُ وَيَسْجُدُ وَهُوَ قَاعِدٌ، ثُمَّ يَدْعُو مَا شَاءَ اللَّهُ أَنْ يَدْعُوَ، ثُمَّ يُسَلِّمُ وَيَنْصَرِفُ، فَلَمْ تَزَلْ تِلْكَ صَلاَةَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حَتَّى بَدَّنَ فَنَقَصَ مِنَ التِّسْعِ ثِنْتَيْنِ، فَجَعَلَهَا إِلَى السِّتِّ وَالسَّبْعِ وَرَكْعَتَيْهِ وَهُوَ قَاعِدٌ حَتَّى قُبِضَ عَلَى ذَلِكَ .
Narrated Aisha, Ummul Mu'minin:
Zurarah ibn Awfa said that Aisha was asked about the midnight prayer of the Messenger of Allah (ﷺ).
She said: He used to offer his night prayer in congregation and then return to his family (in his house) and pray four rak'ahs. Then he would go to his bed and sleep, but the water for his ablution was placed covered near his head and his tooth-stick was also kept there until Allah awakened him at night.
He then used the tooth-stick, performed ablution perfectly then came to the place of prayer and would pray eight rak'ahs, in which he would recite Surah al-Fatihah, and a surah from the Qur'an as Allah willed. He would not sit during any of them but sit after the eighth rak'ah, and would not utter the salutation, but recite (the Qur'an) during the ninth rak'ah. Then he would sit and supplicate as long as Allah willed, and beg Him and devote his attention to Him; He would utter the salutation once in such a loud voice that the inmates of the house were almost awakened by his loud salutation. He would then recite Surah al-Fatihah while sitting, bow while sitting, and then recite the Qur'an during the second rak'ah, and would bow and prostrate while sitting. He would supplicate Allah as long as He willed, then utter the salutation and turn away.
This amount of prayer of the Messenger of Allah (ﷺ) continued till he put a weight. During that period he retrenched two rak'ahs from nine and began to pray six and seven rak'ahs standing and two rak'ahs sitting. This continued till he died.
পরিচ্ছেদঃ ৪৩/ নয় রাক'আত দ্বারা বেজোড় কিভাবে করা হবে?
১৭২৪। যাকারিয়্যা ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ... যুরারহ ইবনু আওফা (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, সা’দ ইবনু হিশাম আমাদের কাছে এসে বললেন যে, তিনি ইবনু আব্বাসের নিকট গিয়ে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বিতরেব সালাত সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলেন। তিনি বললেন, আমি কি তোমাকে সন্ধান দেব না? অথবা (তিনি বললেন) আমি কি তোমাকে ধরাবাসীদের মধ্যে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বিতরের সালাত সম্পর্কে অধিক জ্ঞাত ব্যক্তির সংবাদ দেব না? আমি বললাম, তিনি কে? তিনি বললেনঃ আয়িশা (রাঃ)। তখন আমরা তার কাছে আসলাম এবং তাকে সালাম বলে তার ঘরে প্রবেশ করলাম এবং তাকে জিজ্ঞাসা করলাম।
আমি বললাম আপনি আমাকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বিতরের সালাত সম্পর্কে অবহিত করুন। তিনি বললেন, আমরা তার জন্য তার মিসওয়াক এবং উযূর পানি তৈরী করে রাখতাম। আল্লাহ তাআলা তাকে রাত্রে যখন জাগাতে ইচ্ছা করতেন জাগিয়ে দিতেন। তিনি মিসওয়াক করে উযূ (ওজু/অজু/অযু) করতেন এবং নয় রাকআত সালাত আদায় করতেন। শুধুমাত্র অষ্টম রাকআতেই বসতেন। (বসে) আল্লাহ তা’আলার প্রশংসা করতেন এবং তার যিকর করতেন আর দোয়া করতেন। তারপর উঠে যেতেন; সালাম ফিরাতেন না।
অতঃপর নবম রাকআত আদায় করতেন এবং বসে যেতেন ও আল্লাহ তা’আলার প্রশংসা বর্ণনা করতেন, তার যিকর এবং দোয়া করতেন। তারপর এমনভাবে সালাম ফিরাতেন যা আমরা শুনতে পেতাম। অতঃপর সালাম ফিরানোর পর বসা অবস্থায় দু’রাকআত সালাত আদায় করতেন। হে বৎস! তাহলে মোট এগার রাকআত সালাত আদায় করা হত। যখন তিনি বয়স্ক হয়ে গেলেন এবং শরীর ভারী হয়ে গেল, তখন তিনি সাত রাকআত পড়ে বেজোড় করে দিতেন। তারপর সালাম ফিরানোর পর বসা অবস্থায় দু’রাকআত সালাত আদায় করতেন। হে বৎস! তাহলে সেটি নয় রাকআত সালাত আদায় করা হল। আর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন কোন সালাত আদায় করতেন তা সর্বদা আদায় করতে ভালবাসতেন।
باب كَيْفَ الْوِتْرُ بِتِسْعٍ
أَخْبَرَنَا زَكَرِيَّا بْنُ يَحْيَى، قَالَ حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ، قَالَ أَنْبَأَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، قَالَ حَدَّثَنَا مَعْمَرٌ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ زُرَارَةَ بْنِ أَوْفَى، أَنَّ سَعْدَ بْنَ هِشَامِ بْنِ عَامِرٍ، لَمَّا أَنْ قَدِمَ، عَلَيْنَا أَخْبَرَنَا أَنَّهُ، أَتَى ابْنَ عَبَّاسٍ فَسَأَلَهُ عَنْ وَتْرِ، رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ أَلاَ أَدُلُّكَ أَوْ أَلاَ أُنَبِّئُكَ بِأَعْلَمِ أَهْلِ الأَرْضِ بِوَتْرِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم . قُلْتُ مَنْ قَالَ عَائِشَةُ . فَأَتَيْنَاهَا فَسَلَّمْنَا عَلَيْهَا وَدَخَلْنَا فَسَأَلْنَاهَا فَقُلْتُ أَنْبِئِينِي عَنْ وِتْرِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم . قَالَتْ كُنَّا نُعِدُّ لَهُ سِوَاكَهُ وَطَهُورَهُ فَيَبْعَثُهُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ مَا شَاءَ أَنْ يَبْعَثَهُ مِنَ اللَّيْلِ فَيَتَسَوَّكُ وَيَتَوَضَّأُ ثُمَّ يُصَلِّي تِسْعَ رَكَعَاتٍ وَلاَ يَقْعُدُ فِيهِنَّ إِلاَّ فِي الثَّامِنَةِ فَيَحْمَدُ اللَّهَ وَيَذْكُرُهُ وَيَدْعُو ثُمَّ يَنْهَضُ وَلاَ يُسَلِّمُ ثُمَّ يُصَلِّي التَّاسِعَةَ فَيَجْلِسُ فَيَحْمَدُ اللَّهَ وَيَذْكُرُهُ وَيَدْعُو ثُمَّ يُسَلِّمُ تَسْلِيمًا يُسْمِعُنَا ثُمَّ يُصَلِّي رَكْعَتَيْنِ وَهُوَ جَالِسٌ فَتِلْكَ إِحْدَى عَشْرَةَ رَكْعَةً يَا بُنَىَّ فَلَمَّا أَسَنَّ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَأَخَذَ اللَّحْمَ أَوْتَرَ بِسَبْعٍ ثُمَّ يُصَلِّي رَكْعَتَيْنِ وَهُوَ جَالِسٌ بَعْدَ مَا يُسَلِّمُ فَتِلْكَ تِسْعًا أَىْ بُنَىَّ وَكَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا صَلَّى صَلاَةً أَحَبَّ أَنْ يُدَاوِمَ عَلَيْهَا .
It was narrated from Zurarah bin Awfa:
"When Sa'd bin Hisham bin Amir came to visit us, he told us that he came to Ibn Abbas and asked him about the witr of the Messenger of Allah (ﷺ). He said: 'Shall I not tell you of the most knowledgeable person on Earth about the witr of the Messenger of Allah (ﷺ)?' I said: 'Who?' He said: 'Aishah.' So we went to her and greeted her with Salam and entered and asked her. I said: 'Tell me about the witr of the Messenger of Allah (ﷺ).' She said: 'We used to prepare for him his siwak and water for wudu, then Allah (SWT) would wake him when He willed to wake him at night. He would clean his teeth and perform wudu, then he would pray nine rak'ahs, during which he would not sit until the eighth. Then he would praise Allah (SWT) and remember Him and supplicate, then he would get up and not say the taslim. Then he would pray the ninth, then sit and praise Allah (SWT) and remember Him and supplicate, then he would say a taslim that we could hear. Then he prayed two rak'ahs sitting, and that was eleven rak'ahs, O my son. When the Messenger of Allah (ﷺ) grew older and put on weight, he prayed witr with seven, then he prayed two rak'ahs sitting after saying the taslim, and that was nine, O my son. And when the Messenger of Allah (ﷺ) offered a prayer, he liked to persist in offering it.'"
পরিচ্ছেদঃ ১৭. কামড় দেওয়ার কিসাস এবং এ সম্পর্কে ইমরান ইবন হুসায়ন (রাঃ) থেকে বর্ণনাকারীদের মধ্যে পার্থক্য
৪৭৫৯. আমর ইবন আলী (রহঃ) ... যুরারা ইবন আওফা ইমরান ইবন হুসায়ন (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন, এক ব্যক্তি অন্য ব্যক্তির বাহুতে কামড় দিল। সে হাত টেনে নিলে ঐ ব্যক্তির দাঁত পড়ে গেল। পরে এই মোকদ্দমা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট পেশ করা হলে তিনি দিয়াত বাতিল করে দেন এবং বলেনঃ তুমি জন্তুর ন্যায় নিজের ভাইয়ের মাংস চিবাতে চাও।
الْقَوَدُ مِنْ الْعَضَّةِ وَذِكْرُ اخْتِلَافِ أَلْفَاظِ النَّاقِلِينَ لِخَبَرِ عِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ
أَخْبَرَنَا عَمْرُو بْنُ عَلِيٍّ قَالَ حَدَّثَنَا يَزِيدُ قَالَ حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ أَبِي عَرُوبَةَ عَنْ قَتَادَةَ عَنْ زُرَارَةَ بْنِ أَوْفَى عَنْ عِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ أَنَّ رَجُلًا عَضَّ آخَرَ عَلَى ذِرَاعِهِ فَاجْتَذَبَهَا فَانْتَزَعَتْ ثَنِيَّتَهُ فَرُفِعَ ذَلِكَ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَأَبْطَلَهَا وَقَالَ أَرَدْتَ أَنْ تَقْضَمَ لَحْمَ أَخِيكَ كَمَا يَقْضَمُ الْفَحْلُ
It was narrated from 'Imran bin Husain that a man bit another man on the forearm:
he pulled it away and a front tooth fell out. The matter was referred to the Messenger of Allah and he canceled (the Diyah) and said: "Did you want to bite your brother's flesh as a stallion bites?"
পরিচ্ছেদঃ ১৭. কামড় দেওয়ার কিসাস এবং এ সম্পর্কে ইমরান ইবন হুসায়ন (রাঃ) থেকে বর্ণনাকারীদের মধ্যে পার্থক্য
৪৭৬০. মুহাম্মদ ইবন মুসান্না (রহঃ) ... যুরারা (রহঃ) ইমরান ইবন হুসায়ন (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন, ইয়ালা এক ব্যক্তির সাথে ঝগড়া করলো এবং তাদের একজন অন্যজনের হাতে কামড় দিল। সে তার মুখ থেকে নিজের হাত টেনে নিতেই অন্যজনের দাঁত পড়ে গেল। পরে উভয়ে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট বিচারপ্রার্থী হয়ে আসল। তিনি বললেন, তোমাদের একেকজন তার ভাইকে কামড় দেবে আবার দিয়াতও চাইবে? তার জন্য কোন দিয়াত নেই।
الْقَوَدُ مِنْ الْعَضَّةِ وَذِكْرُ اخْتِلَافِ أَلْفَاظِ النَّاقِلِينَ لِخَبَرِ عِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ
أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى قَالَ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ قَالَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ قَتَادَةَ عَنْ زُرَارَةَ عَنْ عِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ قَالَ قَاتَلَ يَعْلَى رَجُلًا فَعَضَّ أَحَدُهُمَا صَاحِبَهُ فَانْتَزَعَ يَدَهُ مِنْ فِيهِ فَنَدَرَتْ ثَنِيَّتُهُ فَاخْتَصَمَا إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ يَعَضُّ أَحَدُكُمْ أَخَاهُ كَمَا يَعَضُّ الْفَحْلُ لَا دِيَةَ لَهُ
It was narrated that 'Imran bin Husain said:
"Ya'la fought with a man, and one of them bit the other, who pulled his hand away from his mouth, and a front tooth fell out. They referred their dispute to the Messenger of Allah and he said: 'Would one of you bite his brother as a stallion bites? There is no Diyah for that."
পরিচ্ছেদঃ ১৭. কামড় দেওয়ার কিসাস এবং এ সম্পর্কে ইমরান ইবন হুসায়ন (রাঃ) থেকে বর্ণনাকারীদের মধ্যে পার্থক্য
৪৭৬১. সুওয়ায়দ ইবন নাসর (রহঃ) ... যুরারা (রহঃ) ইমরান ইবন হুসায়ন (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, ইয়ালা বলেন, এক ব্যক্তি অন্যজনের হাতে কামড় দিলে তার দাঁত পড়ে যায়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমার জন্য কোন দিয়াত নেই।
الْقَوَدُ مِنْ الْعَضَّةِ وَذِكْرُ اخْتِلَافِ أَلْفَاظِ النَّاقِلِينَ لِخَبَرِ عِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ
أَخْبَرَنَا سُوَيْدُ بْنُ نَصْرٍ قَالَ أَنْبَأَنَا عَبْدُ اللَّهِ عَنْ شُعْبَةَ عَنْ قَتَادَةَ عَنْ زُرَارَةَ عَنْ عِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ أَنَّ يَعْلَى قَالَ فِي الَّذِي عَضَّ فَنَدَرَتْ ثَنِيَّتُهُ إِنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ لَا دِيَةَ لَكَ
It was narrated from 'Imran bin Husain that:
Ya'la said, concerning the one who bit (another), and his front tooth fell out, that the Prophet said: "There is no Diyah for you."
পরিচ্ছেদঃ ১৭. কামড় দেওয়ার কিসাস এবং এ সম্পর্কে ইমরান ইবন হুসায়ন (রাঃ) থেকে বর্ণনাকারীদের মধ্যে পার্থক্য
৪৭৬২. মুহাম্মদ ইবন আবদুল্লাহ ইবন মুবারক (রহঃ) ... যুরারা ইবন আওফা (রহঃ) ইমরান ইবন হুসায়ন (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, এক ব্যক্তি অন্য এক ব্যক্তির বাহু কামড়ে ধরে, ফলে তার দাঁত পড়ে যায়। সে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট গিয়ে তা বর্ণনা করলে তিনি বললেনঃ তুমি তোমার ভাইয়ের বাহু জানোয়ারের মত কামড়াতে চেয়েছিলে। তিনি তার দিয়াত বাতিল করে দিলেন।
الْقَوَدُ مِنْ الْعَضَّةِ وَذِكْرُ اخْتِلَافِ أَلْفَاظِ النَّاقِلِينَ لِخَبَرِ عِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ
أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الْمُبَارَكِ قَالَ حَدَّثَنَا أَبُو هِشَامٍ قَالَ حَدَّثَنَا أَبَانُ قَالَ حَدَّثَنَا قَتَادَةُ قَالَ حَدَّثَنَا زُرَارَةُ بْنُ أَوْفَى عَنْ عِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ أَنَّ رَجُلًا عَضَّ ذِرَاعَ رَجُلٍ فَانْتَزَعَ ثَنِيَّتَهُ فَانْطَلَقَ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَذَكَرَ ذَلِكَ لَهُ فَقَالَ أَرَدْتَ أَنْ تَقْضَمَ ذِرَاعَ أَخِيكَ كَمَا يَقْضَمُ الْفَحْلُ فَأَبْطَلَهَا
It was narrated from 'Imran bin Husain that:
a man bit another man in the forearm, and his front tooth fell out, so he went to the Prophet and told him about that. He said: "Do you want to bite your brother's forearm as a stallion bites?" And he judged it to be invalid.
পরিচ্ছেদঃ ১৬৫. রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর সালাতের বৈশিষ্ট্য
১৫১৩. যুরারা (রাহি.) সুত্রে বর্ণনা করেন যে, সাদ ইবন হিশাম ইবন আমির (রাহি.) (আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করার ইচ্ছা করে) তার স্ত্রীকে তালাক দিলেন এবং মদীনায় এসে তাঁর সম্পত্তি বিক্রি করে তা যূদ্ধাস্ত্র ও ঘোড়া সংগ্রহে ব্যয় করতে মনস্থ করলেন। তারপর আনসারদের একটি দলের সাথে তার সাক্ষাত হলে তাঁরা তাঁকে বললেন, ’আমাদের মধ্যকার ছয় জন লোক রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জীবদ্দশায় এরুপ করার ইচ্ছা করেছিলো । তখন তিনি তাদের নিষেধ করেন এবং বলেন, “আমার মধ্যে কি তোমাদের জন্য কোন আদর্শ নেই?” এরপর তিনি বছরায় চলে গেলেন এবং তিনি আমাদের নিকট বর্ণনা করেছেন যে, তিনি (সেখানে) আব্দুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা)-এর সাথে সাক্ষাত করে তাঁকে বিতর সালাত সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলেন। তখন তিনি (ইবন আব্বাস) বললেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর বিতর সম্পর্কে সর্বাধিক অবগত ব্যক্তি সম্পর্কে কি তোমাকে বলে দিব না?
আমি বললাম, অবশ্যই। তিনি (ইবন আব্বাস) বললেন, তিনি হলেন উম্মুল মু’মিনীন আয়িশা (রাঃ)। তাঁর কাছে গিয়ে তুমি তাঁকে জিজ্ঞাসা করবে, এরপর তোমাকে তিনি যা বলেন, সে সম্পর্কে আমাকে অবহিত করবে। আমি তখন হাকীম ইবনু আফলাহ (রাঃ)-এর কাছে গিয়ে তাকে বললাম: তুমি আমার সঙ্গে উম্মুল মু’মিনীন আয়িশা (রাঃ)-এর কাছে চলো। তিনি বললেন, আমি তো তাঁর নিকট যাই না। কেননা (বিবাদমান) এ দু’টি দল থেকে আমি তাকে বারণ করেছিলাম, কিন্তু তিনি তা হতে নিবৃত্ত থাকতে অস্বীকার করেন। আমি বললাম, আমি তোমাকে (সেখানে) যাওয়ার জন্য কসম দিলাম। তখন (তিনি যেতে রাজী হলেন এবং) আমরা (আয়েশা রাঃ-এর উদ্দেশ্যে) চললাম এবং (তাঁর কাছে গিয়ে) তাঁকে সালাম দিলাম। তিনি হাকিম এর কণ্ঠস্বর চিনতে পারলেন এবং বললেন, এটি কে? উত্তরে আমি বললাম, সা’দ ইবনু হিশাম।
তিনি (আয়িশা রা:) বললেন, কোন হিশাম ? আমি বললাম, হিশাম ইবনু আমির।
তিনি (আয়িশা রাঃ) বললেন, (হিশাম ইবনু আমির) অতি উত্তম লোক। তিনি উহুদের যুদ্ধে শহীদ হয়েছিলেন।
আমি (সা’দ) বললাম, আপনি আমাকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আখলাক (স্বভাব-চরিত্র) সস্পর্কে অবহিত করুন!
তিনি বললেন, তুমি কি কুরআন পাঠ কর না ? আমি বললাম, হাঁ, অবশ্যই।
তিনি বললেন, সেটা (কুর’আন)-ই তো রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আখলাক।
(সা’দ বলেন,) তখন আমার ইচ্ছে হলো যে, আমি উঠে যাই এবং আল্লাহর সাথে সাক্ষাত না করা (মৃত্যু) পর্যন্ত কাউকে কোন বিষয় জিজ্ঞাসা না করি। তখনই আমার (মনের) কাছে ’ক্বিয়াম’-এর কথা আবির্ভূত হলো (মনে পড়লো), তাই আমি বললাম, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ’ক্বিয়াম’ (রাতের সালাত) সম্পর্কে আমাকে অবহিত করুন!
তিনি বললেন, তুমি কি সূরা “ইয়া আয়্যুহাল মুযৃযামিল” পড়ো না? আমি বললাম, হাঁ।
তিনি বললেন, সেটাই ছিলো রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ’ক্বিয়াম’। এ সূরার প্রথমাংশ নাযিল হলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং তাঁর সাহাবীগণ (তাহাজ্জুদের জন্য) রাত্রি জাগরণ করলেন, এমনকি তাঁদের পদ্বসমূহ ফুলে যেতে লাগলো। আর এ সূরার শেষ অংশ ষোল মাস পর্যন্ত আসমানে আটকে রাখা হলো। অতঃপর তা (এ সূরার শেষ অংশ) নাযিল হলো। ফলে রাত্রি জাগরণ ফরয হওয়ার পরে আবার নফলে পরিণত হলো । (সা’দ বলেন,) তখন আমার ইচ্ছে হলো যে, আমি উঠে যাই এবং আল্লাহর সাথে সাক্ষাত করা (মৃত্যু) পর্যন্ত কাউকে কোন বিষয় জিজ্ঞাসা না করি। তখনই আমার (মনের) ভেতরে ’বিতর’-এর কথা আবির্ভাব হলো, তাই আমি বললাম, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ’বিতর’ সালাত সম্পর্কে আমাকে অবহিত করুন! তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন ঘুমাতেন, তখন তাঁর মিসওয়াক আমার নিকট রেখে দিতেন। এরপর আল্লাহ যখন ইচ্ছা করতেন, তখন তাঁকে জাগিয়ে দিতেন । এরপর তিনি নয় রাকা’আত সালাত আদায় করতেন। তিনি অষ্টম রাকা’আতে ব্যতীত এর মাঝে আর বসতেন না। তখন তিনি আল্লাহর ’হামদ’ (প্রশংসা) করতেন, এবং তাঁর রবের কাছে দু’আ করতেন। তারপর সালাম না করেই উঠে পড়তেন এবং নবম রাকা’আত আদায় করে বসতেন এবং আল্লাহর হামদ (প্রশংসা) করতেন এবং তাঁর রবের কাছে দুআ করতেন। আর একবার সালাম ফিরাতেন যা আমরা শুনতে পেতাম। এরপর বসে দু’ রাকা’আত সালাত আদায় করতেন। ফলে, হে বৎস, এ হলো মোট এগার রাকা’আত।
পরে যখন তিনি বয়ো:বৃদ্ধ হলেন এবং স্থুলদেহী হয়ে গেলেন, তখন সাত রাকাআত সালাত আদায় করতেন, যার ষষ্ঠ রাকা’আতে ব্যতীত তিনি (আর কোনও রাকা’আতে) বসতেন না। তখন তিনি আল্লাহর ’হামদ’ (প্রশংসা) করতেন, এবং তাঁর রবের কাছে দু’আ করতেন। তারপর সালাম না করেই উঠে পড়তেন এবং সপ্তম রাকা’আত আদায় করে বসতেন এবং আল্লাহর হামদ (প্রশংসা) করতেন এবং তাঁর রবের কাছে দুআ করতেন। আর একবার মাত্র সালাম ফিরাতেন যা আমরা শুনতে পেতাম। এরপর বসে দু’ রাকা’আত সালাত আদায় করতেন। ফলে, হে বৎস, এ হলো মোট নয় রাকা’আত।
আর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিদ্রা প্রবল হতো, অথবা, তাঁর অসুস্থতা প্রবল হতো, তিনি দিনের বেলা বার রাক’আতসালাত আদায় করে নিতেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কোনো নীতি বা আচরণ অবলম্বন করতেন তখন তাতে ধারাবাহিকতা রক্ষা করা পসন্দ করতেন। আর আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ভোর পর্যন্ত সারা রাত সালাতে দাঁড়ান নি (আদায় করেননি) এবং এক রাতে পূর্ণ কুরআন পাঠ করেননি এবং এবং রমযান ব্যতীত অন্য কোন মাসে পুরো মাস সাওম পালন করেননি।
(সাদ র) বলেন,) এরপর আমি ইবন আব্বাস (রাঃ)-এর কাছে গেলাম এবং (আয়িশা রাঃ বর্ণিত হাদীস) তাঁর কাছে বর্ণনা করলাম। তিনি বললেন, তিনি তোমাকে যথার্থই বলেছেন। জেনে রাখো, আমি যদি তাঁর নিকট যেতে পারতাম, তাহলে অবশ্যই আমি (তাঁর কাছে গিয়ে) সরাসরি তাঁর মুখে এ হাদীস শুনে আসতাম। তিনি (সা’দ রাহি.) বলেন, আমি বললাম, জেনে রাখুন, আমি যদি বুঝতে পারতাম যে, আপনি তাঁর কাছে যান না, তবে তাঁর হাদীস আমি আপনার নিকট বর্ণনা করতাম না।[1]
তাখরীজ: আব্দুর রাযযাক নং ৪৭১৪; তার সুত্রে মুসলিম, (সালাতুল মুসাফিরীন) ৭৪৬; নাসাঈ, (কিয়ামুল লাইল ৩/২৪১-২৪২; আবু আওয়ানাহ ২/৩২১-৩২২; আমরা এর পূর্ণ তাখরীজ দিয়েছি মুসনাদুল মাউসিলী নং ৪৬৫০; সহীহ ইবনু হিব্বান নং২৪২০, ২৪২৩, ২৪৩১, ২৪৬৭, ২৫৫১ তে। এ বাবের অন্যান্য টীকাসমূহও দেখুন।
بَاب صِفَةِ صَلَاةِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
حَدَّثَنَا إِسْحَقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ حَدَّثَنَا مُعَاذُ بْنُ هِشَامٍ حَدَّثَنِي أَبِي عَنْ قَتَادَةَ عَنْ زُرَارَةَ بْنِ أَوْفَى عَنْ سَعْدِ بْنِ هِشَامٍ أَنَّهُ طَلَّقَ امْرَأَتَهُ وَأَتَى الْمَدِينَةَ لِبَيْعِ عَقَارِهِ فَيَجْعَلَهُ فِي السِّلَاحِ وَالْكُرَاعِ فَلَقِيَ رَهْطًا مِنْ الْأَنْصَارِ فَقَالُوا أَرَادَ ذَلِكَ سِتَّةٌ مِنَّا عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَمَنَعَهُمْ وَقَالَ أَمَا لَكُمْ فِيَّ أُسْوَةٌ ثُمَّ إِنَّهُ قَدِمَ الْبَصْرَةَ فَحَدَّثَنَا أَنَّهُ لَقِيَ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عَبَّاسٍ فَسَأَلَهُ عَنْ الْوِتْرِ فَقَالَ أَلَا أُحَدِّثُكَ بِأَعْلَمِ النَّاسِ بِوِتْرِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قُلْتُ بَلَى قَالَ أُمُّ الْمُؤْمِنِينَ عَائِشَةُ فَأْتِهَا فَاسْأَلْهَا ثُمَّ ارْجِعْ إِلَيَّ فَحَدِّثْنِي بِمَا تُحَدِّثُكَ فَأَتَيْتُ حَكِيمَ بْنَ أَفْلَحَ فَقُلْتُ لَهُ انْطَلِقْ مَعِي إِلَى أُمِّ الْمُؤْمِنِينَ عَائِشَةَ قَالَ إِنِّي لَا آتِيهَا إِنِّي نَهَيْتُ عَنْ هَذِهِ الشِّيعَتَيْنِ فَأَبَتْ إِلَّا مُضِيًّا قُلْتُ أَقْسَمْتُ عَلَيْكَ لَمَا انْطَلَقْتَ فَانْطَلَقْنَا فَسَلَّمْنَا فَعَرَفَتْ صَوْتَ حَكِيمٍ فَقَالَتْ مَنْ هَذَا قُلْتُ سَعْدُ بْنُ هِشَامٍ قَالَتْ مَنْ هِشَامٌ قُلْتُ هِشَامُ بْنُ عَامِرٍ قَالَتْ نِعْمَ الْمَرْءُ قُتِلَ يَوْمَ أُحُدٍ قُلْتُ أَخْبِرِينَا عَنْ خُلُقِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَتْ أَلَسْتَ تَقْرَأُ الْقُرْآنَ قُلْتُ بَلَى قَالَتْ فَإِنَّهُ خُلُقُ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَأَرَدْتُ أَنْ أَقُومَ وَلَا أَسْأَلَ أَحَدًا عَنْ شَيْءٍ حَتَّى أَلْحَقَ بِاللَّهِ فَعَرَضَ لِي الْقِيَامُ فَقُلْتُ أَخْبِرِينَا عَنْ قِيَامِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَتْ أَلَسْتَ تَقْرَأُ يَا أَيُّهَا الْمُزَّمِّلُ قُلْتُ بَلَى قَالَتْ فَإِنَّهَا كَانَتْ قِيَامَ رَسُولِ اللَّهِ أُنْزِلَ أَوَّلُ السُّورَةِ فَقَامَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَأَصْحَابُهُ حَتَّى انْتَفَخَتْ أَقْدَامُهُمْ وَحُبِسَ آخِرُهَا فِي السَّمَاءِ سِتَّةَ عَشَرَ شَهْرًا ثُمَّ أُنْزِلَ فَصَارَ قِيَامُ اللَّيْلِ تَطَوُّعًا بَعْدَ أَنْ كَانَ فَرِيضَةً فَأَرَدْتُ أَنْ أَقُومَ وَلَا أَسْأَلَ أَحَدًا عَنْ شَيْءٍ حَتَّى أَلْحَقَ بِاللَّهِ فَعَرَضَ لِي الْوِتْرُ فَقُلْتُ أَخْبِرِينَا عَنْ وِتْرِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَتْ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا نَامَ وَضَعَ سِوَاكَهُ عِنْدِي فَيَبْعَثُهُ اللَّهُ لِمَا شَاءَ أَنْ يَبْعَثَهُ فَيُصَلِّي تِسْعَ رَكَعَاتٍ لَا يَجْلِسُ إِلَّا فِي الثَّامِنَةِ فَيَحْمَدُ اللَّهَ وَيَدْعُو رَبَّهُ ثُمَّ يَقُومُ وَلَا يُسَلِّمُ ثُمَّ يَجْلِسُ فِي التَّاسِعَةِ فَيَحْمَدُ اللَّهَ وَيَدْعُو رَبَّهُ وَيُسَلِّمُ تَسْلِيمَةً يُسْمِعُنَا ثُمَّ يُصَلِّي رَكْعَتَيْنِ وَهُوَ جَالِسٌ فَتِلْكَ إِحْدَى عَشْرَةَ رَكْعَةً يَا بُنَيَّ فَلَمَّا أَسَنَّ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَحَمَلَ اللَّحْمَ صَلَّى سَبْعَ رَكَعَاتٍ لَا يَجْلِسُ إِلَّا فِي السَّادِسَةِ فَيَحْمَدُ اللَّهَ وَيَدْعُو رَبَّهُ ثُمَّ يَقُومُ وَلَا يُسَلِّمُ ثُمَّ يَجْلِسُ فِي السَّابِعَةِ فَيَحْمَدُ اللَّهَ وَيَدْعُو رَبَّهُ ثُمَّ يُسَلِّمُ تَسْلِيمَةً ثُمَّ يُصَلِّي رَكْعَتَيْنِ وَهُوَ جَالِسٌ فَتِلْكَ تِسْعٌ يَا بُنَيَّ وَكَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا غَلَبَهُ نَوْمٌ أَوْ مَرَضٌ صَلَّى مِنْ النَّهَارِ ثِنْتَيْ عَشْرَةَ رَكْعَةً وَكَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا أَخَذَ خُلُقًا أَحَبَّ أَنْ يُدَاوِمَ عَلَيْهِ وَمَا قَامَ نَبِيُّ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَيْلَةً حَتَّى يُصْبِحَ وَلَا قَرَأَ الْقُرْآنَ كُلَّهُ فِي لَيْلَةٍ وَلَا صَامَ شَهْرًا كَامِلًا غَيْرَ رَمَضَانَ فَأَتَيْتُ ابْنَ عَبَّاسٍ فَحَدَّثْتُهُ فَقَالَ صَدَقَتْكَ أَمَا إِنِّي لَوْ كُنْتُ أَدْخُلُ عَلَيْهَا لَشَافَهْتُهَا مُشَافَهَةً قَالَ فَقُلْتُ أَمَا إِنِّي لَوْ شَعَرْتُ أَنَّكَ لَا تَدْخُلُ عَلَيْهَا مَا حَدَّثْتُكَ
পরিচ্ছেদঃ ৩৩. কুরআন খতম করা সম্পর্কে
৩৫১৫. যুরারাহ ইবনু আওফা (রহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জিজ্ঞাসা করা হল, আল্লাহ’র নিকট সবচেয়ে প্রিয় আমল কোনটি? তিনি বললেন: “’আলহাল্লুল মুরতাহিলু।’ (যে ব্যক্তি গন্তেব্যে এসেই আবার রওনা হয়ে যায়।)” তাঁকে জিজ্ঞেস করা হলো, ’আলহাল্লুল মুরতাহিলু’ আবার কী? ”কুরআনের সাথী যে কুরআনের শুরু থেকেপড়ে খতম করে, আবার শেষ করেই শুরু থেকে পাঠ আরম্ভ করে। যখনই (শেষে) আগমণ করে, তখনই সে আবার রওনা হয়ে যায়।”[1]
তাখরীজ: তিরমিযী, কিরাআত নং ২৯৪৯; আব্দুর রহমান ইবনু আহমাদ আর রাযী, ফাযাইলুল কুরআন নং ৭৯; তাবারাণী, কাবীর ১২/১৬৮ নং ১২৭৮৩; আবূ নুয়াইম, হিলইয়াতুল আউলিয়া ২/২৬০, ৬/১৭৪; হাকিম নং ২০৮৮, ২২৮৯; বাইহাকী, শুয়াবুল ঈমান নং ২০৬৯; ইবনু কাছীর, ফাযাইলুল কুরআন পৃ. নং ২৮৭; যাহাবী, মু’জামুশ শুয়ূখ ২/২৯১ সনদ যয়ীফ।
আর এর শাহিদ হাদীস রয়েছে আবী হুরাইরা হতে হাকিম নং ২০৯০ তে এর সনদও যয়ীফ।
باب فِي خَتْمِ الْقُرْآنِ
حَدَّثَنَا إِسْحَقُ بْنُ عِيسَى عَنْ صَالِحٍ الْمُرِّيِّ عَنْ قَتَادَةَ عَنْ زُرَارَةَ بْنِ أَوْفَى أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ سُئِلَ أَيُّ الْعَمَلِ أَفْضَلُ قَالَ الْحَالُّ الْمُرْتَحِلُ قِيلَ وَمَا الْحَالُّ الْمُرْتَحِلُ قَالَ صَاحِبُ الْقُرْآنِ يَضْرِبُ مِنْ أَوَّلِ الْقُرْآنِ إِلَى آخِرِهِ وَمِنْ آخِرِهِ إِلَى أَوَّلِهِ كُلَّمَا حَلَّ ارْتَحَلَ
পরিচ্ছেদঃ ১৮. রাত্রিকালীন সালাত- আর যে ঘুমিয়ে পড়ে অথবা অসুস্থ হয়ে পড়ে
১৬২৪-(১৩৯/৭৪৬) মুহাম্মাদ ইবনুল মুসান্না আল আনাযী (রহঃ) ..... যুরারাহ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। সা’দ ইবনু হিশাম ইবনু আমির (রহঃ) আল্লাহর পথে (আজীবন) লড়াই করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলেন। তাই তিনি মদীনায় আগমন করলেন। তিনি চাচ্ছিলেন এ উদ্দেশে তিনি তার জমি-জমা বিক্রি করে তা দ্বারা অস্ত্রশস্ত্র ও যুদ্ধের ঘোড়া কিনবেন এবং রোমান অর্থাৎ খৃষ্টানদের বিরুদ্ধে আমৃত্যু জিহাদ করবেন। তাই মদীনায় এসে তিনি মদীনাহবাসী কিছু লোকের সাথে সাক্ষাৎ করলে তারা তাকে ঐরুপ করতে নিষেধ করলেন। তারা তাকে এ কথাও জানালেন যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জীবদ্দশায় ছয়জন লোকের একটি দল এ একই কাজ করতে চাইলে আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা করতে নিষেধ করেছিলেন; আমার জীবন ও কর্মে কি তোমাদের জন্য অনুসরণীয় আদর্শ নেই?
তারা (মদীনাহবাসী) যখন তাকে এ কথাটি শুনালেন তখন তিনি তার স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিলেন (রুজ’আত করলেন) এবং কিছু লোককে এ ব্যাপারে সাক্ষী রাখলেন। কেননা এ কাজের (জিহাদের) জন্য তিনি তার স্ত্রীকে তালাক দিয়েছিলেন। এরপর তিনি আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস এর কাছে এসে তাকে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বিতর সালাত আদায় করা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেন। আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস তাকে বললেনঃ রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বিতর সালাত সম্পর্কে পৃথিবীর অধিবাসীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশী জানে আমি এমন একজন লোকের সন্ধান কি তোমাকে দিব না? তিনি (সাদ ইবনু হিশাম ইবনু আমির) বললেনঃ তিনি কে? আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস বললেনঃ তিনি হলেন আয়িশাহ (রাযিঃ)। তার কাছে গিয়ে তুমি জিজ্ঞেস করবে, তারপর তোমাকে দেয়া তার জবাব আমাকে এসে জানাবে।
আমি তখন তার কাছে যাওয়ার জন্য রওয়ানা হলাম। প্রথমে আমি হাকীম ইবনু আফলাহ-র কাছে গেলাম। আমি তাকে আমার সাথে তার (আয়িশাহ) এ দু’ দলের ব্যাপারে কোন কিছু বলতে নিষেধ করেছিলাম। কিন্তু তিনি তা না শুনে বরং একটি পক্ষাবলম্বন করেছিলেন। সা’দ ইবনু হিশাম ইবনু আমির বলেনঃ তখন আমি তাকে কসম দিয়ে যেতে বললাম। তাই তিনি যেতে রাজি হলেন। আমরা আয়িশাহ (রাযিঃ) এর কাছে গিয়ে তাকে অবহিত করলে তিনি আমাদেরকে অনুমতি দান করলেন। আমরা তার কাছে গেলে তিনি হাকীম আফলাহকে চিনতে পারলেন। তাই বললেনঃ আরে, এ যে হাকীম? তিনি (হাকীম ইবনু আফলাহ) বললেনঃ হ্যাঁ। তিনি জিজ্ঞেস করলেনঃ তোমার সাথে কে আছে? তিনি বললেনঃ সা’দ ইবনু হিশাম (ইবনু আমির)। তিনি প্রশ্ন করলেন। কোন হিশাম? হাকীম ইবনু আফলাহ বললেনঃ ’আমিরের পুত্র হিশাম। এ কথা শুনে তিনি তার প্রতি খুব স্নেহপ্রবণ হলেন এবং তার ব্যাপারে ভাল মন্তব্য করলেন।
কাতাদাহ্ বর্ণনা করলেনঃ আফলাহ উহুদের যুদ্ধে শাহীদ হয়েছিলেন। এরপর আমি বললামঃ হে উন্মুল মুমিনীন। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আখলাক সম্পর্কে আমাকে কিছু অবহিত করুন। এ কথা শুনে তিনি আমাকে বললেনঃ তুমি কি কুরআন পড় না? আমি বললাম- হ্যাঁ, পড়ি। তিনি বললেন, আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আখলাক তো ছিল কুরআন।
সা’দ ইবনু হিশাম ইবনু আমির বলেছেন : আমি তখন মনে মনে সিদ্ধান্ত নিলাম উঠে চলে আসি এবং মৃত্যু পর্যন্ত এ ব্যাপারে আর কাউকে কিছু জিজ্ঞেস না করি। কিন্তু আমার মনে আবার একটি নতুন ধারণা জাগল। তাই আমি বললামঃ আমাকে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর রাতের ইবাদাত (কিয়ামুল লায়ল) সম্পর্কে কিছু অবহিত করুন। তিনি এবার আমাকে জিজ্ঞেস করলেনঃ তুমি কি সূরাহ "ইয়া আইইয়্যুহাল মুয্যাম্মিল" পড় না? আমি বললাম- হ্যাঁ পড়ি। তিনি বললেনঃ মহান ও পরাক্রমশালী আল্লাহ এ সূরার প্রথমভাগে “কিয়ামুল লাইল" বা রাতের ইবাদাত বন্দেগী ফারয (ফরয) করে দিয়েছেন। তাই এক বছর পর্যন্ত নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তার সাহাবীগণ রাতের বেলা ইবাদাত করেছেন। মহান আল্লাহ বারো মাস পর্যন্ত এ সূরার শেষাংশ আসমানে ঠেকিয়ে রেখেছিলেন (অর্থাৎ বারো মাস পর্যন্ত এ সূরার শেষাংশ অবতীর্ণ করেননি)। অবশেষে (বারো মাস পরে) এ সূরার শেষে আল্লাহ তা’আলা রাতের ইবাদাতের হুকুম লঘু করে আয়াত অবতীর্ণ করলেন। আর এ কারণে রাত জেগে ইবাদাত যেখানে ফারয (ফরয) ছিল সেখানে তা নাফল বা ঐচ্ছিক হয়ে গেল।
সা’দ ইবনু হিশাম বলেনঃ আমি বললাম, হে উন্মুল মু’মিনীন! রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বিতর সালাত সম্পর্কে আমাকে কিছু অবহিত করুন। তিনি বললেনঃ আমরা তার জন্য মিসওয়াক এবং ওযুর পানি প্রস্তুত করে রাখতাম। অতঃপর রাতের বেলা মহান আল্লাহ যখন চাইতেন তখন তাকে জাগিয়ে দিতেন। তিনি উঠে মিসওয়াক করতেন। ওযু করতেন এবং নয় রাকাআত (বিতর) সালাত আদায় করতেন। এতে অষ্টম রাকাআত ছাড়া বসতেন না। এ বৈঠকে তিনি আল্লাহকে স্মরণ করতেন, তার প্রশংসা করতেন এবং তার কাছে প্রার্থনা করতেন। অতঃপর এমনভাবে সালাম ফিরাতেন যে আমরা তা শুনতে পেতাম। এবার সালাম ফিরানোর পর ঘরে বসেই তিনি দু’ রাকাআত সালাত আদায় করতেন।
তারপর বললেনঃ হে বৎস! এ এগার রাকাআত সালাত তিনি রাতে আদায় করতেন। পরবর্তী নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বয়স বেড়ে গিয়েছিল এবং শরীরও কিছুটা ভারী হয়ে গিয়েছিল তখন তিনি সাত রাকাআত বিতর আদায় করতেন। এক্ষেত্রেও তিনি শেষের দু রাকাআত সালাত পূর্বের মতো করেই আদায় করতেন। হে বৎস! এভাবে তিনি নয় রাকাআত সালাত আদায় করতেন। আর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোন সালাত আদায় করলে তা সর্বদা নিয়মিত আদায় করা পছন্দ করতেন। যখন ঘুমের প্রাবল্য বা ব্যথা-বেদনার কারণে তিনি রাতে ইবাদাত (সালাত আদায়) করতে পারতেন না, তখন দিনের বেলা বারো রাকাআত সালাত আদায় করতেন। আর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক রাতে পুরো কুরআন মাজীদ তিলাওয়াত করেছেন বা সকাল পর্যন্ত সারা রাত আদায় করেছেন কিংবা রমযান মাস ছাড়া সারা মাস সিয়াম (রোযা) পালন করেছেন এমনটি আমি কখনো দেখিনি।
সা’দ ইবনু হিশাম ইবনু আমির বর্ণনা করেছেন পরে আমি আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাযিঃ) এর কাছে এসে আয়িশাহ (রাযিঃ)-এর বর্ণিত হাদীসটি বর্ণনা করলে তিনি বললেনঃ তিনি সঠিক বলেছেন। আমি যদি তার কাছে থাকতাম বা তার কাছে যেতাম তাহলে নিজে তার মুখ থেকে হাদীসটি শুনতে পেতাম। সা’দ ইবনু হিশাম বললেনঃ আমার যদি জানা থাকত যে, আপনি তার কাছে যান না, তাহলে আপনাকে আমি তার কথা বলতাম না। (ইসলামী ফাউন্ডেশন ১৬০৯, ইসলামীক সেন্টার ১৬১৬)
باب جَامِعِ صَلاَةِ اللَّيْلِ وَمَنْ نَامَ عَنْهُ أَوْ مَرِضَ
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى الْعَنَزِيُّ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ أَبِي عَدِيٍّ، عَنْ سَعِيدٍ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ زُرَارَةَ، أَنَّ سَعْدَ بْنَ هِشَامِ بْنِ عَامِرٍ، أَرَادَ أَنْ يَغْزُوَ، فِي سَبِيلِ اللَّهِ فَقَدِمَ الْمَدِينَةَ فَأَرَادَ أَنْ يَبِيعَ عَقَارًا لَهُ بِهَا فَيَجْعَلَهُ فِي السِّلاَحِ وَالْكُرَاعِ وَيُجَاهِدَ الرُّومَ حَتَّى يَمُوتَ فَلَمَّا قَدِمَ الْمَدِينَةَ لَقِيَ أُنَاسًا مِنْ أَهْلِ الْمَدِينَةِ فَنَهَوْهُ عَنْ ذَلِكَ وَأَخْبَرُوهُ أَنَّ رَهْطًا سِتَّةً أَرَادُوا ذَلِكَ فِي حَيَاةِ نَبِيِّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَنَهَاهُمْ نَبِيُّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَقَالَ " أَلَيْسَ لَكُمْ فِيَّ أُسْوَةٌ " . فَلَمَّا حَدَّثُوهُ بِذَلِكَ رَاجَعَ امْرَأَتَهُ وَقَدْ كَانَ طَلَّقَهَا وَأَشْهَدَ عَلَى رَجْعَتِهَا فَأَتَى ابْنَ عَبَّاسٍ فَسَأَلَهُ عَنْ وِتْرِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ أَلاَ أَدُلُّكَ عَلَى أَعْلَمِ أَهْلِ الأَرْضِ بِوِتْرِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ مَنْ قَالَ عَائِشَةُ . فَأْتِهَا فَاسْأَلْهَا ثُمَّ ائْتِنِي فَأَخْبِرْنِي بِرَدِّهَا عَلَيْكَ فَانْطَلَقْتُ إِلَيْهَا فَأَتَيْتُ عَلَى حَكِيمِ بْنِ أَفْلَحَ فَاسْتَلْحَقْتُهُ إِلَيْهَا فَقَالَ مَا أَنَا بِقَارِبِهَا لأَنِّي نَهَيْتُهَا أَنْ تَقُولَ فِي هَاتَيْنِ الشِّيعَتَيْنِ شَيْئًا فَأَبَتْ فِيهِمَا إِلاَّ مُضِيًّا . - قَالَ - فَأَقْسَمْتُ عَلَيْهِ فَجَاءَ فَانْطَلَقْنَا إِلَى عَائِشَةَ فَاسْتَأْذَنَّا عَلَيْهَا فَأَذِنَتْ لَنَا فَدَخَلْنَا عَلَيْهَا . فَقَالَتْ أَحَكِيمٌ فَعَرَفَتْهُ . فَقَالَ نَعَمْ . فَقَالَتْ مَنْ مَعَكَ قَالَ سَعْدُ بْنُ هِشَامٍ . قَالَتْ مَنْ هِشَامٌ قَالَ ابْنُ عَامِرٍ فَتَرَحَّمَتْ عَلَيْهِ وَقَالَتْ خَيْرًا - قَالَ قَتَادَةُ وَكَانَ أُصِيبَ يَوْمَ أُحُدٍ . فَقُلْتُ يَا أُمَّ الْمُؤْمِنِينَ أَنْبِئِينِي عَنْ خُلُقِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم . قَالَتْ أَلَسْتَ تَقْرَأُ الْقُرْآنَ قُلْتُ بَلَى . قَالَتْ فَإِنَّ خُلُقَ نَبِيِّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ الْقُرْآنَ . - قَالَ - فَهَمَمْتُ أَنْ أَقُومَ وَلاَ أَسْأَلَ أَحَدًا عَنْ شَىْءٍ حَتَّى أَمُوتَ ثُمَّ بَدَا لِي فَقُلْتُ أَنْبِئِينِي عَنْ قِيَامِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم . فَقَالَتْ أَلَسْتَ تَقْرَأُ ( يَا أَيُّهَا الْمُزَّمِّلُ) قُلْتُ بَلَى . قَالَتْ فَإِنَّ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ افْتَرَضَ قِيَامَ اللَّيْلِ فِي أَوَّلِ هَذِهِ السُّورَةِ فَقَامَ نَبِيُّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَأَصْحَابُهُ حَوْلاً وَأَمْسَكَ اللَّهُ خَاتِمَتَهَا اثْنَىْ عَشَرَ شَهْرًا فِي السَّمَاءِ حَتَّى أَنْزَلَ اللَّهُ فِي آخِرِ هَذِهِ السُّورَةِ التَّخْفِيفَ فَصَارَ قِيَامُ اللَّيْلِ تَطَوُّعًا بَعْدَ فَرِيضَةٍ . - قَالَ - قُلْتُ يَا أُمَّ الْمُؤْمِنِينَ أَنْبِئِينِي عَنْ وِتْرِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم . فَقَالَتْ كُنَّا نُعِدُّ لَهُ سِوَاكَهُ وَطَهُورَهُ فَيَبْعَثُهُ اللَّهُ مَا شَاءَ أَنْ يَبْعَثَهُ مِنَ اللَّيْلِ فَيَتَسَوَّكُ وَيَتَوَضَّأُ وَيُصَلِّي تِسْعَ رَكَعَاتٍ لاَ يَجْلِسُ فِيهَا إِلاَّ فِي الثَّامِنَةِ فَيَذْكُرُ اللَّهَ وَيَحْمَدُهُ وَيَدْعُوهُ ثُمَّ يَنْهَضُ وَلاَ يُسَلِّمُ ثُمَّ يَقُومُ فَيُصَلِّي التَّاسِعَةَ ثُمَّ يَقْعُدُ فَيَذْكُرُ اللَّهَ وَيَحْمَدُهُ وَيَدْعُوهُ ثُمَّ يُسَلِّمُ تَسْلِيمًا يُسْمِعُنَا ثُمَّ يُصَلِّي رَكْعَتَيْنِ بَعْدَ مَا يُسَلِّمُ وَهُوَ قَاعِدٌ فَتِلْكَ إِحْدَى عَشْرَةَ رَكْعَةً يَا بُنَىَّ فَلَمَّا أَسَنَّ نَبِيُّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَأَخَذَ اللَّحْمَ أَوْتَرَ بِسَبْعٍ وَصَنَعَ فِي الرَّكْعَتَيْنِ مِثْلَ صَنِيعِهِ الأَوَّلِ فَتِلْكَ تِسْعٌ يَا بُنَىَّ وَكَانَ نَبِيُّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا صَلَّى صَلاَةً أَحَبَّ أَنْ يُدَاوِمَ عَلَيْهَا وَكَانَ إِذَا غَلَبَهُ نَوْمٌ أَوْ وَجَعٌ عَنْ قِيَامِ اللَّيْلِ صَلَّى مِنَ النَّهَارِ ثِنْتَىْ عَشْرَةَ رَكْعَةً وَلاَ أَعْلَمُ نَبِيَّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَرَأَ الْقُرْآنَ كُلَّهُ فِي لَيْلَةٍ وَلاَ صَلَّى لَيْلَةً إِلَى الصُّبْحِ وَلاَ صَامَ شَهْرًا كَامِلاً غَيْرَ رَمَضَانَ . - قَالَ - فَانْطَلَقْتُ إِلَى ابْنِ عَبَّاسِ فَحَدَّثْتُهُ بِحَدِيثِهَا فَقَالَ صَدَقَتْ لَوْ كُنْتُ أَقْرَبُهَا أَوْ أَدْخُلُ عَلَيْهَا لأَتَيْتُهَا حَتَّى تُشَافِهَنِي بِهِ . - قَالَ - قُلْتُ لَوْ عَلِمْتُ أَنَّكَ لاَ تَدْخُلُ عَلَيْهَا مَا حَدَّثْتُكَ حَدِيثَهَا .
Sa'd b. Hisham b. 'Amir decided to participate in the expedition for the sake of Allah, so he came to Medina and he decided to dispose of his property there and buy arms and horses instead and fight against the Romans to the end of his life. When he came to Medina, he met the people of Medina. They dissuaded him to do such a thing, and informed him that a group of six men had decided to do so during the lifetime of the Messenger of Allah (ﷺ) and the Messenger of Allah (ﷺ) forbade them to do it, and said:
Is there not for you a model pattern in me? And when they narrated this to him (Sa'd b. Hisham), he returned to his wife, though he had divorced her and made (people) witness to his reconciliation. He then came to Ibn 'Abbas and asked him about the Witr of the Messenger of Allah (ﷺ). Ibn 'Abbas said: Should I not lead you to one who knows best amongst the people of the world about the Witr of the Messenger of Allah (ﷺ)? He said: Who is it? He (Ibn 'Abbas) said: It is 'A'isha. So go to her and ask her (about Witr) and then come to me and inform me about her answer that she would give you. So I came to Hakim b. Aflah and requested him to take me to her. He said: I would not go to her, for I forbade her to speak anything (about the conflict) between the two groupS, but she refused (to accept my advice) and went (to participate in that corflict). I (requested) him (Hakim) with an oath to lead me to her. So we went to 'A'isha and we begged permission to meet her. She granted us permission and we went in. She said: Are you Hakim? (She recognised him.) He replied: Yes. She said: Who is there with you? He said: He is Sa'd b. Hisham. She said: Which Hisham? He said: He is Hisham b. 'Amir. She blessed him ('Amir) with mercy from Allah and spoke good of him (Qatada said that he died as a martyr in Uhud). I said: Mother of the Faithful, tell me about the character of the Messenger of Allah (ﷺ). She said: Don't you read the Qur'an? I said: Yes. Upon this she said: The character of the Messenger of Allah (ﷺ) was the Qur'an. He said: I felt inclined to get up and not ask anything (further) till death. But then I changed my mind and said: Inform me about the observance (of the night prayer) of the Messenger of Allah (ﷺ). She said: Did you not recite:" O thou wrapped up"? He said: Yes. She said: Allah, the Exalted and the Glorious, made the observance of the night prayer at the beginning of this Surah obligatory. So the Messenger of Allah (may peace be upon him and his Companions around him observed this (night prayer) for one year. Allah held back the concluding portion of this Surah for twelve months in the Heaven till (at the end of this period) Allah revealed the concluding verses of this Surah which lightened (the burden of this prayer), and the night prayer became a supererogatory prayer after being an obligatory one. I said: Mother of the Faithful, inform me about the Witr of the Messenger of Allah (ﷺ). She said: I used to prepare tooth stick for him and water for his ablution, and Allah would rouse him to the extent He wished during the night. He would use the tooth stick, and perform ablution, and would offer nine rak'ahs, and would not sit but in the eighth one and would remember Allah, and praise Him and supplicate Him, then he would get up without uttering the salutation and pray the ninth rak'ah. He would then sit, remember, praise Him and supplicate Him and then utter a salutation loud enough for us to hear. He would then pray two rak'ahs sitting after uttering the salutation, and that made eleven rak'ahs. O my son, but when the Messenger of Allah (ﷺ) grew old and put on flesh, he observed Witr of seven, doing in the two rak'ahs as he had done formerly, and that made nine. O my son, and when the Messenger of Allah (ﷺ) observed prayer, he liked to keep on observing it, and when sleep or pain overpowered him and made it impossible (for him) to observe prayer in the night, he prayed twelve rak'ahs daring the day. I am not aware of Allah's Prophet (ﷺ) having recited the whole Qur'an during one single night, or praying through the night till morning, or fasting a complete month, except Ramadan. He (the narrator) said: I then went to Ibn 'Abbas and narrated to him the hadith (transmitted from her), and he said: She says the truth If I went to her and got into her presence, I would have listened to it orally from her. He said: If I were to know that you do not go to her. I would not have transmitted this hadith to you narrated by her.
পরিচ্ছেদঃ ১৮. রাত্রিকালীন সালাত- আর যে ঘুমিয়ে পড়ে অথবা অসুস্থ হয়ে পড়ে
১৬২৭-(.../...) ইসহাক ইবনু ইবরাহীম ও মুহাম্মাদ ইবনু রাফি’ (রহঃ) ..... যুরারাহ ইবনু আওফা (রহঃ) থেকে বর্ণিত। সা’দ ইবনু হিশাম (রহঃ) ছিলেন তার প্রতিবেশী। তিনি যুরারাহকে স্বীয় স্ত্রীকে তালাক দেয়ার কথা জানালেন। এতটুকু বর্ণনা করার পর তিনি সাঈদ বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ অর্থবোধক হাদীস বর্ণনা করলেন যাতে এ কথাও বর্ণিত হয়েছে যে, আয়িশাহ (রাযিঃ) জিজ্ঞেস করলেনঃ কোন হিশাম এর কথা বলছ? তখন হাকীম ইবনু আফলাহ বললেনঃ ’আমিরের পুত্র হিশামের কথা বলছি। এ কথা শুনে ’আয়িশাহ বলে উঠলেন- ’আমির কত ভাল লোক ছিলেন। তিনি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে উহুদ যুদ্ধে শারীক হয়ে শাহাদাত বরণ করেছেন। এ হাদীসে এ কথাও বর্ণিত হয়েছে যে, হাকীম ইবনু আফলাহ বললেনঃ যদি আমার জানা থাকত যে, আপনি আয়িশাহ (রাযিঃ) এর কাছে যান না তাহলে আমি আপনাকে তার সম্পর্কে বলতাম না। (ইসলামী ফাউন্ডেশন ১৬১২, ইসলামীক সেন্টার ১৬১৯)
باب جَامِعِ صَلاَةِ اللَّيْلِ وَمَنْ نَامَ عَنْهُ أَوْ مَرِضَ
وَحَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، وَمُحَمَّدُ بْنُ رَافِعٍ، كِلاَهُمَا عَنْ عَبْدِ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ زُرَارَةَ بْنِ أَوْفَى، أَنَّ سَعْدَ بْنَ هِشَامٍ، كَانَ جَارًا لَهُ فَأَخْبَرَهُ أَنَّهُ، طَلَّقَ امْرَأَتَهُ . وَاقْتَصَّ الْحَدِيثَ بِمَعْنَى حَدِيثِ سَعِيدٍ وَفِيهِ قَالَتْ مَنْ هِشَامٌ قَالَ ابْنُ عَامِرٍ . قَالَتْ نِعْمَ الْمَرْءُ كَانَ أُصِيبَ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَوْمَ أُحُدٍ . وَفِيهِ فَقَالَ حَكِيمُ بْنُ أَفْلَحَ أَمَا إِنِّي لَوْ عَلِمْتُ أَنَّكَ لاَ تَدْخُلُ عَلَيْهَا مَا أَنْبَأْتُكَ بِحَدِيثِهَا .
Zurara b. Aufa reported that Sa'd b. Hisham was his neighbour and he informed him that he had divorced his wife and he narrated the hadith like the one transmitted by Sa'd. She ('A'isha) said:
Who is Hisham? He said: The son of 'Amir. She said: What a fine man he was; he participated in the Battle of Uhud along with the Messenger of Allah (ﷺ). Hakim b. Aflah said: If I ever knew that you do not go to 'A'isha, I would not have informed you about her hadith (So that you would have gone to her and heard it from her orally).
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - সৃষ্টির সূচনা ও নবী-রাসূলদের আলোচনা
৫৭২৯-[৩২] যুরারাহ্ ইবনু আওফা (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সা.) একদিন জিবরীল আলায়হিস সালাম-কে প্রশ্ন করলেন, তুমি কি তোমার প্রভুকে দেখেছ? এ কথা শুনে জিবরীল আলায়হিস সালাম কেঁপে উঠে বললেন, হে মুহাম্মাদ! আমার ও তার মাঝখানে সত্তরটি নূরের পর্দা রয়েছে। যদি আমি তার কোন একটির কাছাকাছি হই, তবে আমি পুড়ে যাব। (এরূপ ’মাসাবীহ’ কিতাবে বর্ণিত)
اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَاب بدءالخلق وَذِكْرِ الْأَنْبِيَاءِ عَلَيْهِمُ الصَّلَاةُ وَالسَّلَامُ)
وَعَن زُرَارَة بن أوفى أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ لِجِبْرِيلَ: هَلْ رَأَيْتَ رَبَّكَ؟ فَانْتَفَضَ جِبْرِيلُ وَقَالَ: يَا مُحَمَّدُ إِنَّ بَيْنِي وَبَيْنَهُ سَبْعِينَ حِجَابًا مِنْ نُورٍ لَوْ دَنَوْتُ مِنْ بَعْضِهَا لاحترقت «. هَكَذَا فِي» المصابيح
اسنادہ ضعیف ، و ذکرہ البغوی فی مصابیح السنۃ (4 / 30) [و ابو الشیخ فی العظمۃ (2 / 677 ۔ 678) و الدارمی (فی الرد علی المریسی ص 172)] * السند صحیح الی زرارۃ رحمہ اللہ و لکنہ : مرسل ۔
(ضَعِيف)
ব্যাখ্যা: (فَانْتَفَضَ جِبْرِيلُ) “জিবরীল কেঁপে উঠেন” জিবরীলের কাছে এই প্রশ্নটাই বিশাল মনে হয়। এমন উক্তি শুনে তিনি আল্লাহ তা'আলার মর্যাদার ভয়ে কাঁপতে থাকেন। বলা হয়, এ হাদীস থেকে প্রমাণিত যে, কিয়ামত দিবসে আল্লাহ তা'আলাকে দেখা যাবে। কেননা পরকালীন জগতে আল্লাহ তা'আলাকে দেখা অসম্ভব হলে রাসূল (সা.) জিবরীল আলায়হিস সালাম -কে লক্ষ করে এমন প্রশ্ন করতেন না।
(سَبْعِينَ حِجَابًا مِنْ نُورٍ) নূরের সত্তর পর্দা। কারো মতে সত্তর পর্দার দূরত্ব দ্বারা আল্লাহ তা'আলার মর্যাদার পূর্ণাঙ্গতা ও জিবরীল তথা সৃষ্টির গুণের অপূর্ণতা বুঝানো হয়েছে। তবে এ জাতীয় ব্যাপারে সালাফদের মতাদর্শ হলো, হাদীসকে বাহ্যিক অর্থে বিশ্বাস করে তার বিবরণ ও অবস্থা আল্লাহ তা'আলার জ্ঞানের উপর ছেড়ে দেয়া। তাই আমরা পর্দার হাকীকত ও তত্ত্বের পিছনে না পড়ে এবং কোন ধরনের ব্যাখ্যা ছাড়াই সরল অর্থে বিশ্বাস করব।
(لَوْ دَنَوْتُ مِنْ بَعْضِهَا لاحترقت) অর্থাৎ নূরের এসব পর্দার কোন একটির কাছে গেলে আমি পুড়ে যাব। কোন কোন বর্ণনায়, এক আঙ্গুল পরিমাণ কাছে চলে গেলে এমন হবে বলে বর্ণিত হয়েছে। (মিরকাতুল মাফাতীহ)
পরিচ্ছেদঃ ৫৯. মোজার উপর মাসাহ্ করা
১৫২। যুরারাহ ইবনু ’আওফা সূত্রে বর্ণিত। মুগীরাহ ইবনু শু’বাহ (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (কাফেলার) পিছনে রয়ে গেলেন। অতঃপর বর্ণনাকারী পুরো ঘটনা বর্ণনা করলেন। তিনি বলেন, আমরা এসে দেখলাম, ’আবদুর রহমান ইবনু ’আওফ (রাঃ) লোকদের ফজরের সালাতে ইমামতি করছেন। তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে দেখতে পেয়ে পিছনে সরে আসতে চাইলেন। তিনি ইশারায় তাকে সালাত আদায় চালিয়ে যেতে বললেন। মুগীরাহ (রাঃ) বলেন, আমি এবং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ’আবদুর রহমানের পিছনে এক রাক’আত আদায় করলাম। ’আবদুর রহমান সালাম ফিরালে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাঁড়িয়ে ছুটে যাওয়া অবশিষ্ট এক রাক’আত সালাত আদায় করলেন এবং এর অধিক কিছু করেননি। [1]
সহীহ।
قَالَ أَبُو دَاوُدَ أَبُو سَعِيدٍ الْخُدْرِيُّ وَابْنُ الزُّبَيْرِ وَابْنُ عُمَرَ يَقُولُونَ مَنْ أَدْرَكَ الْفَرْدَ مِنَ الصَّلَاةِ عَلَيْهِ سَجْدَتَا السَّهْوِ
ضعيف
ইমাম আবূ দাউদ (রহঃ) বলেন, আবু সাঈদ খুদরী, ইবনু যুবাইর ও ইবনু ’উমারের (রাঃ) মতে, কেউ ইমামের সঙ্গে বিজোড় রাক’আত (আংশিক) সালাত পেলে তাকে দু’টি সাহু সিজদা্ করতে হবে।
দুর্বল।
باب الْمَسْحِ عَلَى الْخُفَّيْنِ
حَدَّثَنَا هُدْبَةُ بْنُ خَالِدٍ، حَدَّثَنَا هَمَّامٌ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنِ الْحَسَنِ، وَعَنْ زُرَارَةَ بْنِ أَوْفَى، أَنَّ الْمُغِيرَةَ بْنَ شُعْبَةَ، قَالَ تَخَلَّفَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَذَكَرَ هَذِهِ الْقِصَّةَ . قَالَ فَأَتَيْنَا النَّاسَ وَعَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عَوْفٍ يُصَلِّي بِهِمُ الصُّبْحَ فَلَمَّا رَأَى النَّبِيَّ صلي الله عليه وسلم أَرَادَ أَنْ يَتَأَخَّرَ فَأَوْمَأَ إِلَيْهِ أَنْ يَمْضِيَ - قَالَ - فَصَلَّيْتُ أَنَا وَالنَّبِيُّ صلي الله عليه وسلم خَلْفَهُ رَكْعَةً فَلَمَّا سَلَّمَ قَامَ النَّبِيُّ صلي الله عليه وسلم فَصَلَّى الرَّكْعَةَ الَّتِي سُبِقَ بِهَا وَلَمْ يَزِدْ عَلَيْهَا شَيْئًا
- صحيح
Al-Mughirah b. Shu’bah said :
The Messenger of Allah (ﷺ) lagged behind (in a journey). He then narrated this story saying : Then we came to people. ‘Abd al-Rahman was leading them in the dawn prayer. When he perceived the presence of the Prophet (ﷺ), he intended to retire. The Prophet (ﷺ) asked him to continue and I and the Prophet (ﷺ)offered one rak’ah of prayer behind him. When he had pronounced the salutation, the Prophet(ﷺ) got up and offered the rak’ah which had been finished before, and he made no addition to it.
পরিচ্ছেদঃ ৩১৬. রাতের (তাহজ্জুদ) সালাত সম্পর্কে
১৩৪৬। যুরারাহ ইবনু আওফা (রহঃ) সূত্রে বর্ণিত। একদা ’আয়িশাহ্ (রাঃ)-কে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মধ্য রাতের সালাত সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, তিনি ’ইশার সালাত জামা’আতে আদায় করে নিজ পরিজনের কাছে ফিরে এসে চার রাক’আত সালাত আদায় করে স্বীয় বিছানায় ঘুমিয়ে পড়তেন। এ সময় অযুর পানি ও মিসওয়াক তাঁর কাছেই থাকতো। অতঃপর মহান আল্লাহ রাতে যখন সজাগ করার তাঁকে সজাগ করতেন। তিনি মিসওয়াক ও উত্তমরূপে অযু করে তাঁর মুসল্লায় দাঁড়িয়ে আট রাক’আত সালাত আদায় করতেন।
তাতে সূরাহ ফাতিহা, কুরআনের অন্য সূরাহ এবং আল্লাহ যা চাইতেন তা পাঠ করতেন। তিনি এতে মাঝখানে না বসে কেবলমাত্র অষ্টম রাক’আতেই বসতেন এবং সালাম না ফিরিয়ে নবম রাক’আতে দাঁড়িয়ে ক্বিরাআত পড়তেন। অতঃপর (শেষ বৈঠকে) বসে আল্লাহর ইচ্ছানুযায়ী দু’আ করতেন, তাঁর কাছে প্রার্থনা করতেন এবং তাঁর প্রতি আকৃষ্ট হতেন। সবশেষে তিনি এতো জোরে সালাম ফিরাতেন যে, সালামের আওয়াজে ঘরের লোকেরা জাগ্রত হবার উপক্রম হতো।
অতঃপর তিনি (বসে দু’ রাক’আত সালাত আদায় করতেন এবং তাতে) বসেই সূরাহ ফাতিহা পাঠ ও রুকূ’ করতেন। অনুরূপভাবে দ্বিতীয় রাক’আতেও বসাবস্থায় রুকূ’ ও সিজদা্ করতেন। অতঃপর আল্লাহর ইচ্ছানুযায়ী দু’আ করে সালাম ফিরিয়ে সালাত শেষ করতেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শরীর ভারী হওয়া পর্যন্ত এভাবেই সালাত আদায় করতেন। অতঃপর (শরীর ভারী হয়ে গলে) তিনি নয় রাক’আত থেকে দুই কমিয়ে ছয় রাক’আত (এবং এক যোগ করে) সাত রাক’আত আদায় করেন এবং দু’ রাক’আত বসাবস্থায় আদায় করতেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি এভাবেই সালাত আদায় করেছেন।[1]
সহীহ, চার রাক’আত কথাটি বাদে। সংরক্ষিত হচ্ছে ’আয়িশাহ সূত্রে দু’ রাকআত।
باب فِي صَلَاةِ اللَّيْلِ
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ حُسَيْنٍ الدِّرْهَمِيُّ، حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عَدِيٍّ، عَنْ بَهْزِ بْنِ حَكِيمٍ، حَدَّثَنَا زُرَارَةُ بْنُ أَوْفَى، : أَنَّ عَائِشَةَ، - رضى الله عنها - سُئِلَتْ عَنْ صَلَاةِ رَسُولِ اللهِ صلي الله عليه وسلم فِي جَوْفِ اللَّيْلِ، فَقَالَتْ : كَانَ يُصَلِّي صَلَاةَ الْعِشَاءِ فِي جَمَاعَةٍ، ثُمَّ يَرْجِعُ إِلَى أَهْلِهِ فَيَرْكَعُ أَرْبَعَ رَكَعَاتٍ، ثُمَّ يَأْوِي إِلَى فِرَاشِهِ وَيَنَامُ وَطَهُورُهُ مُغَطًّى عِنْدَ رَأْسِهِ، وَسِوَاكُهُ مَوْضُوعٌ حَتَّى يَبْعَثَهُ اللهُ سَاعَتَهُ الَّتِي يَبْعَثُهُ مِنَ اللَّيْلِ، فَيَتَسَوَّكُ وَيُسْبِغُ الْوُضُوءَ، ثُمَّ يَقُومُ إِلَى مُصَلَاهُ فَيُصَلِّي ثَمَانِ رَكَعَاتٍ يَقْرَأُ فِيهِنَّ بِأُمِّ الْكِتَابِ وَسُورَةٍ مِنَ الْقُرْآنِ وَمَا شَاءَ اللهُ، وَلَا يَقْعُدُ فِي شَىْءٍ مِنْهَا حَتَّى يَقْعُدَ فِي الثَّامِنَةِ، وَلَا يُسَلِّمُ، وَيَقْرَأُ فِي التَّاسِعَةِ، ثُمَّ يَقْعُدُ فَيَدْعُو بِمَا شَاءَ اللهُ أَنْ يَدْعُوَهُ، وَيَسْأَلُهُ وَيَرْغَبُ إِلَيْهِ وَيُسَلِّمُ تَسْلِيمَةً وَاحِدَةً شَدِيدَةً، يَكَادُ يُوقِظُ أَهْلَ الْبَيْتِ مِنْ شِدَّةِ تَسْلِيمِهِ، ثُمَّ يَقْرَأُ وَهُوَ قَاعِدٌ بِأُمِّ الْكِتَابِ، وَيَرْكَعُ وَهُوَ قَاعِدٌ، ثُمَّ يَقْرَأُ الثَّانِيَةَ فَيَرْكَعُ وَيَسْجُدُ وَهُوَ قَاعِدٌ، ثُمَّ يَدْعُو مَا شَاءَ اللهُ أَنْ يَدْعُوَ، ثُمَّ يُسَلِّمُ وَيَنْصَرِفُ، فَلَمْ تَزَلْ تِلْكَ صَلَاةَ رَسُولِ اللهِ صلي الله عليه وسلم حَتَّى بَدَّنَ فَنَقَصَ مِنَ التِّسْعِ ثِنْتَيْنِ، فَجَعَلَهَا إِلَى السِّتِّ وَالسَّبْعِ وَرَكْعَتَيْهِ وَهُوَ قَاعِدٌ حَتَّى قُبِضَ عَلَى ذَلِكَ صلي الله عليه وسلم
- صحيح دون الأربع ركعات، و المحفوظ عن عائشة ركعتان
Narrated Aisha, Ummul Mu'minin:
Zurarah ibn Awfa said that Aisha was asked about the midnight prayer of the Messenger of Allah (ﷺ).
She said: He used to offer his night prayer in congregation and then return to his family (in his house) and pray four rak'ahs. Then he would go to his bed and sleep, but the water for his ablution was placed covered near his head and his tooth-stick was also kept there until Allah awakened him at night.
He then used the tooth-stick, performed ablution perfectly then came to the place of prayer and would pray eight rak'ahs, in which he would recite Surah al-Fatihah, and a surah from the Qur'an as Allah willed. He would not sit during any of them but sit after the eighth rak'ah, and would not utter the salutation, but recite (the Qur'an) during the ninth rak'ah. Then he would sit and supplicate as long as Allah willed, and beg Him and devote his attention to Him; He would utter the salutation once in such a loud voice that the inmates of the house were almost awakened by his loud salutation. He would then recite Surah al-Fatihah while sitting, bow while sitting, and then recite the Qur'an during the second rak'ah, and would bow and prostrate while sitting. He would supplicate Allah as long as He willed, then utter the salutation and turn away.
This amount of prayer of the Messenger of Allah (ﷺ) continued till he put a weight. During that period he retrenched two rak'ahs from nine and began to pray six and seven rak'ahs standing and two rak'ahs sitting. This continued till he died.
পরিচ্ছেদঃ ৪৩: নয় রাক'আত বিতর কিভাবে আদায় করবে?
১৭২১. যাকারিয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহ.) ..... যুরারাহ্ ইবনু আওফা (রহ.) হতে বর্ণিত। সা'দ ইবনু হিশাম আমাদের নিকট এসে বললেন যে, তিনি ইবনু আব্বাস-এর নিকট গিয়ে তাঁকে রসূলুল্লাহ (সা.) -এর বিতরের সালাত সম্পর্কে প্রশ্ন করলেন। তিনি বললেন, আমি কি তোমাকে সন্ধান দিব না? অথবা (তিনি বললেন) আমি কি তোমাকে ধরাবাসীদের মধ্যে রসূলুল্লাহ (সা.) -এর বিতরের সালাত সম্পর্ক অধিক জানা ব্যক্তির খবর দিব না। আমি বললাম, তিনি কে? তিনি বললেন, 'আয়িশাহ্ (রাঃ)। তখন আমরা তাঁর কাছে আসলাম এবং তাঁকে সালাম করে তার ঘরে প্রবেশ করলাম এবং তাকে প্রশ্ন করলাম। আমি বললাম, আপনি আমাকে রসূলুল্লাহ (সা.) -এর বিতরের সালাত সম্বন্ধে বলুন। তিনি বললেন, আমরা তাঁর জন্যে তাঁর মিসওয়াক এবং উযূর পানি তৈরি করে রাখতাম। আল্লাহ তা'আলা তাঁকে রাতে যখন জাগাতে ইচ্ছা করতেন জাগিয়ে দিতেন। তিনি মিসওয়াক করে উযূ করতেন এবং নয় রাকআত সালাত আদায় করতেন। শুধুমাত্র অষ্টম রাকআতেই বসতেন। (বসে) আল্লাহ তা'আলার প্রশংসা করতেন এবং তাঁর যিকর করতেন আর দু'আ করতেন। এরপর উঠে যেতেন; সালাম ফিরাতেন না। এরপর নবম রাকআত আদায় করতেন এবং বসে যেতেন ও আল্লাহ তা'আলার প্রশংসা বর্ণনা করতেন, তাঁর যিকর এবং দু'আ করতেন। অতঃপর এমনভাবে সালাম ফিরাতেন যা আমরা শুনতে পেতাম। অতঃপর সালাম ফিরানোর পর বসা অবস্থায় দু' রাকআত সালাত আদায় করতেন।
হে বৎস! এ হলো মোট এগারো রাক'আত। যখন রসূলুল্লাহ (সা.) বয়স্ক হয়ে গেলেন এবং শরীর ভারী হয়ে গেল, তখন তিনি সাত রাকআত আদায় করতেন। তারপর সালাম ফিরানোর পর বসা অবস্থায় দু' রাক'আত সালাত আদায় করতেন। হে বৎস! তা হলে মোট নয় রাক'আত। আর রসূলুল্লাহ (সা.) যখন কোন সালাত আদায় করতেন তা সর্বদা আদায় করতে ভালোবাসতেন।
باب كَيْفَ الْوِتْرُ بِتِسْعٍ
أَخْبَرَنَا زَكَرِيَّا بْنُ يَحْيَى، قال: حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ، قال: أَنْبَأَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، قال: حَدَّثَنَا مَعْمَرٌ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ زُرَارَةَ بْنِ أَوْفَى، أَنَّ سَعْدَ بْنَ هِشَامِ بْنِ عَامِرٍ لَمَّا أَنْ قَدِمَ عَلَيْنَا أَخْبَرَنَا، أَنَّهُ أَتَى ابْنَ عَبَّاسٍ فَسَأَلَهُ عَنْ وِتْرِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: أَلَا أَدُلُّكَ أَوْ أَلَا أُنَبِّئُكَ بِأَعْلَمِ أَهْلِ الْأَرْضِ بِوِتْرِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ؟ قُلْتُ: مَنْ ؟ قَالَ: عَائِشَةُ، فَأَتَيْنَاهَا فَسَلَّمْنَا عَلَيْهَا وَدَخَلْنَا فَسَأَلْنَاهَا، فَقُلْتُ: أَنْبِئِينِي عَنْ وِتْرِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَتْ: كُنَّا نُعِدُّ لَهُ سِوَاكَهُ وَطَهُورَهُ، فَيَبْعَثُهُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ مَا شَاءَ أَنْ يَبْعَثَهُ مِنَ اللَّيْلِ فَيَتَسَوَّكُ وَيَتَوَضَّأُ، ثُمَّ يُصَلِّي تِسْعَ رَكَعَاتٍ لَا يَقْعُدُ فِيهِنَّ إِلَّا فِي الثَّامِنَةِ فَيَحْمَدُ اللَّهَ وَيَذْكُرُهُ وَيَدْعُو، ثُمَّ يَنْهَضُ وَلَا يُسَلِّمُ ثُمَّ يُصَلِّي التَّاسِعَةَ فَيَجْلِسُ فَيَحْمَدُ اللَّهَ وَيَذْكُرُهُ وَيَدْعُو، ثُمَّ يُسَلِّمُ تَسْلِيمًا يُسْمِعُنَا، ثُمَّ يُصَلِّي رَكْعَتَيْنِ وَهُوَ جَالِسٌ، فَتِلْكَ إِحْدَى عَشْرَةَ رَكْعَةً يَا بُنَيَّ، فَلَمَّا أَسَنَّ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَأَخَذَ اللَّحْمَ أَوْتَرَ بِسَبْعٍ، ثُمَّ يُصَلِّي رَكْعَتَيْنِ وَهُوَ جَالِسٌ بَعْدَ مَا يُسَلِّمُ فَتِلْكَ تِسْعًا أَيْ بُنَيَّ. (حديث موقوف) (حديث مرفوع) وَكَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا صَلَّى صَلَاةً أَحَبَّ أَنْ يُدَاوِمَ عَلَيْهَا .
تخریج دارالدعوہ: انظر حدیث رقم: ۱۳۱۶، ۱۶۰۲ (صحیح)
صحيح وضعيف سنن النسائي الألباني: حديث نمبر 1722 - صحيح
How to pray witr with nine rak'ahs
It was narrated from Zurarah bin Awfa: When Sa'd bin Hisham bin Amir came to visit us, he told us that he came to Ibn Abbas and asked him about the witr of the Messenger of Allah (ﷺ). He said: 'Shall I not tell you of the most knowledgeable person on Earth about the witr of the Messenger of Allah (ﷺ)?' I said: 'Who?' He said: 'Aishah.' So we went to her and greeted her with Salam and entered and asked her. I said: 'Tell me about the witr of the Messenger of Allah (ﷺ).' She said: 'We used to prepare for him his siwak and water for wudu, then Allah (SWT) would wake him when He willed to wake him at night. He would clean his teeth and perform wudu, then he would pray nine rak'ahs, during which he would not sit until the eighth. Then he would praise Allah (SWT) and remember Him and supplicate, then he would get up and not say the taslim. Then he would pray the ninth, then sit and praise Allah (SWT) and remember Him and supplicate, then he would say a taslim that we could hear. Then he prayed two rak'ahs sitting, and that was eleven rak'ahs, O my son. When the Messenger of Allah (ﷺ) grew older and put on weight, he prayed witr with seven, then he prayed two rak'ahs sitting after saying the taslim, and that was nine, O my son. And when the Messenger of Allah (ﷺ) offered a prayer, he liked to persist in offering it.'